দেখি নাই ফিরে - (Part-43)

গোয়েন্দা গিরি করছো। পারবে না।
না না বিশ্বাস কর।
সরষের মধ্যে ভূত। তুমি ভূত তাড়াতে পারবে না। বরং বেশি ভূতের জন্ম হবে।
নিরঞ্জনদা হো হো করে হেসে ফেললো।
তোমায় একটা কথা বলবো নিরঞ্জনদা মনে কিছু করবে না।
বল।
তোমাদের অনেক মন্ত্রী-সন্ত্রী আমলাদের একটা বউ-এ পোষায় না। ওদের অনেক বউ-এর দরকার। আর জানোতো এটা সাপ্লাই আসে কোথা থেকে। আমি আমার জীবনের আঠারোমাস ওখানে কাটিয়েছি।
নিরঞ্জনদা চুপ করে গেলো। আমার মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে।
কি ভাবছো। অনি কি বিষ মাল।
না। তোর ইনটেলেক্ট দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি।
বটগাছ অশ্বত্থ গাছ দেখেছো। ওদের লালান পালন করার কেউ নেই। কিন্তু ওরা মাটি ফুঁরে ওঠে। ঝড়ে কোনোদিন কোনো বটগাছ কিংবা অশ্বত্থ গাছকে উপরে পরেযেতে দেখেছো।
না।
আমার আদর্শ এই গাছদুটো আমি ওদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছি। তোমরা আমার কি রি-এ্যাকসন নেবে।
না আমি সেই ভাবে বলতে চাই নি।
তুমি হ করলে হাওড়া বোঝার ক্ষমতা আমার আছে। আমার জায়গায় মিত্রা হলে অন্য কথাছিলো।
আমি জানি যা ডিসিসন তুই নিবি ও নেবেনা তাই তোর সঙ্গে আলোচনা করছি।
এবার আসলি কথায় এসো।
বল।
এই ড্রিলে তোমার কি লাভ।
তুই এইভাবে বলিস না।
শোনো আমি অমিতাভদা বড়মা নই। এটা মাথায় রাখো।
নিরঞ্জনদা হো হো করে হেসে ফেললো।
আমি একটা জেলাসভাধিপতি তুই আমাকে পাত্তাই দিচ্ছিসনা।
তোমার মতো জেলাসভাধিপতি এই পশ্চিমবাংলায় ১৭টা আছে।
জানি।
তুমি আমার পাশে বসে যেতে পারছো। তারা স্বপ্নদেখে। এটা মানো।
তুই এটা বাড়িয়ে বলছিস।
তোমার পাশের জেলার সভাধিপতিকে একটা ফোন করো। সে কি বলে দেখো। আমি তোমার পেছনে বলছি না।
তাবলে তুই আমাকে একেবারে এলেবেলে পর্যায়ে নামিয়ে আনছিস।
তোমায় একটা সত্যি কথা বলছি শুনে রাখ নিরঞ্জনদা। আমার লেখাটা তোমার হাইকমান্ডের অন্ততঃ একজন বড়মাথা প্রকাশ হওয়ার আগেই পরে ফেলেছে। আর সে পরা মানেই অন্ততঃ সাতজন মাথা জানে অনি এইটা একদিন নয় একদিন প্রকাশ করবে। তাতে তাদের কিছুটা উপকার হবে। সেখানেও কিছু নিয়ম নীতি আছেতো। আমি কি বলতে চাইছি বুঝতে পারছো।
নিরঞ্জনদা আমার দিকে হাঁ হয়ে তাকিয়ে আছে।
কি দেখছো।
দাঁড়া দাঁড়া আমার হজম করতে একটু অসুবিধে হচ্ছে।
হবে। কেনোনা তুমি একটা পরিবারের ছোটোভাই খাও দাও ফুর্তি করো। কি ভাবে সংসারটা চলছে তার খোঁজ খবর রাখো না। তোমারটা পেলেই তুমি খুশি। তাই তোমাকে যতটুকু দেওয়ার ততটুকু দেওয়া হয়েছে। তাতেই তুমি তিড়িংবিড়িং করছো।
অনি!

আর তোমার হাইকমান্ড পার্টিটা চালাচ্ছে। একটা নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে। তুমি দোষ করলেও পার্টির চোখে তুমি দোষী নও। যতক্ষণনা প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। আমি মলের কেশটায় এরকম দু’চারজনের প্রমাণ পার্টির হাইকমান্ডের হাতে তুলে দিলাম। ছিঁচকে গুলো তিড়িংবিড়িং করবে পার্টির হাইকমান্ড নয়।
অনি!
অনি বলে কোনো লাভ নেই। আমি যা করার করে দিয়েছি। ওদের তুমি বাঁচাতে পারবে না। ওরা সাসপেন হবে। হয়তো পার্টিথেকে চিরবিদায় নিতে হবে। তুমি যদি তোমার রাজনৈতিক কেরিয়ার স্ট্রং করতে চাও তাহলে যা বলবো শুনে যাও। আখরে তোমার উপকার হবে। তোমার গদিটা আর তিনবছর। তারপর কি করবে কিছু ভেবে রেখেছো।
তুই কি বলছিস আমার মাথায় ঢুকছে না।
একটু ভাবো। দীর্ঘদিন পার্টি করছো। তোমাকে আমি বোঝাবো এই ধৃষ্টতা আমার নেই।
না মনে হচ্ছে তোর সঙ্গে আমাকে রেগুলার যোগাযোগ রাখতে হবে। তুই আমাকে দিন সাতেক সময় দে।
দিনসাতেক নয় তুমি আরো বেশি সময় নিতে পারো। আমার সম্বন্ধে ভালো করে হোমওয়ার্ক করেনাও।
নিরঞ্জনদা হেসেফেললো। তুই টিজ করছিস আমায়।
তুমি দাদার সমসাময়িক তোমায় টিজ করবো। এবার আমার কাজের কথায় আসি। অনেক হ্যাজালাম।
বল।
রেজিস্ট্রি বুধবার করবো। সব রেডি করেছো।
না।
তাহলে ?
দলিল তুই লিখবি।
যা বাবা তুমি বললে সব রেডি করে রাখবে।
চল লোকটাকে ডেকে পাঠাই। দলিলটা নিয়ে আসুক। তুই বানিয়ে নে।
সেটা আগে করোনি কেনো।
সময় পেলাম কোথায়। তুই যে ভাবে পরপর কাজ করে যাচ্ছিস। তারপর কালকে একটা আনন্দের দিন গেলো ভালো লাগলো না।
ঠিক আছে গিয়ে দলিলটা আমাকে এনে দাও। আমি বিনিয়ে নিচ্ছি। কালকে কলকাতায় থাকবে। পর্শু আমার সঙ্গে আসবে। এটা মাথায় রেখো।
না আমি চলে আসবো।
থাকলে ভালো করতে তোমার উপকার হতো।
আবার এখানেও আমাকে ঝোলাবি।
তোমার কি কাজ আছে বলোতো।
তুই জানিসনা।
আমার জেনে লাভ নেই। কাল একজনকে দাদার বাড়িতে ডাকবো। থাকলে তোমার উপকার হতো।
কাকে।
তোমার জেনে লাভ।
উঃ তুই ভীষণ তেঁয়েটে।
হাসলাম।

গাড়ি এসে বাজারে থামলো। আমি নামলাম। নিরঞ্জনদাও নামলো। আমি বড়মার গাড়ির কাছে গেলাম। রবিন দরজা খুলছে। বড়মা আমায় দেখে মুখটা গম্ভীর করলো।
বাবাঃ গালটা ফুলেগেছে মনে হচ্ছে।
একবারে কথা বলবিনা।
পারবে অনির সঙ্গে কথা না বলে।
ওই জন্যই ......।
আমি বড়মাকে জাপ্টে ধরলাম। চা খাবে।
কোথায়।
তোমাকে ভাবতে হবেনা। বাসু।
বাসু পেছনেই ছিলো। কাছে এলো।
আমার বাড়িতে চল। বড়মা আর এদিকে আসবে কিনা।
কিগো যাবে।
কতোক্ষণ লাগবে।
এই দু’মিনিট।
তোর দু’মিনিট মানে আধঘন্টা।
ওঃ বড়মা এতোক্ষণবাদে তুমি একটা শলিড কথা বললে। মন ভরে গেলো।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম।
তোকে যেতে হবে না। তুই বাসুর দোকানে বোস। আমি বড়মা......।
তোকেই বাদ দিয়ে দেবো।
তাহলেতো খুব ভালো।
চল অনাদি আমরা বাসুর দোকানে বসি।
বড়মা হাসছে। তোদের কি বয়স হবেনা।
তোমার দাদারতো বয়স হয়েছে।
বড়মা হেসে ফললো। তোর সঙ্গে পারবোনা।
নিরঞ্জনদাকে বললাম এখানে থাকতে থাকতে আমার কাজ সেরে নাও। চাখাওয়ার মধ্যে যেনো চলে আসে। তুমি ব্যবস্থা করে এসো।
নিরঞ্জনদা জিভ বার করে ফেললো। সত্যি অনি ভুলে গেছিলাম।
বড়মা আমার মুখের দিকে তাকালো।
চলো আমরা এগোই।
কথা বলতে বলতে আমরা বাসুর বাড়িতে এলাম। এই প্রথম বাসুর বাড়িতে আসছি। সত্যিকারের মিনিট দুয়েকের পথ। গেটের মুখে লতা দাঁড়িয়ে ছিলো। এগিয়ে এলো। বাসুর বাড়িটা বেশ সাজানো গোছানো। লাইট আছে। শহুরে একটা বাড়ির ক্ষেত্রে যা যা থাকা দরকার তা আছে। লতা বড়মা ছাটমা মিত্রা এমনকি ইসলামভাইকেও প্রণাম করলো। ইসলামভাই-এর কাছে গিয়ে বাধা পেলো। আমি হাসলাম।
বাড়িতে ঢুকেই মিত্রা লতাকে নিয়ে সটকে গেলো। বুঝলাম বাথরুমে গেলো। আমি বড়মার দিকে তাকিয়ে হাসলাম। বড়মা ইশারায় বললো যাবে। আমি বললাম যাও। বড়মা ছোটমাও গেলো। আমি বাসুর বাড়িটা ঘুরে ফিরে দেখলাম। চিকনা বাইক নিয়ে এসে দাঁড়ালো।
গুরু চারিদিক মেপে নিচ্ছ।
হ্যাঁ। তুই কোথায় গেছিলি।
এইযে বিস্কুট নিয়ে এলাম।
অনাদি কোথায়।
নিরঞ্জনদা কোথায় পাঠালো।
আসবেনা।
নিরঞ্জনদার সঙ্গে আসছে। নিরঞ্জনদার চেলুয়ারা এসেছে।
তারা আবার কোথায় ছিলো।
তোর বাড়িতে বসেছিলো। তারপর শুনলো এখানে এসেছে। চলে এলো।
কোথায় বসেছে।
বাসুর দোকানে।
ওদের চা দিতে হবে।
রাখতো তুই সব ধর্মাবতার।
হাসলাম।
চিকনা ভেতরে গেলো। আবার বেরিয়ে এলো। চল একটু অন্ধকারে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাই।
না। ভালো লাগছে না।
তাহলে থাক।
চিকনা পর্শুদিন সকালে রেজিস্ট্রি অফিসে যাবি নীপাকে সঙ্গে নিয়ে। ওই দিন কোনো কাজ রাখবি না।



চিকনা মাথা নীচু করে আছে।
সত্যি তুই যা বলছিস তাই হবে।
আমি কি মিথ্যে বলছি বলে মনে হয়।
না ঈশ্বর আমার দিকে এমন ভাবে মুখ তুলে তাকাবে ভাবিনি।
চিকনার গলাটা ভারি হয়ে এলো।
কেনো অনির ওপর বিশ্বাস নেই।
না তুই এভাবে বলিসনা।
চিকনা চোখ মুছছে। আমি চিকনার দুই কাঁধে হাত রাখলাম। চিকনা এটা একটা নতুন জীবন। অনেক ঝড় ঝঞ্ঝা আসবে। তাকে ওভারকাম করতে হবে। লক্ষ্য স্থির রাখবি। তুই আমার কাছে চেয়েছিলি। আমি সময় নিয়েছিলাম।
তুই পাশে থাকলে আমি লড়ে যাবো। তুই খালি বলে দিবি এই এই ভাবে কাজ কর। দেখবি একেবারে ফেল হবে না।
আমিতো আছি।
কোথায় ? তুই ম্যাডামকে আর নীপাকে রেখেছিস।
না এটায় আমি আছি।
সত্যি।
হ্যাঁ।
অনাদি বললো আমি নীপা আর ম্যাডাম।
না অনাদি জানেনা। এবার মেসিন গুলোর ব্যবস্থা কর। কাল আমি কলকাতা যাচ্ছি।
কবে আসবি ?
পর্শুদিন আসবো। সঞ্জুকে বলে এদিককার ব্যবস্থা পাকা কর।
ঠিক আছে।
যার যা পাওনা মিটিয়ে দিয়েছিস।
হ্যাঁ।
কতো আছে।
নীপা জানে। নীপার কাছে আছে।
লিখিয়ে নিয়েছিস।
হ্যাঁ। নীপা খাতায় লিখিয়ে নিয়েছে।
এবার জোড় কদমে লেগে পর।
কালকেই একশোমোন ধান উঠবে।
রাখার ব্যবস্থা করছিস।
তোর বাড়িতে যতটা ধরে ধরাচ্ছি। তারপর স্যারকে বলেছি। স্যার অনুমতি দিয়েছে।
দু’টো বড় হামার ঘর তৈরির ব্যবস্থা কর।
পাঁচুকে বলেছি। ও সব ব্যবস্থা করছে। তোর হামার ঘরটা নষ্ট হয়ে গেছে। ওটাকে একটু সারিয়ে নিয়েছি। একটা কথা বলবো।
বল।
অনাদি ওর পার্টির কয়েকটা ছেলেকে নিতে বলছে।
অনাদি বললোনা কেনো।
লজ্জাপাচ্ছে। তুই যদি কিছু মনে করিস।
তোর দরকার পরলে নে।
লাগবে। এবার রাতে শোয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে।
অনি। বড়মার গলা।
যাচ্ছি।
দেখলাম মিত্রা গেটের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। আমি এগিয়ে গেলাম।
তুই অন্ধকারে ভূতের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি করছিলি।
তোকে দেখছিলাম।
চল বড়মা তোকে আচ্ছা করে দেবে।
আমি ওর কাছে এসে মুচকি হাসলাম।

ওমা দেখছি সাগরেদ আছে।
সাগরেদ নয় তোর বিজনেস পার্টনার।
খালি বক বক। দিলো আমার কোমরে চিমটি।
বড়মা আমাকে মারলে তুই খুব আনন্দ পাস। তাইনা।
মিত্রা মাথা দুলিয়ে বললো, হ্যাঁ।
মিত্রার মুখটা দেখলাম। এখন অনেকটা ফ্রেশ।
ভেতরে এলাম। বড়মার পাশে বসলাম। ছোটমা ইসলামভাই নীপা খাটে ভজু নিচে বড়মার পাশে। চিকনা খাটে বসলো। বাসু খাটের এককোনে।
তুই খাটে যা।
কেনো।
তুই সবসময় বড়মার পাসে বসবি কেনো।
ঠিক আছে আজথেকে ছোটমা আমার তোকে বড়মাকে দিয়ে দিলাম।
ইঃ কতো খাতির। একটাও তোর নয়।
আমি ছোটমার পাশে গিয়ে বসলাম। বড়মার দিকে তাকিয়ে বললাম। সব খবর নেওয়া হলো।
কার।
বাসুর।
তুই কি করে জানলি।
জানলাম।
বিজ্ঞের মতো কথা বলিসনা। মিত্রা তোকে কুচুর কুচুর করে বলেছে।
নাগো বড়মা আমি বলিনি ও মিথ্যে কথা বলছে।
আমি হাসছি। চা হলো।
হয়েগেছে। বাসু বললো।
লতা ঘরে ঢুকলো।
একবারে শহুরে ঢঙে লতা সব নিয়ে এলো। চা চায়ের সঙ্গে পাঁপর ভাজা। বেশ ভালো লাগলো। পেছনে একটা কাজের মেয়ে। হয়তো পাশেই থাকে।
চা নিলাম।
বাইরে বাইকের আওয়াজ পেলাম। অনাদির গলা পেলাম। বুঝলাম নিরঞ্জনদা এলো। দুজনে ঘরে ঢুকলো। বাসু উঠে দাঁড়ালো। পাশের ঘর থেকে একটা চেয়ার নিরঞ্জনদার জন্য এনে দিলো। নিরঞ্জনদা এসেই আমাকে দলিলটা দিয়ে বললো। এইনে তোর কাজ করে দিলাম। এবার আমার বৈতরিণীটা উতরে দে। এরি মধ্যে দুবার ফোন হয়ে গেলো।
হাসলাম। চায়ে চুমুক দিলাম।
বড়মা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। ছোটমা ইসলামভাই-এর একি অবস্থা। ওরা ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারেনি। নিরঞ্জনদা হঠাৎ এই ভাবে কথা বলার কারন কি।
খোঁজ নেওয়া হয়েগেছে মনে হয়।
কিকরে জানলি।
তোমার কথার ভাঁজে।
সত্যি অনি তুই একটা ছেলে বটে। তুই কি আমার ফোনেও আড়ি পেতেছিস।
ইসলামভাই ফিক করে হাসতে গিয়ে গায়ে চা ফেললো।
ছোটমা হাঁই হাঁই করে উঠলো।
আমি গম্ভীর।
মিত্রা তুই গিয়ে একটু খাটে বসতো। ওকে এখানে পাঠা।
আমি উঠে দাঁড়িয়ে শুর শুর করে চলে গিয়ে বড়মার পাশে বসলাম। বড়মার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছিনা। চা খেয়ে যাচ্ছি। বুঝছি বড়মা এবার আমাকে জিজ্ঞাসা করবে। না জানতে পারলে পেট ফুলে যাচ্ছে।

কিরে নিরঞ্জন কি কথা বলে।
জিজ্ঞাসা করো।
ওতো বললো। তুই চুপ করে আছিস কেনো। ওর পেছনে আবার লেগেছিস নাকি।
যাঃ তোমার ভাই বলে কথা। নিরঞ্জনদার সামনে বলছি। জিজ্ঞাসা করো।
কিরে নিরঞ্জন কি হয়েছেরে।
না কিছু হয়নি। একটা সমস্য হয়েছে। অনি সমাধান করতে পারবে তাই তেল দিচ্ছি।
এইবার ছোটমা হেসে ফললো। তুমি অনিকে তেল লাগাচ্ছ।
আর বলিস না। হাতি যখন কাদায়.........।
উঁহুঁ তুমি হাতি নও। আমি চামচিকে নই। তুমি একথা বলতে পারোনা। তোমাকে তখনো বলেছি। এখনো বলছি। বড়মা দাদা যদি না থাকতো আমি কি করতাম তাও তোমায় বলেছি।
কি হয়েছেরে নিরঞ্জন তুই আমাকে বলতো দিই ওর কানটা ছিঁড়ে।
তুমি মুখে বলছো কেনো তোমার হাত নেই। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো।
বড়মা আমার পিঠে হাত রাখলো।
কানটা ধরো কানটা।
আমি হাসছি।
কি হয়েছেরে দুজনে গাড়িতে একসঙ্গে এলি। তুই হাসতে হাসতে নামলি। নিরঞ্জনের মুখটা কেমন কেমন যেনো দেখলাম।
বাবা তোমার চোখ আছে। অন্ধকারেও তুমি নিরঞ্জনদার মুখটা দেখতে পেলে।
কথা ঘোরাসনা সত্যি কথা বল।
নিরঞ্জনদা বলবে আমি বলবোনা।
ঠিক আছে।
আমি কাল সকালা বেলা কলকাতা যাব। পর্শুদিন দাদাদের সঙ্গে করে নিয়ে আসবো।
কি মজা।
থাম তুই। মজা দেখছিস। ও কি পাকিয়ে রেখেছে দেখ।
নিরঞ্জনদা আমার দিকে তাকিয়ে ঘন ঘন চায়ে চুমুক দিয়ে চলেছে। ইসলামভাই ভালকরে মাপছে দুজনকে। ও ধরতে পেরেছে কিছু একটা হয়েছে।
চলো এবার উঠি কালকে আবার ভোর ভোর বেরোতে হবে। দাদার সঙ্গে তোমার কথা হয়েছে।
কেনো তোর সঙ্গে হয় নি।
সকালের পর হয়নি।
আমাকে যে বললো।
পকেট থেকে ফোনটা বারকরতেই বড়মা ফিক করে হেসে ফেললো।
নিরঞ্জনদা কাল তোমার গাড়িতে যাবো। অসুবিধে নেইতো।
নিরঞ্জনদা আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছে।
আরে বাবা আমি যাবো বললামতো।
নিরঞ্জনদা ঠায় আমার দিকে তাকিয়ে।
আমি উঠে দাঁরালাম। নিরঞ্জনদার কাছে এগিয়ে গেলাম। চলো। আমি যাবো। তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না।
তুই দাদার হলে যে ভাবে ইনিসিয়েটিভ নিস আমার জন্য নিচ্ছিস না।
তোমার থেকে দাদাকে বেশি ভালোবাসি। তাই। তুমি চাপ নিয়োনা। হেসেফেললাম।
সবাই একসঙ্গে বেরিয়ে এলাম। ট্রলিতে আমি আলাদা বসতে চাইছিলাম। বড়মা বললো তুই আমার ট্রলিতে আয়। অমনেক ভাবে আমার কাচে জানতে চাইলো। আমি চুপচাপ। বললাম তুমি নিরঞ্জনদার কাছ থেকে জেনে নেবে। শেষে ছোটমা বললো দিদি তুমি থামো কলকাতা থেকে ফিরে এসে তোমায় সব বলবে। ও আগে ওর কাজ সারুক। তাই হলো। যেতে যেতে বিশেষ কথা আর হলো না। সবাই চলে এলাম।

অনেক সকালে আমার ঘুম ভাঙলো। কাল রাতে আমি আগে চলে এসেছিলাম। মিত্রা কখন এসেছে আমি জানি না। আমি ঘুমিয়ে পরেছিলাম। মিত্রাও আমাকে ডাকে নি।
ঘুম ভাঙতে দেখলাম, মিত্রা আমাকে জাপ্টে ধরে শুয়ে আছে। আমি ওকে ডাকলাম। ও উঠে পরলো।
কিরে কটা বাজে।
আমি মিটসেফের কাছে গিয়ে মোবাইলের ঘরিটা দেখলাম। পাঁচটা বাজে। ওকে বললাম। মিত্রা ওর আগোছালো শারি ঠিকঠাক করে নিলো। আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বাইরে বেরিয়ে এলাম। নিচে নামলাম। এখনো ভোর হয়নি ভোরের পূর্বাভাস দেখা যাচ্ছে। আমি মুখহাত ধুয়ে ফ্রেশ হলাম। মিত্রা বিছানা গোছাচ্ছে। মাঝে মাঝে আমার দিকে টেরিয়ে টেরিয়ে দেখছে।
আমি পাজামা পাঞ্জাবী ছেড়ে প্যান্ট গেঞ্জি পরলাম। মিত্রা আজ কোনো দুষ্টুমি করলোনা। বুঝলাম কালরাতে একটা গোল টেবিল হয়েছে। হয়তো দাদার সঙ্গেও কথা হয়েগেছে।
কিরে এখুনি বেরোবি।
হ্যাঁ।
বড়মাকে ডাকি।
ডাক। যেতে পারবি।
পারবো।
মনেহচ্ছে মিত্রার একটু একটু পরিবর্তন হচ্ছে। ওর কনফিডেন্টের জায়গায় আবার ফিরে আসছে।
বুবুন।
উঁ।
একটা কথা বলবো।
বল।
রেগে যাবিনা।
রাগ করবো কেনো।
ও আমার কাছে এগিয়ে এলো। আমার দু’কাঁধে হাত রেখে বুকে একটা চুমু খেলো। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
কি বলবি বল।
কাল নিরঞ্জনদা সব কথা বলেছে।
তুই কি বলতে চাস বল।
নিরঞ্জনদার কোনো খতি হবেনা।
নিরঞ্জনদা ব্লাইন্ড হলে খতি হবে। নাহলে কিছুই হবেনা।
তোকে সত্যি কথা বলি।
বল।
বড়মা এই দায়িত্বটা আমার ওপর দিয়েছে।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম। ফিক করে হেসেফেললাম।
তুই হাসলি।

বড়মাকে এতো ভালোবাসি তবু আমার প্রতি বড়মার বিশ্বাসের বনিয়াদ ততটা শক্ত নয়।
তা নয়। তোকে আমি যেমন ভয় পাই তেমনি বড়মা ছোটমাও তোকে ভয়পায়। ওদের দৃঢ় বিশ্বাস তুই কোনো অন্যায় কাজ করবি না। তবু কোথায় যেনো একটা।
জানি। তোর মধ্যেও এই ব্যাপারটা আছে। কেনো ? আমি বাঘ না ভাল্লুক। তুই বড়মাকে বলিস নিরঞ্জনদা তার স্বার্থ রক্ষার জন্য আমার স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। তাই আমি মেনেনিতে পারছি না।
দাদা শোনার পর ঠিক এই কথা বলেছে। দাদা তোকে সাপোর্ট করেছে। নিরঞ্জনদাকেও খুব বকেছে। এমনকি বড়মাকে। দাদাকে কাল প্রথম একটু রাগতে দেখলাম।
নিরঞ্জনদা বড়মা কি বললো।
চুপচাপ দাদার কথা শুনে গেছে।
ইসলামভাই ছিলো।
হ্যাঁ।
ইসলামভাই মনেহয় তোর ছকটা কিছুটা বুঝেছে। কালকে দাদার সঙ্গেও কথা হলো দাদা ইসলামভাইকে সাপোর্ট করলো।
ছোটমা।
ছোটমা চুপচাপ কোনো কথা বলেনি। খালি একবার বলেছে। দিদি অনি কোনো অন্যায় কাজ করবেনা।
কোথায় বসে কথা হচ্ছিলো।
ওই বাড়ির বারান্দায়।
নিরঞ্জনদা বড়মাকে বললো না বড়মা জিজ্ঞাসা করলো।
তুই চলে আসার পর নিরঞ্জনদা সবাইকে নিয়ে বারান্দায় গেলো। সব বললো। তুই নিরঞ্জনদাকে বলেছিস তুমি যদি দাদা বড়মার পরিচিত না হতে তাহলে তোমাকে ছাড়তাম না।
হ্যাঁ।
নিরঞ্জনদা ওই কথায় আরো ভয় পেয়েছে। বড়মার হাতে পায়ে ধরছে। দিদি তুই আমাকে অনির হাত থেকে বাঁচা। ও যদি একবার লেখে আমার কেরিয়ার ডুম।
বড়মা প্রথমে নিরঞ্জনদাকে দেরে মুশে গালাগালি করেছিলো। পরে বলেছে অনি আমাকে এই বিষয়ে পাত্তা দেবে না। তুই তোর দাদাকে ফোন কর। আর এই দায়িত্ব মিত্রাকে দে।
তুই কি বললি।
আমি বলেদিয়েছি। এই ব্যাপার নিয়ে আমি বুবুনকে কোনো রিকোয়েস্ট করতে পারবোনা। অন্য ব্যাপারে বলো আমি বলছি।
হাসলাম।
দাদার সঙ্গে আমার ফোন থেকে কথা হলো।
রেকর্ডিং করেছিস।
না।
ছাগল। আমার শোনা হলো না।
যাঃ রেকর্ডিং করা যায়।
দাদা সব শোনার পর তেরে গালাগাল করলো নিরঞ্জনদাকে। বলেকিনা অনি যদি তোর সম্বন্ধে লেখে আমি ছাপবো। এজ এ এডিটর। তোর কি করার আছে কর। না হলে অনি যা বলবে শুনে যা। ও একটা পরিকল্পনা মাফিক এগোচ্ছে। আর তুইতো চুনো পুঁটি। তোর পার্টির অনেক রাঘববোয়াল ওকে খুব ভালোবাসে। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি।
হ্যাঁ দাদা ঠিক কথা বলেছে।
তুই এতো কানেকসন তৈরি করলি কি করে।
জেনে কি করবি।
আমারোতো একটু জানতে ইচ্ছে করে।
একটা সময় কোনো কাজ ছিলনা লেখা আর আড্ডামারা ছারা। তখন তুইও ছিলিনা যে একটু প্রেম করবো।
দেখ দেখ তুই কিরকম লাইট ভাবে কথাটা নিলি।
এটা সিরিয়াস ব্যাপার নয়।
তোর কাছে কোনটা সিরিয়াস কোনটা সিরিয়াস নয় বোঝা মুস্কিল। ইসলামভাই পর্যন্ত তোর ব্যাপার স্যাপারে ঘবড়ে যাচ্ছে।
এই মিটিংথেকে তুই কি শিখলি।
একটা ব্যাপার শিখলাম বুবুন ছাড়া আমার বাঁচার কোনো গতি নেই।
মিত্রা আমার বুকে মুখ রাখলো। জাপ্টে ধরলো।
আমাকে ছেড়ে কোনোদিন চলে যাবিনাতো।
যেতেপারি কিন্তু কেনো যাবো। কার কবিতার লাইন বলতো।
সুনীলের।
পরেছিস।
পরেছি কিন্তু বোধোগম্য হয়নি।
পরেনিস ভালো করে।
অনি। বড়মার গলা।
মিত্রা আমাকে ছেরে দিলো। আমি বারান্দায় গিয়ে বড়মাকে মুখ দেখালাম।
কিরে তোর হয়েগেছে।
অনেকক্ষণ। নিরঞ্জনদা।
তৈরি হচ্ছে।
তাড়াতাড়ি করতে বলো।
আয়।
যাচ্ছি।
আমি মিত্রা দুজনে নিচে নেমে এলাম। মিত্রা শাড়িটা আটপৌরে করে পরেছে। বেশ দেখতে লাগছে। ও এখন বেশ ঝকঝকে। আমরা দুজনে এবাড়িতে এলাম। দেখলাম বারান্দায় সবাই বসে আছে। নিরঞ্জনদা ইসলামভাই কথা বলছে। আমায় দেখে একগাল হেসে বললো। কাল দারুন ঘুমিয়েছিস।
তোমার ঘুম ভালো হয়নি।
তুই ঘুমোতে দিচ্ছিস কোথায়। খালি টেনসনে ফেলে দিচ্ছিস।
কেনো।
কাল আমি দিদিমনিকে তোর কাছে ছাড়তে গেছিলাম।
ডাকলেনা কেনো।
তুই যেভাবে ঘুমোচ্ছিলি মায়া হলো।
আমি ইসলামভাই-এর পাশে বসলাম। নিরঞ্জনদা আমার দিকে তাকিয়ে ফ্যাকাশে হাসি হাসলো।
মর্নিং স্যার।
আর মর্নিং মর্নিং করিসনা। চা খেয়েনিয়ে তাড়াতারি চল।
ইসলামভাই হো হো করে হেসে ফেললো।
বড়মা আমার পাসে এসে বসলো।
কি ম্যাডাম কাল সব শুনলে ভাই-এর কাছ থেকে।
শুনলাম।
বলুন আপনার হুকুম।
ছোটমা চা নিয়ে এলো। খামারে অনাদি আর চিকনার বাইক এসে দাঁড়ালো।
দাওনা ওর কানটা মূলে। ওই ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো।
আমি ছোটমার দিকে তাকালাম। হাসলাম।
হাসিসনা তোর হাসিটা দেখলে গা জ্বলে যায়।
আমার হাতে চায়ের কাপটা দিয়ে বললো। নাও চা গেলো।
আমি বড়মার দিকে তাকালাম। বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমাকে পড়ার চেষ্টা করছে।
তাকিয়ে আছো কেনো।
তুই কবে আসবি।
পর্শু রেজিস্ট্রি অফিসে দেখা হবে।
ওখানে গিয়ে আবার কি গন্ডগোল পাকাবি।
আমি চায়ের কাপটা রেখে বড়মার গলা জড়িয়ে ধরলাম।
অনিকে বিশ্বাস হয়না।
না।
কেনো।
তুই একটা পাগল। পাগলকে বিশ্বাস করাযায়।
তাহলে দাদাকে বিশ্বাস করলে কি করে।
তখন বয়সটা অনেক কম ছিল তাই।
এখন কমিয়ে ফেলো।
পারিনা যে।
তুমি যার জন্য চিন্তা করছো। তোমায় কথা দিচ্ছি তার গায়ে একটা আঁচড় পরবে না। যদি পরে দেখবে তার অবস্থা মলের মতো করে ছেড়ে দেবো। তখন অনি সত্যি পাগল হয়ে যাবে।
কথা দিচ্ছিস।
কথা দিলাম।
ঠিক।
তিন সত্যি।

নিরঞ্জনদা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
তুমি ভয় পাচ্ছ কেনো।
তুই জানিসনা আমার ওপর কি প্রেসার।
নেতা হবে প্রেসার উপভোগ করবেনা তা হয়।
তোর জন্য। একটু থেমে মুখটা ঘুরিয়ে। আমি এখানে না এলে ভালো হতো।
তোমাকে আমি আসতে বলিনি। বড়মা বলেছে। বড়মার সঙ্গে বুঝে নাও।
ইসলামভাই আবার হো হো করে হেসে ফেললো।
ছোটমা আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। মিত্রা মুখ ধুয়ে চায়েরকাপ নিয়ে এসে বসলো। ও চুপচাপ। ইসলামভাই-এর দিকে তাকিয়ে বললাম, তোমার সঙ্গে একটু কথা আছে। খামারে চলো।
এখানে বল। বড়মা বললো।
হাসলাম। এটা আমার আর ইসলামভাই-এর ব্যাপার। কেউ মাথা গলাতে পারবে না। আর গলালেও ঢুকবে না।
ইসলামভাই হাসছে।
আমি আর ইসলামভাই খামারে এলাম।
আমি রতনকে বলেদিয়েছি। তোর সঙ্গে দেখা করেনেবে।
রতনের ফোন নম্বর আমার কাছে নেই।
আমার পুরোনো নম্বরে ফোন করবি।
রতনেরটা দাও।
ইসলামভাই রতনের ফোন নম্বরদিলো। আমি আমার মোবাইলে সেভ করলাম।
আমার ফোন নম্বর রতনের কাছে আছে।
আছে। তোকে ও একটা ব্যাগ দেবে। নিয়ে আসবি।
ওখানকার লেটেস্ট নিউজ।
ফাস্টক্লাস। তোর কাজ। কোনো খুঁত নেই।
মুখার্জী কোনো খোঁজ খবর করেছিলো।
প্রথম দিন তারপর আর করেনি।
অবতারের খবর কি।
রতন বললো ও খুব ভয় পেয়ে গেছে। তোকে খুব খোঁজা খুঁজি করছে। তোর সঙ্গে দেখা করতে চায়।
কেনো ? তুমি কিছু বুঝতে পারছো।
তোকে জিজ্ঞাসা করবো ভেবেছিলাম। তুই যা ব্যস্ত।
ভিআইপি মানুষ।
ইসলামভাই আমার পেটে একটা গুঁতো মারলো।
কেনোরে।
মিঃ ব্যানার্জী ওর ঘারে ঝুলে পরেছে। বাঁচতে চায়।
ইসলামভাই-এর মুখটা কঠিন হয়ে গেলো।
তুই কি ভাবছিস।
আমি আগে এদিকটা সামলে নেবো। মলের শেষ পরিণতি কি হয় দেখবো। তারপর হাত দেবো।
আমি কালকে হাইকমান্ডে ফোন করেছিলাম।
কি বলছে।
এই ব্যাপারটায় ওরা খুব খুশি।
তুমি কোথায় জানতে চাইলো নাকি।
দেখলাম জানে। বললো খুব সেফটি জায়গা। ওখানে থাকো। নিরঞ্জনদার ব্যাপারটা শুনলাম।
তুমি কি বলো।
তোর জায়গায় তুই ঠিক আছিস। ওই সচিব ফেঁসেছে।
অনেক কামিয়েছে। নিরঞ্জনদার কে হয়।
মুখে বলছে কেউ নয়। তবে মনে হচ্ছে নিরঞ্জনদার খুব কাছের লোক। এক লবির হবে।
আজকে ওর প্যান্ট খুলবো যাই।
ওতো এমনিই তোকে ধসছে। একটা আন্ডার স্ট্যান্ডিং-এ যেতে চাইছে। ওকে মনে হয় ট্রান্সফার করবে।
তোমায় কে বললো।
হাইকমান্ড।
আমি আজ অনিমেষদার সঙ্গে কথা বলবো। কালকে খবর পাঠিয়েছি।
তোর লবি আমার থেকে স্ট্রং।
এইতো আবার গল্পদিলে।
ইসলামভাই আবার হো হো করে হেসে আমার পেটে খোঁচা মারলো।
পর্শু চলে যাবে রেজিস্ট্রি অফিসে। আমি সব বানিয়ে নিয়ে আসছি।
শোন আমি চল্লিশ আনাচ্ছি আর লাগলে বলেদে রতনকে বলেদিই।
আর দশের কথা বলেদাও। লাগলে যাওয়া আসা করছিতো নিয়ে আসা যাবে।
আমাকে কবে ছারবি।
তোমারকি না গেলেই নয়।
ঠিক তা নয়। তুই বললে কয়েকদিনের জন্য ঘুরে আসবো।

আমি যাই হালচাল বুঝি তারপর। দামিনী মাসিকে ফোন করেছিলে।
হ্যাঁ। ভজুর সঙ্গে কথা বলিয়ে দিয়েছি। দামিনী কেঁদে ফললো।
কি জীবন আছে বলোতো।
সত্যি অনি তোর সঙ্গে দেখা না হলে জীবনে অনেক ঘাটতি থেকে যেতো।
চলো।
আমরা চলে এলাম। বড়মা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে। মিত্রা হাসছে। বুঝলাম ওরা সারাক্ষণ আমাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে ছিল। ওদের চোখমুখ তাই বলছে।
চলো এবার বেরিয়ে পরি। নিরঞ্জনদার দিকে তাকিয়ে বললাম।
নিরঞ্জনদা হতাশার সুরে বললো চল। আজ তোর ওপর আমাকে নির্ভর করতে হবে। এখানে দিদির সামনে এক বলছিস। গিয়ে দেখবো তুই আর এক মূর্তি ধারন করেছিস।
আচ্ছা তোমার কত ক্ষমতা তুমি এখুনি একটা ফোন করলে আমাকে এখান থেকে পুলিশে এ্যারেস্ট করে নিয়ে চলে যাবে। মিথ্যে মামলায় ছ’মাস জেল খাটাবে।
সেতো বুঝলাম তারপর ছমাস বাদে যখন বেরোবি তখনতো আমার ষষ্ঠীপূজো করে ছেরে দিবি। তোকে বেশি ঘাঁটায়। যে ঘাঁটাবে সে মরবে।
মিত্রা হো হো করে হেসে ফেললো।
তুই হাসিসনা। যত নষ্টের গোড়া তুই।
বড়মা দেখছো। সব দোষ আমার ঘারে চাপিয়ে দিচ্ছে।
থাম তুই।
আমি বড়মা ছোটমা সবাইকে প্রণাম করলাম।
বড়মা আমার থুতনিটা ধরে চুমু খেলো। আমার সম্মানটা রাখিস।
হাসলাম।

গাড়িতে যেতে যেতে নিরঞ্জনদা আমার সঙ্গে একেবারেই কথা বলছে না। খালি জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। আর ফোনে কথা বলেচলেছে পার্টির লোক জনের সঙ্গে। সবাইকেই একটা কথা বলে দিচ্ছে আমি কলকাতা যাচ্ছি ফিরতে চার-পাঁচদিন সময় লাগবে। শেষে আমি বললাম।
কিগো তুমি কি আমার সঙ্গে কথা বলবেনা বলে ঠিক করেছো।
তুই কথা বলছিসনা তাই বলছিনা। তোকে বোঝা মুস্কিল।
দাদার সঙ্গে কথা হয়েছে।
হ্যাঁ কালকে রাতে বলেছি। সেতো তোর থেকে এককাঁটা ওপরে। উল্টে আমাকে ধমক দিলো।
কে ঠিক আমি না দাদা।
তোরা দুজনেই ঠিক আমি একমাত্র ভুল।
হাসলাম।
হাসিসনা তোদের দুজনের কথা শুনে আমার মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে।
আচ্ছা ভদ্রলোক তোমার কতটা কাছের।
আরে আমার আত্মীয়।
দাদা জানে।
না।
তাহলে।
তাহলে আবার কি জানলে আরো গালাগালি করবে।
ভদ্রলোকের ট্রান্সফারের অর্ডার হয়ে গেছে।
নিরঞ্জনদা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তুই এটা কি করলি।
আমি করিনি। অনিমেষদা করেছে।
নিরঞ্জনদার গালে কেউ যেনো একটা চর মারলো। থম মেরে কিছুক্ষণ বসে রইলো।
কিগো বলো কিছু।
কি বলবো। কি ভাবছে বলতো পার্টিতে। সকলে একটাই কথা বলবে আমি এর মধ্যে জড়িত।
ওই দায়িত্বটা আমার ওপরে ছেড়ে দাও।
তুই দায়িত্বটা নিবি।
অবশ্যই নেবো।
তুই বিশ্বাস কর আমি অনেকবার বারন করেছি শোনেনি। দাদা তোর কথা বলেছে। গা করিনি। তোকে প্রথম দেখার পর দাদাকে সব বলেছি।
পুরোনো কাসুন্দি ঘেঁটে লাভ নেই।
নারে বিশ্বাস কর। পার্টিতে অনেকেই জানে ও আমার আত্মীয়।
কিরকম আত্মীয়।
আমার বোনের হাজবেন্ড।
দাদা জানে।
না। আমার জন্যই ও ওখানে পৌঁছতে পেরেছে।
ভদ্রলোকের আরো দোষ আছে।
সেতো কালকে তুই বলার পর খোঁজ খবর নিতে শুরু করলাম। তখন সব পরিষ্কার হল। বোন বললো।
তোমার বোনের কপালটা খারাপ।
বোনের সঙ্গে আমার কপালটাও পুরলো।
তোমারটা পুরবেনা।
ভদ্রলোকের এ্যাগেনস্টে তদন্ত কমিশন গঠন হবে।
হোক। শালা মরুক। তারপর আমি বুঝবো। তুই আমাকে বাঁচা। পার্টিতে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যাবে। কালকে থেকে আমার অপনেন্ট লবি উঠে পরে লেগেছে।
তুমি নিশ্চিন্তে থাকো। আমি তোমায় কথা দিচ্ছি।
তোর কথায় আমি বিশ্বাস করিনা। তুই আরএক রাজনীতিবাজ ঝপ পাল্টি খেয়ে যাবি।
এইতো তুমি ফর্মায় ফিরে এসেছো। এতো হতাশ হলে পার্টি করবে কি করে।
তুই জানিস না অনি এতদিন আমি পার্টি করছি কেউ আমার সম্বন্ধে টেঁফুঁ করতে পারেনি। আজ ওটার জন্য আমাকে পথে বসে পরতে হবে। তাই তোকে নিয়ে যাচ্ছি। যদি তুই আর না লিখিস তাহলে ও হয়তো বেঁচে যাবে। যতোই হোক ওপরের দিকে থুতু ফেললে নিজের গায়ে পরে।
তোমার সঙ্গে অনিমেষদার আলাপ আছে।
মুখ চেনে নাম জানে সেইভাবে কথা হয়না। তোর কথা মতো ওরা বড়ভাই আমি ছোটোভাই ফুর্তি করি। কালকে তোর কথাটা শুনে খুব রাগ হয়েছিলো। তারপর ভেবে দেখলাম তুই টোটাল ব্যাপারের নির্যাসটা বলেছিস।
এবার বলো তুমি কি করতে চাও।
তুই যেভাবে বলবি করবো।
দাঁড়াও।
আমি ফোনটা হাতে নিয়ে অনিমেষদাকে ডায়াল করলাম। ভয়েজ অন করলাম। যাতে নিরঞ্জনদা শুনতে পারে।
হ্যালো।
দাদা আমি অনি। সুপ্রভাত।
বাবা খুব ফুর্তিতে আছিস মনে হচ্ছে। 
 
 
 
 
 
 
 
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks