দেখি নাই ফিরে - (Part-45)

দে।
দাদার হাতে ফোনটা দিয়ে আমি বাইরে বেরিয়ে এলাম। হরিদা পেছন থেকে ডাকলো। ছোটোবাবু।
কিগো হরিদা।
হিমাংশু সাহেব অনেকক্ষণ এসেছে। দিদিমনির ঘরে বসিয়ে রেখেছি।
এমা আমাকে আগে বলবেতো।
তুমি ঘরের মধ্যে যা শুরু করেছিলে। দুবার গিয়ে ফিরে এসেছি।
চা দিয়েছো।
হ্যাঁ।
আমি মিত্রার ঘরের দিকে গেলাম। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই হিমাংশু উঠে দাঁড়ালো।
আবার কি হলো।
আর বলিসনা। সব শালা হারামী।
হিমাংশু মুচকি হাসলো।
আমি ওর পাশে বসে সংখেপে সব বললাম।
ও শুনে থ।
কালকেই রেজিষ্ট্রি করবো। সব ব্যবস্থা কর। আজ বিকেলে অফিসে একবার আয়।
তুইতো আমাকে মেরে দিবি।
কি করবো তুই বল।
সেও ঠিক মালিক হওয়ার পর নিঃশ্বাস নিতে পারছিস না।।
দাঁড়া। মিত্রার টেবিলের ফোনটা নিয়ে দাদার ঘরে ফোন করলাম।
হ্যালো।
দাদা নিরঞ্জনদার কাছে একটা দলিল আছে। হরিদাকে দিয়ে মিত্রার ঘরে পাঠিয়ে দাও।
ফোনটা রেখে দিলাম।

হরিদা কিছুক্ষণপর এলো। এই নাও।
হরিদা তোমার ছেলে কোথায়।
দাদা নিউজ রুমে ডিউটি দিয়েছে। বলেছে দিদিমনি এলে দিদিমনির ঘরে থাকবে।
তাই। তুমি খুশি।
হ্যাঁ ছোটবাবু। ছেলেটা একেবারে বকে যাচ্ছিল।
একবার কথা বলিয়ে দিও।
ঠিক আছে।
হরিদা চলে গেলো।
হিমাংশুকে সমস্ত পরিকল্পনার কথা বললাম।
তুই কি করতে যাচ্ছিস একবার ভেবে দেখেছিস।
আমি ভেবে চিন্তেই সব করছি।
এখানে আমার লোককে ফুল টাইম রাখতে হবে।
ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
তাই কর। না হলে আমার পক্ষে ম্যানেজকরা সম্ভব নয়।
বলছিতো তাই হবে। তুই এই দুটো আগে সাল্টা। বিকেলে একবার অফিসে আয়।
ঠিক আছে। এখন উঠি।
শোন স্টাম্পপেপার কিনে নে।
কতোটাকার কিনবো।
লাখখানেক টাকার। তোর আগের বিলগুলো পেয়ে গেছিস।
হ্যাঁ।
ঠিক আছে যা আমি কিছু কাজ সেরে নিই।
হিমাংশুকে ছেড়ে সোজা নিউজরুমে চলে এলাম। আমাকে দেখেই ঘরটা কেমন নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। সন্দীপ উঠে এলো। আর সেই ছেলে দুটো।
অনিদা শরীর খারাপ।
না।
তোমার মুখটা কেমন কেমন লাগছে।
আমি একটার পিঠ চাপরে বললাম, সব সময় অনিদার মুখটা ঝকঝকে থাকবে তা হয়। চেষ্টা করি। হয়না।
চা নিয়ে আসবো।
খাওয়াবি।
তোমাকে চা খাওয়াবো এটা সৌভাগ্যের ব্যাপার।
যা বলে আয়।
ছুটে চলেগেলো।
সন্দীপকে নিয়ে আমার টেবিলে এসে বসলাম। সন্দীপ বুঝলো জরুরি কথা আছে।
বল।
আমি পর্শুদিন ব্যাক করে যাবো। আমার সঙ্গে দাদা মল্লিকদা যাবে। কাগজ সামলাতে পারবি।
এই কাজ।
সন্দীপ এমন ভাবে কথা বললো যেনো কিছুই না। সাতদিন আগেও সন্দীপ কিছু বলতে গেলে সাতবার ভাবতো। আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।
তাকিয়ে আছিস কেনো। বিশ্বাস হচ্ছেনা।
হাসলাম।
আমি কথা দিচ্ছি। তোর ওই দুটো পোলা যদি থাকে আমার কাউকে দরকার নেই।
তৈরি করে নিয়েছিস।
কাজের ব্যাপারে দারুন সিরিয়াস। এরি মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে লেগে গেছে।
কেনো।
ওরা রিপোর্টিংয়ে ভুল ধরে।
হাসলাম।
সলিড মাল।
চা এলো।
কিরে তোরা ঝগড়া করছিস সিনিয়ারদের সঙ্গে।
সন্দীপদা বলেছে।
হাসলাম।
সন্দীপকে বললাম জলের বোতলটা এগিয়ে দে।
ছেলাটা এগিয়ে দিলো।
ঢক ঢক করে কিছুটা জল খেলাম।
চায়ে চুমুক দিলাম।
দুদিনের কাগজের খবর কি।
হট কেকে। নো রিটার্ন।
কালকেরটা বেরোতে দে।
বেরোতে দে মানে। এতোক্ষণে ছাপা হয়ে বাইরের কাগজ চলে গেছে।
ফলোআপ করে যাচ্ছিস।
তোর চেলা দুটো এঁটুলে পোকার মতো লেগে আছে। নাম ফাটছে না।
হরিদা এসে দাঁড়ালো। দাদাবাবু ডাকছে।
কেনো।
কোথায় যাবার আছে উনি ফোন করেছেন।
যাও যাচ্ছি।
সন্দীপের সঙ্গে কথা শেষ করে দাদার ঘরে এলাম।
অনিমেষ ফোন করেছিলো।
তুমি কথা বলেছো।
হ্যাঁ। আমাদের জন্য তাড়াতাড়ি চলে এসেছে।
চলো বেরিয়ে পরি।
মল্লিকদার মুখটা খুশি খুশি দেখাচ্ছে। এতোক্ষণ একটা বিষ কালো মেঘে মুখটা ঢেকে রেখেছিলো। আমাকে দেখেই হেসে মুখটা নীচু করলো। বুঝলাম ছোটমা বড়মার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হয়েছে।
এইনে তোর ফোন।
দাদার হাত থেকে ফোনটা নিলাম।
অফিসের গাড়িতে যাওয়া যাবেনা। ট্যাক্সিকরে যেতে হবে।
অমিতাভদা আমার মুখের দিকে তাকালো।
আমরা বেরিয়ে এলাম।
নীচে রিসেপসনিস্ট ম্যাডাম উঠে দাঁড়িয়ে মাথা নীচু করে নিলেন। আমরা বাইরে এলাম। নিরঞ্জনদার ড্রাইভার এগিয়ে এলো। নিরঞ্জনদা ওনাকে এখানেই অপেক্ষা করতে বললেন। সিকুরিটির ছেলেটিকে বললাম একটা ট্যাক্সি ডেকে আন।
ছেলেটি একটা ট্যাক্সি নিয়ে এলো। ইসমাইল এগিয়ে এসে বললো ছোটদা আমি যাবো না।
হাসলাম।
দিদিমনি কেমন আছে।
ভালো।
তোর ছেলে কেমন আছে।
এখন একটু ভালো।
আমি ফিরে আসছি একবার দেখা করিস।
আচ্ছা।
ট্যাক্সি আসতে আমরা তিনজন উঠে বসলাম। আমি অলি গলির মধ্যে দিয়ে ট্যাক্সি নিয়ে অনিমেষদার বাড়ি পৌঁছলাম। দাদা আমার ওপর গজ গজ করছে। কলকাতা শহরে আর কি কোনো রাস্তা নেই। তুই কি আমাদের রাস্তা চেনাচ্ছিস। আমি চুপচাপ। ট্যাক্সি ড্রাইভার আমার ওপর বিরক্ত হচ্ছে। মুখে কিছু বলতে পারছে না। অনিমেষদার বাড়ির সামনে এসে ট্যাক্সি ছেড়েদিলাম।
পকেট থেকে ফোনটা বার করে রতনকে একটা ফোন করলাম।
অনিদা বলো।
আমাক আর পাহারা দিতে হবে না।
উঃ তুমি ধরে ফেলেছো।
কেনো অলি গলি দিয়ে ট্যাক্সি করে এলাম বুঝতে পারলিনা।
দাদা আজ তোমার পেছন ছারতে বারন করেছে।
আমি তোকে বলছি তুই যা। এখান থেকে যখন বেরোবো তোকে জানাবো। খাওয়া দাওয়া করেছিস।
হ্যাঁ দাদা। তোর সঙ্গে যারা আছে। তাদের খাওয়া দাওয়া হয়েছে।
হ্যাঁ।
ওটাকে কোথায় তুললি।
আমাদের হোটেলে।
কাগজপত্র সব নিয়ে এসেছে।
আবিদ দেখে নিয়েছে। ব্যাটা সব নিয়ে আসতে চাইছিল না। আবিদ ওর আলমাড়ির সব কাগজ নিয়ে চলে এসেছে। এক ট্র্যাঙ্ক।
করেছিস কি তোরা।
তোমার কোনটা দরকার কি করে জানবো।
ঠিক আছে তুই এখন যা।
আচ্ছা দাদা।
দাদার দিকে তাকালাম। দাদা একবার চলতে চলতে থেমে আমার দিকে তাকালো। নিরঞ্জনদা দেখছে। মল্লিকদা মুচকি হাসছে।
দাঁড়ালে কেনো চলো।
তোকে দেখছি।
দেখে লাভ নেই। বাঁচতে গেলে এসব করতে হবে। মালিক বানিয়েছো।
দাদা মাথা নীচু করে আমার পাশে পাশে হাঁটছে।
দোতলায় উঠে বেল বাজাতেই কাজের মেয়েটি দরজা খুললো।



আয় ভেতরে আয় তারপর তোর পিঠ ভাঙছি। অনেক বড় রাইটার হয়ে গেছিস। বৌদির গলা।
এখন পিঠ ভেঙোনা আমার সঙ্গে অনেকে আছে। জুতো খুলতে খুলতে বললাম।
ভেতরে ঢুকে বৌদিকে প্রণাম করলাম। আমার পেছন পেছন সবাই ঢুকলো। আমি ছাড়া এই বাড়িতে সবাই প্রথম এলেন। দাদার সঙ্গে অনিমেষদার পরিচয় আছে। এই পর্যন্ত। কাজের তাগিদে পরিচয়। সব কাগজের এডিটরের সঙ্গেই অনিমেষদার পরিচয় আছে। আমি দাদার সঙ্গে নিরঞ্জনদার সঙ্গে মল্লিকদার সঙ্গে বৌদির পরিচয় করিয়ে দিলাম। দাদা ঘরের ভেতর ছিলেন বেরিয়ে এলেন।
তাহলে তুই এলি।
কেনো সন্দেহ ছিলো।
তুই এখন কাগজের মালিক। কোটি কোটি টাকা তোর। আমার মতো নগণ্য মানুষকে পাত্তা দিবিকিনা সন্দেহ ছিলো।
বৌদি আমি আসি যেদিন কাগজের মালিক থাকবোনা সেদিন আসবো।
এ জম্মে হবে না। তুই যে ভাবে পাকে পাকে জড়াচ্ছিস।
মাথা নীচু করলাম।
চলুন দাদা আমরা ভেতরে যাই। ও এখানে থাকুক।
দাদার সবাই অনিমেষদার সঙ্গে ভেতরে চলে গেলো। ছোটো ম্যাডাম কোথায় ?
কলেজে। এসে পরলো বলে।
কি রান্না করেছো।
মন্ডা মিঠাই।
তাহলে খাবো না।
তোর জন্য স্পেশাল রান্না আছে। আলুপোস্ত ডাল ছাড়া তো কিছু খাস না।
কে দেবে বলো। এখন তবু বড়মার কাছে থাকি।
বিয়ে করছিস কবে।
তোমাকে সব বলবো।
তারমানে করা হয়ে গেছে।
আমার আবার বিয়ে।
কেনো মিত্রাকে পেয়েছিসতো।
পেয়েছি। এই যা।
বৌদির পেছন পেছন রান্না ঘরে এলাম।
তোর দাদার মুখ থেকে কিছু কিছু শুনি। কালকে তোর লেখাটা পরে বলেছি। এই বার অনির কলমের ধার অনেকটা কমে যাবে।
না বৌদি তা হতে দেবোনা। তুমি দেখবে।
হলেই ভালো।
কি করবে।
খাবার গুলো একটু গরম করি।
তুমি সরো আমি করে দিচ্ছি।
না তোকে এখন কিছু করতে হবে না। তুইকি এখন সেই অনি আছিস। বিজনেস ম্যাগনেট বলে কথা।
তুমিও বলবে।
আচ্ছা বাবা বলবো না।
সুরো কখন আসবে।
ওর বাবা ফোন করেছিলো। বললো অনিদা আসবে আমি বেরোচ্ছি।
চলো জায়গা করে নিই খিদে পেয়েছে।
কাকলী।
বৌদির ডাকে কাজের মেয়েটি রান্নাঘরের সামনে এলো।
জায়গা করেছিস।
হ্যাঁ।
আমি গিয়ে ডেকে আনি তুমি ব্যবস্থা করো। সবাই একসঙ্গে বসবো।
যা।

আমি ঘরে এলাম। ঘরের আবহাওয়া বলছে বেশ জটিল আলোচনা চলছে। সবার মুখচোখ তাই বলছে। অনিমেষদা আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো। আসুন স্যার।
এইভাবে বললে আর আসবোনা।
তোকে আসতে হবেই। তোর থেকে আমার ক্ষমতা বেশি।
দরকার নেই ছেড়েছুরে পালিয়ে যাবো।
পারতিস। যদি বাঁধা না পরতিস।
একথা বলছো কেনো।
দাদার মুখ থেকে সব শুনলাম বলে।
ও শোনা হয়েগেছে।
দেখ আমি বলিনি অনিমেষ খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করলো তাই বললাম।
তোমার দ্বারা কিছু হবেনা। তুমি খোঁচাও দেখি কিছু পাওকিনা।
অনিমেষদা হো হো করে হেসে ফেললো।
চলো টেবিলে বসে গল্প হবে। ওদিকে সব রেডি।
ওরা সবাই উঠে এলো। বেসিনে হাতধুয়ে সবাই টেবিলে বসলো। বৌদি একে একে সবাইকে খেতে দিলেন। আমার পাশের চেয়ারে বৌদি বসেছেন। কাজের মেয়েটিকে বললেন আমি সব দিয়ে দিয়েদিচ্ছি তারপর যার যা লাগবে তুই দিস।
মেয়েটি ঘার নেরে পাশে দাঁড়ালো।
আমরা খাওয়া শুরু করলাম।
বুঝলে মঞ্জু অনিবাবু বিয়ে করেছেন। অনিমেষদা বললো।
আঁ। বৌদি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।
কিরে তুই যে এখুনি বললি আমার কপালে কি ওই সব লেখা আছে।
তারপর কি বলেছি তোমায় সময়করে সব বলবো।
তোর দাদার মতো এখানেও রাজনীতি।
দাদা মল্লিকদা মুচকি মুচকি হাসছেন। নিরঞ্জনদা গম্ভীর।
আরো আছে।
বাবু আরো অনেক কীর্তি করেছেন। পরে তোমায় বলবো। এখানে এসে মাস দেড়েক আগে তোমায় বলেছিলোনা বৌদি এবার আমার অনেক কাজ। বাবু সেগুলো সেরে ফেলেছেন। আমার কাছে জাস্ট পারমিসন নিতে এসেছেন। সঙ্গে তিন সাক্ষী।
কিরে তোর পেটে পেটে এতো। তুই কি সাংঘাতিক। তুইতো তোর দাদার থেকে এককাঁটা ওপরে।
এককাঁটা কম বললে দশকাঁটা ওপরে।
একবারে হ্যাঁ বলবেনা।
সেখানে আবার একটা পেঁচ মেরে রেখেছে। আমার পার্টির স্বার্থ লুকিয়ে আছে। না বলতে পারবোনা।
উরি বাবা।
তবে অনির দম আছে। একা লড়ছে। সংঘবদ্ধ ভাবে নয়। ওর একার ক্ষমতা। জীবনটা অনেক বেশি দেখেছে কিনা।
আমি শোনার পর হ্যাঁ বলবে। আগে ওর বৌকে নিয়ে আসবে তারপর।
বৌতো ওর মালকিন।
মিত্রা!
হ্যাঁ।
তাহলে ঠিক আছে।
ব্যাশ গলে গেলে।
যাঃ ওই ভাবে বলোনা। ওতো বলেছিলো।
দাদা মল্লিকদার দিকে চোরাচাহুনি মেরে তাকালাম। দুজনেই খুব মজা পাচ্ছে। একজন অন্ততঃ পক্ষে আছে যে অনিকে চমকাতে পারে।
অনিমেষদার ফোন এলো। ধরে বললেন মিটিং ৪টের সময় আমি তার পনেরো মিনিট আগে পৌঁছে যাবো।
কিরে তুই কিছু নিবিনা।
না পেট ভরে গেছে।
কেনো।
এত কথা শুনলাম দাঁড়াও আগে হজম করি।
তাহলে যে বড় বড় কথা বলিস। গ্রামের ছেলে বিড়াল ডিঙবে না।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললো।
বাইরে বেল বেজে উঠলো। কাজের মেয়েটি এগিয়ে গিয়ে দরজা খুললো।
সুরঞ্জনা ঝড়ের মতো ঘরে ঢুকেই ব্যাগটা কোনোপ্রকারে রেখেই আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
অনিদা ফার্স্টক্লাস কেউ রুখতে পারবেনা।
সত্যি।
তোমার নোট।
তাই।
ডঃ রায় কি বললো জানো। দশ বছর আগে এইরকম নোট পরেছিলাম।
তুই বলিসনিতো।
পাগল। তাহলে আমার দর কমে যাবেনা।
দেখ কিরকম গুরু মারা বিদ্যে শিখেছে। বৌদি বললো।
তোমার কথা ডঃ রায় এখনো আমাদের বলেন। গত দশবছরে কলেজ থেকে একটাও ফার্স্টক্লাস বেরোয়নি।
তুই পেয়ে দেখিয়ে দে।
পাবই। তোমার সব নোট জলবততরলং।
বৌদি অনিমেষদা হো হো করে হেসে ফেললো।
তোমার কাগজে একটা লেখার সুযোগ দেবে।
ওই যে এডিটর সাহেব বসে আছেন।
উনি অমিতাভ চক্রবর্তী!
সুরঞ্জনা ছুটে গিয়ে দাদাকে প্রণাম করলো মল্লিকদাকে নিরঞ্জনদাকে।
অনিমেষদা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
বাবা হাসছে কেনোগো অনিদা।
বাবাকে জিজ্ঞাসা কর।
দাঁড়াওনা আগে তোমার মতো হই। তারপর বাবার পার্টির পর্দা ফাঁস করবো।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললো।
অনিমেষদা হাসতে হাসতে বলে উঠলো অনি তাহলে একটা চেলা তৈরি করলো।
একটা কিগো অনিমেষ, অফিসেও দুটো চেলা তৈরি করেছে। একবারে জমপেশ। দাদা বললো।
তাইনাকি।
আর বলো কেনো।
অনিদা তুমি আমাকে তৈরি করোতো।
ঠিকআছে কালকে থেকে লেগে পর।
অমিতাভ জেঠুতো পাত্তাই দিলো না।
ঠিক আছে মালিক হুকুম করবে এডিটরকে। তোর লেখা ছাপা হবেই।
আবার সবাই হেসে উঠলো।
কলি আমার ভাতের থালা নিয়ে আয়। মা তুমি সরে বসো। আমি অনিদার পাশে বসবো।
সুরঞ্জনা একটা চেয়ার টেনে নিয়ে আমার পাশে বসলো।
আজ আমার পাত ফাঁকা।
তোর অনিদা বিয়ে করেছে। বৌদি বললো।
উঁ হুঁ হুঁ অনিদা এটা কি করলে।
তুই বিশ্বাস কর।
ভেবেছিলাম তোমার বিয়েতে জমপেশ করে সেজে বরযাত্রী যাবো।
আচ্ছা আমি বিয়ে করবো তুই জানতে পারবিনা তা হয়।
মা বললো যে।
মিথ্যে কথা। তুই বিশ্বাস করিস।

তোর মিত্রাদিকে।
কিগো।
আবার পাগলামো করে।
মিত্রাদি এখন কোথায়গো।
লুকিয়ে রেখেছি।
কেনো!
বাবাকে জিজ্ঞাসা কর।
বাবা আমার সঙ্গে কথাই বলেনা।
তুই এককাজ কর বাবাকে নিয়ে একটা আর্টিকেল লেখ আমি এডিট করে তোর আমার জয়েন্টনামে লিখবো।
বুঝেছি তুমি আমাকে টুকছো।
এইতো ভালো কথা বললাম ওমনি টোকা হয়ে গেলো।
কলি মাছের ঝোল দে।
উঃ কানে তালা ধরিয়ে দিলি।
আমি বৌদির পাতের দিকে জুল জুল করে তাকালাম।
মায়ের পাতের দিকে তাকাবেনা। ওটা আমার।
কতদিন বাদে এলাম তুই এরকম করিসনা।
না একবারে না।
ঠিক আছে বাকি নোটগুলো মাইনাস।
হাফ হাফ।
ভাগকর।
অনিমেষদা একবার মুখ তুলে তাকিয়ে ফিক করে হেসে ফেললো।
খাওয়া শেষের পথে।
অনিমেষদা একটা ঢেঁকুর তুলে বললো, তাহলে মঞ্জু হ্যাঁ বলেদিই।
আমি অনিমেষদার দিকে মুখ তুলে তাকালাম। মুচকি মুচকি হাসছি।
বলেদাও এই শেষবার। আর নয়। এরপর বৌকে নিয়ে এলে কাজ হবে। নাহলে হবে না।
কিগো আনিদা মা কি কথা বললো।
উঃ ওটা মায়ের কথা। আমি তোকে পাকা কথা বলেছি। তোর জমপেশ করে সাজার ব্যবস্থা করছি। একটু অপেক্ষা কর।
মনে থাকে যেনো।
দাদারা সকলে উঠলেন। অনিমেষদা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, একবার আয় তোর সঙ্গে একটু কথা আছে।
যাও যাচ্ছি।
আবার কবে আসবি।
দিন পনেরোর মধ্যে হবেনা। বড়মারা ওখানে আছে। এদিকটা একটু সামলে নিই তারপর।
তুই কতদিন পর এলি মনে আছে।
হ্যাঁ। মাস দুয়েক পর।
খাওয়ার পর্ব সাঙ্গ হলো। বেসিনে মুখ ধুয়ে ঘরে এলাম। দাদা আমাকে দেখে বললেন ওই ঘরে যা আমি যাচ্ছি। আমি দাদার বেডরুমে চলে এলাম। সুরঞ্জনা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে। বেশ দেখতে হয়েছে সুরঞ্জনাকে। সেই ইউনিভার্সিটি লাইফ থেকে ওদের বাড়িতে আসা যাওয়া শুরু তখন ও ক্লাস সেভেনের ছাত্রী। আজ অনার্স ফাইন্যাল ইয়ার। যেনো মনে হচ্ছে এই সেদিনের কথা।
অনিদা।
বল।
মিত্রাদিকে দেখতে এখন কেমন হয়েছে।
যেমন ছিলো তেমনি আছে।
একটুও বদলায়নি।
না। সেরকম দেখছি নাতো।
মানি বাইরে যা অনির সঙ্গে একটু কথা বলি।
সুরঞ্জনা আলমাড়ির সামনে থেকে সরে গিয়ে বাইরে চলে গেলো। মুখে ব্যাজার ভাব।

অনিমেষদা আমার পাশে এসে বসলেন। তোর কথা অমিতাভদার মুখ থেকে শুনলাম।
আমি মাথা নীচু করে আছি।
তুই নিরঞ্জনকে মন্ত্রী বানাতে চাস।
আমি অনিমেষদার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।
বলনা তোর মনের কথা।
তুমি যা বললে তা ভাবিনি বললে মিথ্যে বলা হবে।
ও অনেক গন্ডগোল করে বসে আছে।
জানি।
পার্টিতে ওর কিছু খারাপ দিকের কাগজপত্র জমা পরেছে।
তাহলে।
আমি ওকে কথা দিইনি তবে চেষ্টা করবো বলেছি। বিধানের সঙ্গে কথা বলি আগে।
আমি যেগুলো ওখানে করতে চাই শুনেছো।
এতো তোর বহুদিনকার স্বপ্ন। কর। সবরকম সাহায্য পাবি। জমির ব্যাপারটা নিরঞ্জনকে বলেছি। ওদের জেলার মিটিংয়ে কথা বলে আমাকে জানাতে।
তুমি আমাকে মাস ছয়েক সময়দাও আমি শুধরে দেবো।
জানিসতো সব। নতুনকরে তোকে কি বলবো। ওর অপনেন্টরা হ্যাঁ করে বসেছিলো এতোদিন। এখন বিধানের কাছে প্রত্যেকদিন ফোন করছে।
আমি তাহলে একটা আর্টিক্যাল ঝেড়েদিই।
আবার কি আছে তোর কাছে!
যারা বেশি বারাবাড়ি করছে তাদের।
তুই এখন থাম একটা আগে সামলে নিই তারপর। তোকে একটা কাজ করতে হবে।
বলো।
তোদের জেলায় বাই ইলেকসন আছে পাঁচটা সিটে। আগামী মাস দুয়েকের মধ্যে হবে।
আমায় কি করতে হবে।
ইসলামকে একবার আমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দে। বিধান সব আমার ঘারে ঠেলে দিচ্ছে। সেদিন বললো তোমার সঙ্গে অনির ভালো রিলেসন। অনিকে বলো।
আমাকে দিন সাতেক সময়দাও।
সে তুই সময়নে। কাজটা করতে হবে।
আর।
কিছু টাকা পাঠা। ইলেকসনের খরচ বাবদ।
কতো বলো।
তোর যা মন চায়।
ইসলামভাইকে বলি ওই পাঁচটা ও কভার করে দিক।
একা পারবে।
পারবে। আমি ওর দম জানি।
দেখ হলে ভালো হয়। আমাকে একটু জানাস।
পর্শুরাতে তোমায় ফোন করবো।
ঠিক আছে।
মিঃ ব্যানার্জীকে কি করবো।
যা ডিসিসন নিয়েছিস এতে আমার বলার কিছু নেই। সাবধানে পা ফেলিস। কোথাও কোনো ফাঁক রাখিস না।
সে বিদ্যেটা তোমার কাছ থেকে রপ্ত করে নিয়েছি।
তোর বৌদির তোকে নিয়ে বড্ড ভয়। বারে বারে আমায় বলে বয়সটা কম। তুমি ওকে বারন করো।
আমি তোমায় কথা দিচ্ছি আমার জন্য তোমার মথা হেঁট হবেনা।
আব্দুলকে আমি বলে রাখছি তোর জমির ব্যাপারে। দপ্তরটা ওর।
তুমি বলো প্রয়োজনে আমি দেখা করবো।
টাকা পাবি কোথায়।
প্রোজেক্ট রেডি করতে করতে বছর তিনেক লাগবে। তোমাদের ইলেকসন চলে আসবে। সেই সময় কাজে লাগাবো।
ছকটা ভালো কষেছিস।
হাসলাম।
চল আমার আবার মিটিং আছে যেতে হবে।

আমরা সবাই বেরিয়ে এলাম। বৌদির মনটা একটু খারাপ হলো। আসার সময় বললাম আমায় সাতদিন সয়ম দাও আবার আসছি।
নিচে নেমে এসে দাদাকে বললাম তোমরা অফিসে যাও। আমি একটু কাজ সেরে যাচ্ছি। রাতে তাড়াতাড়ি ফিরবে। সেই ভাবে কাজ গোছাও। আমার মোবাইল বন্ধ থাকবে। ফোন করবে না। দাদা আমার দিকে তাকালো।
দাদারা একটা ট্যাক্সি ধরে অফিসের দিকে গেলো। আমি একটা ট্যাক্সি ধরে ফ্ল্যাটের দিকে চললাম। ঝিমলিকে ফোন করলাম।
অনিদা! কোথায় তুমি।
তোমার চিঠি আজ পরলাম।
তোমায় অনেকদিন আগে লিখেছি।
জানি। কলকাতায় ছিলাম না। তুমি কোথায়।
চ্যাট করছি।
আসতে পারবে।
তুমি ডাকলে যাবোনা তা হয়।
আমার ফ্ল্যাটে চলে এসো। ঘন্টা দুয়েক তোমায় সময় দিতে পারবো।
ঠিক আছে চলে আসছি।
এসো।
ফোনটা কেটে দিলাম।
ফ্ল্যাটে যখন পৌঁছলাম তখন মোবাইলের ঘরিতে পৌনে চারটে বাজে। রতনকে একটা ফোন করলাম।
বলো দাদা।
খবরকি।
সব ঠিক আছে।
বসের সঙ্গে কথা বলেছিস।
মিনিট পনেরো আগে কথা হয়েছে।
ওদিককার খবর।
মালটা হোটেলে শুয়ে আছে।
ঠিক আছে। তোকে আমি ছটার সময় ফোন করবো। তুই এখন কোথায়।
চায়ের দোকানে।
ফোনটা কেটে দিলাম।
ফ্ল্যাটের দরজা খুললাম।
একটা ভেপসানি গন্ধ নাকে এসে লাগলো। অনেকদিন আসা হয়নি। জানলা দরজা খুললাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই গন্ধটা চলেগেলো। ঝিমলি আমার এই ফ্ল্যাটে কখনো আসেনি। প্রথম আসবে। ঘরটা দেখে নিজেরি খারাপ লাগলো। খাটটা একটু গুছিয়ে নিলাম। একটা পরিষ্কার চাদর আলমাড়ি থেকে বার করে পাতলাম। হিমাংশুকে একটা ফোন করলাম।
বল।
রেডি করেছিস।
করছি।
শোন একট্রাঙ্ক কাগজ নিয়ে এসেছে।
হিমাংশু হো হো করে হেসে ফেললো।
কি করবি।
সব স্টাম্প পেপারে সাইন করিয়ে ছেরেদে। তারপর নিজের মতো করে গুছিয়ে নেবো।
না এতটা অসৎ হবোনা আমার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু নেবো।
তাহলে সতী হ।

সে তুই যা বলিস। তুই বরং ড্রাফগুলো সব রেডি করেনে ল্যাপটপ আর প্রিন্টারটা নিয়ে নে। রেজিস্ট্রার ম্যাডামকে ডেকে নিবি। আমার বাড়িতে সব কাজ হবে।
ঠিক আছে তাই হবে।
আমি বাড়িতে গিয়ে তোকে ফোন করবো। তুই তোর স্টাফেদের নিয়ে সাতটা নাগাদ চলে আয়।
আচ্ছা।
প্যান্ট-গেঞ্জি খুলে একটা পাজামা পাঞ্জাবী পরলাম। বাথরুমে সর্বাঙ্গে জল ঢেলে ভালো করে ফ্রেস হলাম। ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে। জানলার পাল্লাগুলো বন্ধ করলাম। আলমাড়ি খুলে তন্ত্রের বইটা বার করলাম। সুরঞ্জনার নোটগুলো বার করে একটা ব্যাগের মধ্যে ঢোকালাম। আমার এ্যালবামটা ঢোকালাম। বেলটা বেজে উঠলো। দরজার লক খুলতেই ঝিমলি ফিক করে হেসে ফেললো।
ঝিমলি খুব সাধারণ কিন্তু আসাধারণ লুক। একঝলক তাকিয়েই একটু সরে দাঁড়ালাম।
আসতে আসুবিধে হয়নি।
সেলিব্রিটিদের খুঁজতে অসুবিধে হয়না।
ঝিমলি ভেতরে এলো। একটা মেরুনকালারের সর্ট শালোয়াড় পরেছে। দুমাস আগের দেখা ঝিমলির সঙ্গে কোন পার্থক্য খুঁজে পেলাম না। বরং একটু স্লিম হয়েছে মনে হচ্ছে।
দরজা লক করলাম।
ব্যাচেলার্স কোয়ার্টার অসুবিধে হলে বলবে।
বাবাঃ যেনো অপরিচিত কেউ।
এই ফ্ল্যাটে অপরিচিত।
তোমার সঙ্গে পারবো না।
চা না কফি।
কে করবে।
আমি।
তুমি।
হ্যাঁ। বিশ্বাস হচ্ছেনা।
তুমি পারো।
অফকোর্স।
ঝিমলি খাটে পা ঝুলিয়ে বসলো।
আমি রান্নাঘরে গিয়ে গ্যাস জালালাম। মিল্কমেডের কৌটটা খুলে আগে শুঁকলাম। ভালো আছে কিনা। লাস্ট তনুকে কফি করে খাইয়েছিলাম। তারপর ফ্ল্যাটে এলেও রান্নাঘরে ঢোকা হয়নি। দেখলাম ঠিক আছে। কফির শিসি দেখলাম। একটু জমে জমে এসেছে। ও ঠিক আছে গরম দুধে গুললে গোলে যাবে। কপাল ভালো দেখলাম দুটো চিপসের প্যাকেট ইনট্যাক্ট পরে আছে। আমি সব রেডি করতে আরম্ভ করলাম।
ঝিমলি এসে রান্নাঘরের সামনে দাঁড়ালো। বসো যাচ্ছি।
এখানে দাঁড়ালে অসুবিধে আছে।
একটুও না। ভাইজ্যাক কবে যাচ্ছ।
আগামী সপ্তাহে।
কি নিয়ে স্টাডি করবে চিন্তা করেছো।
পেড্রিয়েটিক।
শুনেছি সার্জারি ডাক্তারদের দাম বেশি পয়সাও প্রচুর।
আমার পয়সার দরকার নেই, শিশুদের মনস্তত্ব ভীষণ জটিল। আমার ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে। পেয়েগেলাম। তাই অন্যদিকে আর তাকালামনা।
আমি দুধ গুললাম।
তোমার লেখা পরলাম। চারিদিকে হই হই ফেলে দিয়েছো।
কিরকম।
যেখানেই যাচ্ছি তোমার লেখা নিয়ে আলোচনা। বন্ধু-বান্ধবদের তোমার কথা বললেই কেমন বাঁকা চোকে দেখে।
হাসলাম।

সত্যি। সবাই ভাবে আমি গুল মারছি।
কফি রেডি করে ফেললাম। ট্রের ওপর রাখা দুটো কাপে কফি ঢাললাম।
দাও আমি নিয়ে যাই।
তুমি চিপসের প্যাকেট দুটো নাও।
ঝিমলি চিপসের প্যাকেট দুটো নিয়ে আমার পেছন পেছন এলো। কফির ট্রেটা মাঝখানে রেখে দুজনে দুপাশে বসলাম। চিপসের প্যাকেট ছিঁড়ে কফি খেতে শুরু করলাম।
তোমাকে কতদিন পর দেখলাম। একবার ফোন করতে পারতে। এটলিস্ট একটা ম্যাসেজ।
ভাইজ্যাক থেকে ফেরার পর আমার ওপর দিয়ে একটা ঝড় চলছে। এখনো সেই ঝড় থামেনি।
আমি কিছু কিছু জানি মায়ের মুখ থেকে শুনেছি।
কি শুনেছো।
তুমি কাগজের মালিক হয়েছো।
ভুল শুনেছো।
আমাকে অন্ততঃ মিথ্যে কথা বলোনা।
হাসলাম।
যা শুনেছি সত্যি।
আমি মাথা নীচু করলাম।
ঝিমলি তড়াক করে লাফিয়ে উঠে আমাকে জাপ্টে ধরলো। বিছানায় শুইয়ে ফেলে আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলো।
আরে ছাড়ো ছাড়ো।
কেনো আমাকে মিথ্যে কথা বললে। বলো।
এটাকি একটা বলার বিষয়।
তোমার কাছে কোনটা বলার বিষয় বলোতো।
কফির কাপ উল্টে পরে যাবে।
যাক। কতদিন তোমার ঠোঁটদুটো চুষিনি। উঁ উঁ উঁ উঁ উঁ উঁ উঁ উঁ উঁ।
আমি কোনোপ্রকারে ঠোঁট সরিয়ে বললাম কফিটা খেয়ে নাও আগে।
পরে খাবো।
তাহলে সরিয়ে রাখো এটলিস্ট।
কাপে আছে নাকি।
যতটুকু আছে।
তুমি একবারে উঠবেনা।
হাসলাম।
ঝিমলি উঠে কফির ট্রেটা নিচে নামিয়ে রাখলো। তারপর আমার বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পরলো।
উরিবাবা আমার বুক ফেটে যাবে।
ফাটুক।
আমি ঝিমলির চোখের দিকে চোখ রাখলাম। বোঝার চেষ্টা করলাম কাগজের মালিক হওয়ার খবর যদি রাখে তাহলে নিশ্চই মিত্রার খবর রাখবে। ওর মা তথ্য জনসংযোগ দপ্তরের অধিকর্তা। এই খবর গুলো তাদের কাছে আগাম পৌঁছে যায়।
কি দেখছো।
দু’মাস আগের দেখা ঝিমলির সঙ্গে দু’মাস পরের দেখা ঝিমলির অমিল খোঁজার চেষ্টা করছি।
কি বুঝছো।
দু’মাস আগের দেখা ঝিমলি একটু মুটিয়ে ছিলো। এখন একটু স্লিম।
সত্যি তোমার চোখ অনিদা।
কেনো।
আমার জিমে যাওয়া সার্থক।
তুমি আজকাল জিমে যাও নাকি।
মাস দেড়েক হলো যাচ্ছি। ওয়েট বেরে গেছিলো।
কিহয় ওখানে।
পাঞ্জাবীটা খোলোনা।
হাসলাম।
খোলাইতো ভেতরে কিছু পরা নেই।
না তুমি খোলো।
আগে তুমি খোলো।
ঝিমলি আমার পেটের ওপর উঠে বসে শালোয়াড়টা খুলে খাটের একপাশে ছুঁড়ে ফলেদিয়ে বুকের ওপর আছড়ে পরলো।
আমার গালের দুপাশে হাত রেখে চকাত চকাত করে আমার ঠোঁটটা চুষতে শুরু করলো। ওর তীব্র চোষণে আমার সারাটা শরীর আড়মোঢ়া ভেঙে জেগে উঠলো। আস্তে আস্তে আমার হাতটা ওর পিঠের ওপর চলে গেলো। প্রথমেই ব্রার ফিতেটা আলগা করে দিলাম।
ঝিমলি আমার ঠোঁট থেকে ঠোঁট তুললো। মুচকি মুচকি হাসলো।
ঘুম ভাঙলো।
আমি চোখের ইশারায় হুঁ বললাম।
এবার এটা খোলো। আমার পাঞ্জাবীটা ধরে দেখালো।
আমি একটু উঠে পাঞ্জাবীটা খুলে ফেললাম। ঝিমলির বুক থেকে ব্রা খসে পরলো।
ফিক করে হেসে ফেললো।
ঝিমলির বুকের দিকে তাকালাম। এখনো সেই রকম টাইট। একটুও ঝুলে পরে নি। আপেল বাগান। আমি স্পর্শ করলাম। ঝিমলির চোখের রং বদলে গেলো। নিপিলে জিভ দিলাম। ঝিমলি আমার মাথাটা জাপ্টে ধরে বুকের মধ্যে ঠেসে ধরলো।
তোমার দুধের ভারে আমার দম বন্ধ হয়ে যাবে।
যাক। কতদিন পর করছি যানো।
কতদিন।
সেই ভাইজ্যাকে লাস্ট।
তোমার বয়ফ্রেন্ড।
সব শালা ধ্বজ ভঙ্গ।
হেসে ফেললাম।
তোমার সঙ্গে যারা একবার সেক্স করবে তাদের অন্য পুরুষের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কষ্ট আছে।
কেনো।
বলতে পারবো না।
জামা কাপর পরেই কি সেক্স হবে।
দাঁড়াওনা খুলছি।
ঝিমলি আবার আমার ঠোঁট চুষতে শুরু করলো। আমি ওর কামিজের ওপর দিয়েই হাল্কা করে ওর পাছু টিপলাম।
তর সইছেনা না।
হাসলাম।
দাঁড়াও খুলছি।
ঝিমলি আমার বুক থেকে উঠে খাটের ওপর দাঁড়িয়ে পরলো। আমি ওর বুকের দিকে তাকিয়ে আছি। বেশ লাগছে।
তাকাবে না। তোমার চোখটা বরো খারাপ।
ঝিমলি ওর কামিজের ফাঁস খুললো। কোমর থেকে কামিজটা খসে পরলো। বাসন্তী কালারের একটা পেন্টি পরেছে। শুধু মাত্র ওর পুশিটুকু ঢাকা। আমি তাকিয়ে আছি। ঝিমলি বিছানায় ধপ করে বসে আমার পাজামার ফাঁসটা আলগা করলো। তারপর বুকে চলে এলো।
আঃ কি শান্তি।
আমি ঝিমলিকে জাপ্টে ধরে আছি। ওর নরম বুক আমার বুকের সঙ্গে লেপ্টে আছে। ঝিমলির গরম নিঃশ্বাস আমার ঘারের কাছে ঘন হয়ে আসছে।
ঝিমলি।
উঁ।
মা জানে তুমি আমার কাছে এসেছো।
হ্যাঁ।

তোমার মায়ের সঙ্গে আলাপ করা হয়নি।
কবে যাবে বলো। সবাই খুব আনন্দ পাবে। মা প্রায় তোমার কথা বলে।
কেনো।
তোমাকে সবাই খুব ভালোবাসে।
একটা মানুষ আমাকে দেখলোনা আমাকে ভালোবাসবে কি করে।
আমার কাছ থেকে তোমার কথা শুনে।
আমি মানুষটা ভালো নয়।
কে বলেছে।
এই যে তোমার সঙ্গে গোপনে সেক্স করছি।
তুমিতো রেপ করছোনা। সেক্স করছো। সেক্স করতে গেলে দুজনের সম্মতি থাকা দরকার।
আমি ঝিমলির গালের দুইপাশে হাত দিয়ে ওর তুলতুলে নরম ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম। ঝিমলি আবেশে চোখ বন্ধ করলো। ওর সুডৌল পাছা আমার খোকার ওপর চাপ দিচ্ছে। তারও ঘুম ভাঙছে। আমি ঝিমলির বুকে হাত দিলাম। নিপিলটা সামান্য শক্ত হয়েছে। ঝিমলি কিছুতেই আমার ঠোঁট ছাড়তে চাইছে না। বেশিক্ষণ সময় দাওয়া যাবেনা। ছ’টার মধ্যে আমাকে বাড়িতে পৌঁছতে হবেই। আমি ঝিমলিকে জাপ্টে ধরে ঘুরে শুলাম। ঝিমলি এখন আমার বুকের তলায়। চোখ বন্ধ।
আমি ঝিমলির ফুলবাগানে হানা দিলাম। ফুলের মধু খাওয়ার জন্য। নিপিলদুটো বেশ ফুলে ফুলে উঠেছে। আমি মন দিয়ে চুষতে শুরু করলাম। একটা হাত ওর পেন্টির ভেতর দিয়ে পুশিতে রাখলাম। বুঝতে পারলাম একবারে পরিষ্কার। সামান্য ভিঁজে ভিঁজে। আমি ওর পুশির মটরদানায় আঙুল ছোঁয়ালাম। ঝিমলির মুখ থেকে আঃ শব্দ বেরিয়ে এলো। আমি ওর বুক থেকে মুখ না তুলেই আর একটা ফুলে মধু খাওয়া শুরু করলাম। আজ ঝিমলি মজা নিয়ে যাচ্ছে। চোখ বন্ধ। গাল দুটো আপেলের মতো লালা হয়েছে। ওর গমের মতো গায়ের রংয়ে টোল পরেছে।
অনিদা আমি একটু মুখ দিই।
ঝিমলি চোখ খুললো।

আমি ওর চোখের দিকে তাকালাম। সামান্য ঘোলাটে। আবেশে ঢুলু ঢুলু। ওকে বুকর সঙ্গে জাপ্টে ধরে উঠে বসালাম। আমার পাজামাটা কোমর থেকে খসে পরেছে। আমি ঝিমলির পেন্টিটা কোমর থেকে টেনে নামালাম। ঝিমলি আমার পাজামা খুললো। আমার সোনায় হাত দিয়েই ঝিমলি ফিক করে হেসে ফেললো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি। কার্ল করা চুলের দুএকটা কপালের সঙ্গে লেপ্টে রয়েছে। আমি ওর মুখটা চেপে ধরে ঠোঁটে চুমু খেলাম ঝিমলি আমার সোনামনির সঙ্গে খেলা করছে। জামাটা টেনে খোলার চেষ্টা করছে। আমি হাঁটু মুড়ে বসে ঝিমলির ঠোঁট চুষছি। ঝিমলি দুপা আমার দুপাশে ছড়িয়ে দিয়েছে। ওর পুশিটা কেমন হাঁ করে আছে।
আমার ঠোঁট থেকে ঠোঁট সরিয়ে নীচু হয়ে আমার সোনমনিকে চুমু খেলে। জিভটা বার করে সোনামনির জামার বোতাম খুলে ঠোঁটে চুমু দিলো। শরাটা শরীর সির সির করে উঠলো। ঝিমলি আস্তে আস্তে ঠোঁট দিয়ে সোনামনিকে চাপ দিচ্ছে আর জিভ দিয়ে সোনামনির ঠোঁট চাটছে।
আমি ঝিমলির ছড়ানো পিঠে হাত রাখলাম। কোমরের শেষ প্রান্তে ওর পাছুটা তানপুরার মতো। আমি ওর মুখ থেকে সোনামনিকে মুক্ত করলাম। ওর মুখ তুলে ধরলাম। ঝিমলি হাসছে।
তোমরটায় একটু মুখ দিই।
ঝিমলি চোখের ইশারায় সম্মতি দিলো।
আমি ঝিমলিকে চিত করে শুইয়ে ওর পুশির কাছে মুখ নিয়ে এলাম। ঝিমলি পাদুটো দুপাশে ছড়িয়ে দিলো। আমি জিভ দিলাম। ওর পুশির নরম তুলতুলে ঠোঁটদুটো কেঁপে কেঁপে উঠলো। আমি বেশ কিছুক্ষণ জিভ দেওয়ার পর ঝমলি বললো, তোমরাটা একটু আমার দিকে দাও।
আমি ঝিমলির পুশি থেক মুখ তুলে হাসলাম। আমার সোনামনিকে ওর মুখের কাছে পৌঁছে দিয়ে আবার ঝিমলির পুশিতে জিভ দিলাম।
বেশ কিছুক্ষণ এই খেলায় আমরা মনোনিবেশ করলাম। ঝিমলি আমার সোনামনিকে তীব্র ভাবে চুষে চলেছে। বুঝতে পারছি আমার যাদুদন্ড এখন তার জায়গা খুঁজে নেওয়ার জন্য রাগে গড় গড় করছে।
আমি ঝিমলির মুখ থেকে সোনামনিকে মুক্ত করেই ঝিমলির মুখের দিকে তাকালাম। ঝিমলি মুচক মুচকি হাসছে।
পাদুটো দুপাশে ছড়িয়ে আমাকে আহ্বান করলো ওর পুশিকে স্পর্শ করার জন্য।
আমি হাঁটু মুড়ে বসলাম। ওর পুশি হাঁকরে আমার সোনামনিকে ডাকছে। আমি আস্তে আস্তে ওর পুশির মুখে আমার সোনামনিকে রাখলাম। ঝিমলির দিকে তাকালাম। ঝিমলি ভ্রুকুঁচকে ইশারা করলো, দাও। আমি একটু চাপ দিলাম। ঝিমলি মুখ থেকে কোনো শব্দ করলো না। কিন্তু ওর মুখের রং বদলে গেলো। সামান্য লেগেছে বুঝতে পারলাম।
আবার চাপ দিলাম। 
 
 
 
 
 
 
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks