দেখি নাই ফিরে - (Part-67)

দেখছি প্রবীর কতটা গাছে উঠতে পারে। মই কেড়েনিতে কতোক্ষণ।
তোমরা কি আমায় এই জন্য এখানে নিয়ে এসেছিলে। প্রবীরদা বলে উঠলো।
অচিন্ত। বিধানদার গলাটা এই নিস্তব্ধ রাতেও গম গম করে উঠলো।
হ্যাঁ স্যার।
গাড়ি থেকে আমার কনফিডেন্সিয়াল এ্যাসিসেটেন্টকে একবার ডাকোতো।
ভদ্রলোক ছুটো বেরিয়ে গেলেন। তখন যে দুজন ভদ্রলোক এসেছিলেন তার মধ্যে ইনি একজন। এর নাম অচিন্ত তাহলে।
অনি।
আমি মাথা নীচু করে ফেললাম। আমায় ক্ষমা করুণ দাদা।
হ্যাঁ তুমি অন্যায় করে ফেলেছো। এর জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে। এই শাস্তি অনিমেষ দেবে না।
ঘরের সবাই চুপ। মিত্রা গেটের মুখে দাঁড়িয়ে, মুখটা ফ্যাকাশে।
ভদ্রলোক ছুটতে ছুটতে এলেন।
স্যার।
একবার চিফ সেক্রেটারিকে ফোনে ধরুন।
হ্যাঁ স্যার।
প্রবীর তুমি এখুনি একটা রিজাইন লেটার লেখো। তোমার প্যাডে। কালকে শোকোজ লেটারটা তোমার বাড়িতে পাঠিয়ে দেবো। পনেরোদিনের মধ্যে উত্তর দেবে।
স্যার চিফ সেক্রেটারি।
বিধানদা ফোনটা হাতে নিলেন।
হ্যাঁ। আমি বিধানবাবু বলছি। ........কালকে থেকে প্রবীরের দপ্তরটা সিএম দেখবেন, সেই ভাবে ব্যবস্থা করবেন। আমি সিএমকে কাল সকালে বলে দেবো।
ফনটা কেটে ভদ্রলোকের হাতে দিলেন।
সিপিকে একটা ফোন করো।
আচ্ছা স্যার।
ভদ্রলোক আবার ফোন করলেন। ঘরে পিন পরলে শব্দ হবে। সবাই বিধানদার মুখে হাঁ করে তাকিয়ে আছে।
রূপায়ণ।
বলুন দাদা।
সব নোট ডাউন করেছো।
হ্যাঁ দাদা।
দাও আমি প্রথমে সই করি। তারপর সবাইকে দিয়ে সই করাও। রাজনাথকে দিয়েও সই করিয়ে নাও।
স্যার সিপি ধরেছেন।
শুনুন।.....আপনি অনি ব্যানার্জীকে চেনেন......চেনেন বাঃ বেশ বেশ। কালকে থেকে ও কোথায় যাচ্ছে কি করছে অর্থাৎ ওর ওপর নজরদারি করতে হবে। ডেলি রিপোর্ট আমার চাই।
.....কি বললেন......হো হো হো করে হেসে উঠলেন। আমার দিকে তাকালেন।
কিরে তুই নাকি বাস অটো ট্যাক্সিতে ঘুরিস। এতো কোটি টাকার মালিক, একটা গাড়ি কিনতে পারিস না ?
ঘরের সবাই এই সিরিয়াস অবস্থাতেও মুখ টিপে হাসছে।
তাহলে কি হবে।.......চেষ্টা করলেও হবে না। আমার রিপোর্ট চাই।......কি বললেন ? আপনার সোর্সরা ওর কাছের লোক। সবাইকে ও হাত করে নিয়েছে। তাহলেতো খোল ননচে বদলে ফেলতে হয়।.....সেতো বুঝলাম ও কোনো অন্যায় কাজ করছেনা। আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনিও ওর প্রতি দুর্বল......ঠিক আছে কাল একবার দেখা করুন।
আমার দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে ফেললেন। কিরে একটা গাড়ি কেনার পয়সা নেই তোর।
ব্যাঙ্কের কাছে দেড়শো কোটি টাকা ঋণ আছে। মিত্রা আমাকে সেই অবস্থায় মালিক বানিয়েছে। গাড়ি কেনার পয়সাটা আমার একজন স্টাফের ছয় মাসের মাইনে।

শুনেছো প্রবীর অনির কথা। তুমি জনসাধারণের পয়সায় এসি গাড়ি চড়ছো। সিপি পর্যন্ত স্বীকার করে ফেললো ওর পেছনে লোক লাগিয়ে লাভ হবেনা। যাকে লাগাবে তাকেই ও চেনে। তোমায় যদি পার্টির তরফ থেকে দায়িত্ব দিই, তুমি পারবে ?
প্রবীরদা মাথা নীচু করে বসে রইলো।
তাহলে তুমি কি মন্ত্রীত্ব চালাচ্ছো। দশটা লোক নিয়ে কাজ করছো। ও একা তোমার ঘেঁটি ধরে নাড়িয়ে দিচ্ছে। সত্যি যদি ও মুখে যা বললো, সেই সব কীর্তি করে, সামলাতে পারবে।
ঘরের সবাই চুপ, কারুর মুখে কোনো কথা নেই।
বোবা হয়ে বসে থাকলে চলবেনা। আমি এতোক্ষণ ওর কথা মনদিয়ে শুনেছি। কোনো প্রতিবাদ করিনি। কোনো উত্তর দিই নি। কেনো জানো। ওপর তলায় থাকি নিচের তলার সুবিধা অসুবিধার দায়িত্ব তোমাদের ওপর। সেটাও ঠিক মতো করতে পারোনা।
মিঃ মুখার্জী ঘরের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়ালেন।
আমাকে দেখেই হাসতে হাসতে ঘরে ঢুকলেন। পেছনে কার্বাইন হাতে তিনজন। চিনতে পারলাম কালকে যারা গেছিলো তাদের মধ্যে তিনজন।
আপনি।
আমি মিঃ মুখার্জী......।
থাক থাক পরিচয় দিতে হবেনা। ওয়ারেন্ট এনেছেন।
হ্যাঁ স্যার।
রূপায়ণ।
হ্যাঁ দাদা, সই করিয়ে নিচ্ছি।
রাজনাথ বাবুর দিকে একটা খাতা এগিয়ে দিলেন। সই করিয়ে নিলেন।
একবার ওয়ারেন্টটা দেখাতে পারেন।
অবশ্যই স্যার।
বিধানদা মন দিয়ে ওয়ারেন্টটা পরলেন। ভালোই লিখেছেন। দু’জনকেই সঙ্গে নেবেন নাকি।
হ্যাঁ স্যার।
যান নিয়ে যান।
রাজনাথ বাবুর দিকে একবার তাকালেন। মুখার্জী বাবু।
হ্যাঁ স্যার।
আপনার কাজে বাধা দেবোনা। একটু ভদ্রভাবে নিয়ে যান।
অবশ্যই স্যার।
মুখার্জী বাবু আমার দিকে তাকালেন। ইশারায় বাইরে আসতে বললেন।
আমি ওনার পেছন পেছন এগিয়ে গেলাম।
অনিদা বিট হবে। একজন বলে উঠলো।
আমি দাঁতে দাঁত চেপে বললাম। একটা স্পট পরবেনা, পনেরোদিন বিছানা ছেড়ে উঠতে পারবেনা।
অনিদা আপনার জিনিষ। আর একজন।
খামটা হাত থেকে নিয়ে নিলাম। শিল করা।
মিঃ মুখার্জী হাতটা এগিয়ে দিলেন। আমি হাতে হাত রাখলাম। আমাদের পাশ দিয়ে দু’জনকে ওরা নিয়ে চলে গেলো। ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে সকলে অবাক হয়ে দেখছে। পরে দেখা হবে। নিজে আগে বাঁচি।
হাসলাম। ঠিক আছে।
আমি আবার খামটা নিয়ে ঢুকলাম। ছোটমা বড়মা মিত্রা ঘরের মধ্যে বিধানদার সঙ্গে কথা বলছে। আমি সোজা গিয়ে আলমাড়িটা খুললাম। খামটা তুলে রাখলাম।

কিরে ওটা আবার কি। বিধানদা বললেন।
এটা আর একটা সম্পদ।
কাররে। অনিমেষদা এগিয়ে এলেন।
একটা সত্যি কথা বলবি।
বলো।
মিঃ মুখার্জী একজন সরকারী অফিসার। তুই তাকে যা বলছিস, সে করছে। কি অবলিগেশনে তাকে বেঁধে রেখেছিস ?
খুব প্রয়োজন জানার।
অনুপদা রূপায়ণদা হো হো করে হেসে ফেললো। প্রবীরদা গুম হয়ে বসে আছে।
তুই আমাকে আর যন্ত্রণা দিস না।
আবার বলি আমি নিজে থেকে দেবোনা। কেউ যদি আমার ক্ষমতার যাচাই করে, তখন তাকে দেখাই। আমি অন্যায় করলে আমাকেও শাস্তি দেবে।
মিত্রা। আবার গম গম করে উঠলো বিধানদার গলাটা।
মিত্রা পাশে দাঁড়িয়েও হকচকিয়ে গেলো। আঁ।
অনি একটা অন্যায় করেছে। ওর শাস্তি কি হতে পারে।
বুবুন কোনো অন্যায় করেনিতো।
বিধানদা ওর মাথায় হাত রেখে হেসে ফেললো।
তোর এতোটা বিশ্বাস ওর প্রতি।
অবশ্যই। বুবুন যা করে সবার কাছে তা স্বীকার করে।
ঠিক আছে তোমরা এখন যাও। আমি অনিমেষ ওর সঙ্গে একটু কথা বলবো।
বিধানদার কথা বলার ঢঙে কেউ আর ঘরে থাকলোনা। ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। বিধানদা নিজে গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করলেন।

খেয়ে দেয়ে যখন শুতে এলাম দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম। দুটো কুড়ি বাজে। মাথার ভেতরটা একেবারে শূন্য। মনে হচ্ছে যেনো থার্মোকলের মতো হাল্কা। মিত্রা এক ফাঁকে এসে চাদরটা চেঞ্জ করে দিয়ে গেছে। ঘরের বড়ো লাইটটা নিবিয়ে ছোটো লাইটটা জালালাম। ঘরটা এখন আধো অন্ধকার। দরজাটা ভেজিয়ে বিছানায় টান টান হয়ে শুয়ে পরলাম। আঃ কি আরাম। সারাদিন যা হলো আর চিন্তা করতে ভালো লাগছেনা। খালি মনে হচ্ছে মিত্রা কখন আসবে। ওকে জাপ্টে ধরে শুয়ে ওর শরীরের ওমে একটু স্নান করবো। ওকে আজকে চটকা চটকি করে একেবারে আটার লেচি বানিয়ে দেবো। ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি জানি না। বড়ামার ডাকে ঘুম ভাঙলো। আধোচোখে দেখলাম বড়মার স্নেহের হাত আমার কপালে। চারিদিকে আলো থৈ থৈ করছে। আমার গায়ে একটা ধবধবে সাদা শাল চাপা দেওয়া।
কিরে উঠবিনা। অনেক বেলা হলো।
তাড়াহুড়ো করে উঠে বসলাম।
থাক থাক হুড়ো হুড়ি করে উঠে বসার দরকার নেই।
তুমি! মিত্রা কোথায় ?
সবাই অফিসে চলে গেছে।
কটা বাজে।
এগারোটা বেজে গেছে।
খেয়েছে। আগে ডাকোনি কেনো।
অঘোরে ঘুমোচ্ছিলি। দুদিন যা গেলো তোর শরীরের ওপর দিয়ে, মায়া হচ্ছিলো ডাকতে।
হাই তুলতে তুলতে বললাম। ছোটমা কোথায় ?
হ্যাঁ বাবু উঠে বসেছেন। ছোটমা ফোনে কথা বলতে বলতে ঘরে ঢুকলো।
নে তোর সোহাগী ফোন করেছে।
সেটা আবার কে গো।
কথাবল, বুঝতে পারবি।
আমি ফোনটা হাতে নিয়ে হ্যালো বললাম।
মিত্রা খিল খিল করে হেসে উঠলো।
ও তুই। তোর নাম কবে থেকে সোহাগী হলো।
ছোটমা, কাল রাত থেকে নতুন নামে ডাকতে শুরু করেছে।
বেশ বেশ। তাহলে আমি কি।
ছোটমাকে জিজ্ঞাসা কর।
অফিসে কখন গেলি।
দু’ঘন্টা হয়ে গেছে।
বাজে কথা।
ছোটমাকে জিজ্ঞাসা কর।
আমি ছোটমার দিকে তাকালাম। ছোটমা হাসছে।
তুই কখন আসছিস।
ঠিক নেই।
তোর সঙ্গেতো কথাই বলা হলোনা।
সারা জীবনেও শেষ হবেনা।
ছোটমা ফিক করে হেসে ফেললো।
তুমি হাসলে কেনো।
তোর কথা শুনে।
শুনছিস ছোটমার কথা।
ঠিক বলেছে।
মন দিয়ে অফিস কর। আমি আর এক চোট ঘুমোই।
কখন আসছিস বলনা।
টিনারা গেছে।
আমার ঘরেই বসে আছে। তোর গলা শুনতে পাচ্ছে।
ভালো। দেখি সময় পেলে যাবো। না হলে যাবো না।

এবার কাকে এনকাউন্টার করবি।
এবার টার্গেট তুই।
মিত্রা খিল খিল করে হসে ফেললো।
আমি ফোনটা ছোটমার হাতে চালান করে দিয়ে বাখরুমে গেলাম। যেতে যেতে শুনতে পেলাম উনি এখন বাথরুমে ঢুকছেন। ভিআইপি বলে কথা। সব বড় বড় ব্যাপার। আমরা সব চুনোপুঁটি বুঝলি।
আমি বাথরুমে ঢোকার আগে ছোটমা বড়মার মুখটা খালি লক্ষ করলাম। পরিতৃপ্ত মুখ। মুখে কোনো টোনসনের লেশ মাত্র নেই।
বাথরুম থেকে একেবারে স্নানসেরে বেরোলাম। দেখলাম বিছানার ওপর আমার প্যান্ট গেঞ্জি ড্রয়ার রাখা। বুঝলাম আজ এইটা পরে বেরোতে হবে। দেখেই মনে হচ্ছে একেবারে আনকোরা। আগে এই প্যান্ট গেঞ্জি পরিনি। দারুন দেখতে গেঞ্জিটা। ফুলহাতা। জিন্সটাও দুর্দান্ত। কালকে বিধানদার কথাটা মনে পরে গেলো। তুই এখনো একটা গাড়ি কিনতে পারিস নি। নিজে নিজেই হেসে ফেললাম।
বাথরুম থেকে বেরোলাম।
যাক তাহলে হয়েছে। ছোটমা গেটের সামনে।
আমি হাসলাম।
সত্যি তুই মেয়েছেলে। তাড়াতাড়ি নিচে আয় তোর জন্য বসে আছি।
আমি প্যান্ট জামা পরে নিচে এলাম। মিস্ত্রীরা রং করছে। বাড়ি ফাঁকা কেউ নেই।
বসার ঘরে ঢুকে খাবার টেবিলে বসলাম।
কিগো বড়মা বাড়ি একেবারে শুনশান।
তোর মতো নাকি। সবারই কম বেশি কাজ আছে। আবার ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ভুলভাল বকবি। মনে রাখিস কাজের হিসাব নেবো। ছোটমা বললো।
চুপ করে গেলাম। নিজে নিজে ভাবলাম। তাহলে কালকে কি আমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বহুত ভুলভাল বকেছি। হবে হয়তো।
আজ কি তোমরা দু’জন।
কেনো, তুই আছিস।
আমিতো এখুনি বেরিয়ে যাবো।
কেনো, কোথায় রাজকার্য আছে শুনি।
আছে আছে সব বলা যায়।
ছোটমা লুচি বাটি চড়চড়ি নিয়ে এলো। তিনটে প্লেট। বুঝলাম আমার দুপাশে দুজন বসবে। কপালে আজ শনি আছে।
কিগো বড়মা আজ নতুন মেনু।
তোমার সোহাগী নিজে হাতে করেছেন। সকলে খেয়েছে। আমরা তিনজন এখন বাকি রয়েছি।



যাক সোহাগীর তাহলে সংসারে মতি গতি হয়েছে বলো।
বড়মা এসে একপাশে বসলো।
কেনো তোর মতি গতি নেই। বড়মা বললেন।
শোন বসার আগে বলে দিচ্ছি, উঠবো উঠবো করবিনা। ছোটমা কথাটা বলে আমার আর এক পাশে বসলো।
ছোট ফোনগুলো বন্ধ করে দে।
ছোটমা মোবাইল দুটো নিয়ে টপাটপ স্যুইচ অফ করলো।
কিগো তোমরা দুজনে পেটাপিটি করবে নাকি।
দাদা যখন পিটেছে আমরা পিটলো দোষ হবেনা।
আগে পেটে দিই তারপর পিঠে দিও।
নে শুরু কর শুরু কর।
খাওয়া শুরু করলাম। তিনজনে খাচ্ছি।
এ বাড়ি রং করার বুদ্ধিটা তোকে কে দিলো। বড়মা মুখ খুললো।
কেনো ? অনেকদিন পরে আছে তাই ভাবলাম।
এখন কেনো। ছোটমা ওপাশ থেকে চেপে ধরলো।
একিগো এতো শাঁড়াসি আক্রমন। মনে হচ্ছে সবে মাত্র ভূমিকা হচ্ছে। তারপরে উপন্যাসে ঢুকবে।
দেখছো দিদি দেখছো। কেমন তেঁয়েটে। বদমাশ।
বড়মা তুমি ছোটমাকে সামলাও। আমি কিন্তু উঠে পালাবো।
তোর রং করার উদ্দেশ্যটা বল আগে।
এমনি, কোনো উদ্দেশ্য নেই।
শুক্রবার রবিবার কি প্রোগ্রাম ঠিক করেছিস। বড়মা হাসতে হাসতে বললো।
ও বাবা! তোমরাতো সবাই বেশ জম্পেশ জিনিষ দেখছি!
তোর পাল্লায় পরে হয়ে যাচ্ছি। এরকমতো ছিলাম না। এখন দেখছি তোর সঙ্গে থাকতে গেলে এরকম হতে হবে। না হলে বাঁচবো না।
বল বল দিদির কথার উত্তর দে।
এই উত্তরটা পেয়ে গেলেই ছুটিতো।
এতো সহজে তোকে ছাড়বো ভেবেছিস। আজ তোকে একা পেয়েছি।
দেখো বড়মা ছোটমা গন্ডগোল পাকাচ্ছে।
আচ্ছা আগে তুই প্রথম প্রশ্নের উত্তরটা দে।
মিত্রার সঙ্গে রেজিস্ট্রি করবো। রবিবার কয়েকজনকে ডেকে খাওয়াবার ইচ্ছে আছে।
আগে বলিসনি কেনো।
ঠিক সময়ে বলতাম।
কদিন বাকি আছে।
এখনো চারদিন বাকি আছে।
তোর দাদাকে বলেছিস।
বলিনি, আজ বলতাম।
তোর এই প্ল্যানটা কতদিন আগে থেকে ঠিক করেছিস।
যেদিন এখান থেকে দেশের বাড়ি গেলাম সেদিন।
দেখছো দিদি দেখছো! তোমায় কালকেই বলেছিলাম, আমি যেনো সেরকম একটা খবর হাওয়ায় ভাসতে শুনলাম। কজন জানে তোর মনের কথা।
কেউ জানেনা। দামিনী মাসি ইসলামভাই গেইজ করতে পারে। তবে আমি এখনো কিছু বলিনি।
তুই সব একা একা করবি আমরা একটু আনন্দ করবোনা। বড়মা বললো।
এইতো তুমি আবার শুরু করেদিলে।
তুই করলে দোষ নেই, দিদি করলেই দোষ।
দাও দাও লুচি দাও। সব হজম হয়ে গেলো।
ছোটমা গোটা ছয়েক লুচি আমার পাতে দিলো। খানিকটা বাটি চড়চড়ি।
তোমাদের আছে তো।
তোকে জানতে হবেনা। নিজের খেঁটনটা ঠিক মতো দাও।
আমি হো হো করে হাসছি।
হ্যাঁরে কালকে যে তুই এসব করলি। তোর কোনো ক্ষতি হবেনা।
এইসব কথা রবিবার পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করবেনা। সব রবিবারের পর।
তোর কাকাকে আসতে বলবিনা।
আমি কাউকে বলতে চাইনা। আসবেও গোটা পঞ্চাশেক লোকজন। মনে রাখবে রেজিস্ট্রি করছি বাধ্য হয়ে। মিত্রার সেফটির জন্য।
কেনো! ছোটমা জিজ্ঞাসা করলো।
কয়েকদিন পর আইনের প্রচুর জটিলতা আসবে, তার থেকে বাঁচার জন্য।
আবার ঝামেলা! বড়মা বললো।
ঝামেলা ছাড়া পৃথিবী অচল। তুমি যেমন সংসার করছো। আমাকেও সংসারের মতো ঝামেলা নিয়ে চলতে হবে। না হলে বাঁচবোনা।
সে কিরে!
হ্যাঁগো ছোটমা। আমি না চাইলেও ঝামেলা হবে। প্রত্যেকে তার স্বার্থ দেখবে। আমি তার স্বার্থে বাধা দেবো। ঝামেলা। নাহলে বোঝোনা ডাক্তারকে এতো শিক্ষা দিলাম, তাও সে রাজনাথকে দিয়ে বাইরে থেকে লোক আনিয়ে, আমাদের মারতে চাইলো। কতো বড়ো সাহস বলোতো।
আমি অবাক হচ্ছি তুই জানতে পারলি কি করে। বড়মা বললো।
একটা ছোট্ট ব্যাপারে সন্দেহ হলো। অনিমেষদার একটা কথা। ব্যাশ ঘুঁটি গুলো একটু নাড়াচাড়া করতে শুরু করলাম। সব পরিষ্কার হয়ে গেলো। দেখলেনা প্রবীরদার অবস্থা। এতো ঘটনার পরও সে রাজনাথকে বাঁচাতে চায়। কেনো ?
কেনো ?
টাকা টাকা। কোটি কোটি টাকা। দামিনী মাসির তল্লাট আর টাউনশিপ। তবে প্রবীরদা একলা খায় না। পার্টিফান্ডে দেয় লোক লস্কর আছে। বাড়িটা দেখলে তোমার মাথা খারাপ হয়ে যাবে। একবার মন্ত্রী হতে পারলে সরাজীবন গুছিয়ে নেবে।

বিধানদা তোকে কালকে কি বললো ?
এটা ছোটমা তোমায় বলা যাবেনা। বলতে পারো ভেরি কনফিডেনসিয়াল।
ঠিক আছে জানতে চাইবো না।
তুই যে অনিমেষের বাড়িতে যাস, সেটাতো আগে কখনো বলিসনি।
এটা একটা বলার বিষয় হলো, তুমি বলো। বড়মার দিকে তাকালাম।
ওরে বাবারে অনেক বেলা হয়ে গেলো। আর নয় আমাকে এবার বেড়তে হবে।
আর একটু। বড়মা মুখটা কাঁচুমাচু করে বললো।
না। রাতে তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো।
ঠিক বলছিস।
বোললামতো কোনো কাজে ফেঁসে না গলে অবশ্যই আসবো।
খাওয়া শেষ করে বেসিনে মুখটা ধুলাম। তারপর দুজনকে একটা পেন্নাম ঠুকলাম।
কিরে এটা আবার কেনো।
নতুন জামাকাপর পরেছি বলে মনে হচ্ছে। তাই।
বড়মা থুতনিটা ধরে চুমু খেলো। ছোটমা কপালে।
গেটের বাইরে এসে মোবাইলটা চালু করলাম। অনেক ম্যাসেজ অনেক মিস কল। লাস্ট মিসকলটা দেখলাম ঝিমলির। বেচারা। বহুদিন খোঁজ খবর নিইনি। কি খেয়াল হতে ভাবলাম ওর বাড়িতেই চলে যাই। কাছাকাছিইতো থাকে। একবার ভাবলাম ফোন করি। তারপর ভাবলাম না ফোন করে লাভ নেই। একটা সারপ্রাইজ দিই ওকে।
হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম লেক গার্ডেন্স। মোবাইলের নোট বুত থেকে এ্যাড্রেসটা দেখে নিলাম। খুজে বার করে যখন ওর বাড়ির সামনে এলাম, দেখে অবাক হয়ে গেলাম। এতো খুব নামী দামী লোকেদের ফ্ল্যাট বাড়ি। গেটে একজন সিকিউরিটি গার্ড বসে আছে। তাকে বললাম। তিনি একটি খাতা বার করে আমার সামনে দিলেন তাতে নাম ঠিকানা লিখতেই ছেলেটি আমাকে ভালো করে দেখতে লাগলো।
স্যার আপনি সেই অনি ব্যানার্জী।
কে বলোতো।
কাগজে লেখেন।
না।
সরি স্যার।
কোন তলায় হবে।
স্যার লিফ্টে উঠে সাত নম্বর বোতামটা টিপবেন। লিফ্ট থেকে বেরিয়ে বাঁদিকের ফ্ল্যাটটা।
সোজা ভেতরে চলে এসে লিফ্টের সামনে দাঁড়ালাম। দরজা খুলতে ভেতরে ঢুকলাম। সিকুরিটি ছেলেটার কথা মতো সাত নম্বর বোতাম টিপলাম। ছেলেটি ঠিক ঠিক বলেছে। নেমপ্লেটে চারজনের নাম। ঝিমলির নামটাও আছে।
বেলে হাত রাখলাম। তিতির পাখীর ডাকের মতো বেলটা তি তি তি করে বজে উঠলো। দরজা খুললো। একজন তরুণী আমার সামনে। প্রথম ঝটকাতেই দেখে মনে হবে তরুণী বিদেশী। হাইট আমার মতো প্রায় পাঁচফুট আট কিংবা নয় ইঞ্চি। পরনে একটা টাইট গেঞ্জি শর্ট সাইজ জিনসের প্যান্ট। চুলগুলো লাল। দেখলে মনে হয় রং করা। কিন্তু ভালো করে দেখলে মনে হবে না চুলগুলো কটা কটা। সেক্স যেন শরীর থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পরছে। ভলাপচুয়াস সেক্সি গার্ল বলতে যা বোঝায় ঠিক তা নয়। তবে সেক্স এ্যাপিলিং মন কারার মতো। তরুণী নিশ্চই মডেলিং করেন। তরুণীর মুখের সঙ্গে ঝিমলির মুখের আদলের সামান্য মিল আছে। তবে তরুণী ভীষণ সপ্রতিভ। আমি বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারলামনা মাথা নীচু করলাম।
বুঝতে পারছি, তরুণী আমার হ্যাংলার মতো তাকিয়ে থাকাকে বেশ তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন।
কাকে চান।
কোকিলের মতো কুহু কুহু স্বরে তরুণী আমাকে প্রশ্ন করলেন।
আমি আবার তরুণীর মুখের দিকে সড়াসড়ি তাকালাম। ঠোঁটের কোনায় সামান্য তির্যক হাঁসি। কি আমার রূপ যৌবন তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করা শেষ হয়েছে ?
আমি অনি, অনি ব্যানার্জী, ঝিমলি আছে।
মুহূর্তের মধ্যে তরুণীর মুখের রং বদলে গেলো। চোখে মুখে একরাশ বিষ্ময়। আমি বোকা বোকা চোখে তরুণীর দিকে তাকিয়ে। উনি আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পরে আমাকে জাপ্টে ধরে আমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে উম উম করে গোটা পাঁচেক চুমু খেয়ে নিলেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটনাটা ঘটে গেলো। আমি ভীষণ ভীষণ অপ্রস্তুত। আরো বেশি সেকি হয়ে গেলাম।
এবার তরুণী অত্যাধিক উচ্ছ্বল, তুমি অনিদা আগে বলবেতো। আমি রিমঝিম। এই পিঙ্কি চুর্ণী তিয়া দেখবি আয় কে এসেছে। এসো এসো ভেতরে এসো।
রিমিঝিমের চেঁচামিচিতে অপরজিটের ফ্ল্যাটের দরজা খুলে গেলো। একজন মাঝ বয়সী ভদ্রলোক গেটের মুখে দাঁড়িয়ে নাইট গাউন পরা।
মনোময় কাকু দেখো কে এসেছে। চিনতে পারো ?
এই রকম একটা সিচুয়েসন ঘটতে পারে তার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। ঘরের ভেতর থেকে তিনজন তরুণী বেড়িয়ে এলো। কাকে ছেড়ে কাকে দেখবো। সবাই ঝিমলির দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ সংস্করণ। মনোময় কাকু এগিয়ে এলেন।
কেরে ঝিমলি।
দূর তোমরা যে কি কর্পোরেট হাউসের কর্ণধার হয়েছো বুঝিনা বাপু। খবর টবর কিছু রাখো না। কালকের কাগজটা কি ভালো করে দেখো নি ?
অনি ব্যানার্জী!
ইয়েস দিস গাই ইজ অনি ব্যানার্জী। আমাদের অনিদা।
ধ্যুস এইটুকু একটা পুঁচকে ছেলে।
হ্যাঁ কাকু হ্যাঁ। পুঁচকে ছেলে। এখন খবরের কাগজে একটা নামই লোকে খোঁজে, অনি ব্যানার্জী। আমাদের মতো মেয়েদের কাছে নামটা হার্টথ্রব। দিদিভাই যেদিন প্রথম এসে বলেছিলো। আমরাও পাত্তা দিই নি।
ভদ্রলোক এগিয়ে এসে ডান হাতটা এগিয়ে দিলেন। আমি হাতে হাত রাখলাম।
ভাই, রিমঝিম যা বললো তা সত্যি ?
বলতে পারবোনা। বাবা মা এই নামটা রেখেছিলেন।
ভদ্রলোক হো হো করে হেসে ফেললেন।
তুমিতো ভাই বেশ মিষ্টি করে কথা বলতে পারো।
হাসলাম।

এসো এসো ভেতরে এসো। কাকু তুমি পরে এসো।
আচ্ছা।
তিনটি মেয়েই আমাকে চোখ দিয়ে ধর্ষণ করে চলেছে। আমার ভেতরে চরম অস্বস্তি চোরাস্রোতের মতো খেলা করে চলেছে।
আমি ভেতরে এলাম। দেড় হাজার স্কয়ার ফুটের বিশাল ফ্ল্যাট। আমার পা ডেবে গেলো। পুরু কার্পেটে মোরা সমস্ত ফ্ল্যাটটা। আমার স্থান হলো ড্রইংরুমে। বিশাল ড্রইংরুম ঝকঝকে তক তকে। একবারে গুছিয়ে সাজানো। অধুনিকতার স্পর্শ প্রতিটি ইঞ্চিতে। এখনো রিমঝিমের তিন বন্ধু আমাকে গিলে খাচ্ছে।
তুমি কোথায় ?
রিমঝিম ভেতরের ঘর থেকে কানে মোবাইল লাগিয়ে কল কল করতে করতে বেরিয়ে এলো।
অনিদা এসেছে।......বিশ্বাস হচ্ছে না.......কথা বলবে.......ধরো।
রিমঝিম আমার হাতে মোবাইলটা দিলো।
আমি হ্যালো বলতেই ঝিমলি বলে উঠলো।
সত্যি তুমি এসেছো।
হ্যাঁ। কেনো বিশ্বাস হচ্ছেনা।
এটা কি সারপ্রাইজ।
না। হঠাৎ কি মনে হলো চলে এলাম।
একটু বোসো আমি এক্ষুনি যাচ্ছি।
আমি বেশিক্ষণ থাকতে পারবোনা। অফিসে যেতে হবে।
প্লিজ।
দেরি কোরো না।
ফোনটা রিমঝিমের হাতে দিলাম।
তোরা কি রে অনিদার সঙ্গে আলাপ করতে পারিস নি।
আমি রিমঝিমকে দেখছিলাম আর ভাবছিলাম। এরা কতো আধুনিক। আমাদের এখনো আপনি থেকে তুমিতে যেতে বছর খানেক সময় লাগে। আর এরা! প্রথম থেকেই তুমি। না, আমার এতে কোনো আপত্তি নেই। তবু নিজেকে একই আসনে বসাতে পারছিনা। এখন ইন্টারনেটের যুগ। প্রথমে কিছুক্ষণ চ্যাটে কথা হবে। তারপর কথা বলতে বলতে সেক্স এসে যাবে। তারপর বলবে আর সময় নেই ওয়েব ক্যাম ফিট করে তুমি তোমার শরীরটা দেখাও।
দিদিভাই ঠিক কথা বলে। তুমি থেকে থেকেই কোথায় যেনো হারিয়ে যাও।
রিমঝিমের কথায় ফিক করে হেসে ফেললাম।
তুমি বসবে না, কতোক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে।
আমি চারিদিকে চোখ বোলাচ্ছি। মাঝে মাঝে তিনজনের চোখে চোখ পড়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারছি এখনো বিস্ময়ের ঘোর ওদের কাটে নি।
এটা পিঙ্কি। এ হচ্ছে চূর্ণি আর ইনি হচ্ছেন না থাক তোমায় পরে বলবো তিয়া।
তিয়া মেয়েটি রিমঝিমের গালটা টিপে বললো যাঃ।
সবাই আমার সঙ্গে হাতে হাত রাখলো। কেউ বুকের ওপর হাত রাখলো না। আমি বসলাম। জিজ্ঞাসা করলাম, তোমরা কে কি করো। একে একে সবাই উত্তর দিলো। এবছরে উচ্চমাধ্যমিক দেবো। সবাই মহাদেবী বিড়লা গার্লস কলেজের ছাত্রী। অবাক হলাম কেউ সাইন্স নিয়ে পরছে না। সবাই কমার্সের স্টুডেন্ট, ভবিষ্যতে এমবিএ পড়ার ইচ্ছে। এখন পাশাপাশি মডেলিংটা শিখছে।
আমার চিন্তা ভাবনাটা যে ঠিক, আবার নিজেকে নিজে ধন্যবাদ জানালাম।
বেল বেজে উঠলো। রিমঝিম গিয়ে দরজা খুললো। ঝমলি ঘরের মধ্যে পা রাখলো। হাতের প্যাকেট দেখেই বোঝা যাচ্ছে মার্কেটিং-এ গেছিলো। আমাকে দেখেই মিষ্টি করে হাসলো। আজ ঝিমলির পরণে একটা কালো ঘাঘড়া ওপরে হলুদ রং-এর টপ। দারুণ লাগছে ওকে দেখতে। সমস্ত শরীর থেকে সুন্দরীর সৌন্দর্য চুঁইয়ে চুঁইয়ে পরছে। কোনপ্রকারে সেন্টার টেবিলে জিনিষগুলো রেখে আমার পাশে বসে আমার দু’গালে নিজের গাল ঘোষলো।
তাহলে তুমি আমাদের বাড়িতে এলে ?
স্ব-শরীরে।
তোমার সঙ্গে কথায় পারবোনা।
কিরে অনিদাকে জল টল দিয়েছিস।
তুমি না এলে দিই কি করে।
খালি কল কল করছিস অনিদার সঙ্গে।
এইতো সবে শুরু করেছিলাম তুমি এসে হাজির।
এরা আমাকে কি প্যাক দিতো জানো। আমি নাকি সব বানিয়ে বানিয়ে বলি। শোনো, মাকে ফোন করেছিলাম এখুনি আসছে তোমার এখন যাওয়া হবেনা।
মাকে ফোন করতে গেলে কেনো। আবার নয় একদিন আসতাম।
তুমি আসছো। তোমাকে ফোন করেই পাওয়া যায়না। আচ্ছা পর্শুদিন কি হয়েছিলো বলোতো।
কেনো।
তোমার ম্যাসেজ পেয়ে আমার আত্মারাম খাঁচা। ফোন করি, স্যুইচ অফ। সকালে ফোন করলাম মিত্রাদি ধরলো। বললো তুমি অসুস্থ। তারপর মিনিমাম দশবার ফোন করেছি। মা ফোন করে অমিতাভদার সঙ্গে কথা বললেন। তোমার কি হয়েছিলো বলোতো ?
কিছুই না।
সকালে কাগজ দেখে চোখ ছানাবড়া। সত্যি তুমি ওখানে গেছিলে।
না বানিয়ে বানিয়ে লিখেদিলাম।
ভাইজ্যাকে তোমায় দেখেছি। তুমি বানিয়ে লেখার পার্টি নও। আচ্ছা অনিদা কেউ নিউজটা পেলোনা তুমি পেলে কি করে।
পেলাম।
বুঝেছি। তুমি মচকাবে ভাঙবেনা।
আমি হাসছি।

দেখছিস ঝিমি দেখছিস, কিরকম দুষ্টুমি হাসি হাসছে। যা বলবি যে কথা বলবি খালি হেসে যাবে।
আমি ঝিমলির মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। ওর মুখে পরিতৃপ্তির ছাপ। দেখেছিস তোদের বলেছিলাম। এখন দেখ আমি সত্যি না মিথ্যে।
এই টিনএজার মেয়ে গুলোর সঙ্গে তোমার আলাপ হয়েছে।
আলাপ হয়নি শুধু নাম জেনেছি।
দেখেছিস দেখ কিরকম টেরা টেরা উত্তর। সোজা উত্তর তোরা জীবনেও পাবি না।
সত্যি দিদিভাই মনিময় কাকু জিজ্ঞাসা করলো আপনি অনি ব্যানার্জী কিনা, অনিদা উত্তর দিলো বলতে পারবোনা বাবা মা আমার ওই নামটা রেখেছিলো।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললো।
কি খাবে হট না কোল্ড।
হটতো খাচ্ছিই চারিদিকে তাকিয়ে একবার চোখ বুলিয়ে মুচকি হাসলাম। কোল্ড নিয়ে এসো।
শয়তান। ঝিমলি নাচতে নাচতে উঠে চলে গেলো।
তারপর রিমঝিম ম্যাডাম আমি আসতে তোমাদের গল্পের আসরটা নষ্ট হয়ে গেলো।
সেকিগো বরং আরো জমাট হলো।
দুর তোমার বন্ধুরা সব বোবা, কথাই বলেনা।
এটা অফেন্সিভ কথা। পিঙ্কি বলে উঠলো।
তাহলে ডিফেন্সিভ কি হবে।
আবার সবাই মিষ্টি করে হাসলো।
তিয়া ম্যাডাম।
তিয়া ডাগর চোখে আমার দিকে তাকালো। এ চোখের চাহুনিতে যেকোনো ছেলের হার্টবিট থেমে যেতে পারে।
তখন রিমঝিম একটা কথা বলতে গিয়ে থেমে গেলো। সেটা কিগো।
তিয়া হাসলো। আমি ওর বেস্ট ফ্রেন্ড।
পিঙ্কি আর চুর্নী গুড এবং বেটার তাইতো।
না না আমরা সবাই সমান চুর্ণী বলে উঠলো।
নিশ্চই আনিদা তোদের পেছনে লাগছে।
ঝিমলি কোল্ড ড্রিংকসের ট্রে নিয়ে ঘরে ঢুকলো।
আমি আসতে করে বললাম পেছনে না সামনে।
ঝিমলি দুষ্টু হাসি হাসলো।
বেলটা আবার তি তি করে ডেকে উঠলো। রিমঝিম এগিয়ে গেলো। দরজা খুলতেই যে ভদ্রমহিলা ঘরে ঢুকলেন তিনি ঝিমলির মা না হয়ে অন্যকিছু হতেই পারেন না। তিনজনকে পাশা পাশি দাঁড় করিয়ে দিলে পিঠোপিঠি তিন বলে মনে হবে। এখন বুঝতে পারছি এই বয়সে উনি তড় তড় করে এতোটা ওপরে কি করে উঠে গেছেন। দেহের বাঁধুনিটা এখনো তিরিশ বত্রিশ বয়সের তন্বী যুবতীর মতো ধরে রেখেছেন। আমি উঠে দাঁড়ালাম। ঝিমলি পরিচয় করাবার আগেই, আমি পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম।
থাক থাক ঝিমলির মুখ থেকে তোমার কথা শুনে শুনে তোমাকে দেখা হয়ে গেছে।
হাসলাম।
তুমিতো পশ্চিমবাংলায় ঝড় তুলে দিয়েছো।
না না আপনি বাড়িয়ে বলছেন।
একটুও না।
উনি আমার পাশে এসে বসলেন। কিরে অনিকে মিষ্টি দিয়েছিস।
তুমি দাও। আমরা একটু ঠান্ডা খাইয়েছি।
না না আমি এখন কিছু খাবোনা। বাড়ি থেকে একপেট খেয়ে বেড়িয়েছি।
সেতো অনেকক্ষণ বেরিয়েছো।
কই! এইতো ঘন্টা খানেক হবে।
প্রথম দিন এলে, একটু মিষ্টি মুখ না করলে চলে।
একটা। তার বেশি নয়। আমায় এবার বেরোতে হবে। একবার অফিসে যাবো। তারপর অনেক কাজ।
তোমার গাড়ি কোথায় রেখেছো।
গাড়ি! তুমি হাসালে মা। অনিদা গাড়ি চড়েনা, কলকাতায় ব্যাস ট্যাক্সি অটো আছেনা। ঝমলি হাসতে হাসতে বললো।
ভদ্রমহিলা আমার দিকে তাকালেন। যেনো আকাশ থেকে পরলেন। সত্যি তোমার গাড়ি নেই!
আছে। অফিসে। আমার প্রয়োজনে লাগে না।
কেনো।
গাড়ি করে এদিক সেদিক যেতে অসুবিধে হয়।
কি বুঝলে, মোদ্দা কথা তুমি অনিদার হদিস সহজে পাবে না। পকেট থেকে মোবাইলটা বার করতে বলো দেখো স্যুইচ অফ।
আমি হো হো করে হেসে ফেললাম।
তুই এতো জানলি কি করে।
বাহাত্তর ঘন্টা কাটিয়েছি। তারমধ্যে আমি দেখেছি দশ বারো ঘন্টা। আমাকে হোটেলে রেখে দুদিন হোটেলেই ফিরলোনা। আমার কাজ কিন্তু থেমে থাকেনি। ঘন্টায় ঘন্টায় লোক এসেছে আমার খোঁজ খবর নিয়েছে। ট্রেনে উঠে বসলাম, উনি এলেন, বাই বলে আবার হাওয়া। যারা খোঁজ খবর নিতে এসেছিলো তাদের জিজ্ঞাসা করি, বলে অনিবাবু কোথায় গেছেন বলতে পারছি না। প্রবলেম চাইল্ড।
ঝিমলি এমন ভাবে কথা বললো সবাই মুচকি মুচকি হাসছে। এটাও পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে ঝিমলি আমার প্রতি যথেষ্ট দুর্বল।
প্রবীরবাবু আজ রিজাইন করেছে তুমি জানো।
আমি ভদ্রমহিলার মুখের দিকে তাকিয়ে ভালো করে মাপার চেষ্টা করলাম। সরকারী অফিসার। এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পার্টে আছে। বহুত পোর খাওয়া। শরীরতো আছেই, পাশাপাশি মাথাটাও ভালো খেলাচ্ছেন।
কে প্রবীরবাবু!
তোমার লেখার ওপর বেইজ করে একজন সাংসদ সাসপেন্ড হয়ে গেলেন, একজন মন্ত্রী রিজাইন দিতে বাধ্য হলেন, তুমি জানো না!
আবাসন মন্ত্রী ?
হ্যাঁ। আমিতো টেররিস্টদের নিয়ে লিখেছি, ওরা কি টেররিস্ট নাকি ?
তুমি পারবেনা মা, কেনো ঘাঁটাচ্ছো। সাধে কি মিত্রাদি অনিদাকে কাগজের ওয়ান অফ দেম পার্টনার বানিয়েছে। ঝিমলি হাসতে হাসতে বললো।
আমাদের ফ্ল্যাটটা দেখিয়েছিস।
না।
ওকে দেখা আমি একটু চা করি।
দিদভাই আমি আমরা ঘর দেখাবো, তুমি ঢুকবেনা। রিমঝিম বললো।
আমি হাসছি। বেশ মজা লাগছে।

আমি উঠে দাঁড়ালাম ঝমলির পেছন পেছন ওর ঘরে এলাম। টোটাল পাঁচটা ঘর ডাইনিং ড্রইং কিচেন বাদ দিয়ে। এমনকি গেস্টরুম পর্যন্তও আছে। ছবির মতো সাজানো ফ্ল্যাটটা। আমি এসে ঝিমলির ঘরে ঢুকলাম এসি রুম। একপাশে ছোট্ট একটা টেবিল। এক জনের শোবার মতো ছোটো একটা খাট।একটা আলমাড়া আর বুক সেল্ফ। ঝিমলি ঘরের দরজাটা ভেজিয়েই আস্তে করে ছিটকিনি তুলে ছুটে আমার কাছে এগিয়ে এলো। তোমায় আজকে দারুণ হ্যান্ডসাম দেখতে লাগছে। দাঁড়াও তোমার ঠোঁট দুটো একটু চুষে নিই। উঃ কতোদিন তোমার ঠোঁটদুটো চুষিনি।
আমাকে জড়িয়ে ধরলো। মাথাটা টেনে নিয়ে আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলো। উম উম একটা শব্দ কিছুক্ষণ চোষাচুষির পর ছাড়লো। উঃ কি শান্তি।
আমি হাসছি। তোমার বোন তোমার আগে চুষে নিয়েছে।
আঁ। সত্যি।
হ্যাঁ।
কি শয়তান দেখেছো। আমার সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করেছিলো। যেদিন অনিদাকে প্রথম দেখবো সেদিনই আমি কিস করবো।
হাসলাম। দারুণ স্মার্ট। আমি বুঝতেই পারিনি ও এরকম করতে পারে।
ওর অনেক বন্ধু আছে, কিন্তু কেউ ওকে টাচ করতে পারেনা। বহুত টেঁটিয়া। আমাকেই তো বলে দিদিভাই আমার ফিতে আমি সেইরকম একজনকে দিয়ে কাটাবো, যিনি সেলিব্রিটি।
আমি হো হো করে হেসে ফেললাম। ওর বন্ধুগুলোও দারুণ স্মার্ট।
হবেনা কেনো। সবাই মডেলিং জগতে ঢোকার ছড়পত্র পেতে চলেছে। আর মডেলিং-এর মেয়েরা, তোমাকে নতুন করে কিছু বলার নেই।
হো হো করে হেসে ফেললাম।
সব এক গোয়ালের গরু। এখুনি তোমায় পেলে কামরে খেয়ে নেবে। চোখ দেখেছো এক একটার।
চলো, আমাকে আবার বেড়োতে হবে।
আর একবার।
এবার কিন্তু আমি ঠিক থাকতে পারবোনা।
আমি শুক্রবার চলে যাচ্ছি।
ঠিক আছে আমিও ভাইজ্যাক যাচ্ছি। আমার এ্যাড।
মা তোমাকে আজ নিশ্চই বলবে।
আমি ঝিমলির আপেল বাগানটা একটু ঘুরে নিলাম। আগের থেকে যেনো আরো সুন্দর হয়েছে।
দু’জনে বেরিয়ে এলাম।
কইরে রিমঝিম, আমার কাজ শেষ।
ওরা চারজন সামনের ড্রইংরুমে বসেছিলো। এগিয়ে এলো। ঝিমলি কিচেনের দিকে গেলো। আমি রিমঝিমের পেছন পেছন ওর ঘরে এসে ঢুকলাম। ঝিমলির ঘরের থেকেও অনেক বেশি পরিষ্কার ঘরটা। চারিদিকে রুচির ছাপ আছে। সব কিছুই একই রকম। আমি চারিদিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি ভাবলেশহীণ মুখ। দেয়ালে বেশ কিচু মডেল মেয়ের বড়ো বড়ো ছবি। শরীরী ভাষায় নিজেদর ফুটিয়ে তুলেছে। ওরা চারজন আমাকে ঘিরে।
রিমঝিম এগুলো এখানে কেনো।
আমাদের এবছর ফাইন্যাল ইয়ার। আমাকে ওদের মতো হতে হবে। তাই টাঙিয়ে রেখেছি। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ওদের দেখি আর মনটাকে শক্ত করি আমি ওদের থেকেও বড়ো হবো।
তাতে করে সঠিকভাবে বড়ো হওয়া যায়।
তারমানে!
আচ্ছা এই ফিগারটার মধ্যে দিয়ে ও কি বলতে চেয়েছে এটা জানো।
ওরা চারজনে আমার দিকে তাকিয়ে, আমাকে যেনো গিলে খেতে চায়। আমি আবার ঘরের চারিদিকে চোখ বোলালাম।
তোমার ঘরটা ঝিমলির ঘরের থেকেও সুন্দর।
পিঙ্কি, তাহলে অন্ততঃ একজন ভালো বলেছে বল।
খুশিতে ডগমগ হয়ে উঠলো রিমঝিমের মুখটা।
অনিদা তোমার একটা অটোগ্রাফ দাও।
চুর্ণী একটা খাতা এগিয়ে দিলো। আমি ওর গালটা ধরে একটু টিপে দিলাম।
আমি এখনো অটোগ্রাফ দেওয়ার যোগ্য হইনি। যেদিন হবো সেদিন অবশ্যই দেবো।
ওমা! তুই কি লাকি, অনিদা তোর গাল টিপলো। রিমঝিম বলে উঠলো।
আমি হাসলাম।
অনিদা তোমার ফোন নম্বরটা দাওতো। তিয়া বললো।
আমার কিন্তু স্যুইচ অফ থাকে।
ম্যাসেজ করা যাবেতো।
তা যাবে।
আমি দিলাম। সবাই পটাপট আমার নম্বরটা নিজের নিজের মোবাইলে সেভ করে নিলো।
তোমায় কখন ফ্রি পাওয়া যায়।
সব সময়।
একদিন আমাদের বন্ধুদের সঙ্গে একটু আড্ডা মারবে।
দেখি যদি সময় করতে পারি।
এই যে বললে সব সময়!
হেসেফেললাম।
আচ্ছা তুমি চ্যাট করতে পারোনা।
পারি।
তোমার ইমেইল আইডিটা দাও।
দিলাম।
তোমাকে আজ কিন্তু দারুণ লাগছে। গেঞ্জির কালারটা দারুণ।
চলো এবার যাই। সবার চোখেই একটা বিস্ময়ের কাজল।
ওদের ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম।

এইযে আমরা এখানে।
দেখলাম শুধু ঝিমলির মা ঝিমলি নেই মনোময় বাবু আর একজন ভদ্রমহিলাও রয়েছেন। কাছে যেতেই মনোময় বাবু পরিচয় করিয়ে দিলেন আমার স্ত্রী মনিদীপা।
আমি বুকে হাত রেখে প্রণাম করলাম। চা খেতে খেতে টুক টাক কথা হলো। সব কথার মধ্যেই আমার লেখার ব্যাপার চলে আসছে।
মনোময় বাবুর স্ত্রী বললেন, আজ আপনারা ডঃ ব্যানার্জীকে নিয়ে পরেছেন দেখছি।
সত্যি কথা বলতে কি আমি সকাল থেকে কাগজটা দেখি নি।
বলো কি! তোমার কাগজ তুমি দেখো নি।
সেই ভাবে যদি বলেন কোনোদিনই দেখা হয় না। ওই আরকি, ময়রা তার নিজের মিষ্টি চেঁখে দেখে না, কিরকম খেতে।
সবাই হাসছে।
ডঃ ব্যানার্জী লোকটা কিন্তু মোটেই সুবিধার নয়। মনিদীপা বললেন।
খট করে কানে কথাটা বাজলো।
কেনো এই কথা বলছেন।
আমি ওনার সঙ্গে কাজ করেছি কয়েক বছর।
কোথায় ?
ওনার নার্সিং হোমে।
আপনি ডাক্তার ?
হ্যাঁ।
কোথায় আছেন।
প্রইভেট প্র্যাক্টিশ করি। এই মুহূর্তে বেলভিউয়ের সঙ্গে যুক্ত।
আজকে কাগজে যা বেড়িয়েছে সব সত্যি লিখেছে, না গল্প লিখেছে ?
ডকুমেন্টস প্রিন্ট করে দিয়েছে মানেই সত্যি। এবার ওনার রেজিস্ট্রেসনটা ক্যানসেল হবে।
আমি মুখ নীচু করে হাসলাম।
আজ কিন্তু বেশিক্ষণ বসা যাবে না। আমাকে উঠতে হবে। কটা বাজে ঝিমলি।
রিমঝিম বলে উঠলো, বেশি হয়নি, আড়াইটে।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। আজ উঠি আর একদিন বসা যাবে।
আপনার সঙ্গে আলাপ হয়ে ভালো লাগলো। আপনাকে অনেক কাজে লাগবে।
আপনাদের মতো ব্যক্তিত্বের কাজে লাগতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করবো।
হুঁ, বিনয়ের অবতার। এরপর আবার আগামী বছর সময় পাবে তাইতো। ঝিমলি বলে উঠলো।
হয়তো আগামী কালও হতে পারে।
থাক।
তুমি এখন কোথায় যাবে। ঝিমলির মা জিজ্ঞাসা করলেন।
অফিসে যাবো।
চলো তোমায় নামিয়ে দিই। আমাকে একবার অফিসে যেতে হবে।
থাক, আমি ট্যাক্সিতে চলে যেতে পারবো। বলো, বলবেতো, চুপ করে রইলে কেনো। ঝিমলি বললো।
আমি হাসছি।
ওর গাড়ি নেই!
গাড়ি! ঝিমলি এমন ভাবে বলে উঠলো, সবাই হেসে উঠলো।
মনোকাকু এই গল্পটা তোমায় চলে যাবার পর বলবো। দেখে কি মনে হচ্ছে, নিপাট একজন ভদ্রছেলে। ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানেনা। তাইনা। একবার একটু খোঁজ খবর নেবে ভালো করে, দেখবে ওর কীর্তি কলাপ শুনলে আঁতকে উঠবে।
ঝিমলির মা উঠে দাঁড়ালো। আমি পায়ে পায়ে গেটের দিকে এগিয়ে গেলাম জুতোটা পায়ে গলালাম। সবার দিকে একবার তাকালাম।
সত্যি অনি তোমায় দেখে কিন্তু না সাংবাদিক, না মালিক কিছুই মনে হচ্ছে না। একজন ধোপদুরস্ত সাধারণ ছেলে। মনোময় বাবু বললেন।
আমি হাসলাম।
ঠিক আছে আবার পরে দেখা হবে। গেট থেকে বেরিয়ে করিডোরটায় একটু দাঁড়ালাম, রিমঝিম লিফ্ট বক্সের বোতাম টিপলো। লিফ্ট এলো। আমি ঝিমলির মা উঠলাম।
বাই।
টা টা মাঝে মাঝে কিন্তু তোমায় বিরক্ত করবো আমরা। রিমঝিম চেঁচিয়ে উঠলো।
হাসলাম।
ঝিমলির মা স্বগতোক্তির সুরে বললেন, পাগলী একটা।
নিচে নেমে দেখলাম লালবাতি ওয়ালা গাড়ি দাঁড়িয়ে। ড্রইভার নেমে এসে গাড়ির দরজা খুললো। আমি আগে উঠলাম ঝিমলির মা পরে উঠলেন। গাড়ি চলতে শুরু করলো।
ম্যাডাম কোথায় যাবেন।
আগে ওকে নামিয়ে দিয়ে, অফিসে যাবো।
আমাকে অফিসে নামাতে হবেনা, আপনি এসপ্ল্যানেডে নামিয়ে দিলেই হবে।
কেনো, তোমায় অফিসে নামিয়ে দিই।
না না আমি ওইটুকু হেঁটে চলে যেতে পারবো।
তাহলেতো ঝিমলি ঠিক কথাই বলেছে।
ও আমাকে কিছুটা কাছ থেকে দেখেছে। অফিসেও গেছে কয়েকবার। যদিও সেই সময় আমি ছিলাম না।
তোমার জন্য ও ডাক্তারী পড়বার সুযোগ পেলো।
আমার জন্য কেনো। ও ভালো পরীক্ষা দিয়েছে, তাই পেয়েছে।
সোর্স ছাড়া ওখানে চান্স পাওয়া যায় না। আমি খোঁজ নিয়েছি।
ভুল ধারনা আপনার।
তুমিকি এর মধ্যে ভাইজ্যাক যাবে।
কখনোই না। তবে কাজ পরলে যেতে হবে।
তোমাদেরতো ওখানে ব্রাঞ্চ আছে।
হ্যাঁ।
ওর একটা থাকার ভালো ব্যবস্থা করে দাও না।
ঠিক আছে আমি ফোন করে দেবো। আমাকে কোচ নম্বর আর সিট নম্বরটা একবার বলবেন।
কালকে তোমাকে ফোন করে বলে দেবো।
ঠিক আছে। 
 
 
 
 
 
 
Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks