দেখি নাই ফিরে - (Part-74)

আমি জানি মা ওরও অনেক স্বপ্ন আছে। আমি যেমন ওকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি ও নিশ্চই আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। আজকে ও অনেক কথা আমাকে বলেছে। যার একটা কথারও আমি উত্তর দিইনি। কেনো যানো ? ও অবুঝপনা করবে। বড়মা ছোটমা ওর দলে। ওরা আমার জীবনের ছটা বছর দেখেছে। কিন্তু বাকি চব্বিশটা বছর কি ভাবে কি পরিবেশে আমি বড়ো হয়ে উঠেছি, সেটা ওরা দেখে নি। ওরা আমার মুখ থেকে শুনেছে কিন্তু সেটাই সব নয়। সেই চব্বিশটা বছরের একটা প্রভাব আমার ওপর থাকবেই। কি করে বোঝাই ওদের বলোতো। বড়ো যন্ত্রণা।
জানো মা, মিত্রা আজ ওর মনের মতো করে জামাকাপড় কিনে এনেছে। কালকে আমাকে সাজাবে। পীরবাবার থানের মাটি ওর কপালে লাগিয়ে দিয়েছিলাম। তোমার গলার চেনটা ওকে দিয়েছিলাম। তোমার সিঁদুর কৌটোটা ওকে দিয়েছিলাম। তাতেও মনে হয় ও পরিতৃপ্ত হতে পারে নি।
আজ এক গাদা জামা কাপড় কিনে এনেছে। তিনদিন ধরে আমাকে সাজাবে। আমি ওকে বাধা দেবো না। ওরও কিছু কিছু শখ আছে। সবচেয়ে বড়ো কথা কি জানো মা ও স্থূলো সুখে সুখী।
মা, আমি ওকে ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি। তোমাকে দেখিনি, চোখ বুঁজে তোমার অনুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করি, ভালোবাসি। আর মিত্রা আমার শয়নে স্বপনে আমার শরীরের প্রতিটা তন্তুতে মিশে আছে। ও কষ্ট পেলে আমি ভীষণ কষ্ট পাই। আমি কাঁদতে ভুলে গেছি কোন জন্মে। খুব কষ্ট পেলে দু’এক ফোঁটা জল এমনি বেরিয়ে আসে। মিত্রা এখনো কাঁদতে ভালোবাসে। ওর সঙ্গে আমার অনেক পার্থক্য তবু কোথায় যেনো ওর সঙ্গে আমার একটা মিল আছে। দুজনেই মাতৃ পিতৃ হারা সন্তান।
কেউ আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। তার নরম হাতের বন্ধনে আমি ধ্যনোভ্রষ্ট হলাম। এ্যালবামটা বন্ধ করে হাতের অর্গল খুললাম, বুঝলাম মিত্রা। টেবিলে এ্যালবামটা রেখে মুখো মুখি দাঁড়ালাম। মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে।
তুই কাঁদছিস!
হাসলাম। না।
তোর চোখে জল!
এমনি। নিজের সঙ্গে নিজে যুদ্ধ করছি।
আজা সারাদিন তোর চোখে দু’বার জল দেখলাম। আমাকে নিয়ে কোনো সমস্যা।
না।
তাহলে ?
তোর সব প্রশ্নের উত্তর এইভাবে দিতে পারবো না। কিছু প্রশ্নের উত্তর কাজের মাধ্যেম দেবো। কিছু অনুভূতি দিয়ে, তোকে সেটা বুঝতে হবে।
মিত্রা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। চোখের মনি স্থির কিছু বোঝার চেষ্টা করছে।
এই এ্যালবামটা কোনোদিন আমাকে দেখাস নিতো ?
ফ্ল্যাটে ছিল, কয়েকদিন আগে নিয়ে এসেছি।
মা বাবার সঙ্গে তুই।
হ্যাঁ।
তখন তুই ভীষণ কিউট দেখতেছিলি।
তুই দেখেছিস।
অনেকক্ষণ ধরে দেখেছি। তুই তোর মধ্যে ছিলি না।
হ্যাঁ, মাঝে মাঝে আমার এমন হয়।
মাঝে মাঝে না প্রায়ই হচ্ছে।
আমি চুপ করে থাকলাম।
তখন তুই দেবাদের তোর কষ্টের কথা বলেছিস, দাদাকেও বললি।
বলতে চাই নি, বলা হয়েগেলো। কেনো জানি না।
আমি তোকে সকালে খুব কষ্ট দিয়েছি।

হয়তো ওটা আমার প্রয়োজন ছিলো। সত্যিতো তোর স্বপ্নের দিকটা আমি কখনো ভাবিনিতো।
সকালবেলা তুই সবচেয়ে বেশি অপমানিত বোধ করেছিস, ফাইলটা তোর মুখের ওপর ছুঁড়ে ফেলে দেওয়াতে।
না।
তুই না বললে হবে কি করে। আমি তখন তোর চোখ দেখেছি।
মিত্রা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
তোকে কষ্ট দিলে আমিও কষ্ট পাই বুবুন। কেনো তুই এমন করিস।
তুইতো ইচ্ছে করে দিতে চাস না। কখনো সখনো হয়ে যায়।
তখন যে আমার কি হলো। কেনো তুই তোর আমার ভাগ করিস। আমিতো পারি না। ডাক্তারদাদাকে বলেছিলাম।
কি বললো ডাক্তারদাদা।
ডাক্তারদাদা হাসলো। আচ্ছা বুবুন তোর কি মনে হয় আমি তোকে ভালোবাসিনা।
আমি ওর মুখটা চেপে ধরলাম।
ও কথা বলতে নেই।
বলনা আমার জানার দরকার আছে।
কেনো তোর মনের মধ্যে এই প্রশ্নটা এলো।
আজ সারাদিন অনেকে অনেক ভাবে তোকে নিয়ে আলোচনা করলো। তাতে আমার হঠাৎ মনে হলো আমার দিক থেকে মনে হয় কিছু খামতি থেকে যাচ্ছে।
ভুল কথা। তুই আমার বেঁচে থাকার অক্সিজেন।
আমি মিত্রাকে বুকের কাচে টেনে নিলাম।
আমি তোর কাছ থেকে ডিমান্ড করি। তুই কখনো আমার কাছে কোনো ডিমান্ড করিসনা।
কে বললো করিনা, সকাল বেলা তোর কাছ থেকে টাকা চাইলাম।
মিত্রা আমার দিকে তাকালো। চোখের পলক পরছে না।
তুই কি শুধু আমার থেকে টাকা চাস।
তোর কি তাই মনে হয়।
আমি তোকে জিজ্ঞাসা করছি।
ওটা ওই মুহূর্তে প্রয়োজন ছিলো। আমার থাকলে তোকে চাইতাম না।
কে বললো তোর নেই।
মাথা নীচু করলাম।
এই দেখ এখনো তোর মধ্যে আমাকে গ্রহণ করা নিয়ে সংকোচ বোধ রয়েছে।
তুই বিশ্বাস কর।
তুই আমাকে গ্রহণ করতে পারছিস, আর আমার টাকা নিতে পারবি না।
আমি মিত্রাকে জড়িয়ে ধরলাম।
বিশ্বাস কর মিত্রা ওটা পুরুষের অহম বোধের জায়গা। তোকে কি করে বোঝাই।
সেই জন্য বিগত ছয়মাস তুই সেলারি নিয়েছিস। তোর ডিরেক্টর শিপের রেমুনারেসন রিফিউজ করেছিস।



তোকে কে বললো।
হিমাংশু। কেনো তুই নিস নি ?
তুই আমাকে ক্ষমা কর।
কিসের ক্ষমা। আমি যদি তোকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাই। তুই যদি মনে নিতে পারিস, আর আমি যদি আমার ব্যবসার অংশীদার তোকে করতে চাই তাহলে তুই মনে নিবিনা কেনো। আজ যদি বাবা বেঁচে থাকতেন, তুই এটা করতে পারতিস।
আমি মিত্রাকে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।
তুই একা একা গুমড়ে মরবি, আমি ফুর্তি করবো তা হয়না। আজ না হোক কাল সকলে আমাকে কাঠ গোড়ায় দাঁড় করাবে। আমি তখন স্বার্থপর, তুই তখন মহান।
আমি ওকে জড়িয়ে ধরে মিত্রার কাঁধে মুখ গুঁজে দিয়েছি।
তোকে বলতে হবে বুবুন। আমার দিকে তাকা।
আমি মিত্রার কাঁধ থেকে মুখ তুললাম।
বল, কি জানতে চাস।
কেনো তুই রিফিউজ করছিস।
তুই তখন বললি না, আমি মহান হতে চাইছি তুই স্বার্থপর। বলতো আমাকে, তোর কাগজের মালিকনা স্বত্ব গ্রহণ করার এক কনাকড়ি গুণ আমার আছে।
কে বললো নেই। অনেকের থেকে বরং বেসি আছে।
তুই আমাকে অন্ধের মতো ভালোবাসিস তাই বলছিস। লোকে তা বলে না। বলে কি আমি তোর ভালোবাসার দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছি।
কে কি বললো তাতে কি যায় আসে।
আসে মিত্রা আসে। তুই মানুষের খোলা মুখ চলা পথ সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে দিলেও আটকাতে পারবি না। আমরা তথাকথিত সামাজিক জীব। আধুনিকতা আমাদের শরীরে, মনে নয়। এতদিন আমরা একসঙ্গে থেকেছি লোকে বলেছে লিভ টু গেদার। বিদেশে এ ব্যাপারটার কোনো গুরুত্ব নেই, ওখানে লিভ টু গেদার করতে করতে সন্তান এসে গেলে কোনো কিছু হয় না। সেই সন্তান বহাল তবিয়েতে বড়ো হয়। এখানে কোনো সন্তানের জন্ম হলে প্রথমে তার পিতৃ পরিচয়ের দরকার হয়। তবে বার্থ সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। কেনো, তোর নিকট আত্মীয় বলেনি তোকে ফুসলিয়ে নিয়ে চলে গেছি। তুই তো নিজে কানে শুনেছিস সেই কথা। আমাদের সমাজটা বড় জটিল, বুঝেছিস।
আমি মিত্রার কপালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। মিত্রা আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে।
কালকে যে কাজটা তোর সঙ্গে করতে যাচ্ছি, সেটা সামাজিক দায়বদ্ধতা মেটাতে, পাশাপাশি তোর সঙ্গে আমার যে একটা রিলেসন তৈরি হয়ে গেছে সেটা দশজনকে বোঝাতে। বলতে পারিস একটা সরকারী শিলমোহর।
মিত্রা আমার মুখে হাত বোলাচ্ছে।
তুই যতোটুকু কর্পোরেট লাইভ লিড করেছিস আমি ততটুকু এখনো পর্যন্ত করিনি। কেনো জানিষ ? পকেটের রেস্তো কোনোদিন ছিলো না। আমাকে তুই তোর কাগজের মালিক বানিয়ে দিয়েছিস। কর্পোরেট লাইফের কেতা শিখতে আমার এখনো এক বছর লাগবে। তাই আমাকে দেখবি আমি পালিয়ে পালিয়ে বেড়াই।
মিত্রার একটা হাত আমার পাঞ্জাবীর ভেতর দিয়ে আমার বুকে।

টিনারা যেটুকু কর্পোরেট লাইফ লিড করেছে আমি সেটুকুও করিনি। একদিন তাজে বসেই আমি ব্যাপারাটা ধরে ফেলেছিলাম। ওটা একটা আলাদা জগৎ। আমি কোনোদিন এ্যাবসর্ভ করতে পারবো না। যদিও বা পাড়ি মাঝে মাঝে পা হড়কে পরে যাবো। এখন যেটুকু করছি মনে রাখবি আমার পরিচিত লেভেলে। তাদের প্রতি আমার জোড় আছে। এটা বেশিদিন চলতে পারে না। দেখবি আমি খুব ধীরে ধীরে গুছিয়ে নিচ্ছি।
আমি মিত্রার কপালে চুমু খেলাম।
আমাদের মানসিক মিলন হয়ে গেছে সেদিন, যেদিন পীরসাহেবের থানে তোর গলায় মায়ের গলার চেনটা পরিয়ে দিয়েছিলাম। ভূমি থেকে মাটি তুলে তোর সিঁথিতে দিয়েছিলাম। আগামীকালের থেকে সেই দিনের মূল্য আমার কাছে অনেক বেশি। তোর কোনো কিছুকে আমি অস্বীকার করিনি, করবোও না কোনোদিন। কিন্তু কি জানিষ তুই আমার জীবনের আট বছর দেখেছিস বাকি বাইশ বছর দেখিস নি। আমিও তোর জীবনের আট বছর দেখেছি বাকি বাইশ বছর এর তার কাছ থেকে খোঁজ খবর নিয়েছি, অনুভব করেছি তোর কষ্টটা, তাই আমি হিংস্র হয়ে উঠেছি। যে মেয়েটা ফুলের মতো বাঁচতে পারতো, লোভের আগুনে সেই ফুলের পাঁপড়ি গুলো ছেঁড়ার অধিকার কে দিয়েছে ওদের।
মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে।
তোকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন। আমাকে নিয়েও তোর অনেক স্বপ্ন থাকতে পারে। আমি অস্বীকার করছি না। তুই একভাবে মানুষ হয়েছিস। আমি আর এক ভাবে মানুষ হয়েছি। আমার জীবনবোধ আর তোর জীবনবোধের মধ্যে অনেক পার্থক্য। তোকে এগুলো অনুভূতি দিয়ে বুঝতে হবে। তোকে একটা ছোট্ট কথা বলবো মন খারাপ করবি না।
বল।
আমি ভুল কি ঠিক জানিনা তবে আমার কথাটা খারাপ লেগেছিলো। হয়তো সেই থেকেই বেশ কিছু কথা চাপান উতোরে বেরিয়ে এলো। হয়তো এটা ভালো, হয়তো এটা খারাপ। তুই হয়তো না ভেবেই বলেছিস। আমি কথাটা অন্য ভাবে ধরেছি। পরে নিজের সঙ্গে নিজে সারাদিন যুদ্ধ করলাম। এই মুহূর্তে তোকে বুকে জড়িয়ে ধরেও সমানে যুদ্ধ করছি বলতে পারিস।
কি কথা বল।
তোকে তখন টাকাটা চাইতে তুই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলি, আমাকে বলেছিলি কেনো। অনিমেষদার নামটা শুনে তুই আরো ঘাবড়ে গেছিলি। তুই বিশ্বাস করতে পারিস নি অনিমেষদা আমার কাছে টাকা চাইতে পারে।
তুই বিশ্বাস কর বুবুন। আমি সেই ভেবে বলিনি।
আমি কথাটা বলার আগে তোর অনুমতি চেয়ে নিয়েছি। আমি কিন্তু বলেছি তুই হয়তো সেই ভেবে বলিস নি, আমি ভেবে নিয়েছি।
কেনো তুই ভাবলি।
এটা একটা দামী কথা। বলতে পারিস এই সমস্যাটা আমার আছে। ছোটো থেকে স্নেহ ভালোবাসা কি জিনিষ জানি না। অনেক দিন গেছে, আমার কোনো কাজে কাকা কাকীমা রাগ করে আমাকে খেতে দেয়নি। আমি অনাদির বাড়িতে গিয়ে দুটো পান্তা খেয়ে স্কুলে গেছি। হয়তো সেই দিনটা বাড়ি ফিরি নি। অনাদির বাড়িতেই কাটিয়ে দিয়েছি। কখনো কখনো চিকনাদের বাড়ি বা বাসুদের বাড়িতে থেকেছি। কাকা কাকীমা কেউ আমার খোঁজ নেয় নি। আমি কেমন আছি কি খাচ্ছি। তারপর হয়তো পাড়া প্রতিবেশীর চাপে কাকা মেনে নিয়েছে।

তুই আমার প্রথম ভালোবাসা। আমি তোকে অন্ধের মতো ভালোবাসি। তোর কিছু হলে আমি হয়তো চোট খাওয়া সিংহের মতো হয়ে যাবো।
আচ্ছা মিত্রা যাকে আমি এতো ভালোবাসি যার দায় অদায় সম্পূর্ণ আমার তাকে যদি একটা জিনিষ চাই, সে যদি সন্দেহ প্রকাশ করে, আমি তার কাছ থেকে সেই জিনিষটা হাত পেতে নিই কি করে বল। আমি কি তখন বিশ্বাস করতে পারি, সে আমাকে ঠিক ঠিক ভাবে বিশ্বাস করতে পারছে না। যার জন্য এতো কৌতূহল।
জানিষ মিত্রা, সে আমার যতো আপনজন হোক। হয়তো ক্ষণিকের জন্য তার কাছ থেকে নিই। তারপর তাকে ফেরত দিয়ে দিই। সে যদি আমার ঔরসজাত সন্তান হয় সেও আমার এই মানসিকতার থেকে দূরে থাকবে না।
সেই জন্য তখন তুই বললি আমি তোকে ফেরতে দিয়ে দেবো।
আমি মিত্রার মুকের দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
তুই জানিষ সেই কথাটা শুনে আমার মনটা কতোটা খারাপ হয়েছিলো। যার জন্য তোকে এতো কথা বললাম, সারাদিন কষ্ট পেলাম।
তুই যতোটা কষ্ট পেয়েছিস তার থেকেও বেশি কষ্ট আমি পেয়েছি। তার থেকে কিছুটা দেবাদের সঙ্গে শেয়ার করেছি।
টিনা নিচে আমাকে আলাদা ভাবে সব বলেছে।
একটা উপকার হয়েছে। কাকতালীয় হলেও সুজিতদার কাছ থেকে একটা কাজ পাওয়া গেছে। অনেক টাকা পাওয়া গেছে। তোর সঙ্গে কিছুক্ষণ মান অভিমানের পালা চলেছে। দু’জনে কিছুটা হলেও মানসিক দিক থেকে পরিশোধিত হয়েছি।
তুই একটা তুচ্ছ কথায় এতটা ভেবে বসে থাকতে পারিস, এটা আমি কল্পনাও করতে পারি নি।
তুই আমাকে ভালোবেসেছিস ঠিক, আমার মনের গহনে ডুব মারতে পারিস নি। আমি তোর মনের গভীরে কতটা ডুব মারতে পেরেছি, বলতে পারবো না। এটা তোর অপরাধ নয়। আমার অপরাধ। আমি তোকে হয়তো আমার মনের অন্দরে ঢুকতে দিই নি।
যখন তুই ফাইলটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বললি, যেখানেই থাকিস নটার মধ্যে আসবি, না হলে আজ থেকে তোর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক থাকবে না, তখন আমার ভেতরটা আরো দুমঢ়ে মুচঢ়ে গেলো। একবার ভাবলাম না আমি ফিরবো না। দাদা আজ পর্যন্ত আমাকে এই ভাবে কথা বলতে পারে নি। মিত্রা কে ? তারপর ভাবলাম, না আমি যেখানেই থাকি আজকের দিনটা আমি ডিউ টাইমে ফিরে আসবো, মিত্রাকে আমি জেতাবই, মিত্রাকে আমি কখনো কোনোদিন হারতে দেবো না। তুই বিশ্বাস কর আমি সাতটার সময় ফিরে এসেছি। আর কোথাও বেরোই নি।
মিত্রার চোখ দুটো চক চক করে উঠলো। আমার পাঞ্জাবীর বোতামটা খুলে আমার খোলা বুকে ঠোঁট ছোঁয়ালো।
একফোঁটাও চোখ দিয়ে জল বার করবি না। এটা তোর সঙ্গে, আমার বোঝা পড়া।
তুই বিশ্বাস কর বুবুন এটা আমার দুঃখের অশ্রু নয়, এটা আমার অনন্দের অশ্রু। আমি আমার বুবুনকে যেভাবে পেতে চাই, বুবুনকে আমি সেই ভাবেই পাচ্ছি।
জানিস মিত্র ভালোবাসাটা শুধু শরীরী নয়, মনটাও অনেকখানি জুড়ে থাকে, তাই দেখবি প্রাচ্যের মেয়েদের খুব একটা ডিভোর্স হয় না। যেটা পাশ্চাত্যে আকছাড় হয়ে থাকে।
তুই কতো গভীরে গিয়ে ভাবিস। আমি যে সব গুলিয়ে ফেলি।
গুলিয়ে ফেললে কষ্ট পেতে হবে। তার দায় আমার নয়। সম্পূর্ণ তোর।
আজ মায়ের ফটোটার দিকে তাকিয়ে একটা কথা বার বার মনে আসছিলো। আমার রক্তের সম্পর্কের কোনো আত্মীয় নেই। খুঁজলে তোর দু’একটা পাওয়া যাবে। আমার পাওয়া যাবে না। আমি যেনো কলম করা গাছ। বহু চেষ্টা করেছি খুঁজে পাই নি। এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি। জানিনা আমার ভাগ্যে কি লেখা আছে। তবু তুই আমাকে আশ্রয় দিয়েছিস। কাছে টেনে নিয়েছিস।
এভাবে বলিস না।

যা সত্যি তাই বললাম।
চল এবার শুই। চাদরটা কেমন হয়েছে কিছু বললিনা।
জানিস মিত্রা দারিদ্রতা এতো কাছ থেকে দেখেছি,.... তারপর যখন এগুলো পাই ঠিক ঠিক উপভোগ করতে পারিনা। মনের মধ্যে বার বার খচ খচ করে, অনি তুই এটা কি করছিস ? এটা তোর পথ নয়, তুই গা ভাসিয়ে দিচ্ছিস।
মিত্রা আমার হাতটা ধরে খাটের কাছে দাঁড়িয়ে।
তখন তুই প্যান্ট জামার কথা বললি, বিশ্বাস কর হাতের সামনে থাকতেও ইচ্ছে করে ওটা পরে গেছিলাম। মনের মধ্যে একটা আলাদা স্পিরিট অনুভব করলাম। মিঃ নেওটিয়াকে তো কাত করলাম। আজ প্রতিজ্ঞা করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলাম। আমাকে দেড় কোটি টাকা যেখান থেকে হোক আনতে হবেই।
সেই জায়গায় তুই মিত্রাকে জিততে দিবি না।
হেসে ফেললাম।
এই হেরে যাওয়াতে কোনো দুঃখ নেই জানিস বুবুন, এই হেরে যাওয়াটা সবচেয়ে বেশি আনন্দের। আমি এইরকম ক্ষেত্রে বার বার তোর কাছে হারতে চাই।
মিত্রা আমার অনেক কাছে।
তুই তখন বললি আলবাৎ পারবো। সেই সময় তোর চোখের আগুনে আমি নিজেকে পুরে যেতে দেখেছি। তুই বললি পৃথিবীটাকে তুই হাতের মুঠোয় দুমঢ়ে মুচঢ়ে একাকার করে দিবি। আমি তোর চোখের আগুনে নিজেকে পুরিয়ে শুদ্ধ করেছি। আমি যে এই বুবুনকে চাই।
আমি মিত্রার চোখে চোখ রেখেছি।
বুবুনরে ভেতরের এই স্পিরিটটা আমাকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছে। তাই জন্য তোর কোনো কাজে আমি বাধা দিই নি। কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু মনকে বলেছি বুবুন যে কাজে হাত দেবে ও জিতবে। ও কোনোদিন হারতে জানে না।
না আমি ভগবান নই। তবে অন্যায় যে করবে মন থেকে যদি বুঝি সে সত্যি অন্যায় করেছে। তোকে বলে রাখি তার শাস্তি তাকে পেতেই হবে। আমার হাত থেকে তার নিস্তার নেই।
এবার শুই চল।
তুই ওঠ আমি আসছি।
না তুই আগে উঠবি। আমি তোর হাত ধরে বিছানায় উঠবো।
কেনো কোনো সংস্কার।
না।
তাহলে।
এখানে তোর অনুভূতি কাজ করবে না।
বুঝেছি। তাহলে দুজনে একসঙ্গে উঠবো।
তাই হবে।
কিন্তু কোনো দুষ্টুমি একেবারে নয়।
একটু, বেশি নয়।
ঠিক আছে।

কিগো তোমার বিয়ে আর তুমি পরে পরে ঘুমোচ্ছ।
এক ঠেলায় ঘুমের বারোটা বেজে গেলো।
কইরে অনি, যার বিয়ে তার হুঁশ নেই পাড়াপড়শির ঘুম নেই। দে ওর গায়ে জল ঢেলে।
বৌদিগো ঘুম থেকে ওঠা বড়ো কষ্ট।
দাঁড়া তোকে কষ্ট দেখাচ্ছি। চাদর মুড়ি দিয়ে ভোঁস ভোঁস। কটা বাজে খেয়াল আছে।
কেনো মিত্রাতো আছে।
মিত্রা তোকে ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তোর সঙ্গে কে থাকবে।
আমি চোখ মেলে তাকালাম। চাদরটা মুখ থেকে সরাতেই দেখলাম বৌদি বড়মা ছোটমা সুরো।
ওমা দেখেছো বড়দি যেই মিত্রার কথা বলেছি, ড্যাব ড্যাব করে কেমন তাকাচ্ছে। ওরে শয়তান।
আমি হাসছি।
ওঠ আগে।
উঠছি, তাড়াহুড়ো করছো কেনো। তুমি কি এখুনি এলে।
আবার কথা। আজ যা বলবো চোখ কান বন্ধ করে শুনে যাবি।
আমি হাসছি।
একবারে দাঁত বার করবি না।
আমি উঠে বসলাম। সুরোর দিকে তাকালাম।
কিরে সাজিস নি।
এখন সাজবো কেনো, সেতো বিকেলে।
দুর এখন থেকে সেজেগুজে বসে থাক। অনেকে আসবে পছন্দ হলে তোরটাও সেরে ফেলবো।
তোমাকে আর ঘটকালি করতে হবে না।
বড়মা ছোটমা মিটি মিটি হাসছে।
মুখ ধুয়ে ওই পাজামা পাঞ্জাবীটা পর। এখুনি বেরোবো।
কোথায় ?
বলেছি না কোনো কথা বলবি না।
আমি ভ্যাবলার মতো কিছুক্ষণ তাকালাম তারপর উঠে বাথরুমে গেলাম। ওরা সবাই চলে গেলো।
আমি বাথরুম থেকে বেড়িয়ে পাজামা পাঞ্জাবীটা পরলাম। গেড়ুয়া কালারের একটা পাঞ্জাবী আর চোস্তা। মনকে বোঝালাম এখন কোনো বিদ্রোহ নয়। এই তিনটে দিন তুমি ওদের আনন্দের ভাগিদার।
দেয়াল আলমাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালাম। খারাপ লাগছে না। চুলটা আঁচড়ে নিচে এলাম। দেখলাম বাগানে রবীন দাঁড়িয়ে আছে। মিত্রার বড়ো গাড়িটা আছে।
বসার ঘরে আসতেই দেখলাম চারজনে ফিট ফাট হয়ে বসে আছে।
আমি সবাইকে নমস্কার করলাম।
কিগো সব কোথায়।
বললামনা তোকে ছেড়ে সব পালিয়ে গেছে। বৌদি বললো।
কিগো বড়মা মিত্রা কোথায় ?
বড়মা মুখ টিপে হাসছে।
কিগো ছোটমা একটু চা খাওয়াবে না।
এখানে হাঁড়ি বন্ধ।
তারমানে!
ও সব জানি না আমার চা চাই।
চল গিয়ে খাবি।
কোথায় যাবো ?
সুরো মুচকি মুচকি হাসছে।
কিরে সুরো।
কেমন মজা বলোতো।
চল চল ওঠ।
বড়মার দিকে তাকিয়ে।
দিদি ওই ব্যাগ দুটো নিলেই হবে তো।
হ্যাঁ।
ছোট তোরগুলো।
রবীনকে বলেছি গাড়িতে তুলে নিতে।
মনে হচ্ছে তোমরা কিছু একটা ঘোটালা পাকাচ্ছো।
একবারে কথা বলবি না।
বাবা সেই ঘুমথেকে ওটা ইস্তক তুমি আমাকে ধমকে যাচ্ছ।
আমার কথায় ছোটমা ফিক করে হেসে ফেললো।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। চা না খাইয়ে বার করছো এটা মনে থাকে যেনো।
সব মনে আছে এখন চল।

আমি বড়মাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। বলোনা কোথায় টেনে নিয়ে যাচ্ছ। এই বাড়ি শুনসান সকলে কোথায়। মিত্রাকে দেখছি না, দাদা মল্লিকদা টিনা মিলি নীপা সব গেলো কোথায়।
এত বুঝিস এটা বুঝতে পারছিস না।
না ঠিক তা নয় তোমরা প্রোগ্রাম চেঞ্জ করে থাকলে আলাদা ব্যাপার। বাড়িতো মাত্র দুটো, নয় এবাড়ি না হলে ও বাড়ি।
তাহলে।
বাঃ দারুণ লাগছে এবার, সুরো বড় বিয়ে করতে যাচ্ছে বুঝলি। তুই নিধ কনে। বড়কর্তা বৌদি। বড়মা ছোটমা বড়যাত্রী।
ছোটমা তেরে এলো, দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি।
আমি ছুটে এগিয়ে গেলাম।
আগে বলবেতো তাহলে জলটাও খেতাম না।
ওতে কোনো দোষ হয়না। বড়মা বললেন।
ছেলের বাড়ির ব্রাহ্মণ কে ছোটমা।
হাঁড়ে গাঢল। ছোটমা বড়মার ঘর থেকে চেঁচিয়ে উঠলো।
না। বড়মা বললো।
তাহলে।
সব দেখতে পাবি গেলে।
আমরতো বেশ ভয় ভয় করছে বড়মা।
ছোটমা এসে কানটা ঘরলো।
ভয় ভয় করছে বড়মা।
সুরো খিল খিল করে হাসছে।
আমরা চার মূর্তিমান বেরিয়ে এলাম। বড়মা ছগনলালকে বললো, তালা দিয়ে দাও আমাদের আস্তে আস্তে সন্ধে হয়ে যাবে।
আমরা বেরিয়ে এলাম।
ছোটমা বৌদি আমার পেছনে চূড়ান্ত লাগলো আমি স্পিকটি নট। মাঝে মাঝে সুরোর দিকে তাকিয়ে হাসি। সুরোও হাসে।
এক ঘন্টার একটু কম সময়ে আমরা পৌঁছে গেলাম মিত্রার বাড়িতে। গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখলাম, চিকনা ছুটে এলো। রবীন বাগানে গাড়িটা দাঁড় করালো। আমি নামতে গেলাম।
একবারে নমবিনা আগে আমরা নামবো তারপর নামবি। ছোটমা পেছন থেকে চেঁচিয়ে উঠলো।
চিকনা হাসছে।
কি গুরু আজ কিন্তু সঞ্জুর পাকা দেখা নয়।
তুই কখন এলি।
ম্যাডাম কাল ফোন করলো আজ সকালে এসে হাজির।
আর কেউ আসে নি।
বাসু অনাদি, আর সবাই রবিবার ভোর ভোর।
ওখানকার কাজ কর্ম।
একবারে কাজের কথা বলবিনা, সব সোমবার থেকে।
ঠিক বলেছিস, ওকানে গেলে একেবারে......ছোটমা ঘুসি দেখাচ্ছে।
চিকনা হেসে গড়িয়ে পরে যায়।
গুরু ছোটমা পার্মিসন দিয়ে দিয়েছে।
কিগো এবার নামবো।
নাতো বলেছি।
বড়মা তুমি একটু দেখো।
দেখছি তো।
কোথায় দেখছো।
মিত্রা কোথায়রে চিকনা।
সকলে হো হো করে হেসে ফেললো।

দেখলাম দাদা মল্লিকদা ডাক্তারদাদা ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো।
আমি সুরো গাড়ির দরজা খুলে বসে আছি।
কিগো কখন নামবো।
বিয়ে করার সখ জেগেছে একটু কষ্ট করবে না। ছোটমা চিবিয়ে চিবিয়ে বললো।
দেখলাম ভেতর থেকে দামিনী মাসি ইসলামভাই এগিয়ে আসলো। দামিনী মাসির হাতে একটা পেতলের থালায় কি সব যেনো। দামিনী মাসি এসে বড়মার হাতে দিলো। একটা প্রদীপও জ্বলছে দেখছি। বড়মা প্রদীপের তাপ এবং হলুদ চন্দনের ফোঁটা আমার কপালে লাগিয়ে দিলো। চিকনা বাসু অনাদি উলু দিলো। আমি ওদের দিকে তাকিয়ে দাঁত কড় মড় করছি। মাথায় ধান দুর্বো দিয়ে আর্শীবাদ করলো। একে একে সবাই। আমি গাড়ি থেকে নামলাম প্রত্যেককে প্রনাম করলাম।
বড়মা এবার চা।
খালি চা চা করে গেলো। ছোটমা বললো।
তোমরা ওকে চা দাও নি। মল্লিকদা বললো।
কেনো দিতে হবে শুনি, একদিন না খেলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে।
বড়মা হাসছে।
তুমি মাথায় রাখবে, এরপর তোমাকে কোনো কথা বলবো না। তুমি সব জানতে কিছু বলো নি।
তুই বলিস, কাজ শেষ হয়ে যাবার পর বলিস।
দিদি কি করবে রে, দিদি কি করবে, দিদি তোকে বাঁচাবে। তোকে আজ দেখনা কি করি।
ছোটমার কথায় সবাই হাসছে।
আমরা সবাই ভেতরে এলাম। দেখলাম বুড়ীমাসি দাঁড়িয়ে চোখটা ছল ছল।
কিগো বুড়ীমাসি তোমার আবার চোখে জল।
বড়বাবু থাকলে কি আনন্দ করতেন।
ও মাসি চলো চলো ভেতরে চলো, এখন একবারে ওসব নয়।
ব্যাশ কাজ শেষ, এবার কচুরী জিলিপি।
কাজ শেষ মানে, তোকে আচ্ছা করে হলুদ মাখাই আগে। বড় হবে হলুদ মাখবে না। বৌদি বললো।
দেখলাম শিঁড়িদিয়ে টিনা মিলি অদিতি নীপা নামছে।
কি অনিদা হেবি মাঞ্জা দিয়েছো।
কোথায় আর দিলাম। বললো আরো বাকি আছে।
তুই যাকে খুঁজছিস পাবি না, ঠিক সময়ে দেখতে পাবি।
আমি ছোটমার দিকে হাঁসি হাঁসি মুখ করে তাকালাম।
ওইখানে গিয়ে চুপটি করে বসবি যখন ডাকবো তখন আসবি।
আমি দাদা মল্লিকদার মাঝখানে গিয়ে বসলাম।
ফোনটা বেজে উঠলো।
পকেট থেকে বার করলাম। দেখলাম সুজিতদা। উঠে এলাম।
হ্যাঁ বলো দাদা।
কিরে সব ঠিক আছে তো।
হ্যাঁ। তোমার এ্যাড সানডে বেরোবে। চিন্তা নেই। তুমি রবিবার কি করছো।
কেনো রে।
একবার আসতে পারবে।
কোথায়।
দাদার বাড়িতে।
যে বাড়িতে গেছিলাম।
হ্যাঁ।
কেনো।
আমার বিয়ে।
ভাগ। গুল মারার জায়গা পায় না।
বিশ্বাস করো।
তোকে বিশ্বাস করা মুস্কিল।
ঠিক আছে তোমায় আসতে হবে না। তুমি বৌদিকে আমায় ফোন করতে বলবে।
ঠিক আছে।
দেখলাম মল্লিকদা এসে পাসে দাঁড়িয়েছে। আমি ফোনটা কাটতেই আমার দিকে তাকিয়ে হাঁসলো।

এখানেও ব্যবসা।
কি করবো বলো। দায়িত্ব নিয়েছি। সুজিতদা জানে না।
ও সেই কালকের সুজিত।
হ্যাঁ। চম্পকদাটা সব গজব করে দেবে বুঝলে মল্লিকদা।
তোকেতো অনেকদিন বলেছি।
কি করবো। পুরনো লোক দাদা দুঃখ পাবে।
ওকি এ্যাডটা যাবে না বলেছে।
তা বলে নি। বলেছে একজন নতুন ম্যাডাম জয়েন করেছে তিনি পার্মিসন না দিলে যাবে না।
দাঁড়া আজ চম্পকের সঙ্গে দেখা হোক।
তুমি কিছু বলতে গেলে বলবে ওই দেখো পারিবারিক তন্ত্র।
তাবলে যা খুশি করবে মেনে নিতে হবে।
তুমি দাদাকে দিয়ে বলাবে।
যাই অফিসে আজ।
হ্যাঁগো আমিতো সন্দীপদের বলিনি, দাদা বলেছে।
তোকে ভাবতে হবে না।
এখানে কি ফুসুর ফুসুর হচ্ছে শুনি, চল ভেতরে চল। ছোটমা মল্লিকদার দিকে তাকিয়ে হাসলো।
আমি ছোটমার পেছন পেছন শুর শুর করে ভেতরে চলে এলাম।
দামিনী মাসি কাচে এসে বললো একটু চা খাবি।
চা খাবো মানে। এটা জিজ্ঞাসা করে কেউ। সকাল থেকে চা চা করে চাতক পাখির মতো মরছি।
মাসি মিত্রাকে কিছু খেতে দিয়েছো।
ও বললো কিছু খাবে না। সকাল বেলা সরবত খেয়েছে।
আমি একবার ছোটমা একবার দামিনী মাসির দিকে তাকালাম। ইসলামভাই হাসছে।
কোথায় লুকিয়ে রেখেছো।
আমি শিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে গেলাম। ছোটমা হাঁই হাঁই করে উঠলো।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললো।
ছোটো ওকে ওপরে যেতে দাও। দাদা হাসতে হাসতে বললো।
ছোটমা চুপ করে গেলো। আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো। 
 
 
 
 
 
 
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks