দেখি নাই ফিরে - (Part-76)

সেদিন বসিরহাটে মৈনাকের এক আত্মীয় বাড়ি গেছিলাম। ফিরছি বিকেলের বাসে। থ্রিসিটে বসেছি। জানলার ধারে একজন মহিলা, কোলে একটা বাচ্চা। মাঝখানে মৈনাক সাইডে আমি। বাসটা ফাঁকা ফাঁকা। অনেকটা জার্নি। তাই বাসে ওঠার আগে দুজনেই তলপেট খালি করে নিলাম। এবার গিয়ে সিটে জমিয়ে বসলাম। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়েছে। বাসের ভেতরে একটা মাত্র লাইট জ্বলছে। দুজনেই ঘুমিয়ে পরেছি। হঠাৎ মৈনাক হাঁই হাঁই করে চেঁচিয়ে উঠলো। ঘুম ভেঙে গেলো।
কিরে কি হয়েছে।
মৈনাক চুপ।
ভদ্রমহিলা যিনি জানলার ধারে বসেছিলেন তিনি মুচকি মুচকি হাসছেন। বাচ্চাটা ভদ্রমহিলার কোলে বেশ ছট ফট ছট ফট করছে। মৈনাক চেন্টুর জায়গাটা ধরে বসে আছে।
আমি ভাবলাম ভদ্রমহিলা কি ওর চেন্টু টিপে দিলো নাকি। মৈনাক একবার ভদ্রমহিলার দিকে তাকায় একবার বাচ্চাটার দিকে তাকায়। বাচ্চাটা তখনো হ হ করছে। চুপ করে গেলাম।
বাস থেক এসপ্লেনেডে নেমে মৈনাককে জিজ্ঞাসা করলাম কিরে কি হয়েছিলো তখন। তুই চেঁচিয়ে উঠলি কেনো। ভদ্রমহিলা কি তোর গোপন জায়গায় হাত দিয়েছিলো।
মৈনাক গম্ভীর। অনেক বার জিজ্ঞাসা করার পর বললো, কি হারামী বাচ্চারে।
আমি বললাম কেনো কি হয়েছে।
শালা আমার চেন্টু ধরেছিলো।
তারমানে।
শালা আজ জাঙ্গিয়াটা পরিনি। এতটা জার্নি ভেবেছিলাম পাছা গরম হয়ে যাবে।
তুই খালি পাছায় প্যান্ট পরেছিলি।
হ্যাঁ।
চেন খোলা ছিলো।
হবে হয়তো।
চুল ধরে টান মেরেছে।


হ্যাঁ।
ওই জন্য তুই চেঁচিয়ে উঠলি।
মৈনাক মুখ ভেটকে বললো, কতগুলো চুল ছিঁড়েছে জানিস। শালা......
আমাকে আর শেষ করতে হলো না। ওরা তিনজনে হাসতে হাসতে মাটিতে শুয়ে পরলো।
বাসু হাসতে হাসতে বলে উঠলো ওরে অনি আমরা কি জিনিষ তোর এই বন্ধুরাতো এক একজন এক একদিকে দিকপাল।
চিকনা হাসতে হাসতে বেদম কেশে উঠলো।
মিত্রা আবার ভেতর থেকে বেরিয়ে এসেছে।
ছুটে আমার কাছে এলো।
ও হাসছে।
তুই এদের বলেছিস নিশ্চই।
কি করবো শুনতে চাইলো।
চিকনা তখনো খং খং করে কাসছে।
সত্যি, মৈনাকটা কিরে।
ম্যাডাম আপনি থামুন, আর বলতে হবে না। বাসু বলে উঠলো।
ফোনটা বেজে উঠলো।
দেখলাম কনিষ্ক।
ফনটা ধরতেই তেড়ে খিস্তি। তারপর বললো তোর মিত্রার বাড়ি খুঁজে পাচ্ছি না। মৈনাক হারামী এমনভাবে বললো, কিছুই বুঝতে পারলাম না। ওদের আবার ঠিক মতো ডিরেকসন দিলাম।
কেরে।
ডাক্তাররা আসছে।
এর মধ্যে আবার ওরা!
কেনো তোর ভালো লাগছে না।
আমার মাথা খারাপ হয়ে যাবে। তোর বন্ধু নয়তো এক এক জন এক এক পদ।
ম্যাডাম আপনি বলুন এদের ডাক্তার বলে মনে হয়। মনে হয়না এরা ছ্যাবলা। তাইনা। চিকনা বললো।
তবু ওরা ডাক্তার, ডাক্তারদাদা বলছিলো ওদের বেশ নাম ডাক আছে। চল ভেতরে চল হলুদ মাখাবে বলছে বৌদি।
সেটা আবার কিরে।
তুমি জানো না। চিকনা এমন ভাবে মুখ ভেংচালো মিত্রা হাসতে হাসতে আমাকে ধরে ফেললো।
চিকনারটা কিন্তু শোনা হয়নি।
মৈনাকদারটা শোনার পরও আমারটা শুনতে হবে।
মিত্রা হাসছে।
ভেতরে এলাম। ছোটমা এগিয়ে এলো। আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। চোখে মুখে হাসির ছটা।
তোর বন্ধু গুলো কি সব তোরমতো ?
কেনো।
তোর গ্রামের বন্ধু আর শহরের বন্ধুর মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি না।
ডাক্তাররা আসছে।
ওদের কে বললো!
মৈনাক। বুঝতে পারছো এবার।
সবতো লন্ড ভন্ড করে দেবে।
অনির বিয়ে বলে কথা। এই জন্য অনি চুপি চুপি সারতে চেয়েছিলো।
ছোটমা আমার মাথাটা টেনে নিয়ে কপালে চুমু খেলো।
বাইরে গাড়ির তাড়স্বর হর্ণ বেজে উঠলো।


এইরে ওরা এলো। যাই দিদিকে গিয়ে বলি। ছোটমা ভেতরে গেলো।
আমি বেরিয়ে এলাম।
সেদিন ছিলো ছয়জন আজকে আরো চারজন জুটেছে। সবাই হৈ হৈ করতে করতে ভেতরে এলো। বাকি চারজনের সঙ্গে ওরাই সবার পরিচয় করিয়ে দিলো।
কনিষ্ক চেঁচিয়ে উঠলো, বড়মা দাদা মল্লিকদা স্যারকে দেখতে পাচ্ছি না।
ওরা একটু বাইরে গেছে একুনি এসে পরবে।
কি ম্যাডাম এটা কি হলো। কথাছিলো রবিবার। কনিষ্ক চেঁচিয়ে উঠলো। নীরু।
বলনা, ওরকম করিস কেনো।
তোর সঙ্গে আগে অনির বিয়েটা সেরে নে, তারপর ম্যাডামের সঙ্গে হবে।
সেটা আবার কিরে। বড়মা বললো।
তুমি বুঝবেনা। দেখোনা কি হয়। দুজনের এনগেজমেন্ট আজ থেকে আট বছর আগে হয়েছে।
মিত্রা আমার পাশে, সবাই চারিদিকে ভিড় করে আছে। ওরা আমাকে মিত্রাকে ঘিরে ধরে আছে। সবাই হাসা হাসি করছে। নীরু এগিয়ে এলো। বলোনা তুমি আমাকে কবে বিয়ে করবে। ঘরে তুলবে। চিরিদিক একবার দেখে নিলাম আমাকে কে কে লক্ষ করছে। খুব গম্ভীর হয়ে দিলাম নীরুর তলাটা টিপে। একমাত্রা মিত্রা ছাড়া কেউ বুঝতে পারলো না। মিত্রা মুখে হাত দিয়েছে। নীরু অক করে দূরে সরে গেলো, বটা চেঁচিয়ে উঠলো।
কিরে নীরু পেনিসিলিন না ট্যারামাইসিন ?
কনিষ্ক বড় বড় চোখ করে বললো, এরি মধ্যে অনি হাত মেরে দিয়েছে।
তবে। হাতকি সাফাই বলে কথা। বটা বলে উঠলো।
আমি গম্ভীর হয়ে হাসছি। নীরু গিয়ে সোফায়।
বাপ আমায় একটা সম্পত্তি দিয়েছে করে কর্মে খাওয়ার জন্য, তাও যদি হরণ হয়ে যায় থাকবো কি নিয়ে।
ঘর ভর্তি সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
এরপর হলুদ মাখা মাখি হলো। কেউ বাদ গেল না। এমনকি ইসলাভাইকে পর্যন্ত হলুদ মাখানো হলো। তার মধ্যেই কনিষ্ক গিয়ে বড়মার সঙ্গে কি কথা বললো। বড়মা খালি হেসে বললো তোরা দেখিস বাবা। তোদের বন্ধু।
কাল মিত্রা ঠিক কথা বলেছিলো তোকে নিয়ে পুতুল খেলবো। তুই না করবি না। আমি সত্যি আজ গোবর গণেশ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। এমনকি ভজুরাম সে পর্যন্ত আমার মুখে হলুদ মাখিয়ে চলে গেলো। কি আনন্দ তার। এতগুলো লোকের আতিথেয়তার কোনো খামতি ওরা রাখে নি। যে যার ইচ্ছে মতো ছবি তুলছে। হৈ হট্টোগোল হাসা হাসি। একমাত্র দাদা ডাক্তারদাদা মল্লিকদা এখনো ফিরলো না । মনে হয় অফিসের দিকে একবার গেছে।
হলুদ মাখা মাখি শেষ হতেই কনিষ্করা আমাকে এসে ঘিরে ধরলো। ম্যাডাম অনিকে একটু ছাড়তে হবে। মিটিং আছে ওর সঙ্গে।
মিত্রা আমার দিকে তাকালো, ওকে ইশারায় বোঝাবার চেষ্টা করলাম, না বল। ও তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসে। ব্যাপারটা এরকম ডাকছে যখন যা না।
অনি ম্যাডাম না বললেও তোকে তুলে নিয়ে যাবো এটা মাথায় রাখিস। বটা বললো।
বুঝলাম বেগতিক।
বড়মা ছোটমা বৌদি হাসে।
বটা চেঁচিয়ে উঠলো বড়মা কোন ঘরে।
তোরা কি এখন করবি ওই সব।
হ্যাঁ।
তাহলে ওই ঘরে যা। স্নানটা সেরে নিলে হতো না।
আমি খালি শুনে আঁচ করার চেষ্টা করছি ওরা কি করতে চায়।
ওটা পরাস না চুলকুনি হবে।
ওষুধ দিয়ে দেবো তোমার কোনো চিন্তা নেই।
এ ওর মুখের দিকে তাকায়।
নীরু মাল গুলো নিয়ে আয়তো।
নীরু লাফাতে লাফাতে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো। ওরা আমাকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে নিচের ঘরে চলে গেলো।
হৈ হৈ রৈ রৈ। হাসা হাসি।
ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করলো।




শালা তুই সবাইকে ভুগিয়েছিস এবার তোকে একটু ভোগাই।
বলবিতো কি। কি করতে চাস তোরা।
পাজামা পাঞ্জাবী খোল।
কি নেংটো হয়ে নৃত্য করবো।
দরজা ধাক্কা দেবার শব্দ। বটা দরজা খুললো। নীরু ভতরে এলো।
সোহাগী তুমি আজ আমায় একটু ঝেঁটার বাড়ি মারো।
গান্ডু।
দেখলাম বটা প্লাসটিকের প্যাকেট থেকে সেই ওঝার জামা কাপর কৌপিন উইগ দাড়ি গোঁফ বার করেছে। কমন্ডুল লাঠি। এমনকি সিঁদুর পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।
ওরে শালা এগুলো কোথা থেকে নিয়ে এলি।
কনিষ্ক সিগারেট বার করে দিলো।
নে নে দু’টান মেরে নে।
ধরালাম।
কিরকম গিমিক দিলাম বলতো অনি। অনিকেত বললো।
দারুণ। শালা নীরুর কথা মনে পরে যাচ্ছে। এই হারামী নীরু।
বলনা।
একটু নারকেল তেল আর একটা ছেঁড়া কাপরের টুকরে বড়মার কাছ থেকে নিয়ে আয়।
নীরু দরজা খুলে বেরিয়ে গেলো।
একটু ফাঁক হতেই দেখলাম সবাই উৎসুক চোখে ঘরের দরজার দিকে চেয়ে বসে আছে।
হ্যাঁরে কনিষ্ক বড়মা বলছিলো পরলে চুলকোবে সেটা কি রে।
গান্ডু সব দিকে কান আছে। অনেক কষ্টে নীরুর রুম থেকে তোর কৌপিনটা খুঁজে বার করেছি, বাকি সব কিনে এনেছি।
আবার নীরুর ঘাড় ভেঙেছিস।
তাহলে কি, শালা পেটে হাত বুলিয়ে বহুত কামাচ্ছে।
খোল খোল দেরি করিস না।
দাঁড়া না মুখটা মুছি আগে।
নীরু দরজা ধাক্কালো দেখলাম মৈনাক দেবা নীরুর সঙ্গে ঢুকলো।
কিরে গান্ডু, তোরা এলি কি করতে।
হারামী সেদিন গল্প বলেছিস, আজ দেখি ভালো করে।
বটা এটা কি হলো। মৈনাক বললো।
কেনো তোর আবার কিসের চুলকুনি।
অনি হারামী সেই কেশ পর্দাফাঁস করে দিয়েছে। কচি কচি মেয়েগুলো আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
চেন্টু খুলে রাখবে ধরলেই দোষ। গান্ডু।
তোরা ওর একটা কিছু বার কর।
ও এখন কাপর ছাড়ছে, ল্যাংট পরবে একটু মেরে দে, দেবা মোবাইলে ছবি তুলে রাখছে।
বোকচো।
পুরো দেনা। আজ কেনো আধা আধা বাপের কথায় সুতো বাঁধা।
আমি হো হো করে হেসে ফেললাম।
অনি হাসিস না তোর মালটা অনেক দিন পর ঝারলাম।
ওরা পুরোটা জানে।
মৈনাক শালা জানে দেখছিস না মুখ ফোলালো।
কিরে অনি কলসি থেকে জল গড়িয়েছিস। কনিষ্ক বললো।
চেঁখে দেখেছি।
নোনতা না মিষ্টি।
দুটোর মাঝামাঝি।
শালা, দুদিন পরতো আমি দেখবই। নীরু চেঁচিয়ে উঠলো।
তার আগে তোর বউটাকে নিয়ে একরাতে দীঘায় কাটিয়ে আসবো।
দেখলি দেখলি বটা অনি কি কথার কি মানে করলো।
কেনো তুমি বাচ্চা দেখতে গিয়ে আঙলি করবে ও করলেই দোষ।
তাহলে আমরা সবাইকে আঙলি করি।


সবাইকে করো না ওর বউকে করবে।
নীরু চুপ করে গেলো।
আমি পাজামা পাঞ্জাবী খুলে সেই রক্তবর্ণ চেলি পরলাম। মাথায় উইগ দাড়ি গোঁফ। মাথায় লাল টিপ লম্বা করে। বরং সেদিনের থেকে একটু সময় নিয়ে ভালো সাজলাম। ওরা ভেতরেই হৈ হৈ করে উঠলো। দরজায় দুচারবার ধাক্কা দিলো।
গুরু সেদিনের মতো একটু করবে। নীরুকে ফিট করছি বাইরে গিয়ে। বটা বললো।
ঝেঁটা লাগবে।
তুই শালা আমাকে আজও ঝেঁটা মারবি। নীরু চেঁচিয়ে উঠলো।
ঠিক আছে, তাহলে হবে না। অভিনয় করতে গেলে কয়েকটা ঝেঁটার বাড়ি খেতেই হবে।
ক্যানসেল।
বটা আমি কিছু জানিনা।
তুই আজকে কনিষ্কের ভূত ছাড়া।
সেকিরে, আমাকে কি ভূতে ধরেছে।
তাহলে মৈনাকের।
আমাকে ক্ষমা দে। সকাল থেকে অনি আমার প্রেসটিজ পিসে মেরে দিয়েছে।
ঠিক আছে তোদের মন রাখতে আমিই বলির পাঁঠা হই।
নীরু দরজা খুলতেই দেখলাম মিত্রারা সবাই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে। আমাকে এক ঝলক দেখে ওদের সে কি হাঁসি। সবাই গড়িয়ে পরে। খালি কানে এলো, বড়মাগো তোমার ছেলেকে দেখবে এসো একবার।
দরজা বন্ধ।
আমি রেডি হলাম।
তোকে কিন্তু দারুণ মানিয়েছে অনি। দেবা বললো।
তুই শালা সব তুলেছিস মোবাইলে না।
হ্যাঁ।
অদিতিকে দেখিয়ে খুশবু নিবি।
মিত্রাকেও দেখাবো।
হারামী।
দরজা খোলা হলো। আমি বেরোলাম। গম্ভীর মুখশ্রী। আমাকে দেখে সকলে এতো জোরে হেসে উঠলো। নীরু ব্যাটা পর্যন্ত উঠে দাঁড়ালো। আমার ভূত পালিয়ে গেছে অনি তোকে আর ভূত ছাড়াতে হবে না। ওরা যে যার ইচ্ছে মতো ছবি তুলছে। দাদা মল্লিকদা ডাক্তারদাদা হাসতে হাসতে সোফায় গা এলিয়ে দিয়েছে।
বটা এগিয়ে গিয়ে বড়মাকে ধরে নিয়ে এলো আমার সামনে। দেখো তোমার ছেলেকে চিন্তে পারো। তবু মেকআপটা সেদিনের মতো হয় নি।
বড়মা আমার মুখে হাত দিয়েছে।
কনিষ্ক বলে উঠলো হাত দিও না খুলে যাবে।
সে এক হৈ হৈ ব্যাপার।


ছোটমা এসে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলো। মিত্রা এসে আমার দাড়িতে একবার হাত বোলালো। যে যার ইচ্ছে মতো ছবি তুলছে, হাসছে। সুরো এগিয়ে এসে আমার মুখের কাছে মুখ নিয়ে এসে বললো সত্যি অনিদাতো।
নীরু বড়মাকে জড়িয়ে ধরে বললো দেখছো এইভাবে সেদিন আমাকে ঝেঁটার বাড়ি মেরেছিলো। যতো নষ্টের গোড়া ওই কনিষ্ক।
বড়মা হাসছে।
কিরে এবার খুলে ফেলি কুট কুট করছে।
কিরে তোরা ওকে ওইটা পরিয়েছিস।
পরাবো না।
বড়মা আমার কাপরে হাত দিলো।
দাঁড়াও সবাই আছে।
আবার হো হো করে হাসি।
খোল তুই আগে।
ঘরে যাই।
এখানে খোল।
তুমি কি পাগল হয়েছো।
তোরা এরকম করলে পাগল হতে কে বাকি থাকবে।
দামিনী কাচে এসে মুকে কাপর চাপা দিয়েছে। ভালো করে আমার মুখের দিকে তাকাচ্ছে।
নীরু কাছে এলো, অনি সেই ডায়লগটা একবার দে কানে এখনো বাজে।
ফিস ফিস করে বললাম হারামী।
বড়মা দেখছো, অনি গালাগালি দিচ্ছে।
ওরা যে যার ওদের মতো হাসছে।
ইসলামভাই এগিয়ে এলো। মোবাইলটা মিত্রার হাতে দিয়ে বললো, মামনি আমার সঙ্গে সাধুবাবার একটা ছবি তুলে দেতো।
সবাই ছবি তুললো আমি বড়মা ছোটমা দামিনী মাসি বৌদি একটা ছবি তুললাম। মিত্রার সঙ্গে আলাদাকরে ছবি তোলা হলো, বিভিন্ন পোজে। দাদার সঙ্গে ছবি তুললাম। ওরা যে যার ইচ্ছে মতো ভিডিও স্টিল করছে। আমার মোবাইলটা নিয়ে এসে মিত্রা ইচ্ছে মতো ছবি তুললো। শেষে আমি উইগ খুলে বাথরুমে ঢুকলাম।
ভালো করে স্নান করলাম। মিত্রা এসে পাজামা পাঞ্জাবী দিয়ে গেলো। স্নান সেরে বেরোলাম।
মিত্রা দেখলাম আমার আগে রেডি হয়ে গেছে। এগিয়ে এসে আমাকে চিরুনিটা দিলো। আমার চুলটা আঁচড়ালাম। খাওয়ার জায়গা করা হচ্ছে। কর্নারের টেবিলে ভিড় সবাই চেঁচা মিচি করচে হাসছে।
ওখানে কি হচ্ছে রে সবার তোলা ছবি টিনা ল্যাপটপে লোড করছে।
কোন ছবি।
গায়ে হলুদ তোর ওঝা সাজা।
অনিদা। মিলি এদিকে ফিরে ডাকলো।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে হাসলাম।
ঋতি অনুযায়ী বাড়ির সকল গুরুজনকে আমি মিত্রা পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম।
ডাক্তারদাদা মাথায় হাত দিয়ে বললেন, যাই বল অনি তোর গল্পের সঙ্গে চরিত্রটা বেশ মানানসই।
মল্লিকদা হো হো করে হেসে ফললো।
আমি মল্লিকদার দিকে তাকালাম।
তাকাস নি। একটা আর্টিকেল নামাচ্ছি জমপেশ করে। সাধুবাবার কাহিনী টিনাকে বলেছি ছবিগুলো বেছে রাখ কাজে লাগাবো।
ছোটমা এসে ঘরে ঢুকলো। পেছনে বৌদি। দুজনের হাতে মিষ্টির প্লেট, জলের গ্লাস।
কি হয়েছে গো।
অনিকে বললাম ওই কথাটা।
ছোটমা টেবিলে মিষ্টির প্লেটটা রেখে হাসতে আরম্ভ করলো।
কিরে ছোটো। বৌদি বললো।
ও অনিকে নিয়ে লিখবে সাধুবাবার কাহিনী।
সত্যি দেখ, এখন ওকে দেখ, তখন কিরকম সেজেছিলো। আমি সুরোর মুখ থেকে শুনেছিলাম বিশ্বাস করিনি আজতো দেখছি সত্যি ও এসব করেছিলো।


মৈনাকের কথা তখন শুনলে না।
মিত্রা হো হো করে হেসে ফেললো। ছোটমা বৌদি দুজনেই হাসে।
দাদা বললো ছোট এই ব্যাপারটা আবার কি।
আপনাকে শুনতে হবে না।
আচ্ছা থাক।
সব কিছুতে তোমার ইন্টারেস্ট কেনো বলোতো এডিটর।
দাদা হাসছে।
দাদা খাবার জায়গা করেছি, চলুন বসে পরবেন।
ওরা বসুক আগে।
সবাই একসঙ্গে। এরপর অনেক কাজ।
ওরা সবাই বেরিয়ে গেলো। ছোটমা বেরোবার আগে বললো।
বৌদি তুমি ওদের দুটোকে মিষ্টিগুলো খাইয়ে এসো।
আমি বৌদির দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললাম।
তুই এতো করার সময় পেতিস কি করে বলতো।
আমি না কনিষ্ক।
কনিষ্ককে জিজ্ঞাসা করলে বলে এসবের হোতা অনি। তোকে জিজ্ঞাসা করলে বলিস কনিষ্ক। নে খেয়েনে দু’টোতে।
একটা খাবো বৌদি। বাকিটা মিত্রা খাক।
আমি কি রাক্ষস নাকি। তুই খা।
তুইতো খেতে ভালোবাসিস।
এই শুরু করলি।
কিরে দুটো মিষ্টি খেতে বেলা বইয়ে দিলি যে।
ছোটমা ঘরে ঢুকলো।
নে নে খেয়ে নে।
আমি একটা খাবো।
আমিও।
তোরা কি যুক্তি করে চলছিস।
হেসে ফেললাম। ওরা খেতে বসেছে।
দেখনা গিয়ে একবার, নীরুটাকে নিয়ে কি করছে, ও বেচারা প্লেট হাতে নিয়ে দিদির পেছন পেছন ঘুরছে।
দাঁড়াও আমি যাই। না হলে ওরা থামবে না।
মিষ্টিটা খেয়ে নে।
আমি একটা নিয়ে মুখে দিলাম। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, তুই খেয়ে আয়।
আমি আসতেই নীরু বলে উঠলো, অনি তুই বল আমাকে কি এরা একটু শান্তিতে খেতে দেবে না।
অনি একবারে এদিকে মাথা গলাবি না। আজ তোর বিয়ে। বটা চেঁচিয়ে উঠলো।
ওকে খেতে দে।
ওকি শুঁকছে। দুবার নেওয়া হয়ে গেছে। জিজ্ঞাসা কর মাসিকে। কনিষ্ক বললো।
দামিনী মাসি আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
আচ্ছা তুই মিলিদের কাছে বসবি চল।
ওকিরে! ওরতো আছে তার ওপর উপরি। কনিষ্ক বলে উঠলো।
যতই হোক ঝাঁটা পেটার গুণ বুঝলি কনিষ্ক। বটা বললো।
মিলিরা মুখ নীচু করে হাসছে।
অনি একটা বোম ঝারবো। নীরু বললো।
দাঁড়া খেয়ে উঠি তোর বোম ফাটাবো। কনিষ্ক বললো।
দেখলি অনি দেখলি এবার তুই সামলাবি।
মিত্রা ঘর থেকে বের বেড়িয়ে আমার পাশে এসে দাঁড়ালো।
কেনো তুই বলতে পারছিস না। তোদেরতো আমার কাছে আসতেই হবে।
বটা হয়তো আসবে, কনিষ্ক আসবে না।
কেনো।
তোকে পরে বলবো।
পরে বলাবোরে ছাগল। এখন মাংস চিবোচ্ছি হারগুলো তোর খাবো। বড়মা তুমি এখান থেকে যাও তো। কনিষ্ক বললো।
কেনো বড়মা থাকলে তোর অসুবিধা আছে।
আছে। তোকেতো ধুতে পারছি না।
কাচলি কোথায় যে ধুবি।
সবাই ফিক ফিক করে হাসে।
নীরু তুই বরং বাড়ি চলে যা। আমি বললাম।
কখনই না। বাড়িতে বলে এসেছি রাতে খাবো না। চেম্বার বন্ধ করেছি।
বটা দেখতো পকেটটা।
কেনো।


চেম্বার বন্ধ করেছে আজ, তারমানে আজকের কামাই গতকাল করে নিয়েছে।
সকালে অনির ড্রেস কিনতে ফুটে গেছে।
অনির জন্য কি কিনেছিস। বড়মা ফুট কাটলো।
ওইযে লাল কাপড় দাড়ি। দেখলে না।
বড়মা না হেসে থাকতে পারলো না।
কনিষ্ক একবার কট কট করে তাকালো নীরুর দিকে।
আমি হাসছি।
ম্যাডাম, বিয়েতো অনি করছে, হনিমুন স্পট বেছেছেন। কনিষ্ক বললো।
সে আপনাদের বন্ধু জানে।
কিরে অনি ভালোপাহাড়।
আমি হাসছি।
সেটা আবার কোথায়! মিত্রা বললো।
কেনো আপনাকে বলেনি!
না।
ওটা একটা পাগল বুঝেছেন ম্যাডাম। তবে ওর পাগলামির সামিল আমরাও। এতে একটা উপকার হয়েছে। টাকা পয়সা কিছু পাইনি। প্রচুর মানুষ দেখেছি আর প্রণভারা ভালোবাসা কি জিনিষ তা অনুভব করেছি।
কনিষ্ক ক্যাজুয়েলি কথাটা বললো, কিন্তু কথাটার মধ্যে এতটাই সংবেদনশীল মনের পরিচয় দিলো, সারা ঘর নিস্তব্ধ হয়ে গেলো।
চুপচাপ সবাই খেয়ে যাচ্ছে।
তুই এর মধ্যে কি ওখানে যাবি। বটা আমার দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো।
দেখি।
গত সপ্তাহে অনিকেত গেছিলো। শ্যামের কাছে ওষুধ পত্র দিয়ে এসেছে। নীরু তুই কবে যাবি।
মঙ্গলবার যাওয়ার কথা।
ম্যাডাম একটু সন্দেহের চোখে দেখছেন আমাদের তাই না। ব্যাপারটা ঠিক ঠাহর করতে পারছেন না।
কনিষ্কের কথায় মিত্রা ফ্যাল ফ্যাল করে ওর দিকে তাকিয়ে।
কনিষ্ক হেসে ফেললো। অনির গল্প বলতে গেলে মাস পাঁচেক টানা বলতে হবে। তবে যদি শেষ হয়।
একটু থেমে।
মাসি।
দামিনী মাসি সারা দিলো।
কিগো থামলে কেনো। মুরগীর ঠ্যাং নিয়ে এসো।
আবার সবাই নিজের জায়গায় ফিরে এলো।
এই ফাঁকে নীরুর খাওয়াটা শান্তিতে হলো। ওরা খেয়ে দেয়ে উঠলো। হাতমুখ ধোয়ার পর কনিষ্ক মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললো, ম্যাডাম একটু মাঠের দিকে গিয়ে বসলে হতো না। মিত্রা আমার দিকে তাকালো। আমি ইশারায় বললাম যা।
আরে ওর পারমিশন নিতে হবে না। আপনি চলে আসুন।
তুই আপনি বলছিস কেনো। মৈনাক বললো।
মাঠে চল, আর ইসলামদার কাছ থেকে একটু পোড়া তেল নিয়ে আয়।
সবাই কনিষ্কের কথায় হো হো করে হেসে ফেললো।


দেখলি অনি কনিষ্কের কথার ছিড়ি দেখলি।
যা যা মাঠে চলে যা।
ওরা সব দঙ্গল বেঁধে মাঠে গেলো। আমি কিছুক্ষণের জন্য ওদের সঙ্গে গেলাম। তারপর বাড়ির ভেতরে চলে এলাম। ওখানে জোর আড্ডা চলছে। আমি এসে দাদাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। ওরা কেউ খেলো না। বললো রাত্রি বেলা খাবে। আগে কাজ মিটুক। এমনকি ইসলামভাই পর্যন্ত খেলো না। একফাঁকে একবার ইসলামভাইকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, কিগো রতনরা কই।
চলে আসবে সন্ধ্যার সময়।
তুমি একটা কাজ করতে পারবে।
বল।
একটু অবতার সাগির আর লক্ষ্মীকে আনতে পারবে।
ইসলামভাই আমার দিকে তাকালো। চোখে জিজ্ঞাসা।
নিয়ে এসো না আমি বলছি, কিছু হবে না।
দামিনীকে একবার বলি।
বলতে হবে না। কিছু বললে আমার ঘারে দোষ চাপাবে।
ঠিক আছে আমি রতনকে বলে দিচ্ছি।
বলে দাও।
দেখতে দেখতে সন্ধ্যে হয়ে এলো। আমি বড়মাদের কাছে বসে গল্প করছি। ওরা বাগান থেকে উঠে এসে ওপরে মিত্রার ঘরে সবাই গল্প করছিলো। হঠাৎ চিকনা চোখ মুখ লালকরে আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরলো, হাউ হাউ করে কান্না। ওর সেই কান্না থামানো যায় না।
দেখলাম কনিষ্ক অনাদি বাসু মিলি সবাই নেমে এসেছে।
এই দেখো পাগলামো করে। কি হয়েছে বলবিতো। কে তোকে বকেছে।
ও আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে।
কিরে বাসু তোরা কিছু বলেছিস চিকনাকে।
সকলে অবাক।
না।
তাহলে।
কনিষ্কদা তোর সম্বন্ধে গল্প করছিলো ও উঠে চলে এলো। তখনই ওর মুখ চোখের অবস্থা দেখে বুঝেছি ও তোর কাছে আসছে।
দূর পাগল কনিষ্ক সব বাজে কথা বলেছে আমার সম্বন্ধে, সব বানিয়ে বানিয়ে বলেছে, একটাও সত্যি কথা নয়।
তবু ওর কান্না থামে না।
আমি ওকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম ওর কাছ থেকে সিগারেট চেয়ে খেলাম, বোঝালাম। তারপর ওর কান্না থামে।
পায়ে পায়ে ভেতরে এলাম। দেখলাম কনিষ্কর পায়ের কাছে সাগির অবতার বসে আছে। পাশে দাঁড়িয়ে বাড়ির সরকলে। আমি কাছে গেলাম। কি হলোরে কনিষ্ক।
আর বলিসনা। পায়ে ধরে কেঁদে গড়িয়ে পরছে।
কিরে অবতার আবার কি হলো।
দুজনে মাতা নীচু করে দাঁড়িয়ে।
যা আজ কোনো কথা নয়। অনিদার বিয়ে খেতে চেয়েছিলি। তাইতো।
দুজনে মাথা নাড়ে।
যা ভেতরে যা, অনেক কাজ। হাতে হাতে সবাই কাজ কর।
ওটা ঠান্ডা হয়েছে। চিকনাকে দেকিয়ে কনিষ্ক বললো।
হ্যাঁ।
এতো পুরো কাদামাটিরে অনি।
হাসলাম।
মিত্রা আমার মুখের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে।
সবাই ভেতরে এলাম।
এবার লোকজন আসতে শুরু করলো। মনে হলো সত্যি সত্যি বিয়ে বাড়ি।
ব্রাহ্মণকে দেখে আমার চক্ষু চড়কগাছ রক্তবর্ণ পোষাক দেখে মনে হচ্ছে তান্ত্রিক হবে। মিত্রার সিলেকসন। অনিমেষদা বিধানদা ঠিক সময়ে এলেন। নিরঞ্জনদা নিয়ে এসেছে। হিমাংশু ম্যারেজ রেজিস্ট্রারকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে। বিয়ের আয়োজনের কোনো খামতি নেই দেখলাম। সব মিত্রা ছোটমা বড়মার ইচ্ছে অনুসারে হচ্ছে।
সন্দীপ অর্ক অরিত্র এসেছে। যে জার মতো মজা লুটে নিচ্ছে।
আমার ডাক পরলো, বৌদি ছোটমা মনের মতো করে সাজালো। বিয়ের পিঁড়িতে গিয়ে বসলাম। মিত্রাকে বড়মা নিয়ে এলো। ঘন্টা চারেক সময় লাগলো। বুঝলাম না কি মতে বিয়ে হলো। যা বললো তাই করে গেলাম। কিছু বাদ থাকলো না। মিত্রা একটা বেণারসী পরেছে কিন্তু দেখে মনে হলো খুব জমকালো নয়। বাসন্তী রং। বেশ সুন্দর। ডাক্তারদাদা কন্যা সম্প্রদান করলেন। হৈ হৈ করে বিয়ে হয়ে গেলো। সবাই খুব খুশ। প্রচুর ফটো তোলা হচ্ছে বুঝতে পারলাম। কার হাতে ক্যামেরা নেই। কনিষ্করা ইয়ার্কি ফাজলামোর চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছে গেলো। যে যেমন ভাবে পারে আনন্দ করছে। আমি খালি একটা কথাই মনে মনে বললাম মিত্রা বলেছে, আজকের দিনটা তুই আমাকে দিবি, আমি যেমন ভাবে তোকে দেখতে চাইবো, তুই দেখাবি। আমি অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করলাম। সই সাবুদ হলো। আমার পক্ষে দাদা মল্লিকদা অনিমেষদা মিত্রার পক্ষে বড়মা ছোটমা বৌদি।


সব কাজ শেষ হতে হতে বেশ রাত হলো। একসঙ্গে বসে খাওয়া হলে। আমার ডাক্তারবন্ধুরা চলে গেলো যাবার আগে বড়মাকে বলেগেলো রবিবার সকাল থেকে এসে জ্বালাবে। দাদা বড়মা মল্লিকদা ডাক্তারদাদা ইসলামভাই নীপা আরো সবাই ও বাড়িতে চলে গেলো। আর কিছু এ বাড়িতে থেকে গেলো। কাল যাবে আমার সঙ্গে। দামিনী মাসি ফিরে গেলো। কাল সকালে আসবে।
রাত একটার সময় আমি মিত্রা শুতে এলাম বড় বৌ-এর পোষাকে। ছোটমা বৌদি মিত্রার ঘরে দুজনকে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করলো। আমি ঘরের চারিদকটা চেয়ে চেয়ে দেখছি। গত দশমাস আগে এই ঘরটাই আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। সব ঘটনা গুলো হুড়মুড় করে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। মিত্রা আমার একেবারে কাছে। মুখের দিকে তাকিয়ে। ওর ভাসা ভাসা চোখ দুটো আনন্দে আত্মহারা। আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আবার কি হলো। মন খারাপ করিস না।
না বুবুন আজ আমার সবচেয়ে আনন্দের দিন।
কেনো এতদিন কি নিরানন্দে ছিলি।
না।
তাহলে।
এতদিন আমার কোনো অভিভাবক ছিলো না। আজ আমি একজন অভিভাবক পেলাম।
বলতে যাচ্ছিলাম ডাক্তার। মুখে এসেও বলতে পারলাম না। মনে পরে গেলো এই মধুরাত শুধু তোমার আমার।
এই দেখো বোকা বোকা কথা বলে।
মিত্রা আমার বুকে মুখ লুকিয়েছে।
আমি ওর মুখটা বুক থেকে তুললাম, প্রস্ফুটিত পদ্ম। দীঘির বুকে জল টল টল করছে। হাওয়ার দোলায় ফুলের পাঁপড়ি থিরি থিরি কেঁপে কেঁপে উঠছে। কেনো জানিনা আজ মিত্রাকে অনেক বেশি সুন্দর লাগছে। হয়তে নব বধূর বেশে ওকে আগে কখনো দেখিনি বলে।
তোকে এতো সুন্দর করে কে সাজিয়েছে।
মিলি অদিতি টিনা।
দারুণ মিষ্টি সাজিয়েছে তোকে। এই দেখো আবার চোখে জল আসে।
আজ আমাকে একটু কাঁদতে দে।
কেনো।
তোকে সম্পূর্ণ দিতে পারলাম না। কিছুটা দিলাম।
তুই সম্পূর্ণ নোস, একথা কে বললো।
আমার বিবেক।
ভুল কথা। সময় বলে একজন ব্যক্তি আছে জানিস। সে সর্টিয়ালি করে তোকে আমার কাছ থেকে কিছুটা সময় আলাদা করে দিয়েছিলো। মনের দিক থেকে আমরতো এক ছিলাম।
সেটা তুই মন থেকে মনে নিয়েছিস, আমার মনের মধ্যে সেই খচ খচানি এখনো রয়েগেছে।
কেনো আমি কি তোকে কিছু মনে কিয়ে দিয়েছি।
না।
তাহলে এরকম ভাবিস না। তুই কষ্ট পেলে আমিও যে কষ্ট পাই।
আজ আমি যা চেয়েছিলাম তাই পেয়েছি। জানিস বুবুন।
তাই। আমি কিন্তু আজ একটুও দুষ্টুমি করি নি।
মিত্রা আমার ঠোঁটে একটা চুমু খেলো।
আমি তোর মতো এখন সাধনা করি।
কি রকম ?
তুই বলিসনা যে মাটির ওপর দাঁড়িয়ে সাধনা করবে সেই মাটি পর্যন্ত জানতে পারবে না তুমি কিসের সাধনা করছো।
হুঁ।
মিত্রা চোখ বন্ধ করে মিষ্টি করে মাথা দোলালো।
আমি সকলকে এই জ্ঞানটা দিই।
দেখলাম আমিও সফল। 
 
 
 
 
 
 
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks