দেখি নাই ফিরে - (Part-39)

তুই দে।
আমার সহ্য করার ক্ষমতা আছে। তোর নেই।
মিত্রা আমার কথা শুনলো।
বুবুন।
কিরে।
আবার বাথরুম পেয়েছে।
বসে যা। আমি পেছন ফিরে আছি।
এখানে।
তাহলে কোথায়।
সত্যি তুই না।
এর থেক সুন্দর জায়গা পৃথিবীতে আছে।
মিত্রা আমার দিকে ঘুরে তাকালো, ওদিকে ফের।
আমি নদীর দিকে ফিরে তাকালাম। জল এখন অনেক কম, তবু যতটা আছে তার সৌর্ন্দয কম নয়। চাঁদের আলো পরে চিক চিক করছে, হালকা উত্তুরে বাতাস বইছে।
চল হয়ে গেছে।
কি রকম মজা পেলি বল, একটা অন্ততঃ থ্যাঙ্কস দে।
ও আমাকে জাপ্টে ধরে গালে চকাত করে একটা চুমু খেলো।
নদী বাঁধ ধরে কিছু দূর যাওয়ার পর পদ্মপুকুর পরে।
বুবুন এদিকটাতো নদী এদিকের এই ফাঁকমাঠটা।
বিকেল বেলা যে বিলটার ওপর দিয়ে পীরবাবার থানে গেছিলাম, এটা তার শেষপ্রান্ত।
এত বড়ো।
এই বিলটার চারদিকে পাঁচটা গ্রাম। তার মধ্যে আমাদের একটা গ্রাম।
এই বিলটা কাদের।
খাস।
খাস মানে।
কারুর নয় সকলের অধিকার আছে।
এরকম হয় নাকি।
শহরে হয় না, গ্রামে হয়।
দাঁড়া। এখানে। ওদিকটা ভালো করে দেখিস কেউ আসছে কিনা।
কেনো পটি করবি।
ছাগল।
এটা ধর।
তুই এই পেঁপে ডালটা নিয়ে কি করবি বলতো, তখন থেকে সঙ্গে রেখেছিস।
এত কথা বলিস কেনো।
আমি বাঁধ থেকে নেমে গেলাম, ওদিক থেকে কেউ এলে ইচ্ছে করে কাশবি।
কেনো।
যা বলছি করবি।
ঠিক আছে।
আমি খেঁজুর গাছটার কাছে এলাম, পেছন ফিরে দেখলাম বাঁধের ওপর মিত্রা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার দিকে দেখছে, আমি চাদরটা গা থেকে খুলে কমরে বেঁধে নিলাম। জুতোটা খুলে তর তর করে গাছে উঠে পরলাম। ছোটো হাঁড়ি নামাতে অসুবিধা হলো না। নামিয়ে নিয়ে মিত্রার কাছে এলাম।
মিত্রা মিটি মিটি হাসছে। তুই চুরি করলি।
কে গো আমার শাধু পুরুষ।
আমি মাটিতে হাঁড়িটা রেখে, পেঁপের ডালটা দুটুকরো করলাম, পারলে খা, এখুনি এটা আবার ঝুলিয়ে রেখে আসতে হবে, আমি পেঁপের নলটা হাঁড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে নিস্তব্ধে চোঁ চাঁ টানতে আরম্ভ করলাম, মিত্রা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে দেখলো, তারপর পেঁপের নলটা ঢুকিয়ে টানতে আরম্ভ করলো, আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো, চোখের ইশারায় বললো দারুন। আমি ওকে ইশারা করে বললাম যতটা পারিস তাড়াতাড়ি খেয়ে নে। বেশি দেরি করা যাবে না।
ও অনেকটা খেলো আমিও খেলাম। আবার ছুটে গিয়ে হাঁড়িটা যথাস্থানে রেখে এলাম।
কিরকম খেলি বল।

দারুন।
এবার একটু নেচে নে।
কেনো।
নিচের দিকে নেমে যাবে। তাহলে হাঁটতে অসুবিধা হবে না।
ধ্যাত।
পেটটা নাড়া, দেখ ঘট ঘট আওয়াজ হবে।
ও আমার কথা মতো নাড়ালো সত্যি খালি পেটে পেট পুরে জল খেলে যেমন আওয়াজ হয় তেমন হলো। ও হো হো হো করে হেসে ফেললো।
একটু নাচি।
নাচনা কে দেখবে আমি ছাড়া।
ও একটু ধেই তা ধেই করে নাচলো।
কিরে একটু ভালো লাগছে।
হ্যাঁ। এক নিঃশ্বাসে তখন যেভাবে খেয়েছিলাম, যেনো গলার কাছে চলে এসেছিলো, পেটে আর জায়গা ছিলো না।
কিরে এখনো ভোর হচ্ছে না কেনো। অনেকক্ষণ হলো।
তুই ঘড়ি দেখে বেরিয়েছিলি।
হ্যাঁ। মিটসেফের ওপর তোর ঘড়িটা দেখে বেরিয়েছি।
মিত্রা খিল খিল করে হেসে উঠলো।
হাসছিস কেনো।
ওটা বন্ধ রে গাধা।
সব্বনাশ। আমি পৌনে পাঁচটা দেখে বেরোলাম।
ওটা গত কালের টাইম।
মোবাইল নিয়ে আসিস নি।
দূর।
তুই।
আমিও রেখে এসেছি।
ধুস। এখন কটা বাজে বলতো।
দাঁড়া শুকতারা উঠেছে নাকি দেখি।
আকাশের দিকে তাকালাম, হ্যাঁ উঠেছে, মিত্রা দেখতে চাইলো ওকে দেখালাম, বেশি দেরি নেই এবার ভোর হবে।
কি করে বুঝলি।
শুকতারাটার পজিসন দেখে।
আমাকে বুঝিয়ে দে।
বুঝতে গেলে ঘিলু লাগে।
বুবুনরে।
বল পটি পেয়েছে।
সত্যি।
আমি জানতাম, কুত্তার পেটে ঘি সইবে না।
তুই আমাকে কুকুর বললি।
না তা নয়, খাঁটি জিনিষ তো তোর হজম হবে না। জল মিশিয়ে দিলে, ঠিক ছিলো।



তুই আগে বল কোথায় করবো।
নদী সামনে আছে, নীচের দিকে নেমে যা আমি ওদিকে ফিরে আছি।
জামাকাপর খুলে।
না ওপরটা খুলতে হবে না, নিচটা খুলে যা।
পেন্টিটা।
আবার পেন্টিও পরে এসেছিস। কে দেখবেরে তোকে এই অন্ধকারে।
নে খুলে যা আমি এখানে বসছি, কাশলে উঠে দাঁড়াবি।
আচ্ছা।
মিত্রা কামিজটা খুলে ফেললো, পেন্টিটা পরে যাই ওখানে সামনে খুলে রাখবো।
যা পারিস কর।
ও নদীর চড়ায় নেমে গেলো। আমি একবার পেছন ফিরে তাকালাম, হ্যাঁ ঠিক ঠিক যাচ্ছে, ঠিক মতো বেগ পেলে ভূতের ভয়, মানুষের ভয়, শেয়ালের ভয় সব চলে যায়। লোভী। কতটা রস চোঁ চা করে খেলো, পটি পাবে নাতো কি হবে।
সিগারেটের প্যাকেটটাও নিয়ে এলাম না। এই সময় একটা সিগারেট খাওয়া যেতো। বসে বসে আমি মাটির ঢেলা ছুঁড়তে আরম্ভ করলাম। পূবদিকের আকাশটা সামান্য ফরসা হয়েছে। বুবুন।
ফিরে তাকালাম।
হাত ধোবো কি করে। মিত্রা ওখান থেকে চেঁচালো।
নদীর কাদা মাটি নিয়ে হাতে ঘোষে নে, মনে কর ওইটা ডোভ সাবান।
ও কিছু একটা বললো, আমার কাছে এসে পৌঁছলো না, বুঝলাম গজ গজ করছে।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি, নীচু হয়ে হাত ধুলো, জলশৌচ মনে হয় হয়ে গেছে। হাত ধুয়ে পা ধুলো, পা ঝাড়ছে, বুঝলাম পায়ে কাদা লেগেছে। আমি হাসছি। ঠেলার নাম বাবাজীবন। ধীরে ধীরে উঠে এলো, হাতে পেন্টি।
আমি হাসছি।
হাসিসনা।
কিরে ওটা পরিসনি।
ভিঁজে আছে না, আগে তোর পাঞ্জাবীটা দিয়ে মুছি।
কেনো তোর ওতো বড়ো ঝুল জামাটা।
পেছনটা ভিঁজে গেছে।
ঠিকমতো ধুয়েছিস তো। না দেখতে হবে।
ধ্যাত।
আমার কাছে এসে সত্যি সত্যি পাঞ্জাবী দিয়ে পাছু মুছলো, দিলাম এক চিমটি।
উ।
হাসছি।
আমাকে ধর।
কেনো। পরতে গিয়ে যদি উল্টে যাই।
আমি ওকে ধরলাম।
ও পেন্টিটা পরলো, কামিজটা পরলো মিটি মিটি হাসছে।
হাসছিস কেনো।

কি আরাম।
নতুন জায়গা ঘুরলি আবার খাজনাও দিয়ে গেলি।
যাঃ অসভ্য কোথাকার। দেবো না একটা ঘুসি।
মিত্রা কিল তুললো। আমি হাসছি।
ওই দেখ সানরাইজ। দূরে আকাশটা যেখানে ঝুপ করে নীচু হয়ে মাটির সঙ্গে মিশেছে, সেখান থেকে কমলারংয়ের গোল বলটা উঁকি মেরে আমাদের দেখলো।
ইস মোবাইলটা থাকলে তোলা যেতো।
আর একদিন এসে তুলিস। চল, সামনে পদ্মপুকুর, কতো পদ্ম ফুটে আছে দেখবি।
আমি মিত্রা বাঁধের রাস্তা ধরে হাঁটতে আরম্ভ করলাম। গাছগাছালির ফাঁক দিয়ে আমরা হেঁটে চলেছি। সামনে একজনকে আসতে দেখছি, কাছাকাছি আসতেই বললো, কো গো অনিনা।
আমি মুখের দিকে তাকালাম, ঠিক চিন্তে পারছি না।
কাল তোমার বাড়িতে গেছিলাম, তোমার দেখা পেলাম না, জেলাসভাধিপতিকে একটা প্রণাম করলাম।
আমি মুখের দিকে তাকিয়ে আছি ঠিক চিন্তে পারছি না।
আমি রামপুরার শশধর শাসমল, তোমাদের খেতটা ভাগে চাষ করি, তুমি দেখেছো, মনে করতে পারছ না, মনা মাস্টার জানে।
তুমি এত সকালে কোথায় যাচ্ছ।
কয়েকটা গাছে রস দিয়েছি নামাতে যাচ্ছি।
কোথায় গো।
ওই নদী ধারে।
মিত্রা আমার হাতটা চেপে ধরলো। আমিও ওর হাতটা চেপে ধরে উত্তর দিলাম।
বাবা পারও বটে তোমরা। মিত্রা বললো।
পারলে একটু রস খাইও।
হ্যাঁ গাছ থেকে পেরে নিয়ে তোমার ঘরেই যাবো, জেলা সভাধিপতি খেতে চাইলেন।
যাও।
আমরা এগিয়ে গালাম, মিত্রা একবার পেছন ফিরে তাকিয়ে আর রাখতে পারলো না, হো হো করে হেসে ফেললো।
বুবুনরে তুই সত্যি কত ছলনা করতে পারিস।
চুপ কর। শুনতে পেলে খারাপ ভাববে।
দাঁড়া আজ গিয়ে তোর হচ্ছে। বড়মার ভালো ছেলে।
কোনোদিন নিয়ে আসবো না।
আচ্ছা আচ্ছা বলবো না।
মনে থাকে জানো।
আমরা হাঁটতে হাঁটতে পদ্মপুকুরের ধারে চলে এলাম। মিত্রা দেখে অবাক, চারিদিকে জল আর জল, মাঝখানে কিছু বক সরাল পানকৌড়ি বসে আছে মাঝে মাঝে দীঘির বুকে মুখ লুকিয়ে মাছ ধরে খাচ্ছে। চারিদিক নিস্তব্ধ, পাখির ডাক, কোথাও গাছের ফাঁকে বসে ফিঙে পাখি লেজ নাড়ছে, কোথার তিতির তি তি করে ডাকছে, চারিদিকে এক অদ্ভূত মায়ার খেলা, মিত্রা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলো। ওর চোখের পলক পরে না। বুবুনরে এ তুই কি জায়গায় নিয়ে এলি, সত্যি কি দারুন জায়গাটা, তোর দীঘাআড়ি একরকম সুন্দর, এ আর এক রকম।
এটা নদীর সঙ্গে মিশে আছে। বলতে পারিস এটা আমাদের গ্রামের রিজার্ভার, গ্রীষ্মকালে এর জল চাষের কাজে লাগে। গ্রামের লোকেরাই এর সংস্কার করে। ওই পাশে একটা লক গেট আছে। বর্ষাকালে জল ভর্তি হয়েগেলে লক গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কয়কটা পদ্মতুলে দেনা।
চল।
আমরা পায়ে পায়ে নিচে নামলাম, এখানে দাঁড়া আমি একটা গাছের ডাল ভেঙে আনি।
কেনো।
এতোটা জলে নামা যাবে না, ডালটা দিয়ে ফুলগুলো কাছে টেনে আনতে হবে।
তাহলে নিম ডাল ভাঙ দাঁতনও হবে।
কাছা কাছি তো দেখতে পাচ্ছি না, চল দেখি ওদিকে পাই কিনা।
আমরা আবার ওপরে উঠে এলাম, পুকুরের পার দিয়ে হাঁটছি, জনমানব শূন্য, সর সর করে একটা আওয়াজ হলো, মনে হলো কেউ যেনো চলে গেলো, মিত্রা আমার হাতটা চেপে ধরলো। আমি ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম, একজন পটি করতে বসেছে, ঝোপের আড়ালে, সে উঠে দাঁড়িয়ে আরএকটু গভীরে চলে গেলো।
মিত্রা আমার দিকে ভয়াতুর দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে।
কিরে।

তোর মতো পটি করতে বসেছিলো, নিশ্চিন্তে, আমরা যে এসে পরবো বুঝতে পারে নি।
বুঝলি কি করে।
এতো মহা মুস্কিল, তোকে বোঝাতে গেলে গ্রামে দশ বছর থাকতে হবে তোকে।
দেবোনা একটা গাঁট্টা।
চল।
আবার একটু এগিয়ে এলাম, একটা নিমগাছ পাওয়া গেলো, আমি ডাল ভাঙলাম। আর ওদিকে নয়, চল এগিয়ে যাই ও পাশের ঘাট থেকে তুলে দেবো, তারপর বাঁধ থেকে নেমে পরবো।
কেনো এরি মধ্যে চলে যাবি।
না।
তাহলে।
এই পথে যখন এসেছি একবার পাঠশালায় যাবো।
তোর।
হ্যাঁ।
দেখ তোর বুবুনের প্রাথমিক স্কুলটা।
আমরা নিম দাঁতন দিয়ে দাঁত মাজতে মাজতে এগিয়ে গেলাম, এখন আর ততটা শীত করছে না, আমি চাদরটা কোমরে বেঁধে নিলাম, আমার দেখা দেখি মিত্রাও কোমরে বেঁধে নিলো। আমরা পদ্মপুকুরের পূর্ব ঘাটে চলে এলাম মিত্রা বললো একটু দাঁড়াই দাঁড়া।
কেনো।
মনে হচ্ছে আর একবার হবে।
কিরে দুদিনের রি-এ্যাকসন নাকি।
কি জানি।
কি জানি মানে, তোকে নিয়ে তো আমার ভীষণ ভয়, এখানে শরীর খারাপ করলে, সিধে কলকাতায় নিয়ে চলে যাবো।
সকালে কতটা রস গেলালি।
আমি গেলালাম, তুই তো লোভের মারে খেয়ে নিলি। আবার বলে কিনা দাঁড়া আর একটু টেনে নিই।
মিত্রা হাসছে।
কি হলো।
না একটু হিসু করলে মনে হয় ঠিক হয়ে যাবে।
দেখ এরকম বোনবাদার আর পাবি না, জলও পাবি না, পেলে করে নে, এরপর ফাঁকা মাঠ, গাছের পাতা দিয়ে পাছু মুছতে হবে।
তুই ভয় দেখাসনাতো।
কতটা রস খাওয়ালি কতটা হাঁটালি বলতো।
আমি হাসছি ওর মুকের চেহারা দেখে, অতি কষ্টে চাপার চেষ্টা করছে।
ঠিক আছে একটু করে নিই।
যা খুলে ওখানে চলে যা, বেসি দূরে যাস না।
কোথায় যাবো বল।
ঘাটের দিকে নেমে ডানদিকের ঝোপের মধ্যে বসে পর, কেউ দেখতে পাবে না।
ধোবো কোথায়।
কেনো, ওই তো এতো জল।
তুই চেয়েচেয় দেখবি।
না চোখ বন্ধ করে থাকবো।
ও আবার দৌড় লাগালো।
আমি দাঁতন চিবিয়েই চলেছি।
কিছুক্ষণ পর দেখলাম মিত্রা ঝোপের আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো।
কিরে পাতলা না শক্ত।
শক্ত।

বাঁচালি। কলকাতায় খেলি এখানে এসে খাজনা দিলি।
দাঁড়া তোর ঘাড় মটকাচ্ছি গিয়ে। ওদিকে ফের।
আমি পেছন ফিরে দাঁড়ালাম। দুষ্টু বুদ্ধি মাথায় খেললো, হঠাত সামনের দিক হতেই মিত্রা উঠে দাঁড়ালো।
শয়তান। আমি জানতাম।
যাবো নাকি।
এলে চোবাবো।
তুই কি রেহাই পাবি।
ঘোর না।
এখনো হয় নি।
আর একটু বাকি আছে।
আমি আবার ঘুরে দাঁড়ালাম।
চিরিদিক নিস্তব্ধ, ঝির ঝিরে হাওয়া গাছের পাতায় দোলা দিচ্ছে, একটা সুন্দ শব্দ চারদিকে কুয়াশার মতো ঝড়ে ঝড়ে পরছে, দুম করে পিঠে একটা ঘুসি পরলো, আমি একটু অভিনয় করে মাটিতে পরে গিয়ে কাতরাতে আরম্ভ করলাম, মিত্রার মুখটা শুকিয়ে আমশি হয়ে গেলো, আমি কাতরাতে কাতরাতে খালি লক্ষ্য করছিলাম ও পেন্টিটা পরেছে কিনা, দেখলাম ও পেন্টিটা পরে নি, আমি ঝপ করে ওর মুন্তিতে হাত দিয়ে দিলাম, ও লাফিয়ে উঠল, জায়গাটা ভিজে একেবারে সপ সপে হাত দিতেই ও আমার পেটের ওপর উঠে বসলো শয়তান, অভিনয়। এখুনি আমাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি, আমার তলপেটের ওপর বসে দিলো দুবির মুন্তিটা ঘসে। আমি হাসছি, মোছা হয়েগেছে এবার নাম।
না।
চারিদিকে কেউ নেই দেবো এখানে ফেলে.......
দেনা, আমি কি না বলেছি।
ওঠ ওঠ বেলা হয়েছে। অনেকটা পথ ফিরতে হবে। দেরি হয়ে গেলে আবার স্কুলে যাওয়া যাবে না।
মিত্রা পেন্টিটা পরে কামিজটা পরলো, আমরা দীঘির জলে নেমে মুখ ধুলাম পাজামাটা গুটিয়ে গোটা দশেক পদ্মতুলে মিত্রার হাতে দিলাম। তারপর ধানখেতের মাঝখান দিয়ে মেঠো পথে আমার স্কুলে এসে পৌঁছলাম।
কইরে তোর স্কুল।
ওই তো খরের ঘরটা।
যাঃ।
হ্যাঁরে ওটাই স্কুল।
কেউ তো নেই কোথাও।
থাকবে কেনো।
তারমানে।
গ্রীষ্মকালে সকালে স্কুল হয়, আর শীতকালে দুপুরে।
এ কিরকম স্কুলরে।
হ্যাঁ।
আমরা মাথা নীচুকরে স্কুল বাড়িতে ঢুকলাম। একটা লম্বা ঘর, মিত্রা চারিদিক চেয়ে চেয়ে দেখছে।
এটা তোদের স্কুল।
হ্যাঁ।
বেঞ্চ কোথায়।
এখানকার স্কুলে বেঞ্চ থাকে না।
বেঞ্চ! ওসব ভুলে যা, এই ঘরটা দেখছিস এটা থ্রি আর ফোরের ক্লাস হয়, এই পাশটা থ্রি, ওই পাশটা ফোর, বারান্দার ডানদিকে ক্লাস টু আর আমরা সামনে ওই গাছতলায় বসতাম, ওটা ক্লাস ওয়ান।
বৃষ্টি পরলে, সব এই ঘরে একসঙ্গে মুরগির পোল্ট্রির মতো, কঁকড় কঁকড় করতাম।
অফিস ঘর।
স্যারের বাড়িতে।

তুই কোথায় বসতিস।
আয়।
আমি মিত্রাকে বাইরে নিয়ে এলাম, সেই শিরিষ গাছটা এখনো রয়েছে, ওই গাছের তলায় ওকে নিয়ে গেলাম, আমি এখানে বসতাম, গাছের গোড়ার নির্দিষ্ট স্থানটা দেখালাম, আমার এই পাশে বাসু বসতো আর এইখানে অনাদি, সামনে চিকনা বসতো, প্রচুর মার খেতো আমার হাতে।
কেনো রে।
মাথায় উকুন ছিলো, আমার মাথাতে ঢুকতো, মনাকাকা বেধড়ক মারতো কেন আমার মাথায় উকুন ঢুকেছে, কি জবাব দেবো। আমি এসে চিকনাকে পিটতাম, তারপর অনেক বেশি বয়স পযর্ন্ত আমার মাথায় চুলই ছিলো না। নেড়া মাথা।
মিত্রা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
ভাবছিস বুবুন তোকে বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলছে। নারে একটুও মিথ্যে নয়। সেই অনি তোর সঙ্গে কলকাতার নামজাদা কলেজে পরেছে। স্টার পেয়েছে। রেঙ্ক করেছে। এই সিরিষ গাছের তলা থেকে তার শুরু।
মিত্রার বুকের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো।
জানিষ মিত্রা এইখানে আমার জীবনের প্রথম অঘটন ঘটে। সেদিন খেয়ে দেয়ে স্কুলে এসেছিলাম, মার শরীর খারাপ বাবার শরীর খারাপ, বন্যা হয়ে গেছে। জল একটু নেমে গেছে, স্কুল খুলেছে আমরা সবাই স্কুলে এসেছি, মনাকাকা লোক পাঠালো নিতে, পোকা মাস্টার স্কুল ছুটি দিয়ে দিলো, কে যেনো আমাকে কোলে কোরে নিয়ে গেলো, বাড়িতে গিয়ে খালি মনে আছে কাকা আমাকে জড়িয়ে ধরে একটু কাঁদলো তারপর আমাকে কোলে করে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হলো।
মিত্রার চোখদুটো ছল ছল করে উঠলো।
একমাসের ওপর স্কুলে আসিনি। একমাস পর যেদিন প্রথম স্কুলে এলাম কি রিসেপসন পেয়েছিলাম জানিস না, তারপর সব আবার থিতিয়ে গেলো, সেই গতানুগতিক জীবন ধারা, মানুষ খুব তাড়াতাড়ি সব ভুলে যায় জানিস, আর যারা ভুলতে পারে না, তাদের ভীষণ কষ্ট, আমিও ভুলে গেছি বাবামার মুখটা। কাল বড়মাকে জড়িয়ে ধরে যখন কেঁদে ফেলছিলাম, মায়ের মুখটা বার বার মনে করার চেষ্টা করেছিলাম, পারি নি। বুকের ভেতরটা ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। তারপর সামলে নিলাম।
মিত্রা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমি জানি তোরও এরকম অনেক কষ্ট আছে, তাই তোকে আর কষ্ট দিতে চাই না। তোর মতো বড়মার আছে ছোটোমার আছে, দাদার আছে মল্লিকদার আছে।
কিছুক্ষণ দুজনে ওই ভাবে দাঁড়িয়ে রইলাম।
চল যখন থ্রিতে পরি তখন কোথায় বসতাম দেখে নে।
হ্যাঁরে বুবুন এই এবরো খেবরো মেঝেতে তোরা বসতিস কি করে।
হেসেফেললাম। আমার সবেতেই একটা গল্প আছে, বুঝলি। আমার বললে ভুল হবে আমার মতো যারা এসব পাঠশালা থেকে মানুষ হয়েছে তাদের প্রত্যেকের, কেউ বলতে পারে কেউ বলতে পারে না।
কাকা দুটো সেন্ডো গেঞ্জি আর দুটে ইজের পেন্ট কিনে দিয়েছিলো, এটা আমার গ্রীষ্মকালীন পোষাক। আর শীতকালে ফানেলের একটা ফুল হাতা জামা। আর শান্তিপুরের গামছা দেখেছিস, ওই রকম একটা পাতলা চাদর। বেশ শীত গ্রীষ্ম কেটে যেতো। মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে আছে হাঁ করে।
পরনে ইজের পেন্ট গেঞ্জি, বগলে একটা একহাতি মাদুর আর বাজারের ব্যাগের মধ্যে একটা স্লেট বর্নপরিচয় আর সহজপাঠ। ক্লাস ওয়ান পাস। ক্লাস টু সহজপাঠ দ্বিতীয় ভাগ হাসিখুশি আর এ বি সি ডি শেখার বই। ক্লাস থ্রিতে এসে ইংরাজি বানান শেখার একটা বই কিশলয় অঙ্কের বই স্বাস্থ্য ও সামাজিক আর ছাত্রবন্ধু। ক্লাস ফোর পযর্ন্ত এরকম ছিলো। তারপর ফাইভ থেকে সেই পীরবাবার থানের ওখানে যে স্কুল সেই স্কুল। এক নতুন জগত, একটু একটু করে নিজেকে পাল্টাতে আরম্ভ করলাম।

তাহলে যেখানে প্রোগ্রাম হলো ওখানে যে স্কুলটা আছে ওটা কি।
ওটাতো এই হালে হয়েছে, ওটা নাকি জুনিয়র হাই স্কুল। ক্লাস এইট পযর্ন্ত।
ক্লাস থ্রি মানে আমরা এই স্কুলের সিনিয়ার হলাম, মানে তোদের ওখানে নাইনটেন বলতে পারিস।
মিত্রা হাসছে।
আমি এই জানলাটার ধারে বসতাম, তুই বোস, বোসনা একটা জিনিষ দেখাবো। মিত্রা আমার কথা মতো জানলার ধাপিতে উঠে বসলো। ওর জায়গা হচ্ছে না।
একটা ছোটোখাটো মানুষ এই জানলাটায় বেশ ভালোভাবে বাবু হয়ে বসতে পারতো, বেশ আরাম করে ঠেসান দিয়ে।
মিত্রা মাথা নারছে, এবার তুই চোখ বন্ধ করে কল্পনা করে নে, তুই সেই ছোট্ট বুবুন তোকে মাস্টার লিখতে দিয়েছে তুই জানলা দিয়ে পাশের ওই ঝোপে টুনি পাখি, চড়ুই পাখি, শালিক পাখির লড়াই দেখছিস, বাইরের দিকে চোখ দে বুঝতে পারবি। আমি মিত্রার পাশে গিয়ে থেবড়ে বসে পরলাম।
কি দেখছিস।
মিত্রা আমাকে জড়িয়ে ধরলো, সত্যি বুবুন তোর চোখ আছে, এই জায়গায় বসলে আমি বুবুন হয়ে যেতাম।
খালি একটু তোর ইমোসনটাকে ঠিক ঠিক কাজে লাগাতে হবে। প্রকৃতি মানুষের ওপর ভীষণ প্রভাব বিস্তার করে বুঝেছিস, আমরা কে।
ওই জামগাছটা দেখছিস।
হ্যাঁ।
ওই বকুল গাছটা দেখছিস।
হ্যাঁ।
এদের বয়সের কোনো গাছ পাথর নেই।
জামের সময়, জাম গাছের তলাটা ভরে যায় খেয়ে শেষ করা যায় না।
আমরা বকুলগাছটায় উঠে বকুল ফল পেরে আগে খেতাম, তারপর বিচিটা দিয়ে বাঁশি তৈরি করে বাজাতাম।
আমাকে একটা বানিয়ে দিবি।
দেবো।
আর এই জানলাটা ছিলো ক্লাস ফোর উল্টোদিকে ঘুরে দেখালাম। এখান থেকেও দেখ তুই সেই এক ছবি দেখতে পাবি।
স্কুলটার নাম কিরে।
আশাপুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়।
তোদের মাস্টারের নাম কি ছিলো।
প্রকাশ মাইতি। তা সবাই তাকে পোকা মাইতি বলে ডাকতো, আমরাও বলতাম পোকা মাস্টার।
আয় বাইরে আয় বকুল গাছটার তলায় যাই।
মিত্রা আমার হাত ধরে বেরিয়ে এলো।
কি নিস্তব্ধ চারিদকটা।
হ্যাঁ। বিশ্বভারতী গেছিস।
একবার।
ঠিক আছে তোকে নিয়ে যাবো, আমি বিশ্বভারতীর যেখানে গিয়ে একলা বসে থাকি সেই জায়গাটা।
কবে যাবি।
একটু সময় করে নিই।
আমরা পেছনের বকুল গাছটার তলায় এলাম।
এই দেখ বকুল ফল পরে আছে। খাবি।
দে।
মিত্রা দাঁতে কেটেই থু থু করে ফেলে দিলো।
কিরে।
কি কষ্টে।
তোর মুখ নেই তাই কোষ্টে লাগছে, আমি দুতিনটে কুড়িয়ে খেয়ে নিলাম।
মিত্রা আমাকে তারিয়ে তারিয়ে দেখছে।
দাঁড়া দেখি পাথরটা আছে কিনা, আমি স্কুলের দেয়ালের ধারে গেলাম, দেখলাম হ্যাঁ এখনো আছে মিত্রাকে ডাকলাম। ও কাছে এলো ওকে দেখালাম, এই পাথরটা দেখছিস, ও আমার দিকে তাকালো, আমি যখন ক্লাস ওয়ানে তখন থেকে ওখানেই দেখছি।
তার মানে।
এখানে কোথাও একটা ধানকোটা আর গম ভাঙানোর কল ছিল। তারপর সেটে উঠে যায়, তার একটা পাথর এইটা।
কি কাজে লাগে।
বলতে পারবো না, তবে বকুল বিচি এতে ঘষে ঘষে বাঁশি তৈরি করতাম, আমাদের খুব কাজে লাগতো।
কি করে তৈরি করবি।

দাঁড়া দেখাচ্ছি।
আমি বকুল বিচিটা একপাশ ঘসে ঘসে একটু চেপ্টা করলাম, দেখলাম বিচির ভেতর শাসটা দেখা যাচ্ছে, মিত্রার দিকে তাকালাম, ও আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে, তোর কাছে সেফটিপিন আছে।
ও ঘাড় নাড়লো, নেই।
কিরে তুই, একটা মেয়ে তোর কাছে সেফটিপিন চাইলাম নেই।
আমি ব্যবহার করি না।
উঠে দাঁড়ালাম।
কোথায় যাচ্ছিস।
দাঁড়া একটা বাবালা কাঁটা তুলে আনি।
সেটা আবার কি রে।
দেখ না।
আমি বাবলা গাছ থেকে একটা বড় বাবলা কাঁটা ভাঙলাম।
কাঁটা দিয়ে বিচির ভেতরের শাঁসটা বার করে আনলাম, ফুঁ দিয়ে ভালোকরে পরিষ্কার করলাম, তারপর দু’আঙুলের ফাঁকে রেখে জোড়ে ফুঁ দিলাম। শিস দেওয়ার মতো আওয়াজ হলো, মিত্রা হেসে ফেললো।
আর একবার বাজা। অ
আমি বাজালাম।
দে আমি একটু বাজাই।
আমি ওর হাতে দিলাম। প্রথমবারটা বাজাতে পারলো না, আমি ওর দুআঙুলের ফাঁকে ঠিক মতো রেখে বললাম ঠোঁটটা নিয়ে আয় এবার ফুঁ দে। হাতে ধরে দেখিয়ে দিলাম। ও তাই করলো বেজে উঠলো। মিত্রার চোখে বিষ্ময়, খিল খিল করে হেসে উঠলো। আমি পেরেছি বুবুন, আমি পেরেছি।
নে তুই বাঁশি বাজা। আমি আর কয়েকটা বানাই।
আমি বাঁশি বানাতে বসলাম, মিত্রা ঘুড়ে ঘুড়ে ফুঁ দিয়ে বাঁশি বাজাচ্ছে। ওর বাঁশ বাজানোর শব্দে পাখি গুলোও ডেকে উঠছে, ও যেনো আরে মজা পেয়ে গেলো, ওই ভাবে বাঁশি বাজায় শিস দেয়। আমি ওকে লক্ষ্য করছি, যেন এক নতুন জগতের সন্ধান পেলো, প্রকৃতির সঙ্গে মিলনের প্রথম স্বাদ।
বকুল বিচি ঘষতে ঘষতে কান পেতে শুনলাম একটা মটর বাইকের আওয়াজ এদিকেই এগিয়ে আসছে, মিত্রাকে ডাকলাম, কি।
শোন।
ও কাছে এলো।
একটা গাড়ির আওয়াজ হচ্ছে না।
হ্যাঁ।
শোন ভাল করে আওয়াজটা এদিকেই এগিয়ে আসছে না।
হ্যাঁ মনে হচ্ছে খুব কাছে, আমাদের এই রাস্তাতেই এগিয়ে আসছে।
কাজ সেরেছে।
কেনো রে।
মনে হচ্ছে লোক বেরিয়ে পরেছে খুঁজতে।
মিত্রা খিল খিল করে হসে ফেললো।

দারুন মজা লাগছে।
কেনো।
আমাদের খুঁজতে বেরিয়েছে।
এইরকম ভাবে হারিয়ে যেতে ভালো লাগে না।
দারুন।
তাহলে আমি পাগল নয় বল।
কে বলে তুই পাগল, তোকে যারা চেনে না তারা পাগল।
তুই চিনলি।
আজ না, সেই কলেজ লাইফ থেকে, তাই তোর জন্য আমিও পাগল।
হেসেফেললাম।
আওয়াজটা একেবারে সামনে এসে গেলো।
দুটো বাইক এসে থামলে বকুল গাছটার তলায়, বাইক থেকে নামলো অনাদি আর বাসু।
অনাদি গম্ভীর, বাসু হাসছে।
আমি হাসছি।
মিত্রা আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে।
তোরা দুটো কি মানুষকে পাগল করে দিবি।
কেনো।
কখন বেরিয়েছিস বাড়ি থেকে।
মিত্রার ঘরিতে তখন পৌনে পাঁচটা বাজে, তাও মিত্রা রাস্তায় এসে বললো, ঘড়িটা বন্ধ হয়ে পরে আছে কাল থেকে।
তারমানে কখন বেরিয়েছিস জানিস না।
না।
তুই পাগল, ম্যাডামকে পাগল করছিস কেনো।
মিত্রা ফুঁদিয়ে বাঁশি বাজিয়ে উঠলো।
অনাদি আর গম্ভীর থাকতে পারলো না, হো হো করে হেসে উঠলো। বাসুও হাসছে।
এই গুলো করছিস।
হ্যাঁ।
তুই কি ক্লাস ফোরে পরছিস।
দেখাচ্ছিলাম মিত্রাকে।
দেখলেন ম্যাডাম আপনার বুবুনের আঁতুর ঘর।
হ্যাঁ। সঙ্গে তোমাদেরটা ফাউ।
আমাদেরটাও দেখিয়েছে।
হ্যাঁ, সবারটা।
বাঃ বাঃ তাহলে এখানে অনেকক্ষণ।
তা জানি না। ঘড়ি নেই।
মোবাইল।
বাড়িতে রেখে এসেছি।
মানে কেউ যেনো আপনাদের নিষিদ্ধ কাজে বিরক্ত না করে।
বাবাঃ তুমি হেডমাস্টারের মতো কথা বলছো। বাসু অনাদিকে বারন করো না।
অনাদি হাসছে।
সত্যি অনি তোকে নিয়ে আর পারা যাবে না।
পদ্মপুকুর থেকে কখন এলি।
ওখানে যাইনি তো।
আবার মিছে কথা বলছিস। শশধর কাকা তোদের দেখেছে।
তাহলেতো সব জানিষ।
না বললে জানতেই পারতাম না কোথায় গিয়েছিলি। প্রথমে ওখানেই যাই, চারিদিক শুনশান দুজনের কেউ কোথাও নেই। কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম, এরপর তোদের গতিবিধি কোথায় হতে পারে। ভাবলাম ফিরে গেছিস, ছোটোমাকে ফোনকরলাম, বললো না ফিরিস নি। তখন বাসুই বললো, দেখ এখান থেকে কাছে, দুটো জায়গা আছে, বাজার নয়তো স্কুল। প্রথমে বাজারে গেলাম, তারপর এখানে এলাম। সকাল থেকে কত কিলোমিটার গাড়ি চালালাম বলতো।
কতো হবে মাইল দেড়েক।
বাসু হেসে ফেললো।
তুই থাম তো অনাদি আর হেজাস না। চল দুজনে দুটোকে তুলে গ্যারেজ করি। 
 
 
 
 
 
 
 
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks