দেখি নাই ফিরে - (Part-33)

বড়মা আমাকে ধরে বললো দাঁড়া পাটা বড্ডো ধরে গেছে। ভজু বড়মার পায়ের কাছে বসে পরলো, একটু ঝাড়াঝাড়ি করে টিপে দিলো, বড়মা আমার কাঁধে হাত দিয়ে আস্তে আস্তে হেঁটে ভেতরে এলো, আমরা সবাই একটা কেবিনে বসলাম, ভজু বললো, অনিদা আমি খাটে, ভজুর সাথে সাথে রবিনও বললো।
আমরা সবাই বসলাম। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো, বুবুন আলুপরটা, চিকেন ফ্রাই, মটর পণির।
ইসলামভাই ছোটমার দিকে তাকালো, ইশারায় কি কথা হলো। ইসলামভাই বুঝেছে আমার চোখ এড়ায় নি।
বড়মা তোমারটা বলো।
কিরে ছোটো সবার জন্যই এক থাকুক।
ছোটোমা মাথা দোলালো।
আমি ইসলামভাই-এর দিকে তাকালাম।
আমার কোনো ফ্যাসিনেসন নেই ছোটোম্যাডাম যা বললো তাই বলে দে।
ছেলেটাকে ডেকে বলে দিলাম একটু তাড়াতাড়ি করিস ভাই।
আচ্ছা।
ফোনটা অন করলাম, পর পর অনেক গুলো মিস কল দেখলাম। দেখলাম মিঃ ব্যানার্জীও তার মধ্যে আছে, আমার পাশে বড়মা বসে আছে, কনুইয়ের গোঁতা মারলাম, মিঃ ব্যানার্জীর নম্বরটা দেখালাম, বড়মার চোখে বিস্ময়, সব নিস্তব্ধে হয়ে গেলো। ইসলামভাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মুচকি হাসলো।
আমি সন্দীপকে ফোন করলাম।
লেটেস্ট নিউজ বল।
সব কাজ সেরে সবে মাত্র অফিসে ঢুকলাম।
দাদা কোথায়।
দাদা দাদার ঘরে, মল্লিকদা মল্লিকদার টেবিলে।
তুই কোথায়।
প্রচুর খিদে পেয়েছিলো, ক্যান্টিনে এসেছি।
ছেলেগুলো।
পাশেই আছে।
ঠিকঠাক কাজ করেছে।
তোর চোখ আছে অনি।
আমি ভয়েজ অন করলাম রেকর্ডিং চালু করলাম।
ছোটো করে ডিটেলস দে।
তোর কথা মতো সব কাজ হলো। একটা খারাপ খবর আছে।
বল।
শালা মরেও মরেনি, মরলে ভালো হোতো।
ইসলামভাই আমার দিকে তাকিয়ে গোগ্রাসে গিলছে।
ছোটো না বড়।
বড়।
কেনো
চেষ্টা করেছিলো, মুখার্জী চালু, হাত ধরে ফেলেছে, উডল্যান্ডে নিয়ে গেছে। মাছি গলতে পারবে না।
বেঁচে আছে।
লাস্ট আপডেট মুখার্জী বলছে বাঁচালাম বটে, ডাক্তার কোনো গ্যারেন্টি দিচ্ছে না।
কোমা না অজ্ঞান।
সেটা মুখার্জী বলে নি, তুই ফোন করে জেনে নে, তোকেই একমাত্র বলবে।
ঠিক আছে, লেখাটা গোছা আমি ফোন করবো।
ফোনটা কেটে দিলাম, খাবার এলো, ইসলামভাই-এর দিকে তাকালাম, ইসলামভাই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
খাওয়া শুরু করলাম।
মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো।
সব খেতে পারবি তো।
আমি আমার মতো খাবো, তুই খা না।
তোর তো অনেক খিদে আমার থেকেও।
তোর খাওয়া আমার খাওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। দেখছো বড়মা, তুমি কিছু বলো।
আচ্ছা আচ্ছা তুই খা।
বড়মা আমার দিকে তাকালো, এবার কি করবি।
কিচ্ছু না, আমাকে কিছু করতে হবে না, মুখার্জী তার প্রয়োজন মতো ওকে রাখবে।
তোর কি মনে হচ্ছে।
ভেন্টিলেসনে রেখেছে।
তুই বুঝলি কি করে।
সন্দীপকে বলে নি আমি জানি। এখানে বসেই বলছি, মুখার্জীর ফাইল তৈরি হয়ে গেলেই, ভেন্টিলেসন খুলে দেবে। দেখলে না সন্দীপ কি বললো, মাছি গলতে পারবে না। ম্যাক্সিমাম সাত দিন।

এমনকি বড়মা তোমায় একটা কথা বলে রাখছি এ্যাডভান্স, তুমি মিলিয়ে নিও, ইসলামভাইযে আমার সঙ্গে আছে এটাও মুখার্জীর কাছে খবর আছে।
সে কি রে।
তুমি বলবে, তা সত্বেও তুই ইসলামভাইকে নিয়ে এলি কেনো।
কলকাতায় থাকলে ও এই মুহূর্তে সেফ্টি নয়, জিজ্ঞাসা কর ইসলামভাইকে আমি বলেছি কিনা।
বড়মা ইসলামভাই-এর দিকে তাকালো, ইসলামভাই মাথা নীচু করে বসে আছে।
ইসলামভাই-এর নেটওয়ার্ক থেকে ওদের নেটওয়ার্ক আরো বেশি স্ট্রং। আমি দুটো নেটওয়ার্ক দেখিছি, তাই আমার নেটওয়ার্ক আরো বেশি স্ট্রং হওয়া উচিত।
বড়মা আমার কথা শুনে থ।
তুমি বলছো আমি কি করে অবলীলায় তোমায় গল্পের মতো এসব বলছি।
হ্যাঁ।
আমি দাবা খেলি, দাবার বোর্ডে ৬৪ ঘর। আমি একটা চাল দিয়ে ৫০টা পরের চাল মনে রাখতে পারি, আমার অপনেন্ট কি চাল দিলে আমি কি চাল দেবো, মানে ১০০ চাল আমায় মনে রাখতে হয়, ইসলামভাই ৩২টা পারে মুখার্জী ৪০টার বেশি পারে না। তাই এদের থেকে আমি এগিয়ে। কিন্তু এইটা ভেবো না, আমি মিঃ মুখার্জী বা ইসলামভাইকে ছোটো করছি। আজকের চালটা আমি ঘোড়ার চাল দিয়েছি, একটা ঘোড়া একটা ঘরে বসে আটটাঘর বল্ক করে রাখে। আমি আমার দুটো ঘোড়া দিয়েই ১৬ ঘর বেঁধে রেখেছি, এরপর গজ, নৌকা তো আছেই ওগুলো হাতের পাঁচ। আমি আজ তাই করেছি।
একি বলছিস অনি, ইসলামভাই কখনো এরকম ভাবে না।
আমি জানি। জানি বলেই তোমার সামনে বড়মা ছোটমাকে বলছি। ছোটমা তোমার নাম শুনেছে, দেখেনি, তুমি যে ছোটোমার ভাই সেটাও আজ কাছে এলো।
বড়মা ফ্যাল ফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, মিত্রার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ছোটমার চোখ স্থির।
মল তার স্টেটমেন্টে ইসলামভাই-এর নাম জড়াবে। অবশ্য যদি জ্ঞান থাকে, তাই ওকে খোঁজা খুঁজি হবে, আমার সঙ্গে থাকলে ওকে ধরা অতো সহজ হবে না। ইসলামভাইকে আমার কাছে রেখে মিঃ মুখার্জীকে একটা বার্তাই পৌঁছে দেওয়া, ইসলামভাই এখন আমার পকেটে আছে, আমার পকেটে তুমি হাত দিও না, বেশি নরাচড়া করলে তোমারও বিপদ আছে, তোমাকে যেমন সোহাগ করছি, শাসনও করতে জানি।
বড়মা আমার মাথায় হাত রাখলেন।
ভাবছ নাকটিপলে দুধ পরে একটা বাচ্চা ছেলে এরকম পাকা পাকা কথা বলছে কি করে।
কি যেন বড়মা দারিদ্রতা, অভাবের কোনো জাত নেই ধর্ম নেই, আমার একটা প্রিয়েড এরকম কেটেছে, তখন আমি দারিদ্রতার আগুনে পুরে অভাবের কাঠকয়লা তৈরি হয়ে গেছিলাম, কিন্তু দেখো আমার সব ছিলো, কোনো অভিভাবক ছিল না। সেই অভিজ্ঞতা গুলো এখন কাজে লাগাচ্ছি।
এরপর তুমি বলবে, ওরা কি তোর কোনো ড্র ব্যাক জানে না, জানে একটাই ড্রব্যাক, আমার এই পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই, বছর খানেক পরে ওরা জানবে আমার কিছু রিলেসন তৈরি হয়েছে, এবার তাদের ওরা ডিস্টার্ব করবে, আমাকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করবে, যেমন তুমি ছোটোমা মিত্রা এখন এই মুহূর্তে আমার কাছের লোক, তোমাদের ওপর ওদের নজর পরেছে।



তুই মাথায় রাখিস অনি তোর কথা যদি সত্যি হয় তাহলে ইসলামভাই-এর থেকে হিংস্র আর কেউ হবে না।
এটা তোমার রাগের কথা ইসলামভাই।
কেনো বলছিস।
ওরা গেজ করছে তারপর একটু নারা চারা দেবে। তুমি বলোতো ইসলামভাই তুমি যার সঙ্গে টক্কর নিতে যাবে তার ক্ষমতা কতটা তুমি মেপে নেবে না।
অবশ্যই।
তুমি মলের সঙ্গে টক্কর নিতে পারো নি, কমপ্রমাইজ করেছো, এতে তোমার কিন্তু ক্ষতি হয়েছে, হয়নি।
হ্যাঁ তা হয়েছে।
আমি কমপ্রমাইজ করিনি, তোমার কাছে কতোদিন আমি গেছি।
সাতদিন।
এরপরও তোমার মনে হয় নি, আমি একটা আঘাত করতে পারি মলকে, এবং মল সেটা মেনে নিতে বাধ্য।
শেষদিন সেটা বুঝেছিলাম।
কেনো তুমি প্রথম দিন বুঝতে পারোনি।
সেদিন তোকে এতোটা সিরিয়াস দেখি নি।
দেখো ইসলামভাই আজ বলছি, আমি প্রথমদিনও সিরিয়াস ছিলাম, শেষদিনও সিরিয়াস থেকেছি। তখন হয়তো আমার উগ্রতা আমার চোখে মুখে ফুটে বেরোচ্ছিল তাই তুমি ধরতে পেরেছিলে তাই না।
হ্যাঁ।
আমি এখন আইনের জটিল ব্যাপারগুলো নিয়ে একটু পড়াশুনো করছি, তোমাদের তিনজনকে সেফ্টি রাখার জন্য, ওটা সংবিধান স্বীকৃত, রাষ্ট্রপতি পযর্ন্ত মানতে তা বাধ্য।
কিরকম।
একটা উদাহরণ দিচ্ছি তোমায়, বুঝেনিতে হবে তোমাদের আমার নেক্সট পদক্ষেপ। ইসলামভাই তুমিও শোনো মন দিয়ে, অনেক ছুটেছো সারা জীবন, বয়স হয়েছে, ক্লান্তি আসবে, এখন তোমার থিতু হওয়ার সময়।
বল।
ধরো ভজু তোমার বাড়িতে এখন সারাক্ষণ আছে, মানে ২৪ ঘন্টা, তোমার দেখভাল করে ও। তোমার দায় অদায়ে ও তোমার নিত্য সঙ্গী, আর আমি আদার ব্যাপারী, তোমার কাছে যাই, কিছুক্ষণ সময় কাটাই, তোমায় বড়মা বড়মা বলি, তুমি আমায় খেতে পরতে দাও, বেশ এই পযর্ন্ত তারপর চলে যাই। তোমাকে আমি খুন করবো, আমার একটা শাস্তি হবে, আবার ভজু তোমায় খুন করবে তার একটা শাস্তি হবে। বল কি শাস্তি হতে পারে আমার আর ভজুর।
মৃত্যু দন্ড কিংবা যবজ্জীবন।
ইসলামভাই তুমি।
দিদি যা বলল তাই।
মিত্রা তুই।
বলতে পারবো না।
ছোটোমা।
তোর কথা এতো গভীর আমার বোধোগম্য হচ্ছে না।
আমার যাবজ্জীবন হবে, ভজুর মৃত্যুদন্ড।
কেনো।
দুজনে একই কাজ করেছে শাস্তি আলাদা আলাদা কেনো।
হ্যাঁ।
এটাই আইন, তারও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা আছে।
কি রকম।

ভজু তোমার কাছে, মানে দাদা তোমায় ভজুর কাছে রেখে নিশ্চিন্ত। তার জিনিষ ভজুর কাছে ঠিকঠাক গচ্ছিত আছে, এই বিশ্বাসটুকু সে অর্জন করতে পেরেছে বলেই, দাদা ভজুকে তোমার কাছে রেখেছে। এখানে ভজুর খুনটা দেখা হবে, রক্ষক যখন ভক্ষক তার পানিশমেন্ট মৃত্যু দন্ড, আর আমার সঙ্গে তোমার রিলেসন আছে ঠিক কিন্তু আমি ততটা গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি নই ভজুর মতো, তাই তার পানিশমেন্ট যাবজ্জীবন।
ইসলামভাই চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলো।
অনি এতদিন তোকে আমি আন্ডার এস্টিমেট করেছিলাম, ভাবতাম তুই পরালেখা করা ছেলে, আমাদের লাইনের ঘাঁত ঘুঁত তুই বুঝিস না, তুই সাংবাদিক আমার কাছে সংবাদ সংগ্রহ করতে আসিস, এখন দেখছি তুই আগুন, তোর আগুনে পুরে মরতেও ভালো লাগছে।
মুন্না ওকে ছাড় তোর দশাসই চেহারার মধ্যে ওর রোগা পেঁটকা শরীর ঢাকা পরে গেছে, ওর দম বন্ধ হয়ে যাবে। ছোটোমা বললেন।
সত্যি তাই, ইসলামভাই আমাকে আবেগের বশে এমন জাপ্টে ধরেছিল আমার প্রায় দম বন্ধ হয়ে যাবার দশা।
আমি কিছুক্ষণ খাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করলাম। সবাই চুপচাপ।
তার ওপর কি জানো বড়মা মিত্রা আমাকে ফোঁকটসে একটা সিলমোহর উপহার দিয়েছে। মালিক।
শয়তান। দেখছো বড়মা, এই সিরিয়াস কথার মধ্যেও ও কিরকম আমায় টিজ করছে।
উঃ তুই কি ওকে খোঁচা না দিয়ে থাকতে পারিস না।
আমার জীবনের সবচেয়ে বড় মিত্র, আবার বড় শত্রুও।
বলবি না। জানো বড়মা কলেজ লাইফে নোট লিখে দিয়ে আমার কাছ থেকে দুটাকা করে গেঁড়াতো।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললো।
ছোটোমা বিষম খেলো।
সেখান থেকেই তুই শুরু করেছিস, আরো বলবো তোর গুণকীর্তন, নুন দেওয়ার তো জায়গা রাখিস নি, এখনোতো সব বলিনি, আমি শত্রু হবো নাতো কে হবে।
ইসলামভাই না পারছে হাঁসতে, না পারছে কিছু বলতে, ছোটমার বিষম থামলো, জলের গ্লাসে মুখ দিলো।
বাবাঃ তোর কি রাগের শরীর।
আবার খোঁচা দিচ্ছিস। ছোটমা বললো।
আচ্ছা খা মন দিয়ে খা। আইস্ক্রীম বলি।
বল প্লীজ বল। এরপর আইসক্রীমটা খেলে বেশ ভালো জমবে।
ঠিক আছে খেয়ে নে বলছি।
আমার বলার ধরনে ইসলামভাই এবার হেঁসে ফেললো। ইসলামভাই-এর হাঁসির চোটে ছোটো কেবিনটা গম গম করে উঠলো। বড়মাও হাঁসছে, ছোটোমাও হাসছে।
শয়তান, দাঁড়কাক, মেনিবিড়াল।
সেটা কি রে।
এই নামেই তো ওকে কলেজে সবাই ডাকতো।
আইসক্রীম বন্ধ।
না না এরকম কোরিস না, আর বোলবো না।
সবাই হাসছে।
কেবিনের দরজা ঠেলে নিরঞ্জনবাবু ঢুকলেন, বাবাঃ এতো দেখছি জোর মজলিশ বসিয়েছো।
বড়মা বললেন থাম কথা বলিস না, এখানে এসে বসে পর।
নিরঞ্জনবাবু বসলেন।
কি করে জানলি আমরা এখানে।
বাইরে একখানা জব্বর গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছো, গায়ে লেখা প্রেস। তারপর এদের জিজ্ঞাসা করলাম। বলে দিলো।
একটা ছেলে এসে বললো, স্যার আপনার জন্য।
না কিছু লাগবে না।
কেনো।
পান্তা খেয়ে বেরিয়েছি।
মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে।
হাসছিস কেনো রে মিত্রা।
দেখলেনা কিরকম কম কম খেলো, আমাকে বললো তুই খা না খা, বাড়িতে গিয়ে পান্তা গিলবে, তুই কি ভাবছিস একা খাবি, আমিও খাবো।

কচুপোরা।
দেখিস তোকেও খেতে দেবো না। চিংড়িমাছের টক দিয়ে ওঃ বড়মা কি বলবো তোমায়। জিভ দিয়ে টকাস করে আওয়াজ করলো মিত্রা।
মিত্রার রকম সকম দেখে সবাই হেসে খিল খিল।
এই চলছে তখন থেকে। বুঝলি নিরঞ্জন তাই এতো হাসি।
সত্যি দিদি তুমি তোমার ছেলে মেয়েদুটিকে ভালো পেয়েছো।
কি দাদা নতুন অতিথিকে ঠাহর করতে পারছো না। তাই না।
সত্যি অনি তোর চোখ।
আমার ফ্রেন্ড ফিলোজফার গাইড, মুন্নাভাই। থাকেন বোম্বাই, তিনটে জাহাজ আছে। মিডিলইস্ট থেকে তেল আনে খালি। মুন্নাভাই ইনি হচ্ছেন নিরঞ্জনবাবু, এই জেলার সভাধিপতি, বলতে পারো মুখ্যমন্ত্রী।
যাঃ কি বলিস তুই।
কি খাবে বলো, ঠান্ডা না গরম।
আমি আনাচ্ছি।
ও সব ব্যাপার অন্য জায়গায়, তুমি এখন আমাদের গেস্ট, আমরা যা বোলবো তাই।
তোরা কি খাবি।
মিত্রা বাদে সবাই গরম। তাই তো।
আমি ঠান্ডা গরম দুটোই খাবো।
বড়মা হাসতে হাসতে বললো, সত্যি মিত্রা তুই পারিস।
খরচ ওর, খাবোনা কেনো, ও যে কি হার কিপ্টা জানো না, হাত দিয়ে জল গলে না।
আবার সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
মিত্রা দুটোই খেলো, তবে গরম খেয়ে ঠান্ডাটা হাতে নিয়ে নিলো, আমরা কফি খেয়ে সবাই বেরিয়ে এলাম। বড়মাকে বললাম, তুমি মিত্রা ছোটোমা নিরঞ্জনদার গাড়িতে ওঠো দেখছি টাটাসুমো নিয়ে এসেছে। আমরা এই গাড়িতে উঠি। কি নিরঞ্জনদা অসুবিধে আছে নাকি।
একেবারে না, অনেক দিন গল্পকরা হয় নি দিদির সঙ্গে, গল্প করা যাবে।
আর একটা ফাউ দিলাম, মালকিন।
বড়মা তুমি কিছু বলবে না, আগে ওর কান ধরো।
আচ্ছা আচ্ছা ধোরবো।
আমরা আমাদের মতো গাড়িতে উঠলাম। বড়মারা নিরঞ্জনদার গাড়িতে। গাড়ি চলতে শুরু করলো, আমরা নিরঞ্জনদার গাড়ির পেছন পেছন। আমি ইসলাম ভাই মাঝের সিটে, ভজু সামনের সিটে।
ইসলামভাই আমার দিকে তাকালেন, তুই সত্যি অনি অনেক মেচুয়র হয়ে গেছিস এই কদিনে।
কেনো।

দিদি একবার নামটা বললো, আর তুই সেটা দিয়ে কি খেলা খেলে দিলি।
এছাড়া উপায় কি বলো।
দাঁড়াও অনেকক্ষণ ফোন করা হয় নি একবার ডায়াল করে নিই সব কটাকে।
প্রথমে অনাদিকে ফোন করলাম।
কিরে তোরা এখন কোথায়।
কেনো।
আমরা চকে এসে সব বসে আছি।
তারমানে।
ওপরতলা থেকে খবর এসেছে, নিরঞ্জনদা তোদের সঙ্গে আসছে, তুই সত্যি অনি খেল দেখাচ্ছিস।
কাজের কথায় আয়।
বল।
বাড়িতে যা যা বলেছিলাম সব রেডি।
একেবারে, বরং একটু বেশিই আছে।
বাঃ একটা কাজ করতে হবে।
বল।
আমার সঙ্গে দুজন গেস্ট আছে। বাড়তি বিছানার ব্যবস্থা করতে হবে।
তোকে চিন্তা করতে হবে না। দুজন কেনো, দুহাজর জন যদি আসে তোকে চিন্তা করতে হবে না। তুই এতো করছিস আমার জন্য, আমি এটুকু করতে পারবো না।
পোস্টমর্টেমের খবর কি।
এখনো সরকারি ভাবে পাই নি, বেসরকারী ভাবে, শেলি প্রগনেন্ট ছিলো। সেটাতো তোকে সকাল বেলা বললাম। বিষ খেয়েছে, তবে গলায় হাতের চিহ্নও আছে, তার মানে বোঝায় গলাটিপে খুন।
আর কিছু।
না মাথা থেকে সব ঝেরে ফেলে দিয়েছি।
ওকে এ্যারেস্ট করেছে কিনা কিছু জানিস।
না। নিরঞ্জনদা বলেছে এর মধ্যে একেবারে মাথা গলাবি না, বাকিটা আমি বুঝেনেবো।
ঠিক আছে আমরা ঘন্টা খানেকের মধ্যে পৌঁছে যাবো।
আয়।
ইসলামভাই-এর দিকে তাকালাম। ইসলামভাই হাসছে।
সামনের গাড়িটা থামলো।
পেছন পেছন রবিন গাড়ি দাঁড়করালো। আমি নামলাম, মিত্রা মুখ বারিয়ে বললো দাদা তোকে চাইছে।
আমি ফোনটা নিলাম।
বলো।
লাস্ট আপডেট কিছু দিলি নাতো।
কেনো, মুখার্জীর সঙ্গে কথা বলো নি।
বলেছিলাম, সকালে যা বলেছিলো তাই বলেছে।
পোস্টমর্টেম রিপোর্ট।
এসপি বললো এখনো হাতে আসে নি, ওরা তো জানেইনা ছেলেটা এ্যারেস্ট হয়েছে।
তাই।
কি করবি এদের নিয়ে।
নিরঞ্জনদা গাড়িতে বসে আছে, জিজ্ঞাসা করো নি কেনো।
ও তোদের সঙ্গে যাচ্ছে।
হ্যাঁ।
তোর বড়মা যে ভাবে মুখ ঝামটা দিলো।
কথা বলে নাও।
দে।
নিরঞ্জনদার হাতে দিলাম ফোনটা।
বলো।
আমি কি বলবো.....বাবা এত ঘটনা ঘটে গেছে.......সময় পেলাম কোথায় দিদি যা তারা লাগালো.....ঠিক আছে আমি দিয়ে দিচ্ছি।
আমায় আবার ফোনটা দিলো।
বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে বললো, এখনো কথা শেষ হয় নি। দিস তো আমায় ফোনটা।
হ্যাঁ বলো।
তোর বড়মা রাগ করছে না।
সে তো সব সময় করে।
মিত্রা বুঝতে পেরেছে হাসছে।
তাহলে তুই যে ভাবে বলেছিলি সেই ভাবেই দাঁড় করাই।
তুমি যা ভালো বোঝো। ছেলেদুটো কেমন লিখেছে।

দারুন, তোর চোখ আছে।
ঠিক আছে আমি মিঃ মুখার্জীর সঙ্গে কথা বলে তোমায় জানাচ্ছি, হ্যাঁগো অফিসের পরিস্থিতি।
পুরো ঠান্ডা।
যাক এটা গুড নিউজ।
সবাই যে যার ঘর গোছাতে ব্যস্ত। চম্পকের মুখ একেবারে শুকিয়ে গেছে।
এই প্রেসারটা কনটিনিউ করতে বলবে সনাতন বাবুকে। এখন থেকে তুমি আমার ফোনে ফোন কোরো বড়মাকে আর বিরক্ত করতে হবে না, আমি ফোন অন করে রাখছি। বড়মা কথা বলবে।
একটু ঘুরতে...... সহ্য হচ্ছে না......কেনো ছেলেটা সকাল থেকে সব তো গুছিয়ে দিয়ে এলো......কি খেলে.......
আমি ফিক করে হেসে ফেললাম।
বড়মা ফোনটা কেটে আমার দিকে তাকালো, চোখের ভাষা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমি গাড়িতে এসে বসলাম। রবিন গাড়ি স্টার্ট দিলো। ইসলামভাই আমার দিকে তাকালো।
কি হলো। ওই ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো।
তোকে দেখছি।
আমি অত্যন্ত নগন্য মানুষ তোমার কাছে।
আর বলিস না।
কেনো।
এখুনি ফোন এসেছিলো, তোর কথা ঠিক।
কি বলছে, আমাকে একটু দরকার ছিলো এই বললো।
হাসলাম। দাঁড়াও মিঃ মুখার্জীকে একবার ফোন করি।
কর। কি বলে শোন।
তোমাকেও শোনাচ্ছি।
আরে অনিবাবু বলুন।
খাওয়া দাওয়া করে হাত ধোয়া হোলো।
সে তো অনেকক্ষণ।
লাস্ট আপডেট দিলেন না।
কেনো দাদাকে দিয়ে দিয়েছি।
ভেন্টিলেসন কখন খুলছেন।
এটা আবার আপনাকে কে বললো।
খবর পেলাম।
আচ্ছা ওই ঘরে কেউ যেতে পারবে না, আমি সেই ব্যবস্থা করে এসেছি। আপনার লোক ঢুকলো কি করে।
আমি কিন্তু কালকে ছবিটা ছাপবো।
না না এসব করতে যাবেন না, তাহলে আমার কাজ আটকে যাবে।
হাসলাম। আর বলুন।
আপনি যা যা নথি পত্র দিয়েছিলেন, সেই সব জায়গায় হানা দিয়েছি। কাজ হয়েছে।
তাহলে ঘটনাটা ঘটলো কি করে।
আর বলবেন না। বললো বাথরুমে যাবো। কারুর বাথরুমে যে ওয়েপনস থাকে এটা প্রথম জানলাম। তাও দরজা বন্ধ করতে দিই নি, কিছুটা খুলে রেখেছিলাম।
কোথায় লেগেছে।
কানের নিচে, তাই টেঁকাতে পারলাম।

কি মনে হচ্ছে।
ওই যে আপনি বলেদিলেন, কাজ ফুরোলেই খুলে দেবো।
এইবার আমার একটা উপকার করতে হবে।
বলুন।
আমার কিছু টাকার প্রয়োজন।
কতো।
এখন নয়, মাসখানেক পর।
কেনো।
আমি যেখানে আঠারো মাস কাটিয়েছিলাম, সেখানে কিছু কাজ করতে চাই। বলতে পারেন একটা এনজিও। আমার দাদা করতে চাইছেন, ওই সব অর্গানাইজ করছে।
সত্যি অনিবাবু আপনার বুদ্ধির প্রশংসা করি।
কেনো।
তার টাকার অভাব, সেতো আপনার সঙ্গেই আছে। আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন আমি হাত দেবো না। আর টাকার কথা বলছেন, এই কাজে টাকা দেওয়ার লোকের অভাব হবে না।
কি করে বুঝলেন।
আপনি দুটো বাড়ির এ্যাড্রেস দিয়ে দেখতে বলেছিলেন, আমি অত্যাধিক ইনিসিয়েটিভ নিয়ে আপনার বাড়ির ওপরও লক্ষ্য রেখেছিলাম।
গুড। কালকে নিউজে আপনার নামটা ঢুকিয়ে দিই। আরএকটা ছোট্ট ইন্টারভিউ।
করতে পারেন।
তাহলে কাউকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
দিন, আপনার দেশের বাড়িতে আমাকে ইনভাইট করলেন না।
এপ্রিলে।
কেনো।
সেই সময় আর একটা বড় কাজ করবো তখন।
ঠিক আছে, অপেক্ষায় রইলাম।
ফোনটা কেটে দিয়ে, ইসলামভাই-এর দিকে তাকালাম।
ইসলামবাই মুচকি মুচকি হাসছে। আমাকে নিয়ে কি করবি বলছিলি।
তাড়াহুড়ো করছো কেনো, দেখো না কি করি।
না মনে হচ্ছে তোর কথাই ঠিক, আমাকে এবার থিতু হতে হবে, অনেক দৌড়েছি।
দাঁড়াও দাদাকে লাস্ট আপডেটটা জানিয়ে দিই।
চকে এসে গাড়িটা দাঁড়ালো।
ক্রমশঃ

আমি গাড়ি থেকে নেমে নিরঞ্জনদার গাড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম, বড়মা বললেন, ও অনি আমি আর এ গাড়িতে বসবো না, সরকারের যেমন অবস্থা, নিরঞ্জনের গাড়ির অবস্থাও ঠিক তাই।
আমি দরজা খুলে বড়মাকে ধরে ধরে নামালাম, এটা চক।
সে তো বুঝলাম, আমার কোমর ভেঙে ফেললে রে। দিয়েছি নিরঞ্জনকে আচ্ছা করে, ও নাকি এখানের মুখ্যমন্ত্রী, মরনদশা।
অনাদি এগিয়ে এসেছে, বাসু এসেছে, চিকনাকেও দেখতে পেলাম। ওরা হাসছে। এছাড়াও আরও অনেকে এসেছে, চিনতে পারছি না, হয়তো এলাকার ছেলেপুলে, নিরঞ্জনদা এসেছে বলে।
নিরঞ্জনদা কাছে এসে বললো, তুমি দেখবে যাওয়ার সময় রাস্তা একেবারে ঝক ঝকে।
অনি ঠিক কথা বলে, তোদের দুরমুশ করা উচিত। চোরের দল সব।
বড়মার কথায় সকলে হেসে কুটি কুটি খাচ্ছে।
চা খাবে তো।
হ্যাঁ খাবো, ও ভজু, দে তো বাবা পাটা টেনে।
ভজু যাই বড়মা বলে পায়ের কাছে বসে পরলো।
আমি বড়মাকে ধরে দাঁড়িয়ে আছি। মিত্রা কাছে এগিয়ে এসে বললো, কিরে রসোগোল্লা খাওয়াবি না। বড়মা শুনতে পেয়েছে।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম, বড়মা হেসে ফললেন, সত্যি মিত্রা তুই পারিসও বটে।
তোমার খিদে পায় নি, কিরকম নাচানাচি করতে করতে এলাম বলোতো, সব হজম হয়ে গেছে।
আচ্ছা তোর মুখ রাখতে একটা খাবো।
দেখলি। অনাদিকে বল।
বলতে হবে না, একটু অপেক্ষা কর চলে আসবে।
অনাদিকে বললাম পরিদার দোকানে বসার জায়গা হবে।
হবে মানে তুই কি বলতে চাস।
কিগো বাঁশের বেঞ্চে বসবে।
চল একটু বসে নিই। আর আসবো কিনা কে জানে।
আসবেনা মানে, তোমাকে আমরা সবাই ধরে নিয়ে আসবো। অনাদি বললো।
আচ্ছা, ও ছোটো কোথায় গেলি রে।
ছোটোমা কাছে এলেন, আমার দিকে তাকিয়ে ইশারায় বললেন, বাথরুম। আমি মাথা চুলকালাম। মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে।
ছোটোমাও হাসছে।
অনাদিকে ইশারায় কাছে ডাকলাম।
বড়মাকে কানের কাছে ফিস ফিস করে বললাম বাথরুমে যাবে নাকি।
বড়মা মুখের দিকে তাকিয়ে হাসলো।
ঠিক আছে দাঁড়াও ব্যবস্থা করে আসি।
অনাদি চকের ওপরের যে বাড়িটা তাতেই ব্যবস্থা করে আসলো, মিত্রাকে বললাম বড়মাকে ধরে নিয়ে যা। ওরা তিনজনে গেলো। অনাদি পেছন পেছন, নিরঞ্জনদা দেখলাম, কাদের সঙ্গে কথা বলছে, দেখে মনে হচ্ছে হোমরা চোমরা ব্যক্তি। আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে, চোখের অভিব্যক্তি বলছে, এখানে থাকে আর আমরা জানি না।
এতোক্ষণ ইসলামভাই-এর দিকে তাকাই নি। ও গাড়ি থেকে নেমে চারিদিক দেখছে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে জায়গাটা ওর পছন্দ। কয়েকটা বাচ্চা ওর পেছন পেছন ঘুরছে, ওর অদ্ভূত পোষাক দেখে ওরা অবাক।
চিকনাকে বললাম, সবাইকে চা দিতে বল।
সবাইকে।
হ্যাঁ। যারা এখানে আছে।
পার্টির লোককে তুই খাওয়াতে যাবি কেনো।
চুপকর ছাগল।
ঠিক আছে।
চিকনা আমার কথা মতো সবাইকে চা দিচ্ছে।
বাসুকে বললাম, গ্রামের অবস্থা।

সকালে গরম ছিলো, তারপর তোর ফোন আসার পর থেকে একেবারে ঠান্ডা, কালকে যে এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে, বুঝতেই পারবি না। তার ওপর সভাধিপতি তোর সঙ্গে আসছে। ব্যাপারটাই আলাদা।
অনাদি বড়মার হাত ধরে নিয়ে আসছে। পেছনে বড়মা ছোটোমা। কাছে আসতে আমি বললাম, শান্তি।
সত্যিরে অনি কি শান্তি, তোকে ভয়ে বলতে পারছিলাম না, যদি গালাগালি করিস।
তোমায় কি সেরকম কখনো করেছি।
না মিত্রার মুখ থেকে শোনা আগের বারের অভিজ্ঞতাটা মনে পরে গেলো কিনা, তাই।
তোমার আগে ছোটোমা হিন্টস দিয়েছিলো।
মেয়েদের অনেক সমস্যা বুঝলি।
বুঝলাম।
বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে হসলো। নিরঞ্জন গেলো কোথায়রে।
ওইতো কথা বলছে।
নিশ্চই সাকরেদরা এসে জুটেছে।
হাসলাম।
পরিদার দোকানে নিয়ে এসে বসালাম। পরিদা একটা ঠক করে বড়মাকে প্রণাম করলো, ছোটমাকে প্রণাম করতে যাচ্ছিল, ছোটমা হাত ধরে ফেললেন। এরা তখন ছোটো ছোটো আমার দোকানে আসতো।
হ্যাঁ তোমার গল্প শুনেছি ভাই অনির মুখ থেকে।
অনি আমাদের গর্ব। ও বোকনা মায়েদের প্লেট গুলো এগিয়ে দে।
একটা বাচ্চা মেয়ে এগিয়ে এলো।
বড়মা আমার দিকে তাকালো, হেসেফেললাম, নামের অর্থ খুঁজতে চাইছো।
হ্যাঁ।
আস্তে করে কানের কাছে ফিস ফিস করে বললাম, গ্রামে গরুর যদি মেয়ে বাছুর হয় তাহলে তাকে বোকনা বাছুর বলে, কেউ হয়তো আদর করে ওকে ওই নাম দিয়েছে।
বড়মার মাথায় হাত।
পরিদা সকলকে চারটে করে রসোগোল্লা দিয়েছে।
বড়মাকেও দিয়েছে। নিরঞ্জনদা এলো তার সাকরেদদের নিয়ে, একে একে পরিচয় করিয়ে দিলো, যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই, কেউ লোকাল কমিটির, কেউ জেলা কমিটির, কেউ জোনাল কমিটির হোমরা চোমরা লোক। সবাই বড়মাকে প্রণাম করলো, পরিদা ওদেরও মিষ্টি দিলো, বড়মা চারটেই খেলো।
আমি আস্তে করে বললাম, কি গো চারটেই সাঁটিয়ে দিলে।
সত্যিরে অনি খিদে পেয়েছিলো।
মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে, তুই হেরে যাবি, এখানে জিততে পারবি না।
ছোটোমা মিত্রাকে সাপোর্ট করলো। আমি চুপ।
বড়মা। মিত্রা বললো।
বল।
মিষ্টির পর একটু নোনতা খেলে ভালো হয় না তাহলে চাটা বেশ জমবে।
খাসা বলেছিস, ও পরি তোমার ওগুলো কি ভাজছো গো।
বেগুনি, আলুরচপ।
একটা করে দাও দিখিনি। খেয়ে দেখি।
আমি বড়মার দিকে তাকালাম, মিত্রা আমাকে একটা কনুইয়ের গুঁতো মারলো, ছোটোমা হাসছে, ইসলামভাই আজ খালি মজা লুটে যাচ্ছে। না হ্যাঁ কিছুই বলছে না, গা ভাসিয়ে দিয়েছে।
চা এলো, এক কাপে কারুর পোষালো না, দুকাপ করে খেলো, সবাই ভির করে আছে আমাদের ঘিরে। নিরঞ্জনদা বাইরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছে।
বড়মাকে বললাম, পায়ের ধুলো আমার জন্য একটু রেখো।
বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে হেসেফেললো। 
 
 
 
 
 
 
 
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks