দেখি নাই ফিরে - (Part-71)

দু’জনের ছন্দে ফিরে আসতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগলো। নিচে নেমে এলাম। খাওয়ার জায়গা হয়ে গেছে। সবাই গোল হয়ে বসে কথা বলছে।
ছোটমা একবার আমাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
এতোক্ষণ কি শলা পরামর্শ হচ্ছিলো শুনি।
মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। আমি গম্ভীর। সোজা টেবিলে এসে বসে পরলাম।
আজ ছ’জনের সিটে তিনটে চেয়ার নতুন সংযোজন হয়েছে দেখলাম। একপাশে চারটে অপরপাশে তিনটে দুপাশে দুটো। আমি যে দিকে তিনটে চেয়ার পাতা হয়েছে সেদিকে গিয়ে বসলাম। দাদারা সোফায় বসে আছে। নীপা জলের গ্লাস নিয়ে এসে টেবিলে রাখলো। একবার ওর দিকে তাকালাম। মুখ টিপে হাসলো। বুঝলাম দুজনের এ্যাবসেন্সে নিচে খুব জোর আলোচনা হয়েছে।
ছোটমা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলো।
কিরে তুই ওখানে বসলি কেনো ?
তাহলে কোথায় বোসবো।
এদিকে বোস।
কেনো।
যা বলছি কর।
চুপচাপ উঠে এই দিকে চলে এলাম। একবারে ধারে বসলাম।
ছোটমা প্লেট গুলো রেখে রান্নাঘরের দিকে গেলো। একবার নীপা বলে চেঁচিয়ে উঠলো। নীপা মনে হয় বড়মার ঘরে ছিলো। যাই ছোটমা বলে চেঁচিয়ে উঠলো। মিলি টিনা ডাক্তারদাদার কথা খুব মন দিয়ে শুনছে। বড়মা রান্নাঘরের মুখে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে উঠলো।
এখুনিতো খাওয়ার জন্য তড় সইছিলো না এখনো বসে বসে গুলতানি চলছে।
মিত্রা রান্নাঘরে বড়মার সঙ্গে কথা বলছে। সবাই এসে খাবার টেবিলে বসলো। আমি ধারের চেয়ারে।
নীপা ভজু সার্ভ করছে। বুঝলাম ওদের খাওয়া হয়ে গেছে। খাওয়া শুরু হলো।
আমি মিত্রা দুজনে দুধারে মাঝে বড়মা ছোটমা। চোটমা মিত্রার দিকে বড়মা আমার দিকে।
কিরে অনি শুক্রবার আর রবিবার প্রোগ্রাম কি আছে। দাদা বললো।
কিছুই না ঘরের লোকজন এখটু খাওয়া দাওয়া করবো।
ব্যাশ। আর কিছু হবে না।
তুমি একটু অনিমেষদাদের ফোন করবে। অফিসে তুমি যাদের মনে করবে বলার দরকার আছে তাদের বলে দেবে। মিত্রা যদি মনে করে ওর কাউকে বলার দরকার আছে বলবে। ছোটমা বড়মা ডাক্তারদাদাকে আমি বলবো।
বড়মা কানটা ধরলো।
যা বাবা! আমি আবার কি করলাম।
সবতো সুতপাকে বলে এসেছিস, সেটা বল।
তাহেল আর কি সবিতো জেনে ফেলেছো।
দামিনী কাল সকালে আসবে থাকবি তারপর তোর হচ্ছে।
সেতো তুমি বললে বাড়ি পাহাড়া দিতে। আমি সারাদিন থাকবো।
পেটে পেটে কতো বুদ্ধি দেখেছো। ছোটমা বললো।
ছোটমা পেটে নয় দেবাশীষের কথাটা মনে করো।
মিলি হাসতে গিয়ে খক খক করে কেশে উঠলো।
কি হলো মিলি এক ঝটকায় বিষম। ডাক্তারদাদা বললো।
আমি হাসছি।
শুক্রবার কখন বিয়ে করবি। বড়মা বললো।
ছটা নাগাদ হিমাংশু আসবে। তোমরা থাকবে সই সাবুদ হয়ে যাবে বিয়ে হয়ে গেলো। কাগজটা মিত্রার গলায় ঝুলিয়ে দেবো তারপর আমার কাজ শেষ।
তারমানে! দাদা আমার দিকে তাকালো।
তারমানে আবার কি। তারপর খাওয়া দাওয়া।
এই যে বললি তোর কাজ শেষ।
আপাতত। তারপর আমাকে কয়েকদিনের জন্য পাবে না।
কোথায় যাবি। বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে।
দেখি কোথায় যাওয়া যায়।
এবার তুই দাঁড়ে বসেছিস। কিছু করলে তোর ঠ্যাং ভেঙে দেবো।
অনি শেকল কেটে ফুরুৎ।
ধরো ধরো আবার কানটা ধরো। ছোটমা বললো।
দাদা হাসছে।

হ্যাঁরে মল্লিক কয়েকটা আর্টিকেল এই মওকায় লিখিয়ে নে।
ডাক্তারদাদা হো হো করে হেসে ফেললো।
মিলি।
বলো।
তুমি মীনাক্ষ্মী চ্যাটার্জীকে চেনো।
না।
টিনা তুমি।
কে বলোতো।
তথ্য জনসংযোগের ডিরেক্টর।
একবার দেখেছি। আমাদের বসের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন। কি একটা ব্যাপারে।
আলাপ আছে।
না।
মিলি তোমার সঙ্গেও আলাপ নেই নিশ্চই।
হ্যাঁ।
কাল তোমরা কখন অফিসে যাবে।
যেমন আজ বেরিয়ে ছিলাম।
কাল ওরা কেউ অফিসে যাবে না। বড়মা বললো।
তাহলে আমাকে বেরোতে হবে।
ডাক্তারদাদা হো হো করে হেসে ফেললো।
তুমি হাসলে কেনো।
বান্ধবী তুমি শিঁড়ি ভাঙা অঙ্ক ভুলে গেছো।
বড়মা ডাক্তারদার দিকে তাকিয়ে।
বুঝলে না অনির কথা।
বড়মা আমার দিকে একবার তাকায় একবার ডাক্তারদার দিকে তাকায়।
ওরে শয়তান তোকে থাকতে বলেছি বলে......।
বড়মা এমন ভাবে বললো সকলে হো হো করে হেসে ফেললো।
আমি খেয়ে যাচ্ছি।
তুমি বলোনা অনিদা আমরা ঠিক ম্যানেজ করে নেবো। মিলি বললো।
অদিতি কখন আসবে।
সকালে এখানে চলে আসবে তারপর একসঙ্গে বেরোবো।
তাহলে এক কাজ করো।
বলো।
অফিসে গিয়ে তোমরা তিনজনে একটা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরো। বারোটার পর ওনার কাছে যাবার কথা। একটু আগে গেলেও অসুবিধা নেই। সকালে তোমাদের সঙ্গে একটু বসবো। দুটোর পর থেকে বড়মা ছোটমাকে সময় দাও সারারাত। কি পারবে।
পারবো।
মিত্রা।
বল।
তোকে একটা কাজ দিয়েছিলাম দেশের বাড়িতে থাকতে তোর মনে আছে।
কি বলতো।
মনে কর।
মনে পরছে না।
তোর বাড়ির আলমাড়িতে কিছু কাগজ পত্র আছে.......।
সরি সরি কাল সকালে গিয়েই আমি নিয়ে আসবো। তোর ঘুম থেকে ওঠার আগেই।
যা আছে সব।
ঠিক আছে।

মিলি তোমরা তিনজনে গিয়ে মীনাক্ষ্মী ম্যাডামের সঙ্গে একটু খেজুরে আলাপ করবে। উনি একটা কাগজ তোমাদের দেবেন। নিয়ে আসবে। পারলে ওখানে বসে ভালো করে পড়ে নেবে। যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে আলোচনা করে নেবে। বিষয়টা তোমাদের।
কিগো অনিদা। টিনা বললো।
গেলেই দেখতে পাবে।
মিলি হাসছে।
তুই ঘরে চল তোকে আর একটা কথা বলবো। এটা একবারে তোর পার্শোনাল। কাজটা কালই করবি। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম।
তুই এতো সব কাজ দিলি আমরা কখন বেরোবো। বড়মা বললো।
যা কাজ দিলাম এক ঘন্টার কাজ। তুমি এবার প্রোগ্রাম করেনাও। নাহলে আমাকে বেরোতে হবে।
না তোকে বেরোতে হবে না।
ঠিক আছে।
উঠে পরলাম। তোমরা খাও আমি একটু ওপরে কাজ সারি।
বড়মা আমার দিকে একবার তাকালো।
তুই আমার ওপর রেগে গেলি।
একবারে না।
ডাক্তারদাদা ফিক করে হেসে ফেললো।
বড়মা ডাক্তারদাদার দিকে একবার তাকালো। আমি ওপরে উঠে এলাম।

সকালবেলা যখন ঘুম ভাঙলো তখন দেখলাম আমি বিছানায় একা। চোখ রগরালাম, আমি কি স্বপ্ন দেখছি। না, আমি স্বপ্ন দেখছি না। বিছানাতেই শুয়ে আছি। বেশ মনে আছে কাল অনেক রাতে মিত্রা ওপরে এসেছে। প্রায় সাড়ে বারোটা পৌনে একটা হবে। সেই সময় আমার ঘুমটা একটু ভেঙেছিলো। মিত্রা হেসে বলেছিলো। আজ ছেড়ে দিলাম, মনে রাখিস এটা আমি সুদে আসলে তুলবো। হেসে ছিলাম। তারপর দুজনে জড়া জড়ি করে শুয়ে ঘুমিয়ে পরেছিলাম। বুঝতে পারছি শরীরটা খুব একটা ভালো নেই। ঘড়ির দিকে তাকালাম। সাড়ে নটা বাজে। উঠে বসলাম। নীচ থেকেও কোনো সাড়া শব্দ নেই। তারমানে কি নীচে কেউ নেই। কোথাও গেলে আমাকে নিশ্চই বলে যেতো। গেলো কোথায় সকলে!
ব্রাসে পেস্টটা লাগিয়ে বাথরুমে গেলাম। দাঁতটা ব্রাশ করতে করতে বারান্দায় এলাম। বাড়ি রং করা শেষের পর্যায়ে। দারুন দেখতে লাগছে বাড়িটাকে এখন। এখন মনে হচ্ছে এটা একজন এডিটরের বাড়ি। এ পাড়ায় এই বাড়িটাই সবচেয়ে মেরমেরে ছিলো। এখন অনেক বেশি চকচকে। ছগনলাল আমাকে দেখতে পেয়ে গেট থেকে এগিয়ে এলো।
ছোটবাবু মা একটু বেরিয়েছে। বলেছে চলে আসবে। তুমি কোথাও বেরোবে না। আমি চা দেবো।
সবাই বেরিয়েছে।
হ্যাঁ। ওই বাবুরাও এসেছিলো।
কারা বলতো।
ওই যে তোমার বন্ধু ফর্সা মতো।
বুঝলাম দেবাশীষ।
কখন বেরিয়েছে।
সেতো সকাল বেলা করিব পাঁচটা হবে।
ঠিক আছে, তুমি যাও আমি চা করে নেবো।
চা জলখাবার করা আছে। আমাকে দিতে বলেছে।
আমি নিচে যাচ্ছি।



আমি এসে বাথরুমে ঢুকলাম। দেখলাম বিছানার এক সাইডে আমার পাজামা পাঞ্জাবী বার করে রেখে যাওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে নতুন। আমি স্নান সেরে পাজামা পাঞ্জাবী লাগালাম। মোবাইলটা টেবিল থেকে নিয়ে দেখলাম অনেক মিশ কল। দেখলাম সবাই একবার করে কল করেছে। দাদা ডাক্তারদাদা মল্লিকদার মোবাইল নম্বরও রয়েছে। ম্যাসেজ বক্সটা ব্লিঙ্ক করছে। বুঝলাম ম্যাসেজ বক্স ফুল। খুললাম দেখলাম রিমঝিম ম্যাসেজ করেছে। ওর বন্ধুরাও। একটাই কথা তোমাকে সত্যি ফোনে পাওয়া যায় না। আমাকে আজ একটু সময় দেবে। সবারই এক কথা। মনে মনে হাসলাম। ম্যাসেজ রিপ্লাই করলাম, যদি সময় পাই জানাবো।
নিচে এসে ফ্লাক্স থেকে চা ঢাললাম। চায়ের কাপটা নিয়ে গেটের কাছে গিয়ে বাড়িটাকে একবার ভালো করে দেখলাম। বাগানটাও অনেক পরিষ্কর হয়েছে। একজায়গায় সব শুকনো পাতা ডাঁই করা হয়েছে। গাছগুলোর নিচের দিকটা সাদা রং করা হয়েছে। বুঝলাম উই ধরেছিলো।
চা খেতে খেতে বাগানের চারদিক ঘুরলাম। দাদা যাঁর কাছ থেকে বাড়িটা কিনেছিলেন তিনি বেশ রসিক লোক ছিলেন। প্রায় পঁচিশ কাঠা জমির মাঝখানটুকু বাড়িটা করেছেন পেছনে প্রায় পনেরো কাঠা জমি বাগান, সামনে প্রায় সাত কাঠা জমি বাগান। একপাশ দিয়ে বাঁধানো রাস্তা সামনে থেকে বাড়ির গা দিয়ে একেবারে পেছনে চলে গেছে। গোটা পনেরো গাড়ি অনায়াসে এই রাস্তায় দাঁড়িয়ে যেতে পারে। এখন এই জমির ভ্যালুয়েসন কম করেও পঁচিশ কোটি টাকা।
আমি আমগাছটার নিচে গিয়ে দাঁড়ালাম। ঝাঁকরা গাছটার কিছুটা ডাল ছাঁটা হয়েছে। এ বছর অনেক মুকুল ধরেছে। আমি রাতের বেলায় এই মুকুলের গন্ধ পাই।
পেয়ারা গাছটার কয়েকটা ডালে নতুন পাতা হয়েছে। বাগানটা দেখলে মনহচ্ছে ভজুবাবু যত্ন করে। আমি পায়ে পায়ে একেবারে দেয়ালের ধারে এলাম। ভজুবাবু কিছু কিছু চারা গাছ পুঁতেছে মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে ডালিয়া। অনেকক্ষণ বাগানের এদিক সেদিক ঘোরা ঘুরি করলাম। তারপর ওপরে চলে এলাম। ঘড়ির দিকে তাকালম, সাড়ে দশটা। দেবাশীষকে আসতে বলেছিলাম। ব্যাটা সকালে বেরিয়ে গেছে ওদের সঙ্গে। ল্যাপটপটা নিয়ে বসলাম। অনেকদিন মেল চেক করা হয়নি। মেল বক্স খুলতেই অবাক হলাম। তনুর প্রচুর মেল। এমনকি রিমঝিম পিঙ্কি চুর্ণী তিয়াও মেল করেছে।
প্রথমে তনুর মেল গুলো চেক করলাম। আরো মেটিরিয়ালস পাঠিয়েছে। বলেছে ঘর ও দেখেছে। আমাকে একবার যেতে হবে, না হলে কিছু করা যাবে না। একন ও কোলকাতায় আসতে পারবে না। প্রচুর কাজের চাপ। সঙ্গে সঙ্গে ওকে রিপ্লাই করলাম। হাতের কাজ সেরেই তোমার কাছে যাচ্ছি। তুমি একবার কলকাতায় আসবে। আমার মোবাইলে একটা ম্যাসেজ কোরো।
রিমঝিমদের মেলগুলো খুললাম। খুলেই আমার মাথা ঘুরে গেলো। বিবসনা সব ছবি। মডেল হিসাবে স্যুট করেছে। কিছু ভালো ছবিও পাঠিয়েছে। নিচে লেখা আছে লাভ রিমঝিম, পিঙ্কি লিখেছে স্যুইট হার্ট অনিদাকে। চুর্ণী লিখেছে আমাকে এক মিনিট সময় দাও। তিয়া লিখেছে বসে আছি পথো চেয়ে।
আমি ছবিগুলো ভালো করে দেখলাম। শরীরী আবেদন মাথা ঘুরিয়ে দেবে।
অন্যান্য মেল গুলো একবার চেক করে নিলাম। ল্যাপটপ পাওয়ার অফ করে হিমাংশুকে একটা ফোন করলাম।
ফোনটা ধরেই হিমাংশু হো হো করে হাসছে।
হাসছিস কেনো।
বাড়িতে একা রেখে দিয়ে সকলে চলে গেছে।
তুই কি করে জানলি।
কেনো তুই কি একা সাংবাদিক।
আমি হো হো করে হেসেফেললাম। কে বললো তোকে।
সকালে তোকে একবার ফোন করেছিলাম। দেখলাম রিং বেজে যাচ্ছে। কেউ ধরলো না। তারপর মিত্রাকে ফোন করলাম। বললো। ইস তোকে বাচ্চা ছেলের মতো ঘুম পাড়িয়ে চলে গেলো।

কি করবো বল। মাঝে মাঝে ঢেঁকিও গিলতে হয়।
অফিসে যাবি না।
আজ মনে হয় হবে না। কিছু নিজের কাজ আছে। সাড়তে হবে।
এবার বল।
আমার কাজ গুছিয়েছিস।
হ্যাঁ।
কাল কখন আসছিস।
ছটা নাগাদ।
রেবাকে নিয়ে আসবি।
বলেছি। তোকে আর নেমন্তন্ন করতে হবে না। দাদাও ফোন করেছিলেন। তুই কি বলতো।
কি করবো বল। আমার গার্জন বলতে তো এখন দাদা ছাড়া আর কেউ নেই।
তা বলে দাদাকে দিয়ে আমাকে ফোন করাতে হবে।
বিশ্বাস কর আমি বলিনি। বলেছি তুমি যাকে যাকে মনে করবে বলবে।
আমার খুব খারাপ লাগছিলো।
শোন একটা কথা আছে।
বল।
কাল অনিমেষদার বাড়িতে গেছিলাম।
কেনোরে।
বৌদিকে নেমন্তন্ন করতে। আর মিত্রাকে দেখাতে।
কেনো সেদিন বৌদির দেখে আশ মেটে নি।
শোন না।
বল।
অনিমেষদা টাকা চেয়েছে। দেড়কোটি দেবো বলেছি। ওদের চেক নিতে অসুবিধে নেই কি করবো।
পুরোটাই ট্যাক্সের আওতায় চলে আসবে। তুই বরং ক্যাশ দে।
আমি মিত্রাকে অফিসে পাঠাচ্ছি। ওর হাত দিয়েই নিয়ে আসবো। প্রয়োজন পরলে তুই একবার সনাতন বাবুর সঙ্গে কথা বলে নিবি।
ঠিক আছে।
ফোনটা কেটেই অনাদিকে ফোন করলাম। বাইরে গাড়ির হর্ন বেজে উঠলো। বুঝলাম সবাই এসে পরলো।
কিরে কোথায় তুই।
নিজের ঘরে বসে আছি।
ঘরে বসে আছিস মানে, শরীর খারাপ নাকি!
না। কাজ করছি।
ম্যাডামরা কোথায়।
সকালে বেরিয়েছিলো এই ফিরছে। এখনো ওপরে আসে নি।
বল।
রবিবারের প্রোগ্রাম কি করেছিস।
আমরা চারজন যাবো।
কে কে আসবি।
আমি চিকনা বাসু সঞ্জীব।
এক কাজ কর।
বল।
গোরাকে একটু বল দুটো গাড়ির ব্যবস্থা করতে। সবাই চলে আয় কাঞ্চন কে নিবি লতাকে নিবি উনা মাস্টারকে বলবি আসার জন্য সঙ্গে মনতিকে নিয়ে নিবি। স্যারকে বলবি আমি বলেছি। আর শোন সেদিন অনিমেষদারা সবাই আসবে।
সেদিন সকালে চলে এলাম। তোর সঙ্গে দেখা হলো না। কি হলো রাতে শেষ পর্যন্ত শোনা হলো না।
পরে শুনিস।
কিরে কিরকম দিলাম বল। ওমা তুই কার সঙ্গে একা একা প্রেম করছিস। মিত্রা হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকলো।
ম্যাডম ঢুকলো, না।
হ্যাঁ।
মিত্রা ছুটে এসে আমার হাত থেকে ফোনটা কেরে নিলো। কাকে চাই।
অনাদি মনে হয় হো হো করে হেসে ফেলেছে।
ও তুমি। কেমন আছো। দাঁড়াও একটু পরে তোমাকে ফোন করছি।
ফোনটা কেটেই আমাদের দিকে হাসি হাসি মুখে তাকালো।
চল চল নিচে চল।
কেনো বলবি তো।
জানি না। বড়মা বললো ওটাকে ধরে আনবি।
মাথায় লাল টিপ্পা লাগিয়েছিস। ব্যাপারটা কি বলতো।
আগামীকাল বিয়ে না।
বিয়ের আর বাকি কি রেখেছিস।
সেতো তুই। তোর জন্যই সব গন্ডগোল। চল চল।
আমাকে টেনে খাট থেকে নামালো।
তোকে কিন্তু পাঞ্জাবীটা পরে দারুণ মানিয়েছে।
এতো তুই কিনেছিস।
আমি না, বড়মা। নিজে হাতে।
কোথায় গেছিলি।
দক্ষিণেশ্বর।

হঠাৎ।
বড়মা কাল রাতে বললো মানত করেছি। আমি বললাম তাহলে চলো। প্রোগ্রাম বানিয়ে নিলাম।
ভালো করেছিস। কটা বাজে দেখেছিস।
তোকে চিন্তা করতে হবে না। আমি তোর কাজ করে এসেছি।
তোকে এই বাসন্তী কালারের শাড়িটা কে দিলো।
ছোটমা। যা পরেছি দেখছিস, সব ছোটমা।
ভেতরেরটাও।
এক থাপ্পর।
দু’জনে নিচে নেমে এলাম। দেখলাম একপাশে ডাক্তারদা দামিনী মাসি এবং ইসলামভাই বসে আছে। আর একদিকে দেবা নির্মাল্য।
আমাকে দেখেই দেবা বললো, আমাকে কিছু বলতে পারবি না। সব বড়মা, যা কিছু বড়মাকে বল।
তাহলে বড়মা তোর হয়ে কাজ করে দেবে।
বড়মা দেখছো। অনি কি আরম্ভ করেছে।
দামিনী মাসির দিকে তাকালাম। কিগো সব একসঙ্গে, কোথায় দেখা হলো।
আমিতো এই এলাম।
তোমায় খাতাটা দিয়ে এসেছে মিত্রা।
নিয়ে গেছিল, বলেছি কয়েকদিন রেখে দে।
বড়মা পূজোর প্রসাদ আর ফুল নিয়ে এলো। আমার মাথায় পূজোর ফুল ঠেকালো। একটা পেঁড়া দিলো। আমি মাথায় ঠেকিয়ে খেয়ে নিলাম। তাহলে পূজো ভালোই দিলে বলো।
হ্যাঁ।
গঙ্গার স্নানটাও জমিয়ে করলে।
তা করেছি।
মন পুরো শুদ্ধ।
তোকে আর পাকামো করতে হবে না।
দামিনী মাসির ঘরটা কেমন দেখলে।
বড়মা আমার দিকে সন্দেহের চোখে তাকালো।
মিত্রা বলে নি। এটা তোমায় নিশ্চিত করে বলতে পারি।
দামিনী মাসির দিকে তাকালো।
দামিনী মাসি অবাক হয়ে বড়মার দিকে তাকালো।
ওরা কেউ বলে নি, আমার লোকজোন কিছু আছে তো।
দাঁড়া ওই দুটো মক্কেল আসুক ঝেঁটিয়ে আজ বাড়ি পাঠাবো।
ডাক্তারদাদা হো হো করে হেসে ফেললো।
তুমি হাসছো কেনো।
তোমার কথা শুনে। ও যতোটা না শিওর ছিলো এখন পুরো পুরি শিওর হয়ে গেলো। ওর কোনো লোকজন ছিলো না পুরোটা ভাঁওতা।

আঁ!
হ্যাঁ।
ও এখুনি একটা ছিপ ফেলেছিলো। মাছটা খেলো। ও একটু খেলিয়ে মাছটাকে তুলে নিলো।
বড়মা আমার কানটা সজোরে মুলে দিলো। তোর পেটে পেটে এতো বুদ্ধি।
বুদ্ধি আছে বলেইতো ও মুখার্জীর মতো লোককে পকেটে পুরে রেখেছে।
তুমি কি করে জানলে।
ও ঢোকার পর থেকে ওকে ফলো করলাম। ওর চাল চলন কথাবার্তা। ও একটা জাল বিস্তার করলো। বলতে পারো চাড় ফেললো। তারপর ঝুপ করে বড়শি ফেললো। মাছ খেলো। ও মাছটাকে খেলিয়ে তুলে নিলো।
বড়মা আমার পাশে বসলো। ছোটমা আমার আর এক পাশে এসে বসলো। মিত্রা আমার পেছনে দাঁড়িয়েছে এসে।
বলোতো ডাক্তার, তুমি বেশ বুঝতে পেরেছো ওই জন্য ও চুপ করে আছে।
আমি হো হো করে হেসে ফেললাম।
ডাক্তারদাদা তুমি বলবে না। আগে কচুরি আসুক। কিগো মাসি তুমি ওরকম ভেটকে গেলে কেনো।
আমি খালি তোকে দেখছি।
দেখে কোনো লাভ নেই বুঝেছো মাসি। একসময় তুমি আমাকে যা বলেছো আমি চোখ কান বুঁজে শুনেছি। এখন তোমার বয়স হয়ে গেছে। আমি যা বলবো তোমাকে শুনতে হবে।
আমি কি শুনি না।
শোনো, মাঝে মাঝে বেগর বাই করো।
ছোটমার দিকে তাকালাম। সকাল থেকে এককাপ চা পেটে পরেছে আর কিছু পরে নি। তোমরাতো বেশ ফুলকো ফুলকো লুচি সাঁটিয়ে এলে।
তোর জন্য নিয়ে এসেছি।
বড়মা দাদা মল্লিকদা কোথায়।
অফিসে গেছে এখুনি চলে আসবে। ও ডাক্তার বলো। না হলে আবার ভুলে যাবো।
ছোট একটু চা।
আগে বলো, অনির লুচি খাওয়া হোক তারপর।
ছোটমা রান্নাঘর থেকে চেঁচিয়ে উঠলো, দাদা এখন না আমি যাই আগে।
দেখছিস তোর ডায়গোনিসের কি ভ্যালু।
আমি হাসছি।
মিত্রার ফোনটা বেজে উঠলো।
কিরে বল, কাজ হয়েছে।
মিত্রা ভয়েজ অন করে দিলো মোবাইলটার। মিলির গলা।
দারুণ একটা সুখবর আছে মিত্রাদি।
তোর কথা সবাই শুনছে।
অফিসে যেতে আর ভালো লাগছে না।
চলে আয়। সুখবরটা কি বল।
কালকে আমরা অনিদার ওপর রাগ করছিলাম না।
হ্যাঁ।
সত্যি অনিদা কখনো চুপচাপ বসে থাকে না বুঝলে। ঠিক একটা কাজ বার করে নিয়ে চলে এসেছে। আমরা খালি কাগজটা নিতে এসে ছিলাম, কয়েকটা বড় বড় রসোগোল্লা খেলাম।
আমার জন্য নিলি না।
দুর চাওয়া যায়। আমরা মিনিট পনেরোর মধ্যে পৌঁছে যাচ্ছি।
আয় আয়।
বড়মা আমার দিকে হাসি হাসি মুখ করে তাকালো।
কিরে কাল এখান থেকে বেরিয়ে কোথায় গেছিলি।
ওই যে সুখবর আনতে শুনলে না। আজও বেরোবো।
আজ তুই একপাও বেরোবি না।
ছোটমা লুচি তরকাড়ি নিয়ে এলো।
আজ বেরোবার নাম করলেই ঠ্যাং ভাঙবো।
আমি হাসতে হাসতে লুচির প্লেট নিলাম।
ছোটমা মিত্রাকে সরিয়ে পাশে বসলো।
দাদা এবার বলুন ওর বুদ্ধিটা শুনি।
ইসলাম তুমি ধরতে পেরেছো।
সত্যি বলছি দাদা আমি এতোক্ষণ শুনলাম কিন্তু কিছুতেই ধরতে পারছি না। কোন কথার ও কি মানে করলো।
ও বলে না, ও দাবা খেলে।
হ্যাঁ।
সত্যি ও দাবা খেলে। ঠিক কথাটা ঠিক জায়গায় পুট করে দেয়। ও উত্তর পেয়ে যায়।
দেবাশীষ নির্মাল্য হাঁ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমি নিশ্চিন্তে লুচি খাচ্ছি। মিত্রা একটা লুচি অলরেডি তুলে সাঁটিয়ে দিয়েছে। আবার হাত বাড়াতে গেলো, আমি প্লেট সরিয়ে নিলাম।
দিবিনা কেনোরে দিবিনা কেনো। তোর একার নাকি।
মিত্রা তুই কালকে দামিনীর ওখান থেকে কোনো খাতা নিয়ে এসেছিলি।
মিত্রা লুচিটা দাঁত দিয়ে ছিঁড়তে ছিঁড়তে বললো হ্যাঁ।
দামিনী মাসি হো হো করে হেসে ফেললো।
এবার ধরতে পেরেছো দামিনী।
সত্যি দাদা আমিতো ভাবতেই পারছি না।
হ্যাঁরে, মাসি হাসি হাসি মুখ করে আমার দিকে তাকালো। দিদি ঠিক বলে তোর পেটে পেটে এতো বুদ্ধি।
আমি গম্ভীর হয়ে লুচি চিবোচ্ছি।
এবার তুমি বান্ধবীদের বলে দাও। কেনোনা সকাল বেলা তোমরা ওকে না বলে চলে গেছো। ওতো জানবেই তোমরা কোথায় গেছিলে। প্রথম অস্ত্র ও প্রয়োগ করেছে। তাতেই কাজ হয়ে গেলো, না হলে নির্মাল্যকে ও জবাই করতো। দেখলে এখানে ঢোকা তক নির্মাল্যকে ও একটা প্রশ্নও করে নি।
দামিনী মাসি বড়মার দিকে তাকালো।
কালকে ওরা যখন গেছিলো। আপনাকে বাক্সটা দেখালাম না।
হ্যাঁ।
ওর থেকে অনির একটা খাতা মিত্রা নিয়ে এসেছিলো। আসার সময় বললো মাসি আমি এসে তোমায় ফেরত দিয়ে যাবো। কালকে ওরা চলে আসতে মনটা খুব খারাপ লাগছিলো। আমি ইসলাম ছাদের ওপর মাদুর পেতে বসেছিলাম অনেক রাত পর্যন্ত।
আজ ও ঢুকেই আমাকে বললো কিগো সব একসঙ্গে, কোথায় দেখা হলো। আমি বললাম না, আমিতো এই এলাম। তারপরই ও বললো মিত্রা তোমায় খাতাটা দিয়ে এসেছে। আমি বললাম না এখন থাক পরে দিস। তারপরেই আপনাকে বললো কিগো দামিনী মাসির ঘরটা কেমন দেখলে।
ওরে বাবা তুই কি সাংঘাতিক রে তোকে তো কোনো কথা লোকানো যাবেনা। ছোটমা মাথায় হাত দিয়ে বলে উঠলো।
সবাই হো হো করে হাসছে।
বড়মা আমার মুখের দিকে হাসি হাসি মুখ নিয়ে তাকিয়ে। পরিতৃপ্ত মুখখানি আমার কৃতিত্বে খুশি। আমার মাথাটা টেনে বুকে জড়িয়ে ধরলো।
তখনই তোমায় বললাম বড়মা একটা ফোন করে দাও বুবুনকে।
আমি কি তোকে বারণ করেছিলাম।
আমি ছোটর দিকে তাকালাম এবার চা হোক।
ছোট কিল বাগিয়ে আমার মুখের কাছে এগিয়ে এলো, আমি বড়মার বুকের কাছে সরে গেলাম।
নীপা যাতো মা চাটা ঢেলে আন।
বুবুন।
বল।
কাল তোর আর ভজুর কীর্তি বড়মাকে বলেছি।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললো। হাসি আর থামে না। হাসতে হাসতে দামিনী মাসির চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে গেলো, ছোটমারও একি অবস্থা। ভজুরামও হাসে। আমার দিকে তাকিয়ে বললো, আমি বলিনি অনিদা।
হাসিটা একটু থামতে আমি গম্ভীর হয়ে তাকালাম মিত্রার দিকে।
তুই এটা ভালো করলি।
তুইতো কাল বৌদিকে বলেছিস। তারমানে সবাইকে বলে দিলি। তুই বললিনা আমি বললাম।
বুঝলি মিত্রা আমার ঘরটা ভালো করে খুঁজলে তুই ওরকম একটা ছেঁড়া নেগড়া এখনো পাবি।
তুমিও কি স্মৃতি করে রেখেছো।
নারে তোর দাদার একবার সখ হয়েছিলো।
আবার হাসি এবার আর থামানো যায় না।
টিনা মিলি অদিতি এসে ঘরে দাঁড়ালো। ওরা ঢুকে অবাক। এতো হাসির চোট কিসের।
কিগো তোমরা এতো হাসছো কেনো। টিনা বললো।
মিত্রা হাসতে হাসতে বললো কালকেরে সেই অনির জাঙ্গিয়া.....।

হ্যাঁ।
তারপর কৌপিন।
হ্যাঁ।
দাদারও শখ হয়েছিলো কৌপিন পরার। বড়মা বললো এখুনি।
ওরাও হাসতে শুরু করে দিলো। মিলি হাসতে হাসতে মাটিতে বসে পরলো।
অদিতি হাসতে হাসতে বললো সত্যি অনিদা তুমি জিনিষ একটা, বাঁধিয়ে রাখার মতো।
কলেজে দেখেছি, তুইতো তখন এতটা ধুর ছিলিনা। দেবা হাসতে হাসতে বললো।
দুর ধুরের কি আছে, চেয়েছি প্যাকেট করে দিয়ে দিয়েছে। পরে দেখেছি নাকি। তাই পেয়ে ভজুরামের কি আনন্দ। মাসির কাছে রাম কেলানি খেয়ে ভজুরাম তারপর বুঝতে পেরেছে। তার আগে আমার বোঝা হয়ে গেছে।
হাসির রেশ কিছুটা কমতে টিনা বললো, তুমি কি খাওয়াবে অনিদাকে।
কেনোরে আবার কি আনলি।
মিলি ব্যাগ থেকে খামটা বার করলো।
ডাক্তারদাদা খুলুক এখানে সিনিয়ার মোস্ট।
দে।
মিলি খামটা ডাক্তারদাদার হাতে দিলো।
কিরে অনি সাপ না ব্যাঙ। ডাক্তারদাদা আমার দিকে তাকালো।
সাপ গো সাপ। অদিতি বললো।
ডাক্তারদাদা চিঠিটা পরে আর হাসে।
কিগো ডাক্তার, কি লেখা আছে ওতে, তুমি হাসো কেনো নিজে নিজে। বড়মা বললো।
তোমার ছেলে কালকে আবার একজনকে জবাই করেছে। এবার তিনকোটি টাকা।
আঁ। বলো কি।
হ্যাঁ। এই দেখো তার কনসাইনমেন্ট।
মিত্রা উঠে দাঁড়িয়ে মিলিকে জড়িয়ে ধরলো। সত্যি।
সত্যি নাতে কি মিথ্যে।
সেই জন্য কালকে ও কাজের হিসাব দিচ্ছিলো ওদের। কি এবার তুমি ওর ওপর রাগ করবে।
বড়মা আমার থুতনি ধরে চুমু খেলো।
তুইতো চম্পকের মুখ একেবারে বন্ধ করে দিলি। দেবাশীষ বললো।
হ্যাঁ। এটাকি আমি নিয়ে এসেছি, ওরা তিনজনে নিয়ে এসেছে। সরকারী খাতায় ওরা রিসিভ করেছে।
সত্যি অনি তোর মাথাটা ফাটিয়ে দেখতে ইচ্ছে করছে।
আর তোমাকে মাথা ফাটাতে হবে না। অদিতি বললো।
চল এবার ওপরে গিয়ে একটু বসি। ছোটমা।
আমি ছোটমার দিকে তাকালাম।
ছোটমা আমার দিকে হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে। চোখের ভাষা, এই জন্য তোকে আমরা আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাই। এটা বুঝিস না।
তারপরেই কপট রাগ মুখে।
যাও চা পাঠাচ্ছি।
ক্রমশঃ

আমি উঠে দাঁড়ালাম মিত্রাকে ইশারায় ডাকলাম। মিত্রা আমার পেছন পেছন বারান্দায় এলো। মুখে হাসি হাসি ভাব। পরিতৃপ্ত মুখ। আমার সামনে দাঁড়ালো, চোখে জিজ্ঞাসা।
কাগজগুলো কোথায় ?
বড়মার ঘরে।
চল।
আমরা দুজনে বড়মার ঘরে এসে ঢুকলাম।
মিত্রা একটা ফাইল বার করে আমার হাতে দিলো।
এতে সব আছে।
এতো কি ?
অনেক দলিল আছে। এগুলো ওকে দেখাইনি। সবতো গেছে। এটুকু লুকিয়ে রেখেছিলাম।
তুই আগে ওই কাগজটা দে।
মিত্রা খামটা বার করলো। আমি হাতে নিয়ে ভালো করে দেখলাম। হাসলাম।
এই একটা মাত্র তুই পাকা কাজ করেছিস।
তাও অনেক কাঠ খর পুরিয়ে।
তুইতো নিজে মুখে কিছু বলিসনি আমাকে উদ্ধার করতে হচ্ছে।
বলার সময় দিয়েছিস, বিগত আট মাসে।
তাও ঠিক।
সার্টিফিকেটটা খামে ভরে ওর হাতে দিলাম।
ফাইলে রাখ। আর একটা কাজ করতে হবে।
বল।
কাল ব্যালেন্স চেক করেছিস।
হ্যাঁ।
লকারে কতো আছে।
সাড়ে চার কোটি।
চাবি কার কাছে।
সনাতন বাবুর কাছে।
আমাকে দেড়কটি টাকা দিতে হবে।
কেনো!
এই প্রথম মিত্রা বিস্ময় প্রকাশ করলো। ফিক করে হেসে ফেললাম।
হাসিসনা, বল।
বিয়ে করছি, যৌতুক দিবি না।
যাঃ, বল না। ওরকম করছিস কেনো।
অনিমেষদা চেয়েছে।
অনিমেষদা! তোকে ?
হ্যাঁ। কাল রাতে আমাকে আলাদা করে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললো। পার্টি ফান্ডে দিতে হবে। আমি তোকে আবার ফেরত দিয়ে দেবো।
মিত্রার মুখের রং বদলে গেলো। কেমন যেন মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো।
তুই একথা বললি কেনো। আমি কি এখনো তোর আপন হতে পারলাম না।
চোখ দুটো ছল ছল করে উঠলো।
আমার দিক থেকে আমিতো কোনো খামতি রাখি নি।
এই দেখো।
কিরে চা এখানে দেবো না টেবিলে রাখবো।
ছোটমা গেটের কাছে। মিত্রার দিকে তাকালো। ছোটমা বুঝতে পেরেছে কিছু একটা হয়েছে। এগিয়ে এলো।
কিরে মিত্রা চোখটা ছল ছল করছে কেনো।
না কিছু না।
নিশ্চই তোকে কিছু বলেছে, না।
না।
তাহলে।
এমনি।
দাঁড়া আমি দিদিকে ডাকছি।
না তুমি ডেকো না।
ছোটমা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
আমি ওর দিকে তাকালাম।
ঠিক আছে তোকে দিতে হবে না। আমি বেরিয়ে আসতে চাইলাম। ও আমার হাতটা ধরলো।
আমি তোকে দেবোনা বলেছি। 
 
 
 
 
 
 
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks