দেখি নাই ফিরে - (Part-30)

মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললো, দিদিমনি চিলি চিকেন যখন বানাচ্ছিল অনিদা দারুন গন্ধ বেরিয়েছিলো।
তাই, দাঁড়া একটু খেয়ে দেখি, মেখে ছিলো কে।
আমি।
মিত্রা রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো।
ছোটমা চা নিয়ে এলো।
হ্যাঁরে ডালে সম্বার দিস নি।
না। ওই ভাবে খেয়ে দেখো না আজকে।
তোর বড়মা তাই বললেন।
আমার মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে বললো, তুই সবেতেই এক্সপার্ট।
সবাইকে আজ খুশি খুশি দেখছি। ঢুকলো সবাই যখন একসাথে, তারমানে একসাথেই কোথাও গেছিলো সব। এদের দুজনের কথাবার্তায়ও মনে হচ্ছে বেশ খোশ মেজাজেই আছে।
আমি চায়ে চুমুক দিয়ে দাদাকে বললাম, কাগজ দিয়েছে ওরা।
হ্যাঁ হ্যাঁ, সনাতন সব দিয়ে গেছে, তোর ঝাড় খাওয়ার পর, ঠাকুর না কে এসেছিলো, যে গাড়ির ব্যাপারটা দেখে।
কি বললো।
সনাতন বললো, সে নাকি স্যারেন্ডার করেছে। ব্যাপারটা কি বলতো। তুই পটা পট বিজ্ঞদের মতো সব বলেগেলি, ওরাও মেনে নিলো।
আমি বললাম, প্রত্যেকটা গাড়ি পিছু, তেল কিলোমিটার মিলিয়ে প্রায় পাঁচশো টাকা কিংশুকের পকেটে আসে, আমাদের চারশো গাড়ি আছে, তাহলে বোঝো কতটাকা মাস গেলে ওর পকেটে আসছে। পেমেন্ট যেহেতু ওর হাত দিয়ে যাচ্ছে, অতএব টাকা ওর কাছেই আসবে।
তুই ধরলি কি করে। আমি কাউকে বলবো না। বল। তোর কাছ থেকে এই গোয়ান্দাগিরিটা শিখতে হবে।
আমি ফিক করে হেসে ফেললাম, মিত্রা বড়মা এসে আমার দু পাশে বসলো, দুজনের হাতেই চায়ের গ্লাস।
সর না দুকাঠা জায়গা নিয়ে বসে আছিস কেনো।
আমি একটু সরে বসলাম।
হ্যাঁরে তুই পাকৌরাতে কি দিয়েছিস রে।
কেনো।
একটা বেশ ভালো গন্ধ ছাড়ছে।
তোমার ওখানে চাউমিনের মশলা ছিলো একটু দিয়েদিয়েছি।
এই বুদ্ধিটাতো কোনো দিন খাটাইনি।

দিলে তো সব মাটি করে।
আ মরন, কি হলো আবার।
আমি অনির কাছ থেকে গোয়েন্দাগিরি শিখছিলাম।
এই বুড়ো বয়সে। অনি একবারে বলবি না। ও যেমন আছে তেমন থাক। ছেলেটা আগুনের সামনে তেকে সবে উঠে এলো, ওমনি খোঁচানো শুরু হয়ে গেছে না।
দেখলি অনি, তুই এবার বল কার দোষ।
ছোটমা আর চা আছে।
ছোটমা রান্নাঘর থেকে বললো, কেনো রে।
একটু নিয়ে এসো না। তিনজনের জন্য।
দেখো দেখো কে কাকে দেখে। তুমি নিজে এক গ্লাস নিয়ে এসে বসে গেলে।
কেনো তুমি খাও নি, তোমায় না দিয়ে গিলছি নাকি।
অমিতাভদা চুপ করে গেলেন।
মাসে একলাখটাকা মানে বছরে বারোলাখ সরাতো। অমিতাভদা বললেন।
এবার ওটা ব্যাঙ্কে যাবে ঋণ শোধ হবে।
বড়মা আমার দিকে তাকালেন।
এই ভাবে তুমি যদি দেখো, তাহলে মাসে ড্রেনেজ মানি প্রায় ৫০ লাখ টাকা। বছরে কতো।
দাদা আমার দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে।
৬ কটি।
বলিস কি।
এটাতো খুব সাধারণ ব্যাপার। এ্যাডের ব্যাপারটা যদি তোমায় বলি, তুমি হার্ট ফেল করে যাবে।
কি রকম।
আমি এই কদিনে কত কোটি টাকার এ্যাড কালেকসন করেছি।
১২৫ কোটি।
এর থার্টিপারসেন আমার কমিশন। তাহলে কত কোটি হলো।
যাঃ তুই গাঁজা খুরি গল্প বলছিস।
না দাদা ও ঠিক বলেছে আমি ওর ঋণ কোনোদিন শোধ করতে পারবো না। মিত্রা মাথা নীচু করে বললো।
চম্পকদা, সুনীতদা এই করে ওই জায়গাটা কিনেছিলো, বকলমে মলের সঙ্গে পার্টনারশিপ করে, নতুন কাগজ বার করবে। কতদিয়ে কিনেছিলো শুনবে।
কতো।
৭৫ কোটি টাকায়, তিনটে ফ্লোর ৩০০০০ স্কয়ার ফিট।
ছোটমা কখন এসে চেয়ার নিয়ে বসেছে, জানিনা, ওরা সবাই অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বসে আছে।
এতো টাকা এরা পেলো কোথায়। বুঝে দেখো।
কাগজ কে করবে।
সুনীতদা এডিটর, চম্পকদা এ্যাডদেখবে। তোমার হাতের তৈরি ছেলেগুলোকে নিয়ে পালিয়ে যাবে, কাগজ তৈরি হয়ে যাবে।
মিত্র আমাকে মালিক বানাবার আগে আমার কাছেই অফার ছিলো, যখন দেখলো আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না, তকন ফোটাবার ধান্দা করলো, কিন্তু মিত্রাযে আমার পূর্ব পরিচিত এটা ওরা ঠিক বুঝতে পারে নি। তাছাড়া তুমি বছর খানেক আগে একবার ওদের ক্লাবের একটা প্রোগ্রামে আমাকে পাঠিয়েছিলে, সেই দিন ওকে দেখলাম, ওর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে আলাপ করালো ও। ওর বাড়িতে গেলাম। প্রায় ছবছর পর দেখা।
ছয় না আট বছর। মিত্রা বললো।
এরপর মিত্রা যে ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরে যেতে পারে ওরা তা ভাবে নি।
আমার মালিক হওয়ার সংবাদ যখন পাকা হয়ে গেছে মিত্রার সৌজন্যে তখন ওরা তড়িঘড়ি ঘর গোছাতে গেলো, বেশ ফাঁদে পা দিলো, আমি সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম। দেখলাম ওরা টোপ গিললো, ইসলামভাইকে সব বললাম, মেন অপারেটর ও। আমি জানতাম ও বিগড়ালে ভজুর মা দামিনী মাসি আছে। কাজ আমি বার করে নেবই। তা ইসলামভাই আমাকে ভালবাসে, সে মযর্দাটুকু রেখেছে। ওকে একসময় আমি ভীষণ হেল্প করেছিলাম।
মেরিনা মাসি যখন ছিলো তাই না অনিদা। ভজু বললো।
তোর মনে আছে।
হ্যাঁ।
ভজু আমার অনেকদিনের সঙ্গী।
ছোটমা উঠে গিয়ে ভজুর মাথায় হাত দিয়ে চুল গুলো নেড়ে দিলেন, ভজু ফিক ফিক করে হাসছে।
নাও অনেক গল্প হলো, এবার খাবার বন্দবস্ত করো। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, কিরে তুই কাপর ছাড়বি না।
খেয়ে নিই।
পেট ঠিক আছে।
খারাপ হতে যাবে কেনো।
ঠিক আছে।



সবাই একসঙ্গে খেতে বসলাম, আমি মাঝখানে, আমার একপাশে মিত্রা একপাশে বড়মা, আর আমাদের মুখো মুখি ছোটমা, মল্লিকদা অমিতাভদা। নিচে ভজুর আসন করা হয়েছে, ভজু নিচ ছাড়া কোথাও বসবে না, সকালেও আমি টেবিলে বসে খেয়েছি ভজু নিচে। আজ বুফে সিস্টেম যে যার ইচ্ছে মতো নিয়ে খাও। তবে বড়মা ছোটমাই সব দিচ্ছেন।
আমি মিত্রার পাতের দিকে তাকালাম।
একবারে হাত দিবি না। নিজেরটা সামলা।
তখন দুপিশ মেরেছিস।
বেশ করেছি তোর কি। পারলে তুইও খা।
হাগুড়ে।
মিত্রা ডালে চুমুক দিলো।
ডালটা দারুন বানিয়েছিস। বড়মা একবাটি আলাদা করে সরিয়ে রাখোতো।
কেনো গিলবি।
তুই কথা বলবি না আমি বড়মার সঙ্গে কথা বলছি।
ছোটমা মল্লিকদা মুচকি মুচকি হাসছে। দাদা গম্ভীর হওয়ার অভিনয় করছে, বড়মা চুপচাপ।
কাল যেতে হবে, রাস্তায় যদি গাড়ি থামাতে বলিস.........
খুব আস্তে চিবিয়ে চিবিয়ে বললাম। তবে সবাই শুনতে পেয়েছে।
আচ্ছা তুই খা না, ওকে ওর মতো খেতে দে, ওর খুব খিদে পেয়েছে আজ। অমিতাভদা বললেন।
মিত্রা আমার দিকে তাকালো, ভাবটা এরকম বোঝ এবার।
হ্যাঁরে অনি তুই চিলি চিকেন তৈরি করা শিখলি কোথা থেকে। বড়মা বললেন।
ভজুরাম বলে দাও তো।
আমরা দুজনে কয়েকমাস রামবাগানের একটা হোটেলে কাজ করেছিলাম।
বড়মা আমার মুখের দিকে তাকালেন। মিত্রা আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে, আমি ওর পাত থেকে একটা মাংসের টুকরো সরিয়ে দিলাম, ছোটমা দেখে মুখ টিপে হাসলো।
তোর আর কি অভিজ্ঞতা আছে বলতো। বড়মা ভাতে ডাল মেখে বললো।
সব একদিনে হলে হয় কি করে বলোতো, তুমি মিত্রাকে ঠ্যাং খাওয়াবে আমার জন্য কিছু রাখবে না।
শয়তান, তুই আমার পাত থেকে তুলে নিয়েছিস। আমি এখানে রেখেছিলাম দে আগে।
আমি তখন মিত্রার পাত থেকে তুলে নেওয়া ঠ্যাংটা সাঁটাতে আরম্ভ করেছি। ও আমার মুখ থেকে ওটা কেরে নিয়ে বাকিটা খেয়ে নিলো।
সবাই হো হো করে হাসলো।
যাই বল চিলি চিকেনটা হেবি বানিয়েছিস। মল্লিকদা বললেন।
ছোটমা ভাত।
আমার পাতে ভাত পরলো।
কিগো ডালের কোনো কমেন্টস পেলাম নাতো। বড়মার দিকে হেলে বললাম।
তোর কাছ থেকে রান্নাটা শিখতে হবে।
খালি আমি শিখতে গেলেই বয়েস হয়ে যায় না।
চুপ করো। জীবনে নিউজ ছাড়া কিছু শিখেছো।
আমি মুচকি মুচকি হাসছি, কি গো মাছ কোথায় গেলো।
বড়মা জিভ বার করলেন। ছোটমা দেখে হেসে ফেললেন।
একবারে নিয়ে আসবে না। ওটা আমাদের তিনজনের জন্য, সকালে ওরা খেয়েছে। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো।
তুই একা খা না। বুঝেছি আজ তোর শরীর ভালো হয়ে গেছে। ওষুধ পরছে তো। খিদে পাবেই। ওখানে চ পান্তা গেলাবো।
চিংড়িমাছের টক।
সব।
ছোটমা উঠে মাছের বাটি নিয়ে এলেন।

উঃ সাইজ কি পাবদা মাছের। দাদাকে একটা মল্লিকদাকে একটা দিয়ে দাও, বাকিটা তোমার ও পাশে রেখে দাও। একবারে এপাশে নয়, তাহলে কিছু জুটবে না।
বড়মা হেসে ফেললেন। ও ছোটো তোরা তখন ওকে বেশি করে কচুরি খাওয়াতে পারতিস।
ভাত নিবি না।
না।
কেনো।
এগুলো খেতে হবে না।
এতো খাবি। নির্ঘাত আজ রাতের ঘুমটা ভালো হবে না।
না হোক।
অনি তুই তোর অভিজ্ঞতা গুলো লিখে রাখিস?
হ্যাঁ।
একটা কাজ কর।
একবারে কাগজের জন্য লিখবি না। বড়মা বললেন।
সবাই হো হো করে হসে ফেললেন।
তোমরা ওকে পয়সা দেবে।
বুঝলি কিছু অনি তোর বড়মার কথা। কার সঙ্গে ঘর করলাম বল তিরিশ বছর।
অমিতাভদা এমন করে বললো, সবাই আবার হেসে ফেললো।
আমায় একটু চিলি চিকেন দেবে। বড্ড ভালো রেঁধেছে অনি।
মিত্রা মাতা নীচু করে মুখ টিপে হাসলো।
ছোটমা অমিতাভদার পাতে দিলেন।
মল্লিকদা নিস্তব্ধে খেয়ে যাচ্ছে।
আমি কবিতা আওড়ালাম, “আমসত্ব দুধে ফেলি তাহাতে কদলি দলি/হাপুশ হুপুশ শব্দ, চারিদিক নিস্তব্ধ/পিঁপড়া কাঁদিয়ে য়ায় পাতে’’।
এটা আবার কে রে। বড়মা বললেন।
মল্লিকদার গলা পেলাম, বুঝলে না আমায় আওয়াজ দিলো।
আমি চুপ।
বুঝলি অনি ভালো জিনিষের কদর করতে হয় নিস্তব্ধে।
ছোটমা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
শোনো বড়ো অনির একটা আলাদা পাঠক আছে, তারা অনির লেখা পড়তে ভালোবাসে, ও লিখতে শুরু করলেই কাগজের সার্কুলেশন বারবে, সার্কুলেসন বারা মানেই এ্যাড আসবে। এ্যাড আসা মানে ঋণ শোধ হবে।
ও বাব এতো আছে, তাহলে তুই লেখ অনি।
আবার সকলে হেসে উঠলো।
কাল কখন বেরোবে।
পাঁচটা।
তারমানে চারটে থেকে তোড়জোড় চলবে।
কাকে যেতে বলেছিস। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম।
তুই যেরকম বলেছিস সেরকম ব্যবস্থা করেছি।
কি রকম।
রবীন যাবে, বড় গাড়ি আসবে।
অনাদিকে ফোন করেছিলি।
আমি করিনি। নীপা ফোন করেছিলো। বলে দিয়েছি।
বেশ।
তোমাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা। অমিতাভদার দিকে তাকালাম।
ভজু আছে।

কিরে ভজু পারবি তো।
খুব পারবো, তোমায় চিন্তা করতে হবে না।
ও বাড়ির কি ব্যবস্থা করলি।
বুড়ীমাসি আসবে। সব তালা দিয়ে দিয়েছি। ওরা তো আছে।
কিছু খুলে রেখে আসিস নি তো।
ছোটমা তালা দিয়েছে। আমি দিই নি।
যাক রক্ষে, না হলে তোর তালা লাগানো, তালা তালার মতো ঝুলবে, কিন্তু দেখা যাবে কেউ এসে ঢুকে গেছে।
হ্যাঁ তোকে বলেছে।
খাওয়া শেষ হলো
আমি ওপরে উঠে এলাম। মিত্রা এলো একটু পরে।
যাই বল বুবুন তুই আজ দারুন রান্না করেছিস, সবাই খুব তৃপ্তি করে খেলো।
তুই।
আমার কথা বাদ দে। আমি তো হাগুড়ে।
হাসলাম।
মিত্রা কাপর খুলছে, ব্লাউজ খুললো, দে ফিতেটা একটু আলগা করে।
আমি ওর ব্রার ফিতেটা খুলে দিলাম, ব্রাটা বুক থেকে খসে পরলো, আমি ওর মাইটা একটু টিপে দিলাম।
তুই শুরু করলি মনে থাকে যেনো।
না আজ কোনো কিচু নয়।
ও এগিয়ে এসে আমার পাজামার ওপর দিয়ে নুনুটা মুঠো করে ধরলো।
আঃ।
কি হলো।
তুই তো আমার লোমটোম ছিঁড়ে দিবি।
খোল একটু হাত বুলিয়ে দিই।
না। বাখরুমে যাবি।
হ্যাঁ, যা খেলাম পটি না করলে হজম হবে না।
ছোটমার কাছ থেকে কার্মোজাইম খেয়ে আয়।
খেয়ে এসেছি।
যা বাথরুমে যা।
আমি শুলাম।
না এখন শুবি না। আমি ঘুরে আসি তারপর।
মিত্রা টাওয়েলটা নিয়ে বাথরুমে চলে গেলো। আমি আমার কাগজ পত্র গুলো গুছিয়ে নিলাম, চিকনার ডিডটা দেখলাম, হ্যাঁ হিমাংশু বাংলায় লিখে পাঠিয়েছে। অফিসের কাগজগুলো উল্টে পাল্টে দেখে নিলাম। হ্যাঁ সব ঠিক আছে। ওখানে গিয়ে মিত্রাকে অনেক কাজ শেখাতে হবে। না হলে আমার অবস্থা একেবারে খারাপ হয়ে যাবে।
মিত্রা বাথরুম থেকে বেরোলো, বুকের ওপর টাওয়েলটা বেঁধে বেরিয়ে এসেছে। আমি ওর দিকে তাকালাম।
তাকাস না তাকাস না। অনেক দেখেছিস।
আমি উঠে দাঁড়ালাম।
বুবুন খারাপ হয়ে যাবে বলে দিচ্ছি, একবারে কাছে আসবি না।
তখন খামচে ধরেছিলি না।
ঠিক আছে আর করবো না, প্রমিস।
মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে বললাম প্রমিস, প্রমিস দেখানো হচ্ছে।
আমি চেঁচাবো।
চেঁচা। দেখি কত তোর গলার জোর।
আমি বাথরুমে ঢুকে যাবো।
ছিটকিনি দিয়ে দেবো, সারারাত থাকতে হবে।
ঠিক আছে ঠিক আছে, আর কোনো দিন হবে না।
ছেড়েদিলাম মনে রাখবি।
ওই হোলডোলটার ওপরের চেন টেনে আমার ম্যাক্সিটা দে।
নিজে নিয়ে নে।

দে না।
আমি ম্যাক্সিটা বার করে ওর দিকে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম। খাটের ওপর গিয়ে বসলাম, কাগজ গুলো গুছিয়ে একটা ফাইল টেনে নিলাম।
মিত্রা ম্যাক্সিটা পরে চুল আঁচড়াচ্ছে।
এগুলো কি আজ বুঝবি, না ওখানে গিয়ে বুঝবি।
কি বলতো।
চিকনার ব্যাপারটা।
ওখানে গিয়ে।
টাকা তুলেছিস।
হ্যাঁ।
কতো।
২ লাখ। তুইতো তাই বলেছিলি।
ঠিক আছে। লাগলে আবার এসে নিয়ে যাবো।
সনাতনবাবু ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়ার স্লিপগুলো তোকে দিয়ে সই করাচ্ছে।
হ্যাঁ।
তুই লিখে রাখছিস ডাইরিতে।
হ্যাঁ। তুই যা যা বলেছিস আমি তাই করছি, একেবারে অক্ষরে অক্ষরে।
আমি টেবিলে গিয়ে ফাইলটা রাখলাম। মিত্রা মুখে লোসন লাগাচ্ছে। শুলাম, কালকে রেডি হয়ে ডাকবি, তার আগে ডাকবি না।
দাঁড়া তোকে শোয়াচ্ছি।
আবার শুরু করলি।
আমি কিন্তু এখন টাওয়েল পরে নেই।
হাসলাম।
মিত্রা নিজের কাজ শেষ করে বিছানায় এলো, শোরে শো।
বিরক্ত করিস না, তুই ওই পাসে গিয়ে শো।
না আমি ধারে শোবো, তুই শোরে যা।
আমি শোরে গেলাম, ও শুলো।
অনেক দিন থেকে লক্ষ্য করছি মিত্রা এখন মাথায় আর সিঁদুর দেয় না। মাঝে মাঝে ভাবি ওকে একবার জিজ্ঞাসা করি, তারপর আর জিজ্ঞাসা করা হয় না, এখন ও চুলটা উল্টে আঁচড়ায়, বয়সটা যেন কয়েক বছর কমিয়ে ফেলেছে। মিত্রা আমার দিকে ফিরে শুলো, আমার বুকে ওর মুখটা রাখলো।
বুবুন।
উঁ।
তুই কি ভাবছিস বলতো। অনেকক্ষণ থেকে তোকে লক্ষ্য করছি।
কি ভাববো, কিছু না।
তুই লোকাচ্ছিস কেনো। বল না।
সত্যি আমার ভাবার আর কি আছে, কে আছে কার জন্য ভাববো। তোর কোম্পানীর ভবিষ্যত ভাবছি, যা জটিল পরিস্থিতি, যত ঢুকছি, তত যেন গাড্ডায় পরে যাচ্ছি।
আজকে কোথায় গেছিলাম জিজ্ঞাসা করলি না।

মিত্রার দিকে তাকালাম, আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। চোখে অনেক প্রশ্ন। আমার কপালে হাত দিলো। চোখের পাতায় হাত দিলো।
তোকে অনেক কষ্ট দিচ্ছি। কি করবো বল, আমার কে আছে, তুই ছাড়া , আমাকে সবাই ঠকিয়েছে।
আবার মন খারাপ করে।
তুই বিশ্বাস কর, অনেক চেষ্টা করি, পারি না। তোকে না পেলে হয়তো জীবনটা শেষই করে ফেলতাম।
কেনো। এতটাই দুর্বল তুই, আগেতো এরকম ছিলি না।
সত্যি চাপ কি জিনিষ জানতাম না, শয়তান গুলোর হাতে খেলার পুতুল হয়ে গেছিলাম, কেউ তখন আমার পাশে এসে দাঁড়ায় নি, যাকেই বিশ্বাস করেছি সেইই সব কিছু নিয়ে ভেগে পরার ধান্দা করেছে, এমন কি শরীরটাকে পযর্ন্ত বাদ দেয় নি।
কে সে বলতে পারবি।
তুই তাকে শাস্তি দিবি, কিন্তু আমার ছটা বছর ফিরিয়ে দিতে পারবি।
অন্ততঃ শাস্তি পেয়ে সে এই টুকু বুঝুক এটা তার অন্যায়।
পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে, জানিষ তারা এই জন্য পৃথিবীর আলো দেখে।
কে সেই ব্যক্তি বললি না।
আবার কে ওই অমানুষটা।
সেদিন তুই ওর কাছে গেছিলি কেনো।
আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলো।
কেনো।
ও ভেবেছিলো তোর গলায় মালিকানার লকেট ঝুলিয়ে দিয়ে ও পেছন থেকে খেলবে। তুই একটা গ্রামের ছেলে, গর্ধভ, ওর কাজ গোছাতে অনেক সুবিধা। আমি তোকে জানতাম, তোর সঙ্গে যে আমার একটা রিলেসন ছিলো, তা ওকে বলি নি, বলেছি ফাইন্যাল হওয়ার পর। আমি সেই সুযোগটা নিলাম। আমার এ ছাড়া বাঁচার কোনো পথ ছিলো না।
কাঁদবি না, কান্নাকে আমি ঘৃণা করি। পৃথিবীটা কেঁদে ভাসাবার জায়গা নয়, এখানে তোকে লড়ে অর্জন করতে হবে, সোজা আঙুলে না উঠলে বাঁকা আঙুল দেখাতে হবে।
কাউকেতো আমার বুকটা দেখাতে পারি না, তাই কাঁদি, তুইও মাঝে মাঝে অবুঝপনা করিস।
বল সে গুলো আমায়। না বললে আমিই বা বুঝবো কি করে কোনটা আমার ভুল কোনটা ঠিক।
তুই শুনবি আমার কথা।
শোনার মতো হলে নিশ্চই শুনবো। আমি কাজ করতে চাই, প্রথমে ঘর গোছাবো তারপর শেষ করবো।
তুই কেনো মলকে সরাতে গেলি, ও তোর প্রতি রিভেঞ্জ নেবে। আমি ওকে চিনি। এতদিন আমাকে দেখিয়ে ওর ব্যাবসা করেছে। ক্লাবে কি আমি ইচ্ছে করে গেছি, তুই দেখেছিস কোনো দিন, সেই লাইফস্টাইল কি আমার ছিলো।
জানি।
ওরা আমাকে যেদিন টোডির বিছানায় তোলার চেষ্টা করলো সেদিনই আমি সব বুঝতে পারলাম, নিজেকে বাঁচাতে ওরা যা যা বলেছে, তাতে সই করেছি। ওরে ঘর শত্রু যে বিভীষণ আমি কি করবো।
আমি মিত্রার মুখটা বুক থেক তুললাম, টোডি কে।
ও বম্বেতে থাকে প্রচুর ক্ষমতা।
কি করে বুঝলি
সেন্ট্রালের অনেক মিনিস্টারের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক।
বেশ, সেই কারনে তার প্রচুর ক্ষমতা। পাগলী।
আরো আছে। সিআইআই, ফিকির মেম্বার।
তোকেও বানিয়ে দেবো। তুই জানিষ না, একটা কাগজের ক্ষমতা কতটা।
সেটা এখন বুঝছি, আগে বুঝতাম না, তুই সেদিন যেভাবে মন্ত্রীটার সঙ্গে কথা বললি, সেদিন একটু একটু বুঝলাম।
তোর কি মনে হয় আমি পারবো।
মিত্রা আমার বুকে চুমু খেলো, তোর জন্য আমার বুকটা মাঝ মাঝে ফুলে ওঠে।
বেশি ফোলাস না দেখতে বাজে লাগবে।

দেখেছিস।
হাসলাম।
আজকে তার জন্যই এক জ্যোতিষির কাছে গেছিলাম সবাই।
আমার জন্য, জ্যোতিষি, সে আবার কি করবে।
তোর ভবিষ্যত জানতে।
কার কালেকসন।
ছোটমার।
জ্যোতিষি আমার কি ভবিষ্যত বলবে, ও ওর ভবিষ্যত বলতে পারবে।
এই কথাই সেও বললো।
কি বললো, ভেরি ইন্টারেস্টিং।
বড়মা বারন করেছে তোকে বলতে।
তাহলে বলিস না।
তোকে না বললে আমার পেট ফুলে যাবে।
তাহলে বল।
তোকে কেউ আটকাতে পারবে না। তুই যে কাজ করবি সেই কাজে সাক্সেস হবি। তুই একগুয়ে গোঁয়াড় কারুর কথা শুনবি না।
আর।
তোর প্রচুর শত্রু। কিন্তু সবাই তোর কাছে মাথা নোয়াবে।
তাহলে আমি রাজা লোক বল।
তুই কিছুতেই সিরিয়াস নস, দেখ তুই কি ভাবে কথা বলছিস।
তোর মাই দুটো কি ভারিরে, বুক ফেটে যাচ্ছে।
দেখ দেখ তুই কি রকম।
আচ্ছা নিজেরটা গুছিয়ে তোকে ছেড়ে কবে পালিয়ে যাব বল।
তুই আমাকে ছেড়ে কোনোদিন পালাতে পারবি না।
কেনো।
আমাকে আলাদা ডেকে জিজ্ঞাসা করেছিলো, আমার সঙ্গে তোর ফিজিক্যাল রিলেসন হয়েছে কিনা।
তুই বোকার মতো সত্যি কথা বললি।
যা হয়েছে তাই বলেছি, বোকার মতো কেনো।
তুই বলতে পারতিস হয় নি। তাহলে দেখতিস অন্য কথা বলছে। সব বুজরুকি।
ঠিক আছে বুজরুকি, তোর ভূত ভবিষ্যত বললো কি করে।
সেটা কি রকম।
তোর মা বাবা নেই, তুই পড়াশুনায় দারুন।
বলে নি আমি গ্রেট মাগীবাজ।
সত্যি কথা বলবো।
বল।
আমাকে সে কথাও বলেছে। তোর বহু নারীসঙ্গ আছে, আমি যদি তোর সঙ্গে থাকতে চাই তাহলে আমাকে মেনে নিতে হবে।
বুকটা ধড়াস করে উঠলো, মিত্রা আমাকে বুঝতে চাইছে, নাকি জ্যোতিষের গল্প ফেঁদে......।
নারীসঙ্গ হয়েছে না হবে।
তা বলতে পারলো না। তবে তোর নারীসঙ্গ আছে।
এই তো তোর সঙ্গে করছি।
মিত্রা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।
দিনরাত যখনই সুযোগ পাই তোর মাই টিপি পুশিতে হাত দিই, নুনু খাঁড়া হলে তোর পুশিতে ঢোকাই।
দেখেছিস তুই। এই সম্বন্ধেও বলেছে।
কি বলেছে।

তোকে বোঝা খুব মুস্কিল। কিন্তু তুই যাকে একবার ভালোবাসবি, তারজন্য তুই জীবন দিবি।
তোর জন্য অবশ্যই এ কাজ করবো না।
সেই জন্য দুরাত জেগেছিস, রবীনের পেট থেকে কথা বার করে, আমার পৌঁছবার আগে বাড়িতে পৌঁচেছিলি, আমাকে তেঁতুল খাইয়ে বমি করিয়েছিলি, বুড়ীমাসিকে দাঁড় করিয়ে বমি পরিষ্কার করেছিলি, সকালে আমার হাতে একটা ঠেসে থাপ্পর খেয়েছিলি, নিজে কেঁদেছিস, আমাকে কাঁদিয়েছিস, জ্বর হয়েছে রাত জেগেছিস, সারারাত জেগে জেগে মাথায় জল পট্টি দিয়েছিস, আমাকে সুস্থ করে তোলার জন্য নীচ থেকে তেল গরম করে এনে আমার সারা শরীর মালিশ করেছিস।
আমি মিত্রার মাথাটা ধরে বুকে চেপে ধরলাম, ছাড় আমাকে, বলতে দে, আমারও কিছু বলার থাকতে পারে, আমারও কিছু চাওয়ার থাকতে পারে তোর কাছে, সেটা কোনোদিন বোঝার চেষ্টা করেছিস।
কিছুক্ষণ চুপচাপ
এরপর কাঁদলে, বলবি কাঁদবি না আমি কান্নাকে ঘেন্না করি। কান্না ছাড়া একটা মেয়ের বলবার কি আছে বলতো। বড়মাকে দেখেছিস, ছোটোমাকে দেখেছিস, তারা তোর সামনে কাঁদে না, তোর আড়ালে তারা বালিশ ভেঁজায়, তোর চোখ আছে সে গুলো দেখার। কেন কেন কেন তারা কাঁদবে তোর জন্য। তুই কে।
আমি মিত্রার মুখটা বুকে চেপে ধরে আছি, বুঝতে পারছি মিত্রার চোখ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা জল পরছে, কিছু বললাম না, ভাবলাম একটাই কথা, আমি কি আমার অজান্তে এদের কোথাও আঘাত করে ফেলেছি, যর জন্য ওদের রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসাবে মিত্রা এসব কথা বলছে। খেয়াল করতে পারছি না। এদিকটা এত দিন ভাবি নি, আমি দাদা মল্লিকদার সেফ্টির কথা ভেবেছি, ওদের আশ্রয় পাকা করেছি, আমি থাকতে ওদের কোনো অসুবিধে হবে না। মিত্রাকে এই মুহূর্তে একটা জায়গায় নিয়ে এসে দাঁড় করিয়েছি, আরো অনেক কাজ বাকি, ওপর তলার কিছু লোককে ছাঁটতে হবে। এই মুহূর্তে নয়, আমাকে আরো ছমাস অপেক্ষা করতে হবে। তার আগে ওখানে দুটো উইং বার করে নিতে হবে। অনাদি চিকনা সেটা পারবে বলে মনে হচ্ছে, প্রত্যেক মানুষের একটা স্বপ্ন থাকে, অনাদির রাজনৈতিক কেরিয়ারের স্বপ্ন আছে, আমাকে সেটা কাজে লাগাতে হবে।
কিরে আবার নিজের মধ্যে ডুবে গেছিস।
মিত্রার দিকে তাকালাম। চোখের পাতা ভেঁজা ভেঁজা। আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে।
হাসলাম।
তোর এই বিচ্চু হাসিটাই সকলকে হিপনোটাইজ করে দেয়।
তোকেও।
হ্যাঁ আমাকেও, তোর প্রতি ভীষণ রাগ হয়, মনে হয় তোকে আঁচড়ে কামরে......
বেড়ালের মতো।
মিত্রা হেসে ফেললো, বুকে মুখ লুকিয়ে বললো যখনই তুই হেসে ফেলিস আর কিছু বলতে পারি না।
এই হাসিটুকু ছাড়া আমার কি আছে দেবার বল। আমি পরিবারের মধ্যে বড় হয়ে উঠি নি, আমার মধ্যে কিছু প্রবলেম থাকবেই, এটা তোদের মেনে নিতে হবে।
আমরা সকলে তোকে মেনে নিয়েছি, মানিয়ে নিয়েছি। তুই তো খারাপ ছেলে নোস।
নারে মিত্রা সেটা বলতে পারবো না, নিজের আয়নায় নিজের মুখ দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নি। এবার সেটা চেষ্টা করবো। একদিন মন খারাপ হলে আমি দীঘাআড়িতে গিয়ে সময় কাটিয়েছি, পাখিদের সঙ্গে কথা বলেছি, গাছের সঙ্গে কথা বলেছি, না হলে শ্মশানে গিয়ে বসে থেকেছি, মনে মনে কাউকে খোঁজার চেষ্টা করেছি, সব শেষে পীরসাহেবের থানে। একসময় তোর মতো কতো কেঁদেছি, আমার কান্নার মূল্য কেউ দেয়নি এই পৃথিবীতে,একদিন নিজেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম, কেঁদে কিছু লাভ নেই, চোখটা পাথরের মতো করতে হবে, দেখিস না, দেবতার চোখে জল নেই, সব সময় হাসি হাসি মুখ। ওখানে বসে থাকলে ভারি মনটা অনেক হাল্কা হয়ে যেতো, নিজের মনকে বোঝাতাম অনি তুই পৃথিবীতে একা, তোকে লড়ে উঠতে হবে। এক ফোঁটা জমি বিনা যুদ্ধে কাউকে ছাড়বি না, হকের জিনিষ কোনো দিন আপোষ করবি না। কলেজ লাইফে তোকে পেলাম, তোকে আঁকড়ে ধরে অনেক স্বপ্ন দেখলাম, তুই হারিয়ে গেলি, তারপর খড়কুটোর মতো ভাসতে লাগলাম, অমিতাভদা আমার মধ্যে কি দেখেছিলেন জানি না, আমাকে ওনার বাড়িতে স্থান দিলেন, কিন্তু ভালোলাগলো না, চলে গেলাম, তারপর আবার তুই ফিরে এলি, আমার জীবনটাকে একেবারে ওলোট পালট করে দিলি, তুই আসার পরই দেখলাম বড়মা ছোটমাও আমাকে একটু একটু করে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছে। এরকম সিচুয়েশনে কোনোদিন পরিনি, তারপর দেখলাম, তোকে বড়মাকে ছোটমাকে মল্লিকদাকে দাদাকে আঘাত করার জন্য সবাই মুখিয়ে আছে, আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না, দাদা মল্লিকদা না বললে হয়তো ইসলাম ভাই আমার কথায় ওদের দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দিতো, কেউ কোনো দিন হদিস পেতো না।
অনি কি বলছিস তুই।
আমি ঠিক কথা বলছি মিত্রা, আমি মলের খোঁজ খবর দিন পাঁচেক রাখি নি, যদি এর মধ্যে ও সত্যি কিছু করে থাকে, গেমটা আমার হাতের বাইরে চলে যাবে, ইসলাম ভাই ওকে রাখবে না। আমি হয়তো ওকে রাখতে চাই, ওদের থিয়োরি আলাদা, যে ওদের পথের কাঁটা তাকে ওরা গোড়া থেকে উবরে ফেলে দেয়।
অনি তুই থাম আমি আর সহ্য করতে পারছি না।
বিশ্বাস কর মিত্রা তোকে তোর প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে গেলে কিছু নোংরা খেলা খেলতেই হবে। একে এককথায় বলতে পারিস রাজনীতি, এইজন্য তোদের কিছু বলি না, আমি জানি তোর মতো বড়মা, ছোটমা, মল্লিকদা, দাদা একই কথা বলবে। তোরা বস্তুবাদে বিশ্বাসী, সাধারণ গেরস্থ, এ সব সহ্য করতে পারবি না, তার থেকে নিজের টেনসন নিজের কাছেই রাখি। এই টেনসন তোদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে কেনো তোদের আনন্দটুকু শুষে নেবো।
তুই কি করে জানলি বড়মা ছোটমা কিছু বোঝে না।
বোঝে তব ওপর ওপর, ভেতরের ব্যাপারটা বোঝে না।

দেখলি না সেদিন কাজ শেষ হয়ে যাবার পর নিজেকে কনফেস করলাম। আমি আগে যদি সব ব্যাপারটা তোদের বলতাম, তোরা কাজটা করতে দিতিস।
মিত্রা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।
আমি জানি বলেই তোদের কিছু বলিনি, আমার একটা বদ অভ্যাস আছে মিত্রা, জানিষ আমি যে মাটির ওপর দাঁড়িয়ে সাধনা করি সেই ভূমি পযর্ন্ত জানবে না আমি কি করছি। এটাকে তন্ত্র সাধনা বলে। তন্ত্র পরেছিস।
না। তুই পরেছিস।
সম্পূর্ণ নয়, যতটা পরেছি তার থেকে এটুকু শিক্ষা নিয়েছি।
আমাকে পরাবি।
চাইলে পরতে দেবো।
কোথায় আছে।
আমার ফ্ল্যাটে।
তোর ফ্ল্যাটে একদিন নিয়ে যাবি।
যাবো।
ফিরে এসে যাবো।
মিত্রা আমার চোখের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে।
জানিষ বুবুন, জ্যোতিষি ভদ্রলোকেরও প্রচুর পড়াশুনা। দাদা মল্লিকদা অনেক ভাবে ক্রস করেছে, উনি কিন্তু সব অঙ্ক করে করে বলে দিচ্ছিলেন।
দাদাদের সম্বন্ধে কি বলেছেন।
ওটা তোকে বলবো না, ওরাই তোকে বলবে। আমি আমারটা তোকে বলতে পারি।
তোকে কি বললো, আমার জীবনে যে ঝড়টা গেলো, সাটা আর এজীবনে আসবে না, শুধু তোর জন্য, আমার এখন সুখের জীবন।
মিত্রার চোখ মুখটা চিক চিক করে উঠলো।
সবার সামনে বললো।
না, আমি বড়মা ছোটমা ছিলাম।
আচ্ছা আমি যদি তোদের প্রয়োজনে কোনো খারাপ কাজ করি তোরা মেনে নিবি।
এটাও বলেছে, তুই নিজের জন্য কোনোদিন কিছু করবি না, যা করবি সবই আমাদের দিকে তাকিয়ে।
তোরা বিশ্বাস করিস।
করতাম না এখন করছি। তুই যে মলেদের ব্যাপারটা ঘটিয়েছিস সেটাও ও বলেছে।
দাদাদের সামনে।
হ্যাঁ, দাদা ডিটেলস জানতে চেয়েছিলো, উনি তোর গ্রহ নক্ষত্র বিচার করে বললেন, আরো বললেন তুই ধূমকেতুর মতো কামিং আঠারো মাসে আরো অনেক কাজ করবি, তারপর তুই থামবি। আমাদের শত বাধাতেও তুই থামবি না।
হাসলাম।
মিত্রা আমার নাকটা টিপে নাড়িয়ে দিয়ে বললো, আবার বিচ্চু হাসি।
আমার আঠারো মাসের কাজের দিনক্ষণ ঠিক করে দিয়েছে, জ্যোতিষ মশাই।
আবার শয়তানি।
না এতো যখন বলেদিলো, এটাও বলে দিতে পারতো।
তোর কি একটুও বিশ্বাস নেই। 
 
 
 
 
 
 
 
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks