দেখি নাই ফিরে - (Part-75)

আমি ওপরে উঠে এলাম। দেখলাম মিত্রার ঘর থেকে চেঁচামিচির শব্দ। বারান্দা শুনসান। আমি ধীর পায়ে মিত্রার ঘরের সামনে এলাম। আমাকে দেখে সবাই হৈ হৈ করে উঠলো। মিত্রা একটা কাশ্মীরি গালিচার ওপর বসে। ওকে ঘিরে টিনা মিলি সবাই। বড়মা বৌদি সোফায় বসে। প্রথম যেদিন এই বাড়িতে এসেছিলাম মিত্রার সঙ্গে ওই সোফাতে বসেছিলাম। সে রাত্রিটার কথা একনো চোখের সামনে জ্বল জ্বল করে ভেসে আছে। মিত্রা একটা হলুদ রং-এর শাড়ি পরেছে। লাল ব্লাউজ। কপালে আমার মতো হলুদের টিপ তেল গড়িয়ে পরেছে। আমার দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হাসলো।
বড়মা বড় এখানে কেনো। টিনা চেঁচিয়ে উঠলো।
টিনার কথাটা আমার যেনো কানেই ঢুকছে না। আমি কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম। এক দৃষ্টে ওর দিকে তাকালাম। তারপর ফিরে এলাম। শিঁড়ি দিয়ে ধীর পায়ে নিচে নামলাম। শিঁড়ির মুখে দামিনী মাসি চায়ের কাপ হাতে দাঁড়িয়ে। মাসির হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে সোজা বাগানে চলে এলাম। কারুর দিকে তাকালাম না। রবীন গাড়ি মুছছে। পায়ে পায়ে রবীনের দিকে এগিয়ে গেলাম। চায়ের কাপটা রবীনের হাতে দিয়ে বাগানের পেছনে চলে এলাম। মিত্রার বাগানটা ও বাড়ির থেকেও সুন্দর। এ বাড়িতে দুটো মালি আছে। ওরা মেইনটেন করে। সব ধরনের ফুল কম বেশি ফুটে আছে। আমি ডালিয়ার টব গুলোর কাছে গিয়ে বসলাম। দারুন লাগছে ডালিয়া গুলোকে দেখতে। পাশেই হাসনুহানা। কি রং যেনো যৌবন ফুটে বেরোচ্ছে। চার রকমের গোলাপ। মেরুণ কালারের গোলাপ গুলো আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো। আমি ঘাসের ওপর বসে পরলাম। মনে হলো আমি এদের কতোদিনের পরিচিত।
দেয়ালের ধার ঘেঁসে পাম সুপুরি নারকেল গাছ। আমি চেয়ে চেয়ে দেখছি। সামনেই দুটো চড়ুই পাখি উড়ে এসে বসলো। ঠোঁটে ঠোঁট রেখে একে অপরকে সোহাগ করলো তারপর আবার উড়ে চলে গেলো। আমি একমনে দেখছি। মিত্রাকে আজ কি সুন্দর লাগছে। হয়তো ওর প্রথম বিয়ের দিন আরো সুন্দর লেগেছে ওকে। এ বাড়িতে তখন কতো লোকের হৈ চৈ। কতো ব্যস্ততা। আজও হয়তো সেইটা ফিরিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে।
কিরে এখানে একা একা।
মুখ তুলে তাকালাম। মিত্রা পাশে এসে বসলো। আমি ওর দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে।
কি দেখছিস অমন করে।
তোকে ভীষণ সুন্দর লাগছে।
তাই।
মাথা দোলালাম।
হঠাৎ ওই ভাবে চলে এলি।
সকাল থেকে তোকে দেখার খুব ইচ্ছে ছিলো। দেখা হয়ে গেলো, চলে এলাম।
ছোটমা বললো, তুই মিত্রা মিত্রা করে পাগল করে দিয়েছিস।
হাসলাম।
আমাকে বকলি না।
কেনো।
তোকে না বলে চলে এলাম।
তুই আমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিস, আমি সারপ্রাইজড হলাম।
তাই নিচে চলে এলি মন খারাপ করে।
কই মন খারাপ করলাম।
চাটা রবীনকে দিয়ে দিয়েছিস।
তোকে দেখার পর খেতে ইচ্ছে করলো না।
কেনো।
তুই আমার জন্য কষ্ট করছিস, আমি এই টুকু পারবো না।
কই আমি কষ্ট করছি।
তুইতো কিছু খাস নি।
সরবত খেয়েছি।
আমি জল খেয়েছি।
মিত্রা খিল খিল করে হেসে উঠলো। চল ভেতরে চল, ছোটমা হলুদ মাখাবে দুজনকে।
এই সুন্দর জামাটা নষ্ট করে ফেলবো।
আবার কিনে দেবো তোকে।
তোর বাবা মার কাছে একবার নিয়ে যাবি।
চল। আমার ঘরে কোনো ফটো নেই। মায়ের ঘরে আছে। ও ঘরে তুই কোনোদিন ঢুকিস নি।
বড়মা কোথায় ?
তোর মন খারাপ হয়েছে দেখে বড়মারও মুখটা কেমন ভারি হয়ে গেলো। দামিনী মাসি বললো তুই যা মিত্রা, তুই গেলে ও ঠিক হবে।
নারে আমার মন খারাপ হয়নি। মাঝে মাঝে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি আমি এসবের যোগ্য কিনা।
কেনো তোর মনে এতো সংকোচ।
সংকোচ নয়। না পাওয়ার বেদনা। যখন পাই ঠিক মতো গ্রহণ করতে পারিনা।
আমিতো আছি তোর পাশে ভয় কিসের।
তোকে হারাবার ভয় আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়।
আর আমাকে হারাবি না। চল এবার ওঠ। আজকে তুই আমার স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন আমি সার্থক করবো।
আমি বাধা দেবো না। আর কি কি আছে।
নাই বা জানলি।
ঠিক আছে জানতে চাইবো না।

পায়ে পায়ে দুজনে মিত্রার মায়ের ঘরে এলাম। দুজনকে আগে যেমন দেখেছিলাম। ফটোতেও সেরকম দেখলাম। সমান জীবন্ত। ফুলের মালা দিয়ে সাজানো। আমি মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করলাম।
জানিস বুবুন আজ বাবা থাকলে ভীষণ খুশী হতো।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম।
তুই প্রণাম করে কি বললি।
যে দায়িত্ব মাথা পেতে নিচ্ছি তা বহন করবার শক্তি দিন।
মিত্রা কাছে এসে আমার বুকে ঠোঁট রাখলো।
এবার তুই কিছু খা।
না। আমাকে এই ঘরে একটু একা থাকতে দিবি।
না।
কেনো।
তুই আবার মন খারাপ করবি।
না করবো না।
তুই আজ আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকবি। একটুক্ষণের জন্যও আমার চোখের আড়াল হবি না।
তোর আত্মীয়রা কেউ আসবে না।
সবাইকে বলেছি যারা আসে আসবে নাহলে কি করবো। সকাল থেকেতো কেউ আসে নি।
তুই কখন এসেছিস।
ভোর বেলা। সবাই মিলে গঙ্গায় স্নান করলাম। তারপর চলে এলাম।
আমাকে একা রেখে চলে এলি।
তুই বড় তোকে সঙ্গে আনা যায়।
হেসে ফেললাম।
তুই বিয়ে করতে চেয়েছিস, বিয়েটা শুধু কাগজ কলমে হয় একটু অনুষ্ঠান না করলে চলে।
তাঁর মানে ছাঁদনা তলা শুভ দৃষ্টি।
দূর ওসব কবে হয়ে গেছে।
তাহলে।
দেখবি, সময় হোক।
এখন কি করবো।
কি করবি ঘুরে ঘুরে বেড়াবি।
দু’জনে পায়ে পায়ে নিচে নেমে এলাম।
ডাক্তারদাদা আমার দিকে তাকিয়ে বললো, কি স্ট্রং ম্যান। মনে হচ্ছে চিন্তা শক্তির কোথাও খেদ পরছে।
মাথা নীচু করে হাসলাম।
তুমিতো ভাবতেই পারো নি এরকম কিছু একটা হতে পারে।
মাথা দোলালাম।
তোমায় কিরকম সারপ্রাইজ দেওয়া হলো বলোতো।
হাসলাম।
হাসলে হবে তোকে মুখে কিছু বলতে হবে। দাদা বললো।
দাঁড়াও না এডিটর, বাবু এখন নিজের সঙ্গে নিজে যুদ্ধ করছে।
কি করে বুঝলে।
ওর মুখ বলছে।
থামো তুমি, হ্যাঁরে তোরা দুজন কিছু খা। বড়মা বললো।
আমি খাবো না মিত্রা খাক।
কেনো!
তুই খেলে খাবো।
এই যে বললি খেতে নেই।
তোকে মিত্রা বলেছে।
বললোতো খালি সরবৎ খেয়েছি আর কিছু খাবো না।
একটু মিষ্টি খা কিছু হবে না।
মিত্রার দিকে তাকালাম।
মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।

আমি অনাদি বাসু এসে বাগানের সবুজ গালিচার মতো ঘাসে বসলাম। সামান্য গরম পরেছে। গাছতলায় বসে অনাদিকে বললাম একটা সিগারেট দিবি।
আমার কাছে নেই, চিকনার কাছে আছে।
বাসু বললো দাঁড়া চিকনাকে ডাকি।
ও কোথায় ?
আবার কোথায়, বড়মার পেছন পেছন ঘুরছে, আর খেয়ে যাচ্ছে।
বাসু উঠে দাঁড়ালো।
হ্যাঁরে অনাদি মৌসুমি মাসি এখন ওখানে আছে।
না দেশে গেছে মাস খানেক পরে আসবে। লোক জোগাড় করে।
কেনো।
চিকনা মৌসুমি মাসিকে বলেছে।
কেনো আমাদের ওখানে লোক পাওয়া যাবে না।
চিকনার বিশ্বাস নেই। তারওপর তোর বাবার আমলের লোক। চিকনা বললো মাসি তার লোকজন নিয়ে ধান সেদ্ধকরা শুকনো করা ওই সব করবে। বাকি পচা পাঁচু হাঁড়ি পাড়ার কিছু ছেলে।
মাসির বয়স হয়েছে।
কে শুনবে কার কথা। যেই শুনেছে অনি মিনি রাইস মিল করবে সেই থেকে স্যারের মাথা খেয়ে ফেলছে। চাষের সময়টা ছাড়া গ্রামের ঘরে কাজ কোথায় বলতো। সব সময়তো তোর ওখানে পরে আছে।
ঠিক।
তুইতো মৌসুমি মাসির দেশের বাড়ি গেছিস।
মাস দুয়েক আগেও গেছিলাম। মৌসুমি মাসির মেয়ের জামাই ওখানকার মুখিয়া। আমার ভীষণ ভালো লাগে জায়গাটা। নামটাও ভীষণ সুন্দর ভালোপাহাড়। ওখানে প্রায় সকলে আমাকে চেনে। এক একটা ছোটো ছোট টিলার মতো পাহাড় আট দশটা পরিবার নিয়ে এক একটা গ্রাম। পাঁচটা গ্রাম পঞ্চাশটা পরিবার। পাঁচ ছশো মানুষ। আমরা শহরে বসে অনেক লেকচার দিই বুঝেছিস অনাদি। তুই গেছিস কখনো ?
না।
দেখলাম বাসু চিকনা হাসতে হাসতে আসছে। কাছে এসে একটা ভেউ করে ঢেঁকুড় তুললো।
কিরে!
খাওয়াটা একটু বেশি হয়ে গেছে বুঝলি অনি।
কি খেলি ?
বেশি না, গোটা কুড়ি লুচি আর দশটা রসোগোল্লা।
এটা টিফিন!
তাহলে কি।
দুপুরে।
ইসলামভাই-এর লোকজন তৈরি করছে। বিড়িয়ানি মুরগীর ঠ্যাং।
আমি চিকনার দিকে তাকালাম।
তাকিয়ে লাভ নেই। এই জন্য বলেছিলাম অনি বিয়ে করিস না। বিয়ে করলে খাওয়া জুটবে না।
আমি হো হো করে হেসেফেললাম।
তুই এইকথা কখন বললি অনিকে। বাসু বললো।
আশাপুরায় যখন পোরতাম। ক্লাস ফোর।
আমার হাসি থামে না।
অনি একটা সিগারেট চাইছে। অনাদি বললো।
তোরা পাবি না।
কেনো ?
একটাই প্যাকেট আছে। সন্ধ্যে পর্যন্ত চালাতে হবে।
কিনে নিবি।
এখন ব্যবসা মন্দা, বুঝে শুনে খরচ করতে হবে।
শুনছিস অনি চিকনার বাতেলা।
সঞ্জুকে আসতে দে, সব হিসেব করে দেবো।
কেনো ও কি আমার বাপ।
বাপ কি মা এলেই বোঝাবো।
অনি তুই তো এখন ভিভিআইপি তোকে এখন ধরা খুব মুস্কিল। এই ফাঁকে কিছু কথা সেরে নিই।



চিকনা আমার হাতে একটা সিগারেট দিলো। ওদেরও দিলো। সিগারেট ধরালাম। চিকনা বাবু হয়ে বসলো।
বল।
ধান রাখার আর জায়গা নেই।
আমি কি করবো।
তুই কি করবি মানে। গাছে তুলে দিয়ে মই কেরে নিবি।
জায়গা বার কর।
অনাদির বাড়িতে রেখেছি, বাসুর বাড়িতে রেখেছি।
কিছু বেচে দে।
এখন বেচলে লাভ হবে না।
তাহলে সেদ্ধ করে চাল বানিয়ে নে। মেসিন পত্র নিয়ে এসেছিস ?
মেসিন এসেছে, এখনো ফিটিং হয় নি।
কেনো।
অনাদিকে জিজ্ঞাসা কর। হারামী আমাকে নাকে দিয়ে, চড়কি ঘোরাচ্ছে।
আমি হাসছি।
হাসিসনা, ও শালা অনেক টাকা চাইছে। মেসিন বসাবার জন্য।
তোর যদি পোষায় অনাদিকে দিয়ে কাজ করাবি, না হলে করাবি না।
সেখানেও ও পুটকি মেরে রেখেছে।
কেনো।
তুই জিজ্ঞাসা কর।
ব্যবসা করবি তুই, আমি অনাদিকে জিজ্ঞাসা করবো কেনো।
অনাদি বাসু হাসছে।
সেগো হাসি হচ্ছে অনির সামনে। আমাকে কেশ খাওয়ানো।
নিশ্চই কিছু একটা অসুবিধা আছে, তাই অনাদি পরে করবে বলছে।
তোকে বলেছে আমাকে বলেনি।
আমাকে অনাদি কিছু বলেনি।
তাহলে তুই জানলি কি করে।
তোর কথা শুনে।
আমার কথা শুনে তুই সব জেনেগেলি!
আমি হাসি।
মাথাটা একটু খাটা না। কতদিন গবেট গোবিন্দ হয়ে থাকবি।
ও বলেছে ব্যাঙ্কের বিল্ডিং-এর মেটিরিয়াল যখন আসবে তখন মেসিন বসাবে।
ঠিকই তো বলেছে। ডবল খরচ করবে কেনো।
কিসের ডবল খরচ।
তোর জন্য একবার গাড়ি ভাড়াদিয়ে মেটিরিয়াল নিয়ে আসবে, আবার ব্যাঙ্কের জন্য মেটেরিয়াল নিয়ে আসবে।
কেনো ও শালা গাড়িভাড়া আমার কাছ থেকে নেবে না, মাগনায় নিয়ে আসবে।
তোর কাছ থেকে কম নেবে।
শালা ওমনি অনির সামনে আমাকে কেশ খাওয়ালি।
চিকনা অনাদিকে তেরে গেলো।
এটা ম্যাডামের বাড়ি নো ঝামেলা।
ওখানে গিয়ে রাম কেলান কেলাবো।
দেখলাম মিত্রা একবার বেরিয়ে এসে আমাদের দেখে আবার হাসতে হাসতে ভেতরে চলে গেলো।

দেখলি দেখলি ম্যাডাম তোর গলার আওয়াজে একবার দেখে গেলো।
এর থেকে আস্তে কথা বলা যায় না।
বোস বোস। এবার বাকিটা বল।
এইটাই আর কিছু নয়।
ওই যে বললি রাখার জায়গা নেই।
অনাদি একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
তাহলেযে বললি অনাদি কিছু করছে না।
আমি তোকে তাই বললাম নাকি।
কতো ধান তুলেছিস।
পাঁচ টন।
ওরে বাবা টাকা পেলি কোথায়।
ইসলামভাই দিয়ে এসেছে।
ইসলামভাইকে শোধ করবি কি করে।
ধান বিক্রি করে।
টাকার সুদ।
নেবেনা বলেছে।
তাহলে।
ও তুই বুঝবি।
আমি বুঝলে তুই কি ব্যবসা করবি।
দাঁড়া একটু চা নিয়ে আসি।
অমনি সটকে পরার ধান্দা।
চিকনা হন হন করে চলে গেলো, আমি চেঁচিয়ে বললাম, আমি কিন্তু খাবো না।
চিকনা একবার পেছন ফিরে দাঁড়ালো।
সেকিরে ভূতের মুখে রাম নাম।
বিয়েতো করলি না।
ওমনি দিলি।
আমি হাসলাম। চিকনা গট গট করে চলে গেলো।
অনাদিকে বললাম কি হাল রে।
কাজ চলছে পুরো দমে।
আমি দিন পনেরোর আগে ওখানে যেতে পারবো না।
তুই কাজ শেষ করে আয়।
নিরঞ্জনদা এলো না।
এসেছে। দাদা কোথায় পাঠিয়েছে।
নিরঞ্জনদা জায়গাটার ব্যাপারে কি বললো।
শুনেছি কাগজপত্র রেডি হচ্ছে। নিরঞ্জনদা খুব দৌড়োদৌড়ি করছে। তোকে একটা সুখবর দেওয়া হয় নি।
কিরে আবার বাপ হবি নাকি।
দুর।
বাসু হো হো করে হেসে ফেললো।
বাসু চান্স নিচ্ছে।
ঢেমনা। বাসু বলে উঠলো।
আমাকে লোকাল কমিটির দায়িত্ব দিয়েছে।
তার মানে! অমল কোথায়।
মাঝে ও একটা ঘোটালা করেছে, মেয়ে ঘটিত।
এ্যাঁ। দিবাকর কেশ।
কাছা কাছি।
তারপর।
নিরঞ্জনদা প্রায়ই এখন ওখানে যাচ্ছে। ওকে সাসপেন করেছে, আমাকে বলেছে তুই দেখ, তারপর দেখছি।

তারমানে তোর চাপ বেরে গেছে।
হ্যাঁ। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত দৌড়।
তোকে একটা কথা বলেছিলাম মনে আছে।
হ্যাঁ। কমিউনিকেসন বাড়াতে, আর যতটা পারি লোকের উপকার করতে। বিশ্বাস কর অনি আমি আপ্রণ চেষ্টা করছি। আমি জানি আমি এখন যেখানে আছি স্রেফ তোর জন্য। জীবনে কোনোদিন আশা করতে পারিনি অনিমেষদার সঙ্গে বসবো। কথা বলবো। আমার সেই শাধ পূর্ণ হয়েছে।
কবে বসেছিলি।
তুই যেদিন অসুস্থ হয়ে পরেছিলি। ওই যে ম্যাসেজ পেয়ে আমরা চলে এলাম।
হ্যাঁ।
ওইদিন। আমাদের প্রত্যেককে ডেকে পাই টু পাই তোর সম্বন্ধে জেনেছে। কি জেরা রে। প্যান্ট ভিঁজে যায় আর কি।
চিকনা।
দুর ওর কোনো বুদ্ধি শুদ্ধি আছে। অনিমেষদার সামনে বলে আমাকে একবার ডাক্তারকে ধরে এনে দিতে পারেন।
এ্যাঁ।
এ্যাঁ না হ্যাঁ। ও ডাক্তারকে একবার দেখে নেবে, ডাক্তার যেনো দিবাকর।
তারপর।
তোর পা ধরে বসে থাকলো আর কাঁদে। কেউ নড়াতে পারলো না ওখান থেকে। পকেট থেকে পয়সা বার করে তোর কপালে ঠেকিয়ে মানতে করেছে। আগামী বছর রাসের সমস্ত খরচ ওর।
কি পাগল বলতো।
পাগল না। তোর তখন যা অবস্থা ছিলো ডাক্তারদাদার মতো ওরকম জাঁদরেল লোক ঘাবড়ে গেছিলো।
আমি পরে অনেক চিন্তা করেছি বুঝলি, কেনো হলো কিছুই বুঝতে পারছি না।
তোর ওপর তখন পিরবাবা ভর করেছিলি।
কচু।
তুই বাসুকে জিজ্ঞাসা কর।
হ্যাঁরে তোকে তখন ধরে রাখা যাচ্ছিল না। আমরা তিনজনে হাঁপিয়ে যাচ্ছিলাম। কি শক্তি তোর গায়ে।
যাঃ যতো সব গাঁজা খুরি।
তুই যখন চোখ খুললি তোর চোখ দুটো জবা ফুলের মতো লাল। কি হয়েছিলো বলতো।
মৃগী হয়েছিলি।
তুই সব কিছুতে হেঁপি মেরে উড়িয়ে দিস।
তোরা আজকের দিনে বসে যদি এসব কথা বলিস, চলে কি করে।
তাহলে তুই পীরবাবার থানে যাস কেনো।
ওটা আমার বিশ্বাস, ভালোবাসা। তাই বলে পীরবাবা আমার ওপর ভর করবে, এটা মানতে পারছি না।
দেখলাম চিকনা মিত্রা সমেত সবাইকে ধরে নিয়ে আসছে। আমি ওদের দিকে তাকিয়ে হাসলাম।
মিত্রা আমার পাশে এসে বললো।
চা খাবিনা কেনো।
এমনি।
আমি ফোন করেছিলাম খেতে বলেছে।
হাসলাম।
হাসলি যে।
তুই ফোন করে পারমিশন নিলি।
না আজকের দিনটা মানবো।
বুঝেছি আবার একটা ঘোটালা।
এই জন্য তোকে বলেছিলাম বিয়ে করিস না অনি, ফুর ফুর করে ঘোরা যাবে।

চিকনাদা।
ওরে বাবা, এ স্মার্ট ম্যাডাম ছিলো কই।
মিত্রা হাসছে।
বিশ্বাস করুণ ম্যাডাম এটা মনের কথা নয়।
কালকে পর্যন্ত হিসাব করে এসেছো। নীপা গম্ভীর হয়ে বললো।
অনি বলেছে এখানে কোনো বিজনেস টক হবে না। খালি খাওয়া দাওয়া আনন্দফূর্তি।
আংরেজী। অনাদি বলে উঠলো।
হ্যাঁরে....তারপর নিজের মুখ নিজে চেপে ধরলো।
তোকে অনি কখন বললো এ সব কথা। অনাদি বললো।
তোর তো কানে বয়রা শুনবি কি করে।
চিকনা এমন ভাবে বললো, সবাই হেসে উঠলো।
মিত্রা আমার হাতে চায়ের কাপ দিয়ে পাশে বসলো। সবাই ঘাসের ওপর গোল করে বসেছে। আমি কাপে সবাই আর্টিফিসিয়াল কাপে।
অদিতি, দেবা নির্মাল্যকে দেখছি না।
আর বোলো না তিনঘন্টা হয়ে গেছে। ইসলামভাই-এর ফোনের বিল চড় চড় করে বারছে।
কোথায় গেছে।
নিউ মার্কেটে পাঠিয়েছে। মাংস আনতে।
চিকেন না মটন।
দুটোই। তাহলে ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা বার করে আনছে।
ওরা হাসে।
সেরকমই হবে। তাও ইসলামভাই-এর পরিচিত দোকান, সব বলে রেখেছে ইসলামভাই।
ম্যাডাম আপনারে কিন্তু আজ চাকমা দেখাচ্ছে। চিকনা বললো।
মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে।
চিকনা একবার নীপার দিকে তাকালো।
তুই তাকাস না। অনির বে বলে কথা। একটু আনন্দ ফূর্তি করবো না।
বে কি চিকনা। মিত্রা বললো।
গাঁইয়া কোথাকার। নীপা বললো।
দেখলি অনি, আমি গাঁইয়া।
বিয়ে বলতে পারো না।
অনি কি ? অনি কি ? ও শউরে।
চিকনা এমন ভাবে বললো সবাই হেসে উঠলো।
ম্যাডাম একটা পার্মিসন নেবো।
কি।
অনির বিয়ে উপলক্ষে একটা বিড়ি খাবো।
মিত্রা মুচকি মুচকি হাসে।
অনি একটা খাবে।
ও বিড়ি খায় !
পাইলে ছাড়ে না।
তোর বিড়ি খাওয়ার প্রথম দিনটা মনে আছে। আমি বললাম।
এইতো শুরু করলি, আমার প্রেসার কুকারে গ্যামো মারার ধান্দা।
চিকনা এমন ভাবে কথাটা বললো সবাই হো হো করে হেসে ফেললো, মিত্রা হাসতে হাসতে আমার গায়ে ঢলে পরলো, সেটা কিরে বুবুন।
বুঝলি না।
মিত্রা মাথা নাড়ে।
অনি একবারে না। তাহলে আমি এ্যান্টাসিড খেয়ে মরে যাবে।
মরো না মরো। নীপা দাঁত খিঁচিয়ে বললো।
ওরকম করে বলিস না, দাঁত ভেঙে যাবে।
সবাই হাসে।
কিরে বুবুন। বলনা চিকনার কোড ল্যাঙ্গুয়েজ গুলো।
প্রেসার কুকার হচ্ছে প্রেসটিজ। প্রসটিজ প্রেসার কুকার আছে না।
ওরা হেসে এ ওর গায়ে ঢলে পরে।
গ্যামো হচ্ছে গ্যামাকসিন।
অনিদা তুমি থামো। মিলি বললো।
এ্যান্টাসিড হচ্ছে ম্যাটাসিড। ধানে পোকা লাগলে দেয়। ওটা বিষ।
চিকনা এতো জানে। মিত্রা এমন ভাবে বললো সবার অবস্থা সঙ্গীন।
এইতো ম্যাডাম। আমি সেই পুকুর ঘাটের কেশটা এবার দেখাই।
মিত্রা আমার হাতটা ধরে বললো ওকে তুই থামতে বল।
আমি বললে ও থামবে। সবে তো শুরু। এখনো সঞ্জু আসে নি। এলে হাতাহাতি হয়ে যেতো।
বিড়ি খাওয়ার কেশটা।
দেখলি চিকনা দেখলি, মিত্রা মনে করিয়ে দিলো।
কি আছে বললে, তোর প্রেসার কুকার ফেটে যাবে নাতো। অনাদি বললো।
আমি কাঞ্চন কেস বলবো।
বলবি।
অনিদা বলোতো এটাতো শোনা হয়নি। নীপা বললো।

ওমা দেখো কিরকম ছত্তিশ পাটি বের করেছে। খুব সখ না। চিকনা বললো।
ওখানে চলো ছত্রিশ পাটি দেখাবো।
ওখানে কেনো এখানে দেখা।
উঠবো।
ওঠা উঠি কেনো, বসে বসে তো বেশ হচ্ছে।
সবাই হাসে।
বুবুন বলনা।
আমি চিকনার দিকে তাকাই।
চিকনা মাথা নীচু করে বললো, বল। ম্যাডাম যখন শুনতে চাইছে।
অনাদি হো হো করে হেসে ফললো।
তোর মাটি কাটার গল্প বলি।
বলনা। পঞ্চায়েত হবো দুটো পয়সা কামাবোনা তা হয়।
শুনলি শুনলি অনি।
আর আমি ধানে দু’টাকা বেশি চাইলে, বলে গ্রামসভা বসাবো।
এটা অন্যায়, এটা আমি মানতে পারছি না। অনাদি এটা ঠিক নয়, ও ওর ব্যাবসা করবে। সে দু’টাকা বেশি নিক আর কম নিক।
সেটা খাতায় লেখে না। গেঁড়ায়। ওটা বলছো নাতো। নীপা চেঁচিয়ে উঠলো।
তুই আমাকে তেল কেনার পয়সা দিস। আমি যে এদিক ওদিক যাই। বিড়া খাওয়ার পয়সা দিস।
তেল না থাকলে তুমি ইসলামভাই-এর বাইক নিয়ে যাও। তুমি ওই পাড়ায় কি করতে যাও। অনিদাকে বলবো।
চিকনা ছুটে গিয়ে নীপার পা ধরে।
তোর পায়ে ধরি তুই বলিস না। তুই যে ঘর শত্তুর বিভীষণ জানতাম না।
সবাই হো হো করে হাসে।
আমি ঘরশত্রু বিভীষণ। দাঁড়াও তোমায় দেখাচ্ছি।
কিরে নীপা বলতো একটু শুনি গিয়েই গ্রাম সভা বসাবো। অনাদি বললো।
তুই আবার আগুনে ঘি ঢালছিস কেনো। চিকনা অনাদির দিকে ঘুরে বললো।
মিত্রা হেসে আমার কোলে মাথা দিয়েছে।
বুবুন একিরে কি থেকে কি বেরোচ্ছে।
দাঁড়ানা আরো বেরোবে।
চিকনা আমাদের দুজনের কাছে এসে বসলো। বিশ্বাস কর অনি সব মিথ্যে। তুই গেলে আমি তোকে সব বলবো।
কিরে, মিনতিকে খুঁজে পেয়েছিস। আমি চোখ নাচিয়ে বললাম।
বাসু মুচকি মুচকি হাসছিলো। এবার হো হো করে জোরে হেসে ফেললো।
বিকেল হলেই সঞ্জুদা চিকনাদা নেই। কোথায় ? ফোন করো, খালি বলবে আসছি দাঁড়া না। নীপা বললো।

এই কেশটা কতোদিন চলছে নীপা।
আমি এখানে আসার পর থেকে বেশি হচ্ছে। আমি সব খবর রাখছি। সঞ্জুদাটা পালের গোদা।
তুই বিশ্বাস কর অনি নীপা মিছে কথা বলছে।
ঠিক আছে সঞ্জু আসুক।
তুমি কাকে বলবে, সঞ্জুদাও ওইরকম। তুমি স্যারকে বলে আসার পর, মিনতিও এখন রেগুলার এ্যাপো করছে।
ওরে বাবা, তুই থাম নীপা। আমার হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গেলো। মিত্রা বললো।
কি বুঝছো টিনা।
সব বুঝেছি অনিদা তুমি আর খুঁচিও না। পেটে খিল ধরে গেছে।
চিকনা আমার আর মিত্রার সামনে বসে। আমি চিকনার দিকে হাসি হাসি মুখ করে দাঁড়িয়ে আছি।
তুই বিশ্বাস কর অনি।
মিনুকে তুই তুলে আনিস বাড়ি থেকে।
হ।
এনে সঞ্জুর কাছে গ্যারেজ করে দিস।
হ।
তারপর দুজনকে পাহারা দিস।
চিকনা লজ্জা পেয়েগেলো মাথা নীচু করে মাথা দোলায়।
আবার বাড়িতে দিয়ে আসিস।
চিকনা হাসে।
সঞ্জু তোকে তেলের পয়সা দেয় ?
না।
কেনো ?
ডিউ স্লিপ।
সবাই হো হো করে হাসছে।
মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে বললো, তুই ওর পেট থেকে কথা বার করে ফেললি।
ওর প্রেম করার দম নেই, মেয়ে দেখলে দশহাত দূর থেকে পালায়।
একমাত্র তুই বুঝেছিস, নীপাটা কিরকম করলো বল।
তুই ওকে বলিসনি কেনো।
ও স্যারকে বলে দেবে।
নীপা তোকে মাইনে দেয় না।
খালি খাটিয়ে মারে বলে কিনা ব্যবসা মন্দা।
ঘোর অন্যায়। আমি যে নীপাকে বলেছিলাম।
প্রতিদিন কুড়িটাকা দেয়। বাবাকে গিয়ে টাকা দিয়ে আসে। আমাকে দেয় না।
তুমিতো টাকা ওড়াবে।
দেখেছিস কিরকম টড়টড়ি।
আমি মিত্রা হাসি।
ম্যাডাম তুমি বলো না নীপাকে প্রতিদিন পাঁচটা টাকা বেশি দিতে।
মিত্রা কোনো কথা বলে না খালি হাঁসে।
দেবাদের গাড়িটা গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকলো।
অদিতি চেঁচিয়ে উঠলো বাবুরা এলেন।
আবার হাসিতে সকলে ফেটে পরলো।
দেবা গেট দিয়ে ঢোকার মুখেই আমাদের দেখেছে। দেখলাম পেছনের সিটে আর একজন বসে। মিত্রাকে একটা কনুইয়ের খোঁচা মারলাম।
কিরে।
দেখতো পেছনের মালটাকে চিন্তে পারিস কিনা।
মিত্রা ভালো করে দেখে আমার দিকে মুখ করে ঘার নাড়ালো, চিনতে পারছে না।

দেবা মৈনাক নামলো। নির্মাল্যকে বললো এগুলো ভেতরে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা কর।
দু’জনে কাছে এলো। এসে মৈনাক একবার আমাকে দেখলো একবার মিত্রার দিকে তাকালো।
শালা হারামী চোখ মেরে মেরে আমার রেটিনা শুকিয়ে গেলো, আর তুই মালটাকে তুলে নিলি।
টিনা মিলি মনে হয় আগে কখনো দেখে নি। ওরা ঠিক বুঝতে পারছে না।
ওই জন্য তোর চোখে কাঁচের গ্লাস, আমি বিন্দাস।
মৈনাক কাছে এসে বসলো।
মিত্রাকে পুরো আপেল লাগছেরে দেখতে।
কবে কিসমিস ছিলো।
দেখ অনি দেখ, মিত্রা আমাকে চিনতে পারছে না। কিরকম ভাবে তাকিয়ে আছে।
তোর পরিচয়টা দিই মনে পরে যাবে।
মিলি ইশারা করে বললো বলো বলো।
তুই ওদের চিনিস।
মৈনাক পেছন ফিরে ওদের দেখলো।
না।
আগে তোর পরিচয় দিই, তারপর ওদেরটা দেবো।
তোর কি এখনো বয়স হয় নি।
কোথায় হলো।
দেখ সবাই তোর পরিচয় দিতে বলছে।
তোকে অলংকার ঝাড়তে হবে না।
সবাই মুখে হাত চাপা দিয়ে হাসছে।
দেবা তুই বলে দে।
ওতো আর একজন।
কেনো।
ফোন করে বললো অনির বিয়ে চলে আয়। তারপর ফোন অফ।
আমি ফোন করে করে পাই না। তারপর কোনোক্রমে পেলাম বললো নিউমার্কেটে মাংসের দোকান।
ভেবে দেখ, অনির বিয়ে নিউ মার্কেটের মাংসের দোকানে। কিরকম খার লাগে।
সবাই হাসছে।
মিত্রার দিকে তাকালাম তোর মনে পরে সেই প্যান্টের চেন খোলা বাচ্চাটা খামচে ধরেছে।
মিত্রা হাসতে গিয়ে বিষম খেলো। মিলি টিনা ছুটে এলো।
কি হলো মিত্রাদি!
মিত্রা হাত দেখাচ্ছে। তোরা থাম থাম। আমি ঠিক হয়ে যাবো।
সবাই এগিয়ে এসেছে।
ওরে বাবারে আমি আর হাসতে পারছি না।
মিত্রা ওদের নিয়ে একটু সরে গেলো। মৈনাক আমার পাশে বসলো।
তুমি বলো না অনিদা। মিলি বললো।
মৈনাক হাসছে। বাচ্চা বাচ্চা মেয়েগুলোর সামনে প্রেসটিজ ঝুল করে দিস না।
ওরে আমরা যখন থার্ড ইয়ার ওরা তখন ইলেভেন টুয়েলভ।
সব আমাদের কলেজের!
সবাই।
খালি ওটা নয়। ওটা এবার ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হবে। নীপার দিকে আঙুল তুলে বললাম।
একটা অট্টহাসির রোল উঠলো মিত্রাদের ওখান থেকে।
কিরে তোদের আবার কি হলো।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম।
ঝেড়ে দিয়েছিস।
মিত্রা হাসতে হাসতে মাথা দোলাচ্ছে।
মৈনাক বিষ্ময়ে আমার দিকে তাকালো, তুই কখন দিলি ডোজটা।
দিয়ে দিয়েছি।
তুই মাইরি এখনো সেরকমই আছিস। শোন আমি আসার পথে নীরুকে ফোনে বলে দিয়েছি, ওরা এসে পরলো বলে।
তুইতো পুরো কেলো করে দিলি।
কিরে বুবুন।
কিরে অনি, তোকে মিত্রা এখনো সেইনামে ডাকে। মিত্রা বললো।
হাসছি। মৈনাক নীরুকে ফোনে বলে দিয়েছে, ওরা এসে পরলো বলে।
ওরা এতো জোর হৈ হৈ করে উঠলো ভেতর থেকে বড়মা ছোটমা বৌদি বেরিয়ে এলো।
মিত্রারা ছুটে চলে গেলো। দেবা মৈনাককে ছোটমার সঙ্গে পরিচয় করাবার জন্য টেনে নিয়ে গেলো।
চিকনা কাছে এসে বললো, গুরু কেশটা কি বলতো একটু খানি শুনেছি।
কিসের বলতো।
ওই যে তোর নতুন বন্ধু মৈনাক না কি যেন নাম।
আমি হেসে ফেললাম।
আরে বলনা, এখুনি সব চলে আসবে।
চিকনা ঠিক বলেছে অনি। আমাদের শোনা হয়নি।
আমি হাসছি।
হাসিসনা বলনা।
দেখলাম মৈনাককে নিয়ে ওরা ভেতরে যাচ্ছে।
একটা সিগারেট দে।
একটা না পুরো প্যাকেটটা দিচ্ছি।
চিকনা উঠে দাঁড়িয়ে তাড়াহুড়ো করে পকেট থেক প্যাকেটটা বার করে দিলো।
বল বল।
আমি হাসছি।
হাসিস না বলনা।
আমি একটা সিগারেট ধরালাম। হুস করে ধোঁয়া ছেড়ে বলতে আরম্ভ করলাম। 
 
 
 
 
 
 
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks