দেখি নাই ফিরে - (Part-88)

এমা তুমি ভয় পাচ্ছ কেনো আমরাতো ঠিক আছি। মিত্রার গলা কানে এলো।
থাম তুই, তুইও তো দেখি অনির মতো ফর ফর করছিস।
বড়মার কথায় ডাক্তারদা হো হো করে হেসে ফেললো। হাসি একটা রোগ। সবাই হাসছে।
বড়মা বাঁকা চোখে একবার ডাক্তারদাদার দিকে তাকালো।
আমি বৌদির বুকে আশ্রয় নিলাম। আমার পিটে হাত বুলোচ্ছে বৌদি।
তুই যে মায়াবী আগে অনুভব করতাম, আজ চাক্ষুষ দেখলাম।
আমি বৌদির গালে গাল ঘোষলাম।
দেখলাম পিকু বাবু ছুটতে ছুটতে বাইরে এলো। ঠোঁটে দুধের দাগ। তারমানে দুধ খাচ্ছিলো।
আংকেল আজ নেমন্তন্ন খাবো না।
আমি বৌদিকে ছেড়ে ওকে কোলে তুলে নিলাম। ছোটমার দিকে তাকালাম।
তুইতো দুধ খেলি, আমাকে চা খেতে দে, তারপর নেমন্তন্ন খাবো।
ছোটমার কাছে গেলাম পিকু আমার কোল থেকে মিত্রার কোলে চলে গেলো। ছোটমার কাঁধটা ঝাঁকিয়ে বললাম, একটু চা দাও। আর পারছিনা।
ছোটমা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
দুজনে জড়ামরি করে বারান্দায় উঠে এলাম।
বুঝলে ছোটো এবার জামা কাপরটা ছাড়ি। কাল থেকে পরে আছি।
ছোটমা আমার দিকে ডাগর চোখে তাকালো।
বসার ঘরে এলাম। দেখলাম জ্যেঠিমনি থম মেরে বসে আছে। কালকের শেষটুকু জানেনি। আজ মনে হয় জেনেছে। আমাকে দেখে হাসলো।
একটু জল খাওয়াবে।
ছোটমা আমার মুখে হাত বুলিয়ে, রান্নাঘরের দিকে গেলো। দেখলাম দামিনী মাসি উঁকি দিয়ে একবার দেখে ভেতরে অদৃশ্য হয়ে গেলো। ঠোঁটে এক ঝলক হাঁসি।
আমি সোফাতে গা ছেড়ে দিয়েছি।
ছোটমা এক গ্লাস জল এনে দিলো। ঠোঁটে স্পর্শ করলাম।
কই অনি, অনি কই চেঁচাতে চেঁচাতে অনুপদা রূপায়ণদা নিরঞ্জনদা ইসলামভাই রতন আবিদ নেপলা চিকনা অনাদি ঢুকলো।
অনুপদা ছুটে এসে আমার পায়ের কাছে বসলো। কোলে মাথা রেখে ঝড় ঝড় করে কেঁদে ফেললো।
আমি গ্লাসটা ছোটমার হাতে দিলাম।
নিজেকে ভীষণ অপ্রস্তুত লাগছে। ওরা সবাই আমার দিকে তাকিয়ে।
এই অনুপ এ কি হচ্ছে। ছোটমা অনুপদার কাঁধে হাত রেখেছে।
না বৌদি না। ও আমাদের চাপগে চাপগে শিক্ষা দিচ্ছে কি ভাবে মানুষকে ভালোবাসতে হয়। ক্ষমতাটা শুধু দাঁপের নয়, ভালোবাসার জোড় তার থেকে অনেক বেশি।
ঠিক আছে, ওঠো ওঠো।
আ মোলো ওটা আবার ওখানে বসে বসে চোখের জল ফেলে কেনো। আমরা মেয়েছেলে কাঁদতে পারি, তোরা সব ব্যাটাছেলে, কাঁদিস কেনো।
অনুপদা আমার কোল থেকে মাথা তুললো মুখে কান্নাভেঁজা হাঁসি। সবাই ঘরে ঢুকেছে। দেখলাম সিংজীও এসেছেন। সবাই এলো। আমি উঠে দাঁড়ালাম।
মিলি টিনা এসে জড়িয়ে ধরলো। মুখটা শুকনো শুকনো।



কোথায় গেছিলে, দেখতে পেলাম না।
ওদের নীরুদার নার্সিংহোমে রেখে এলাম।
কেনো।
শরীরটা খারাপ হয়েছিলো।
কনিষ্ক কোথায়।
এখুনি এসে পরবে।
ওরা ভালো আছে।
হ্যাঁ। কনিষ্কদা বললো। অনেকটা রক্ত বেরিয়েছে। রক্ত দিতে হবে।
জোগাড় করতে পেরেছে।
হ্যাঁ।
আমি মোবাইলটা পকেট থেকে বার করলাম।
ওটা বার করছিস কেনো। চলে ?
বড়মা খের খের করে উঠলো।
বড়মার দিকে তাকিয়ে হাসলাম।
ওরকম গা জ্বালানো হাসি হাসিস না।
উঃ দিদি। ছোটমা বলে উঠলো।
থাম তুই। আজকে ওর পাল্লায় পরে মেয়েটাও মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে। দুটোতে মিলে যুক্তিকরে আমাদের মারার তালে রয়েছে।
জ্যেঠিমনি হো হো করে হেসে ফেললো।
আমি কি করবো, বুবুনতো বললো মোবাইল বন্ধ করে দে। আমি বন্ধ করে দিলাম।
সোহাগী আমার দেখো কেমন। খেতে বসিস পাশে, কান ধরে উঠিয়ে দেবো। বড়মা চিবিয়ে চিবিয়ে বললো।
সবাই হাসছে।
মিত্রা গিয়ে বড়মাকে জড়িয়ে ধরলো।
তুমি এরকম করলে চলে কি করে বলোতো।
রাখ তোদের চলন বলন। তিরিশটা বছর ধরে ঘর করছি, বাপের জম্মে এমন দেখি নি।
কি বান্ধবী তোমার প্রেসারটা একবার মাপবো।
রাখো তোমার ডাক্তারী।
আমি ঘরের বাইরে আসতে চাইলাম।
ওই দেখ ছোট ও বাইরে যাচ্ছে। আজ একপাও বেরোবি না বলেদিচ্ছি, তাহলে অনাসৃষ্টি হবে।
আচ্ছা আচ্ছা ও বেরোবে না। আমি কথা দিচ্ছি। অনিমেষদা বললো।
রাখো তোমার কথা। তোমাদের কারুর কথা ও শুনেছে। ও ওর নিজের মতো চলছে, কালকে ধরে যাকে ঠেঙালো আজ সকালে তাকে নিয়ে হাজির। তোমরা কেউ আগে থেকে জানতে পেরেছিলে।
বড়মা এক তরফা বলে গেলো। সবাই মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে।
বড়মার কথাটা যেনো আমার কানেই ঢোকে নি। এমনভাবে আমি বারান্দায় বেরিয়ে এলাম। মোবাইল থেকে কনিষ্ককে একটা ডায়াল করলাম।
মিত্রা এসে পাশে দাঁড়ালো। সঙ্গে ইশি মিলি টিনা।
কখন ফিরলি।
আধঘন্টা হলো।
খবর পেয়েছি। শোন মনার চোখটা একটু প্রবলেম হয়েছে। কয়েকদিন থাকতে হবে। অনিকেত কে পাঠিয়ে দিয়েছি ওর বাড়িতে খবর দিতে। বলেছি সামলে দিস।
পারবেতো।
পারবে।
আমাকে যেতে হবে।
না। বটা সেন স্যারকে ধরে আনতে গেছে।
কে শ্যামল সেন।
হ্যাঁ।
অপারেসন করতে হবে।
না মনে হয়। চোখের ভেতরে ব্লাড জমে গেছে।
দেখ চেষ্টা করে, খাটিয়া ছেলে। চোখ চলে গেলে খাবে কি।
তোকে চিন্তা করতে হবে না।
কখন আসবি।
ঘন্টা খানেক বাদে।
সোজা ওপরে চলে এলাম। নিজের ঘরে।
ফোনটা টেবিলে রাখলাম। মনটা খারাপ হয়ে গেলো। পাঞ্জাবীটা খুলতে গিয়ে দেখলাম। ঘরের দরজার সামনে পাঁচ মূর্তি হাজির। দাদা মল্লিকদা ইসলামভাই ডাক্তারদাদাও আছে।
খোল খোল কাল থেকে পরে আছিস। অনিমেষদা ভেতরে ঢুকলেন।
থাক পরে খুলবো।
তোকে ওদের জন্য চিন্তা করতে হবে না। ওদের খরচ পার্টি দেবে।
দাঁড়িয়ে রইলে কেনো বোসো।
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks